ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়

ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় — ডায়াবেটিস হচ্ছে মূলত একটি দীর্ঘেমেয়াদি স্বাস্থ্যগত সমস্যা, কার্যকর ভাবে এই সমস্যার চিকিৎসা করাতে হয়। ডায়াবেটিসের সবচেয়ে ভালো ও অন্যতম চিকিৎসা হচ্ছে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা। আর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিকভাবে আরো সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভবপর হয় কিংবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়

নিয়মিতভাবে শাক-সবজি, আঁশ সমৃদ্ধ খাবার, পূর্ণশস্যজাতীয় খাবার, শীম এবং বাদাম খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্তও হওয়ার ঝুঁকি ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এই পোস্টে এমন কয়েকটি খাবারের কথা তুলে ধরা হয়েছে যে খাবারগুলো নিয়মিত ভাবে খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা পাবেনঃ ডায়াবেটিস কমানোর উপায়, ডায়াবেটিস সারানোর উপায়, ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি, ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়, কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়, কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না, ডায়াবেটিস হলে কি কি ফল খাওয়া যাবে, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা, ডায়াবেটিস চিরতরে নিরাময় হবে, ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা ইত্যাদি। 

আধুনিক জীবনধারা অনেক রোগের জন্ম দিয়েছে। প্রাচীনকালে, মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার খেত, পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নিত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তারা অনেক শারীরিক কার্যকলাপে নিজেদের লিপ্ত করত। কিন্তু আজকাল আমরা একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ শুরু করেছি, ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে মানুষ বাইরের অস্বাস্থ্যকর জাঙ্ক ফুড খেতে পছন্দ করে। 

পার্কে তাদের সময় অনুশীলন বা যোগব্যায়াম করার পরিবর্তে, বেশিরভাগ লোকেরা ডোমিনোস, ম্যাক ডোনাল্ডস, ক্যাফে এবং ডাইনিং রেস্তোঁরা ইত্যাদিতে তাদের সময় কাটাতে পছন্দ করে। শারীরিক পরিশ্রম, মানসিক চাপ এবং ভালো খাবারের অভাব অনেক রোগের জন্ম দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ডায়াবেটিস একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করছে। 

ডায়াবেটিস একটি আজীবন রোগ এবং রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সাথে সারাজীবনের জন্য বড়ি বা ওষুধ সেবন করলে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং গুরুতর স্বাস্থ্যগত প্রভাব হতে পারে। তাই আমরা ডায়াবেটিস কমানোর ভেষজ সম্পর্কে কথা বলছি যা আপনার গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেই ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় সেই সম্পর্কেঃ

আরো পড়ুনঃ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে যেসব খাবার

১। করলা - করলা খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস পান করলে সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে এবং ঘন ঘন প্রস্রাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে চারেন্টিন নামক একটি সক্রিয় উপাদান রয়েছে যা রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আপনি এর বীজ বের করে নিয়ে এর গুঁড়ো বানিয়ে প্রতিদিন খান। আর ভাবে নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস সমস্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস করা যায়।

২। চিয়া বীজ - ডায়াবেটিস কমাতে চিয়া বীজ

চিয়া বীজ হচ্ছে এমন একটি বিস্ময়কর খাবার যে খাবার খাওয়ার কারণে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ক্যালসিয়াম ও উচ্চমাত্রার প্রোটিন এবং ম্যাঙ্গানিজ। চিয়া বীজ ছোটো একটি প্যাকেজের মাঝে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। যদি চিয়া বীজ নিয়মিত ভাবে খেতে পারেন তাহলে আপনার রক্তচাপ এবং প্রদাহ হ্রাস পাবে। 

এছাড়াও চিয়া বীজে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় সেটাও কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকর। যা হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। চিয়া বীজ ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস কমানোর জন্য নিয়মিত চিয়া বীজ খাওয়ার অভ্যাস করুন।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা

৩। হলুদের গুঁড়ো ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়

হলুদ তার শক্তিশালী নিরাময় ক্ষমতার জন্য পরিচিত এবং প্রত্যেকের রান্নাঘরে হলুদের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের মূল কারণগুলি সমাধান করতেও সাহায্য করে। কার্যকর এবং দ্রুত ফলাফলের জন্য, আপনি আমলার সাথে হলুদ খেতে পারেন। আপনার ডায়েটে শুধু 2-3 গ্রাম হলুদ যোগ করুন এবং এর উপকারিতা উপভোগ করুন।

৪। দই

দইয়ে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে। যার কারণে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি হতে দেয়না।

৫। তুলসী

ঔষধি গাছ তুলসীকে বলা হয়ে থাকে ডায়াবেটিস রোগের ইনসুলিন। গবেষণায় জানা গেছে, তুলসীপাতা বিবিধভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। খালি পেটে তুলসীপাতার রস খেতে পারলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। তাই ডায়াবেটিস ভালো করার জন্য তুলসীর রস আপনি চায়ের সঙ্গে মিলিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকবে।

৫। লাল চাল

সাদা চালের ভাত রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। সুতরাং রক্তে সুগারের পরিমাণ কমানোর জন্য লাল চালের ভাত খাওয়া শুরু করে দিন। লাল চালের ভাত খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি মিনিমাম ১৫ শতাংশ হ্রাস পাবে। আর যদি ভাত খাওয়া বাদ দিয়ে অন্য কোনো শস্যজাতীয় খাবার খান তবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি মিনিমাম ৩৫ শতাংশ কমে যাবে। তাই ডায়াবেটিসের সমস্যা সমাধানের জন্য লাল চালের ভাত এবং শস্যজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

৬। নিম পাতা ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি দেয়

নিম পাতা ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ এবং সহজলভ্য। নিম ইনসুলিন নির্ভরতা কমায়। বৈদিক এবং ঐতিহ্যগত স্বাস্থ্য গ্রন্থ অনুসারে, এটি ডায়াবেটিসের উন্নতিতে খুবই কার্যকরী। এটি শুধু শরীরে চিনির মাত্রা কমায় না, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতেও সাহায্য করে। এথেরোস্ক্লেরোসিস এবং কার্ডিয়াক জটিলতা প্রতিরোধ করতে আপনি 4-5টি নিম পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন বা নিমের রস খেতে পারেন। এটি আপনাকে আপনার ইনসুলিন গ্রহণের উপর নির্ভরতা কমাতেও সাহায্য করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ থাইরয়েড কমানোর উপায়

৭। কলাই বা শুঁটি

যে খাবার গুলোতে কলাই কিংবা শুঁটি জাতীয় খাবার বেশি থাকে সেগুলো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রাখতে পারে। এছাড়াও এসকল খাবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে অর্থাৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৮। আপেল

আপেল, আঙ্গুর এবং ব্লুবেরি যে স্বাস্থ্যকর খাবার তা আমাদের সকলের জানা। এসকল খাবার গুলো নিয়মিত ভাবে পরিমিত আকারে খাওয়া গেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। যারা নিয়মিত আপেল খায় তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৭ শতাংশ কমে আসে।

৯। শিম

ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের প্রত্যেকের শুকনো শিম খাওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত সোডিয়াম যুক্ত ক্যানজাত শিম নয়। শিমে কম পরিমাণে গ্লুকোজ উপাদান থাকে। যার ফলে এটি যেকোনো শ্বেতসার জাতীয় খাবারের চেয়ে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে অনেক বেশি। এছাড়াও শিমে থাকে উচ্চহারে আঁশ। যার কারণে সেটা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি কোলেস্টেরলের মাত্রাও হ্রাস করে।

১০। শিলাজিৎ - শিলাজিৎ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উপায়

শিলাজিৎ রক্ত প্রবাহে গ্লুকোজ ব্লক করে এবং সুস্থ রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই কারণেই একে "ডায়াবেটিস নিরাময়"ও বলা হয়। এটি অগ্ন্যাশয়ের কার্যকারিতাকে উদ্দীপিত করে এবং ইনসুলিন নিঃসরণকে উৎসাহিত করে এবং বাহ্যিক ইনসুলিন গ্রহণের উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিসের কারণে ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে। ডায়াবেটিস সমস্যা সমাধানে আপনি প্রতিদিন ১০০ মিলিগ্রাম শিলাজিৎ পাউডার খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

১১। খেজুর

প্রতিদিন খেজুর খেতে পারলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়বে না। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত খেজুর খান। বাদামি বা খয়েরি রঙের সুন্দর একটি ফল খেজুর। খেজুরের মিষ্টি স্বাদের কারণে অনেকেই ভেবে থাকেন, ডায়াবেটিক রোগীদের এটা খাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু প্রচুর ফাইবারযুক্ত খেজুর আসলে ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিস আক্রান্তদের ওষুধ হিসেবে কাজ করে খেজুর। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আঙ্গুর, কমলালেবু ও ফুলকপির তুলনায় খেজুর শরীরে অনেক বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জোগান দেয়।

১২। বেরি

বেরি জাতীয় ফলগুলোতেও গ্লুকোজের উপাদান কম পরিমাণে থাকে। বেরিতে রয়েছে ফ্রু্ক্টোজ যা হজমের জন্য ইনসুলিন প্রয়োজন হয়না। মাকুই বেরিতে আছে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা টিউমার ও স্তন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। 

এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিনে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাগরোধী উপাদান যা রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি দেহে ইনসুলিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এটি সুগার এবং কার্বোহাইড্রেটস ভেঙ্গে গ্লুকোজ তৈরি করতে সাহায্য করে। যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেরি একটি আদর্শ খাবার।

১৩। কুমড়ো বীজ

কুমড়ো বীজ খাওয়ার কারণে অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অতিভোজনের আকুতি হ্রাস পায় কিংবা কমে আসে। কুমড়ো বীজ ইনসুলিনের প্রতি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেহের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১৪। ত্রিফলা দিয়ে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

ত্রিফলা রোগের চিকিৎসার জন্য আয়ুর্বেদের সবচেয়ে ব্যাপকভাবে বিদ্যমান ভেষজগুলির মধ্যে একটি।ত্রিফলা হল ৩ ফলের মিশ্রন। আমলকি, হরিতকি বা হরদ এবং বিভিতকি বা বহেরা। এই ৩ ফল শুকিয়ে তাদের চূর্ণ একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি হয় ত্রিফলার মিশ্রন। এই তিনটি ফলই শক্তিশালী ভেষজ এবং ত্রিফলা তিনটিরই মূল্যবান ঔষধিগুণ একত্রিত করে। 

এটি অগ্ন্যাশয়ের কার্যাবলীতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন নিঃসরণকে উৎসাহিত করে। আপনি 1 চা চামচ গুঁড়ো গরম জলের সাথে খেতে পারেন বা রক্তে শর্করার মাত্রার বড় পরিবর্তন এড়াতে। এটি গ্রহণ করার আগে আপনার বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো।

আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

১৫। ফ্ল্যাক্স সীড

গত প্রায় ১০০ বছর ধরে ফ্ল্যাক্স সীড খাবার এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফ্ল্যাক্স সীড বর্তমানে এই গ্রহের একটি শক্তিশালী খাবার। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এই ফ্ল্যাক্স সীড খাবার। অন্যদিকে, ফ্ল্যাক্স সীড রক্তের সুগারের পরিমাণ কমাতে ও দেহকে ইনসুলিন ব্যবহারে আরো ভালোভাবে সক্ষম করে তোলে।

১৬। মেথি হল ডায়াবেটিস নিরাময়ের ওষুধ

মেথির বীজে রয়েছে ট্রায়োনিলাইন এবং অ্যালকালয়েড যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক। এগুলি হজম প্রক্রিয়া এবং কার্বোহাইড্রেট শোষণকেও ধীর করে দেয়। মেথি দানা পিষে পাউডার তৈরি করুন এবং প্রতিদিন সকালে এক চামচ গুঁড়ো খান। এর থেকে তৈরি চাও পান করতে পারেন। আপনি যদি গর্ভবতী হন বা একটি সন্তানের জন্ম দেন বা আপনি গর্ভধারণের চেষ্টা করেন তবে ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এটি অন্যদের জন্য ব্যবহার করা নিরাপদ তবে তাদের এটি 6 মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। 

মেথি বীজের গুঁড়াতে উচ্চ পরিমাণে সলিউবল ফাইবার আছে, যা পাকস্থলিতে সুগার শোষণ ধীর করে। অন্যদিকে এতে বিদ্যমান অ্যামাইনো অ্যাসিড ৪-হাইড্রোক্সিআইসোলিউসিন ইনসুলিন উৎপাদনে উদ্দীপনা যোগাতে পারে। অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসরিত ইনসুলিন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া মেথি বীজে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে, যা শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি রেডিক্যালস জনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। 

আরো পড়ুনঃ গেজ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

১৭। বার্লি

বার্লি হচ্ছে প্রাচীন একটি শস্য। প্রথমে মানুষরা যেসকল শস্যের চাষ শুরু করেন তারমধ্যে বার্লি একটি। বার্লি আঁশযুক্ত সহজেই দ্রবণীয় খাবার। বার্লি লাল চালের থেকেও অনেক ভালো। বার্লি রক্তে সুগারের পরিমাণ ঠিক রাখে ও কোলোস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে সেটা হয়তোবা এখনও অনেকেই জানে না।

১৮। বিজয়সার দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন

বিজয়সর গাছের বাকল ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য আশীর্বাদের চেয়ে কম নয়। এটি শুধুমাত্র রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে না কিন্তু ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়াতে এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত চর্বি বের করে দিতেও কার্যকর। এটি রক্তে স্বাস্থ্যকর লিপিডের মাত্রা বজায় রাখে এবং ডায়াবেটিসের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে। আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে বিজয়সারকে ডায়াবেটিসের জন্য একটি চমৎকার ভেষজ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এর ছালের গুঁড়া বা গুঁড়া জলের সঙ্গে খেতে পারেন।

১৯। আখরোট

প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২ দিন নিয়মিত ভাবে আখরোট খেতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি একদম কমে আসবে। তাই ডায়াবেটিস কমানোর জন্য আখরোট বেশি বেশি গ্রহণ করুন।

ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কি

ডায়াবেটিস কমানোর উপায় কিঃ বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগের হাত ধরে দেহে আরো অনেক রোগ বাসা বাঁধে। তাই যতটুকু সম্ভব আমাদের এই রোগ থেকে দূরে থাকতে হবে। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে বা ডায়াবেটিস কমানোর জন্য নিচে উল্লেখ করা কাজগুলো করতে পারেন। ডায়াবেটিস কমানোর জন্য প্রতিদিন মিনিমাম ৪০ মিনিট হাঁটাহাটি কিংবা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। হাঁটাহাটি করার ক্ষেত্রে টানা ৪০ মিনিট একটানা হাঁটলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। 

এমন ব্যায়াম কিংবা পরিশ্রম করতে হবে, যাতে করে শরীর থেকে ঘাম ঝরে। হঠাৎ করেই খুব কঠিন ব্যায়াম শুরু না করে দিয়ে প্রথমে ওয়ার্কআপ কিংবা হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করুন। আসতে আসতে গতি বাড়াতে হবে। দেহের ওজন বৃদ্ধি হতে দেওয়া যাবেনা। আর যাদের ওজন ইতোমধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে তারা ওজন কমানো ব্যবস্থা নিন। ওজন কমানোর জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রণ রাখা, ব্যায়াম করা, দৌড়ানো এবং হাঁটাহাটি করুন ইত্যাদি। 

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

নিয়মিত খাদ্য তালিকায় শাকসবজি রাখুন। আঁশযুক্ত খাবার বেশি বেশি খান। কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার যেমনঃ ভাত, আলু কম পরিমাণে খান। বেশি গরু এবং ছাগলের মাংস খাবেন না। পনির, আইসক্রিম, ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং কৃত্রিম জুস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘি অথবা মাখন কম পরিমাণে খান কিংবা একেবারে বাদ দিয়ে দিন। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৬ ঘন্টা করে ঘুমান। টেনশন করা যাবেনা।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: