কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা — আমাদের মানব শরিরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হলো কিডনি। কিডনি ছাড়া কোনো মানুষের বেঁচে থাকা কখনোই সম্ভব নয়। কিডনি রোগের শুরুতেই যদি আপনি ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করেন তাহলে কিডনির জটিলতা অনেকাংশে হ্রাস পাবে। কিডনি রোগকে মরণঘাতী রোগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তাই, আমাদের উচিৎ কিছু খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলে কিডনির রোগের উপশম করা।

কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

আজকের আর্টিকেলে, আমরা কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। কিডনি জটিলতায় ভুগার পূর্বে আপনার খাদ্য অভ্যাস পারে এই রোগ থেকে দূরে রাখতে। নানান সব জটিল রোগের ভিড়ে কিডনি রোগের সমস্যা অনেক বেশী ভয়ানকভাবে কাজ করে। আমাদের শরীরের ছাকন প্রক্রিয়ার কাজ করে কিডনি। 

তাই আমাদের কিডনি ছাড়া আমাদের দেহ সম্পুর্ণ ভাবে নিরশ হয়ে যায়। কিডনি রোগ থেকে বাচতে ঘরোয়া ভাবে কী কী বিষয় করণীয় এসকল বিষয় গুলো আমাদের সকলের জানা অনেক বেশী প্রয়োজন।

আরো পড়ুনঃ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে যেসব খাবার

পেজ সূচীপত্রঃ কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

কিডনি রোগের কোনো উপসর্গ প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত হয়না। কিডনির অধিকাংশ অংশের কার্যকরীতা যখন অক্ষম হয়ে যায় তখন প্রকাশ পায়। শুরুতেই যদি আপনি কোনো রোগের কিডনি রোগের উপসর্গ গুলো বুঝতে পারেন আপনার জন্য কিডনি রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

কিডনি ভালো রাখা আমাদের জন্য অনেক বেশী জরুরি। আর কিডনিকে ভালো রাখার উপায় গুলো আমাদের কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে কাজ করবে। কিডনি রোগ থেকে বাঁচার অনেক গুলো উপায় রয়েছে যেগুলো প্রতিদিনকার লাইফস্টাইলের সাথে আপনাকে যোগ করে নিতে হবে। যেহেতু আপনি ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে কিডনি রোগ উপশম করবেন সেক্ষেত্রে নিচের কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার উপায় গুলো অবলম্বন করুন-

১। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনঃ কিডনি ভালো রাখার জন্য বিশুদ্ধ পানি আমাদের অনেক সহায়তা করে। আমরা অনেকেই প্র‍তিদিন পরিমিতভাবে পানি পান করি না। এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। দিনে অন্তত ১০/১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। অবশ্যই পানি বিশুদ্ধ হতে হবে। একটি সুস্থ মানুষের দেহের জন্য প্রতিদিন প্রচুর পরিমান পানির ঘাটতি দেখা যায়। আপনি ঘাটতি গুলো পূরণ না করলে আপনার দেহের প্রতি ও কিডনির প্রতি অনেক বেশী চাপ পরে। তাই কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

আরো পড়ুনঃ যৌবন ধরে রাখার উপায়

২। ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ ফল আমাদের যেকোনো রোগকে উপশম করার অনেক বড় মেডিসিন হিসেবে কাজ করে। আমাদের শরিরের শক্তির প্রধান উৎস ফল থেকে আসে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল না খাওয়ার ফলে শরীরে কিডনির মতো মারাত্মক রোগে ভুগতে হতে পারে। প্রতিদিনকার খাদ্য অভ্যাসের সাথে কোনো না কোনো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার জন্য নিচের দেয়া ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন-

৩। মিষ্টি আলুঃ আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যা কিডনি রোগ থেকে বাঁচার জন্য অনেক বেশী উপকারী একটি ফল। আমাদের সোডিয়ামের মাত্রা ভারসম্য রাখা প্রয়োজন। সোডিয়ামের মাত্রা সঠিকভাবে বজায় না থাকলে সেটা কিডনির উপরে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলে। মিষ্টি আলু এই সমস্যা রোধে ভালভাবে কাজ করে।

৪। লেবুঃ লেবুর রসে রয়েছে সাইট্রিক এসিড। আমাদের কিডনি রোগ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বাজে সমস্যা " কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়া "। লেবুর রশ পাথর গুলো ভাঙতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন অল্প হলেও লেবুর রশ খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর জন্য বেশ ভালো হবে।

৫। ডাবের পানিঃ ডাবের পানি আমাদের শরিরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। ডাবের পানি যেকোনো রোগকেই উপশম করতে পারে। প্রতিদিন কচি ডাবের পানি পান করার চেষ্টা করুন।

৬। আপেলঃ আপেল সব রোগের মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে থাকে। কথিত আছে যে, কোনো ব্যাক্তি যদি দিনে একটি আপেল খায়, তার জন্য সারাদিনে আর কোনো ডাক্তার এর প্রয়োজন নেই। এই কথাটি আমরা কমবেশী সকলে শুনেছি। আপেলে বিভিন্ন ধরনের প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যায়। কিডনি রোগের জন্য খুব ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর জন্য আপনি প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৭। আদাঃ কিডনির রক্ত চলাচলকে সঠিকভাবে করতে সাহায্য করে আদা। আদা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি। প্রতিদিন ৪/৫ চিমটি হলেও আদা খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিডনি রোগ ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতিতে এটি বেশ গ্রহণযোগ্য।

আরো পড়ুনঃ গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

৮। পিয়াজ ও রসুনঃ পিয়াজ ও রসুন আমাদের রক্তের সাথে তৈরি হওয়া চর্বি গুলোকে দূর করে দেয়। যা শুধুমাত্র কিডনি রোগের জন্য কার্যকরী বলাটা ভুল হবে। শরিরে রক্তের সাথে চর্বি তৈরি হলে আমাদের পড়তে হয় নানান সমস্যার মধ্যে। কিডনি রোগ থেকে বাচতে পিয়াজ ও রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৯। শাঁক-সবজিঃ আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণএ শাঁক-সবজি পাওয়া যায়। সবুজ শাঁক-সবজি আমাদের দেহের অর্ধেকের বেশী ভিটামিন ও প্রোটিনের কাজ করে থাকে। কিডনির সঞ্চালন সঠিকভাবে রাখতে শাঁক-সবজি এর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা লক্ষনীয়ভাবে দেখা যায়। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর জন্য প্রতিদিন নতুন নতুন সতেজ শাঁক-সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

উল্লেখ্য যে, এখানে আমি আপনাদের মাত্র কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফল খাওয়ার জন্য বলেছি। শুধুমাত্র এই ফল গুলোই নয়। সব ধরণের ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। সিজনাল ফল যেমন- আম, জাম, তরমুজ, বাংগি, বড়ই ইত্যাদি সকল ফল গুলো কিডনি রোগ থেকে বাচতে সহায়তা করে থাকে।

আমাদের দেশে ২ কালীন শাঁক-সবজি পাওয়া যায়। শীতকালে অধিক হারে শাঁক সবজি পাওয়া যায়। কিডনি রোগের জন্য বাচতে ১২ মাস এই চেষ্টা করুন প্রতিদিন সবজি অথবা শাঁক খাওয়ার। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর ক্ষেত্রে ভালো সুফল দেখতে পাবেন।

শেষ কথা

কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর কয়েকটি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। কিডনি রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবশ্যই আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। তবে এই উপায়গুলো কিডনি রোগ থেকে বাচতে অনেক বেশী সহায়তা করবে। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা লেখাটি আপনার কাছে ভালো লাগলে অবশ্যই পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)