কি খেলে টিউমার ভালো হয় | কি খেলে টিউমার ভাল হয় | টিউমার ভালো করার উপায় - যেকোনো একটি রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানার আগে জানতে হবে রোগটি কেন হয়ে থাকে। তবেই কেবল সত্যিকার অর্থে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা আসবে এবং ভবিষ্যতেও রোগটির বিস্তারে সতর্ক থাকবে। আর তাই কি খেলে টিউমার ভালো হয় তা জানার আগে জানতে হবে টিউমার কি এবং টিউমার কেন হয়?
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা টিউমার কেনো হয় ও কি খেলে টিউমার ভালো হয় তা নিয়ে আলোচনা করব। আসুন প্রথমে আগে জেনে নেয়া যাক টিউমার কি? উত্তর হচ্ছে টিউমার হল মানব শরীরের ত্বকের তথা চামরার উপর অবস্থিত একটি মাংসপিণ্ড যা কিছু অস্বাভাবিক কোষের সমাবেশ যেখানে কোষগুলোও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সংখ্যা বাড়ায়।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
টিউমার কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ টিউমার প্রধানত দুই প্রকার এগুলো হলোঃ ১। বিনাইন টিউমার ২। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার টিউমার।
বিনাইন টিউমার
এ ধরনের টিউমার যেখানে সৃষ্টি হয় সেখানেই বৃদ্ধি পেয়ে বড় হয়ে সেখানেই থাকে। এ ধরনের টিউমার তেমন কোনো ক্ষতিকারক নয়।
আরও পড়ুনঃ কি খেলে মোটা হওয়া যায়
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার টিউমার
এটিও আরেক প্রকার টিউমার। এ ধরনের টিউমার ভিতরে থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলো রক্ত কিংবা লিম্ফ নামক কিছু রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে শরীরের অন্য কোন অংশে গিয়ে জমা হয়ে সেই অংশের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়ে সেখানে নতুন কোনো টিউমার তৈরি করে। সাধারণত ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের কারণে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর তাই টিউমার দেখা দিলে যে ক্যান্সার হয়ে গেছে তা ভাবা ঠিক নয়। কারণ সকল প্রকার টিউমার ক্যান্সারের জন্য দায়ী নয়। কেবলমাত্র ম্যালিগন্যান্ট টিউমার দেখা দিলেই তার ক্যান্সারের চিকিৎসা নেওয়া দরকার।
এর জন্য শুরুতেই শরীরের বাহ্যিক অংশে কোনো রকম টিউমার দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখাতে হবে। ডাক্তার পরবর্তীতে টিউমারের স্থান অবস্থান আকৃতি পর্যবেক্ষণ করে সিটি স্ক্যান করে তার টিউমারটি কি ধরনের তা জানতে পারবেন।
কি খেলে টিউমার ভালো হয়
আমরা যেসকল খাদ্য খাই তা আমাদের দেহের শক্তির অভাবই কেবল পূরণ করেনা বরং এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিটি খাদ্যের রয়েছে নিজস্ব পুষ্টিগুণ এবং এর পাশাপাশি কিছু কিছু খাদ্যের রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা।
সাধারণত আধুনিক এই যুগে মেডিসিনের মাধ্যমে টিউমারের চিকিৎসা করা হয়। তবে শুধু যে মেডিসিনের মাধ্যমেই টিউমার পরিপূর্ণরূপে নিরাময় করা সম্ভব তা নয়। মেডিসিন ব্যবহার করার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভাবে কিছু খাদ্য রয়েছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কারণে প্রতিটি মেডিসিনের রয়েছে যেমনই উপকারিতা তেমনি ভাবে এর বিপরীতে রয়েছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। কোন মেডিসিন বা ঔষধ যদি মাত্রাতিরিক্তভাবে পরিমাণের চেয়ে বেশি সেবন করা হয় বা প্রয়োগ করা হয় তবে ঠিক তখনই এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া যে সকল খাদ্য বা ওষধি গাছ সেগুলো ঔষধের নিরাময়ের পাশাপাশি এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বা একেবারেই থাকেনা। প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া খাদ্য তালিকার মধ্যে নিচে কয়েকটি টিউমারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারী 5 টি খাদ্যউদ্ভিদ উল্লেখ করা হলোঃ
মাশরুম
মাশরুম একটি অন্যতম খাদ্য ও পুষ্টির উৎস। মাশরুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এটি টিউমারের বিরুদ্ধে খুব সহজেই রোগ প্রতিরোধ তৈরি করতে সক্ষম থাকে। মাশরুমের রয়েছে অত্যন্ত কার্যকরী দশটি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড যেগুলো আমাদের মানব দিনের জন্য খুবই দরকার।
এছাড়া প্রতি 100 গ্রাম মাশরুমে 25 থেকে 35 গ্রাম প্রোটিন। যেখানে প্রতি 100 গ্রাম মাছ মাংস ও ডিমের মধ্যে প্রোটিন রয়েছে যথাক্রমে 16-22 গ্রাম, 22 থেকে 25 গ্রাম ও 13 গ্রাম। কাজেই এখান থেকে বোঝা যায়, প্রোটিন পাওয়ার জন্য মাশরুমের প্রয়োজনীয়তা।
আরও পড়ুনঃ গেজ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি
হেলেঞ্চা শাক, পালং শাক, লেটুস, আরুগুলা, কলার্ড গ্রীন প্রভূতি দেশি জাতীয় শাকসবজি ভিটামিন মিনারেল ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মূলত টিউমারের বিরুদ্ধে কাজ করে।
শাকসবজি যে শুধু টিউমারের রোগ প্রতিরোধ করে তা নয় বরং শাকসবজি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সক্ষম। আর তাই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।
মাছ
একটি কথা খুবই প্রচলন আছে যে আমরা মাছে ভাতে বাঙালী। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য হল ভাত ও মাছ। মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল রয়েছে। যেমন- মলা ও ঢেলা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে যা চোখের দৃষ্টিশক্তির জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়াও এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মাছের ওমেগা-3 তে বিদ্যমান ফ্যাটি এসিড অ্যান্টিটিউমার ও অ্যান্টি ক্যান্সার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঠেকাতে এর ভূমিকা অপরিসীম।
হলুদ
হলুদ মূলত এক প্রকার মসলাজাতীয় খাবার। যা আমরা বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের সাথে মিলিয়ে আহার করি। হলুদ একটি খুবই গুণসম্পন্ন মসলা জাতীয় খাদ্য। হলুদের রয়েছে কারকিউমিন যা মানবদেহের প্রদাহ জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এছাড়াও এটি মানবদেহে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ কিংবা টিউমারের প্রতিরোধ করে।
দুধ ও দুদ্ধজাত
দুধ সাধারনত একটি তরল ও ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ যা খুবই পুষ্টিকর খাদ্য। পাস্তরাইজেশন বা প্রক্রিয়াকরণ দুগ্ধজাত খাবার যেমনঃ টক দই। এটি প্রোবায়োটিক বা ভালো ব্যাক্টরিয়ার উত্তম উৎস। প্রোবায়োটিক টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে। যেমন গরু এবং ছাগলের দুধের পনিরে রয়েছে সালফার স্যাচুরেটেড ফ্যাট।
এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি। আর এই ভিটামিন ডি মানব শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণ মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গবেষনায় দেখা গেছে, ক্যালসিয়াম রেকটালসহ নানা ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
এছাড়াও ক্যাবেজযুক্ত সবজি যেমন বাধাকফি, ফুলকফি, শালগম, ওলকফি, স্প্রাউটে আইসো থায়োসায়ানেট নামক ফাইটোক্যামিক্যাল রয়েছে যা ক্যান্সার বা টিউমার এর প্রতিরোধ করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ নুডুলস এর উপকারিতা ও অপকারিতা