ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ অর্থ কি - ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ কি — সে সম্পর্কে আমাদের মাঝে অনেকেই জানেনা। আবার ইনশাআল্লাহ অর্থ কি ও ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত সম্পর্কে অনেকেই কমবেশি জানি। কিন্তু ইনশাআল্লাহ ব্যবহার এবং ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় তা সম্পর্কে আবার হয়তো অনেকেই পুরোপুরি ভাবে জানিনা। ইনশাআল্লাহ অর্থ কি সেটা সম্পর্কে আমরা আজকের এই পোস্ট থেকে বিস্তারিত জেনে নিবো। 

ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

পেজ সূচীপত্রঃ

আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা যা পাবেনঃ ইনশাআল্লাহ অর্থ, ইনশাআল্লাহ অর্থ কি, ইনশাআল্লাহ এর জবাব কি, ইনশাআল্লাহ বললে কি বলতে হয়, কেউ ইনশাআল্লাহ বললে উত্তরে কি বলতে হয়, ইনশাআল্লাহ এর প্রতি উত্তরে কি বলতে হয়, ইনশাআল্লাহ উত্তর, ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম, ইংরেজিতে ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম, ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয়, ইনশাআল্লাহ ইংরেজি বানান, ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ কি, ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত ইত্যাদি।

ইনশাআল্লাহ সম্পর্কিত সকল বিষয় পরিপূর্ণ ভাবে কুরআন ও হাদিসের আলোকে জানানোর চেষ্টা করবো ইনশাল্লাহ। আমরা মুসলমান হিসেবে কয়েকটি আরবি শব্দ সবসময় বলে থাকি। তন্মধ্যে একটি শব্দ হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেই ইনশাআল্লাহ অর্থ কি বা ইনশাআল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ কি।

আজকের এই পোস্টটিতে আমরা ইনশাআল্লাহ অর্থ কি? ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম বা ইনশাআল্লাহ কিভাবে লিখতে হয় সে সম্পর্কে জানবো। ইনশাআল্লাহ কিংবা ইংশাআল্লাহ অথবা ইনশা আল্লাহ কোনটি সঠিক সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত জানবো। যদি আপনি ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। প্রিয় পাঠক যদিও আমি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ না তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও স্কলারদের লেখা আর্টিকেল গুলো পড়ে রিসার্চ করে আমাদের আজকের এই ইনশাআল্লাহ অর্থ কি পোস্টটি লেখার চেষ্টা করেছি।

আরো পড়ুনঃ আল্লাহর ৯৯টি নাম

ইনশাআল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ হলো মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে বা আল্লাহর ইচ্ছাগত”। ভবিষ্যতে হবে, করবো কিংবা ঘটবে এমন কোনো বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নত। যেমনঃ ইনশাআল্লাহ, আগামীকাল আমি আপনার কাজটি করে দিতে পারবো। পবিত্র কোরআনে কারিমে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই আবার আলহামদুলিল্লাহ বলার ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলে থাকেন। অবশ্যই আমাদেরকে এই বিষয় গুলাের প্রতি খেয়ার রাখতে হবে। 

‘ইনশাআল্লাহ’ শব্দটি ভবিষ্যতে কিছু করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ আল্লাহ চাইলে কিংবা আল্লাহ ইচ্ছায়, যা ভবিষ্যতের প্রতিটি কর্মের অভিপ্রায় প্রকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ, যখন আমরা বলি, আমি আগামীকাল কাজটি করবো, আগামীকাল যাবো এমন কথা বলার সময় ইনশাআল্লাহ বলা জরুরি। 

তাই কোনো কাজ বা কোনো প্রতিশ্রুতির আগে আমরা ইনশাআল্লাহ শব্দটি যুক্ত করব। প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে আরো জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয় তাই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। 

কেন ইনশাআল্লাহ বলতে হয়? 

ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ হলো “যদি আল্লাহ চান”। যেহেতু আমরা কেউ আমাদের অতি নিকটবর্তী ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কেউ কিছু জানিনা তাই সকল কাজ করার সময় ইনশাআল্লাহ বলতে হবে। যেহেতু সকল কিছুই আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রণে তাই মহান আল্লাহ যদি চান তবেই আমরা উক্ত কাজটি করতে সক্ষম হবো বা কাজটি করতে পারবো।

সেজন্য প্রতিটি কাজের সময় আমরা ইনশাআল্লাহ বলবো। এটাকে এক ধরনের ইবাদত বলা যায়। মুমিন ব্যক্তিরা সব সময় মহান আল্লাহ তায়ালার উপর পূর্ণ আস্থা রাখেন। যেহেতু আমরা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার গোলাম সেহেতু আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহকে খুশি করার জন্য আমরা এই ইনশাআল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করবো। 

আরো পড়ুনঃ আলহামদুলিল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ সঠিক বানান

বেশিরভাগ স্কলারদের ভাষ্যমতে ইনশাআল্লাহ শব্দটি আপনি যেভাবেই লিখেন না কেন, আপনি তো মনে মনে জানেন যে ইনশাআল্লাহ অর্থ কি পাশাপাশি যিনি ইনশাআল্লাহ শব্দটি পড়ছেন তিনিও জানেন এই ইনশাআল্লাহ শব্দটির অর্থ কি। এই কথা অনুযায়ী বিবেচনা করলে আমার মনে হয় ইনশাআল্লাহ লেখার নিয়ম নিয়ে বিতর্ক না করলেও চলবে। 

তবে অনেকেই আবার ইনশাআল্লাহ শব্দটিকে বিভিন্ন ভাবে সঠিক নিয়মে লেখার চেষ্টা করেছেন। ইনশাআল্লাহ বা ইন শা আল্লাহ অথবা ইং শা আল্লাহ এই ৩টি উপায়ে লেখার কোনটি সঠিক তা নিয়ে কিন্ত বিতর্ক আছে। ইনশাআল্লাহ কিংবা ইন শা আল্লাহ অথবা ইং শা আল্লাহ এই ৩টি উপায়ের মধ্যে কোনটি সঠিক তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

আমরা অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে একে অন্যের সঙ্গে চ্যাটিং করার সময় বা কমেন্ট করার সময়ে অথবা নিজেরই কোনো পোষ্টে ইনশাআল্লাহ কিংবা ইনশা আল্লাহ অথবা ইংরেজীতে InShaAllah বা In Sha Allah লিখে থাকি। কিন্তু বাংলায় এটার সঠিক উচ্চারণ হলোঃ ইংশাআল্লাহ এবং ইংরেজীতে Ing Sha Allah বা IngShaAllah। তাই আপনি চাইল আজ থেকে ইংশাআল্লাহ, Ing Sha Allah বা IngShaAllah এইভাবে লিখতে পারেন।

ইনশাআল্লাহ কখন বলতে হয়

অদূর ভবিষ্যতে বা দূর ভবিষ্যতে কোনো কাজ করার সংকল্প করলে, "ইনশাআল্লাহ" বলতে হয়। কারণ, আমরা তো কেউ জানিনা যে, আমি বা আপনি যে কাজটি করার সংকল্প করছি, আদৌ সে কাজটি করার তৌফিক মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে দিবেন কি-না? তাই প্রতিটি ভালো কাজের নিয়ত করলে "ইনশাআল্লাহ" বলে নেব। মানে যদি আল্লাহ্‌র ইচ্ছা হয়" তবে আমি এই কাজটি করবো।

আরো পড়ুনঃ আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি

ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত

ইনশাআল্লাহ বাক্যটি ৩টি শব্দ নিয়ে গঠিত। যেমনঃ ইন অর্থ: যদি, শা অর্থ: ইচ্ছা, আল্লাহ অর্থ: আল্লাহ অর্থাৎ ইন শা আল্লাহ অর্থঃ যদি আল্লাহ চান। আরবি ব্যাকরণে শব্দটি শর্তযুক্ত বাক্য। যার পরে বক্তার ইচ্ছাকৃত ক্রিয়া উহ্য থাকে। যেমনঃ কোনো ব্যক্তি হজ্ব করতে চাইলে সে বলে, ‘ইনশাআল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ চাইলে আমি হজ্ব করবো।

‘ইনশাআল্লাহ’ বলার কারণে আল্লাহ তায়ালার প্রতি বান্দার বিনয়, আকুতি, আকাঙ্ক্ষা ও সম্পূর্ণ নির্ভরতা বা ভরসা প্রকাশ পায়। ভবিষ্যৎ কোনো কাজের ইচ্ছা পোষণের ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার নাম গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকলে বান্দার ঔদ্ধত্য, অহংকার প্রকাশ পায়। যা তার কথা ও কাজকে বরকতহীন বানিয়ে দেয়।

তাই প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত ভবিষ্যৎ যেকোনো কথাবার্তা বলা এবং কাজ করার ঘোষণা দেয়ার পূর্বে ‘ইনশাআল্লাহ বা ইংশাআল্লাহ’ বলার আমলকে অভ্যাসে পরিণত করা। নিজের পরিবারের শিশু-কিশোররা, ছোটো থেকে বড় সকলের জন্য কুরআনের এই শিষ্টাচার এবং নির্দেশনাকে অভ্যাসে পরিণত করার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখা।

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা, বিশ্বাস এবং অনুভূতি সহকারে ‘ইনশাআল্লাহ, ইন শা আল্লাহ, ইংশাআল্লাহ’ বলার এবং ইংশাআল্লাহ এটাকে সব সময়ে বলার জন্য অভ্যাসে পরিণত করে তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)