বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা — আলিয়া মাদ্রাসা হচ্ছে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যা আরবি এবং বাংলা উভয় ভাষাতেই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্ত হয়ে তারা তাদের সকল কার্যক্রম, প্রবিধান, নিয়মকানুন নিয়ন্ত্রণ করে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনস্ত আলিয়া মাদ্রাসা ও কওমি মাদ্রাসার মতো ২ ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যদি আপনি আপনার সন্তানকে ইসলামী শরিয়ার অধীনে শিক্ষায় শিক্ষিত করাতে চান তবে আপনার যেকোনো ধরনের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেছে নেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে এমন অনেক আলিয়া মাদ্রাসা রয়েছে যে মাদ্রাসাগুলোতে একটি শিশু অথবা শিক্ষার্থীদেরকে ইসলামি সংস্কৃতি, ইসলামি ইতিহাস, প্রবিধান সহ আরোও অন্যান্য বিষয়ে অনেক বেশি দক্ষ করে তোলে। আলিয়া মাদ্রাসাতে অনেকগুলো বিভাগ অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে। যেখানে আপনাকে আপনার নিজের পছন্দ অনুযায়ী সিলেক্ট করতে হবে। চলুন জেনে নেই বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কেঃ

পেজ সূচীপত্রঃ

১। সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া

সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া হচ্ছে বাংলাদেশের একটি সরকারি মাদ্রাসা যা বাংলাদেশের বকশীবাজারে ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হলেন সিরাজ উদ্দিন আহমেদ। এই মাদ্রাসাটি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলো এবং বাংলা সহ আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী বিধিবিধান বজায় রাখার জন্যে শিক্ষা প্রদান শুরু করে। এই আলিয়া মাদ্রাসাটি ইসলমি মতাদর্শ প্রদান এবং প্রসারে সহায়তা করে এবং পদ্ধতিগত, ইসলামী শরিয়াসহ প্রগতিশীল ছাত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ নভুমিকা পালন করে। এই মাদ্রাসাটি বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসার মধ্যে একটি।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা মাদ্রাসার তালিকা | বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসা

২। দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা

দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা ঢাকা শহরের ডেমরা থানার সারুলিয়া বাজারের কাছাকাছি অবস্থিতে একটি বিখ্যাত কামিল মাদ্রাসা। জেডিসি, দাখিল এবং আলিম পরীক্ষায় এই মাদ্রাসা বাংলাদেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফলাফল অর্জন করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৭ তে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলো এই দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাটি। দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত ১৯৯০ সালে সেসাথে সুন্দর পড়াশুনার পরিবেশ, সঠিক পাঠদান ইত্যাদি সুবিধার কারণে মাদ্রাসাটি বাংলাদেশের মধ্যে সুনাম অর্জন করেছে।

ফুরফুরার আবু বকর সিদ্দীকি আল কুরাইশীর নাতী আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দীকির নামের সঙ্গে মিল রেখে নামকরণ করে ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই থেকে শুরু হয় আজকের এই দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার অবিরাম পথ চলা।

১৯৯০ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাটি ঢাকার ডেমরায় সারুলিয়ায় ইবতেদায়ী শাখা দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে মাদ্রাসাটিতে দাখিল, আলিম এবং ফাজিল শ্রেণী উন্মুক্ত হতে থাকে এবং সর্বশেষ ২০০৪ সালের জুলাই মাসে দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাটি সর্বোচ্চ ডিগ্রি কামিল পর্যায় অনুমোদন অর্জন করে এবং কামিল মাদ্রাসায় পরিণত হয়। 

দাখিল এবং আলিম স্তরে আছে বিজ্ঞান এছাড়াও মানবিক বিভাগ উভয়ই আছে এই মাদ্রাসাটিতে। ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অধীনে ৪ বছর মেয়াদী ফাযিল অনার্স কোর্স চালু করা হয় এবং ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে মাদ্রাসাটি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে যায়।

দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসাটিতে হাফেজ শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্যে তাখসিস জামাত। যারা কুরআন এবং হাদীসের উপরে আলেম হতে চান তাদের জন্যে আছে এখানে আলাদা নজর। সম্পূর্ণ দরসে নেজামি পদ্ধতিতে ৯ম শ্রেণি থেকে বিশেষভাবে পাঠদান প্রদান করে থাকে। আলিম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্যে এখানে আছে বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থ মিশকাতুল মাসাবিহ খতমের সুযোগ সুবিধে। এছাড়াও ফাযিল এবং কামিল শ্রেণিতে খতমে বুখারি, তাফসিরে জালালাইন সহ বিভিন্ন বিখ্যাত হাদিস এবং তাফসির গ্রন্থ বাধ্যতামূলক ভাবে খতম করা হয়ে থাকে।

দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসায় জ্ঞান অর্জন করার পাশাপাশি আমলের প্রতিটি বিষয়ে আলাদা গুরুত্ব আরোপ করা হয়। প্রত্যেক ফজর নামাজের পরে আবাসিক শিক্ষার্থীদের কুরআন তিলাওয়াত করা সহ মাগরিব নামাজের পরে যিকির, আওয়াবিন সালাত বাধ্যতামূলক ভাবে করা হয়ে থাকে। দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসায় কয়েকটি শাখা চালু রয়েছে যথাঃ ১। দারুন্নাজাত মহিলা শাখা ২। নেছারিয়া হিফজখানা ৩। সালেহিয়া এতিমখানা ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

৩। বারিধারা নাজমুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা

বারিধারা নাজমুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় তারা তাদের শিক্ষা প্রদান করে মূলত দুটি ভাষাতে এবং ২টি মৌলিক ব্যবস্থা আরবি ও বাংলা শিক্ষাক্রম শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে। মাদ্রাসার শিক্ষাগত ভর্তির সময় চলছে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত। যদি আপনি আপনার সন্তানকে এখানে ভর্তি করাতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাদের শিক্ষাগত কালের ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে। মাদ্রাসার ক্লাস পিরিয়ড হচ্ছে ক্লাস ১ থেকে ক্লাস ১০। এই বারিধারা নাজমুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে যা ছাত্রদের জন্যে খুবই উপকারী। এটি বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা এর মধ্যে একটি।

৪। জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসা, নরসিংদী

জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসা, নরসিংদী বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায় বিখ্যাত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। নরসিংদীতে স্থানীয়ভাবে এই মাদ্রাসাটি গাবতলী মাদ্রাসা নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম কামালুদ্দীন জাফরী মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ১৯৭৬ সালে জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। 

এই জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসাটি ফলাফলের দিক থেকে প্রায় সময়ই বাংলাদেশের সকল মাদ্রাসার মধ্যে থেকে প্রথম ১০ম স্থানে থাকে। ১৯৭৬ সালে এই জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসাটি মেঘনা বিধৌত নরসিংদী জেলার সদর থানায় গাবতলী মাদ্রাসা নামে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বর্তমান সময়ে এই জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা রয়েছে ২০০০ জনের বেশি।

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাদী ইসলামী শিক্ষালয় জামেয়া কাসেমিয়া, নরসিংদী মেঘনা বিধৌত নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার অন্তর্গত পুরানপাড়া এলাকাতে ১৪ একর জমির উপরে অবস্থিত একটি মাদ্রাসা। ২০ শতকের ৬০/৭০ দশকে নরসিংদী জেলাতে তেমন কোনো মাদ্রাসা ছিলনা। 

শুধুমাত্র ১৯২৭ সালে শিবপুরের কুমরাদি এলাকাতে মাওলানা আব্দুল আজীজের প্রতিষ্ঠিত কুমরাদি সিনিয়র মাদ্রাসা এবং ১৯৪৯ সালে ইছাখালি সিনিয়র মাদ্রাসা নামের দুটি মাদ্রাসা ছিল। ১৯৭৪ সালের ২৭ জানুয়ারীতে মাদ্রাসা বাস্তবায়ন কমিটির তৃতীয় সভায় নাম স্থির করা হয়, কামালুদ্দীন জাফরীর প্রস্তাবে নামকরণ করা হয়ে থাকে জামেয়াই কাসেমিয়া মাদ্রাসা গৃহীত হয়। এই নামটি একটি হাদিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসাতে ইবতেদায়ী, দাখিল ও আলিম এবং ফাজিলসহ মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর কামিল পর্যন্ত চালু রয়েছে। মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ে বিজ্ঞান এবং মানবিক উভয় শাখাই চালু রয়েছে ও আলিম শ্রেণিতেও বিজ্ঞান এবং মানবিক শাখা চালু আছে। মাদ্রাসার ফাজিল এবং কামিল পর্যায়ে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ এবং আল ফিকহ বিভাগ চালু আছে।

হেফজ বিভাগে জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসা থেকে প্রত্যেক বছর হাফেজ সাহেবরা বাহির হচ্ছেন এবং তারা দেশের বিভিন্ন জায়গাতে বিভিন্ন প্রতিযোগীতাতে অংশ গ্রহণ করে ভালো ফলাফলের অর্জন করছে। এই মাদ্রাসা থেকে কুরআন হেফজ করার পরে পরবর্তীতে এই মাদ্রাসা থেকে আলিয়া মাদ্রাসাতে পড়ার সুযোগ আছে।

জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসায় ছেলেদের পাশাপাশি মহিলা বিভাগ রয়েছে। মেয়েদের জ্ঞান দানের জন্য রয়েছে আলাদা বিভাগ। ১ম শ্রেণী হতে কামিল পর্যন্ত পৃথক ব্যবস্থাপনায় ছাত্রীদের পড়াশুনার মনোরম পরিবেশ রয়েছে এখানে। যার ফলে নারী এবং পুরুষের মধ্যে ইসলামিক আবশ্যক বিধান পর্দা পালন করা হচ্ছে। এই মাদ্রাসাতে ছেলে এবং মেয়েদের একত্রে মেলামেশা বা দেখা করার সুযোগ নাই।

আরও পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম | তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

৫। জমিয়াতুল আসাদ আল ইসলামিয়া ঢাকা

এই মাদ্রাসাটি বাংলাদেশের মধ্যে সকলের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি মাদ্রাসা। জামিয়াতুল আসাদ আল ইসলামিয়া ঢাকার পূর্ব রামপুরার জামতলাতে অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা। জামিয়াতুল আসাদ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। দেওবন্দী আকাবিরদের চিন্তাধারার আলোকে প্রতিষ্ঠিত এই জামিয়াতুল আসাদ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি একটি নতুন ধারার উচ্চতর ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে সমাদৃত। এখানে ২-৩ মাস অন্তর ফিকহি সেমিনারের আয়োজন করে ছাত্র এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রয়োজনীয় মাসায়েল উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এটিও বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসার মধ্যে একটি।

৬। ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা

ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা রংপুর বিভাগের রংপুর জেলার একটি বিখ্যাত আলিয়া মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসাটি ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৩ সালে মাদ্রাসাটির পড়াশুনার মান, অবকাঠামো, বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তিতে জাতীয় পর্যায়ে সেরা মাদ্রাসার গৌরব লাভ করে। ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় সালামোতুল্লাহ চৌধুরীর অবদান ছিলো অনেকবেশী। এছাড়াও গভর্নিং বডির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আ.ন.ম. হাদীউজ্জামান এবং উপাধ্যক্ষ মো. মাহফুজুর রহমান সাদীর পরিচালনায় রংপুরের এই ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসাটি বাংলাদেশের মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা সমূহের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

বর্তমানে ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসা পহেলা জানুয়ারী ১৯৮২ সালে খলিফাপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন টিনসেডে একটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা হিসেবে তাদের যাত্রা শুরু করেছিল। পরবর্তীতে ডাঃ সালামোতুল্লাহ চৌধুরীর উদ্যোগে দাখিল পর্যায়ে তারা তাদের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসাটি অল্প কয়েক বছরের মাঝেই আলিম, ফাযিল, কামিলসহ ২ ধরনের বিষয়ে অনার্স শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। 

যা মাদরাসা বোর্ড এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রায়ই বিরল। ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসাটির একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর সালগুলো হলো - আলিম বিজ্ঞান ১৯৯৭, ইবতেদায়ী ১৯৮২, দাখিল বিজ্ঞান ১৯৯৩, দাখিল ১৯৮৯, ফাযিল ১৯৯৬, আলিম ১৯৯৪, কামিল হাদীস ও তাফসীর বিভাগ ২০০১, কামিল আদব ও ফিকহ বিভাগ ২০০৩ এবং অনার্স আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ এবং আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ২০১০ সাল।

মাদ্রাসাটির ভৌতিক অবকাঠামো, পড়াশুনার মান, বোর্ড এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার কারণে বাংলাদেশ সরকার এই মাদ্রাসাটিকে ২০০৭ সালে মডেল মাদ্রাসা হিসেবে নির্বাচিত করেন।ধাপ সাতগাড়া বায়তুল মুকাররম মডেল কামিল মাদ্রাসাটি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডে ১.৮৮ একর জমির উপরে স্থাপিত। এই মাদ্রাসাটির চত্তর রয়েছে-১.৩৬ একর ও ছাত্রাবাস আছে-০.৫২ একর। উক্ত মাদ্রাসাটিতে ৫টি ভবন রয়েছে- ১। প্রশাসনিক ভবন- ১টি চারতলা ২। একাডেমিক ভবন- ২টি তিন তলা এবং ১টি চার তলা ৩। ছাত্রাবাস ভবন-১টি তিন তলা, ৪৯টি কক্ষে অবস্থানরত ছাত্রের সংখ্যাঃ ১৮০ জন ৪। মসজিদ-১টি ২ তলা ৫। ওজুখানা-২টি ১ তলা বিশিষ্ট।

আরও পড়ুনঃ জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস | জুম্মা মোবারক স্ট্যাটাস বাংলা

৭। বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা, চট্টগ্রাম

বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ এবং আলিয়া মাদ্রাসা। এটাকে সংক্ষেপে বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা নামেও ডাকা হয়। এই বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসাটি ১৯৮২ সালে শাহ সুফি আব্দুল জব্বার রহ. প্রতিষ্ঠিত করেন। চট্টগ্রাম শহররে ডাবলমুরিং থানার অন্তর্গত ধনিয়ালাপাড়া গ্রামে বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসাটির অবস্থান। এই মাদ্রাসাটি ২০১৯ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে।

বায়তুশ শরফ মাদ্রাসাটি সূচনালগ্নে শুধুমাত্র ৫টি শ্রেণী নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে ১৯৯৪ সালের মাঝে মাদ্রাসাটি পর্যায়ক্রমে কামিল পর্যায়ে উন্নীত হয়। দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান এবং মানবিক শাখায় পাঠ কার্যক্রম চলমান। ফাজিল এবং কামিলের উচ্চ শিক্ষার জন্যে ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয় এই মাদ্রাসাটি। তারপর ২০১৬-১৭ সেশনে ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাদ্রাসাটিতে ২টী বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। বিষয় ২টি হচ্ছে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ।

মাদ্রাসার ছাত্রদের বৈচিত্র্যময় পাঠদানের জন্য নিজের মেধা এবং মনন বিকাশের সুবিধার্থে মাদ্রাসার একাডেমিক ভবনের ২য় তলায় রয়েছে একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরী। তাছাড়াও মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে ‘বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্রের’ একটি আন্তর্জাতিক মানের লাইব্রেরী আছে।

বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসাটির প্রসাসনিক কার্যক্রম এবং পাঠদানের জন্যে L আকৃতির ৫ তলা বিশিষ্ট২ ভবন আছে। এছাড়াও আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্যে ৫তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস আছে। দূর-দূরান্ত থেকে আগত ছাত্রদের অধ্যায়নের সুবিধার জন্য মাদ্রাসাটিতে ছাত্রাবাস রয়েছে। যার মধ্যে একটির নাম হচ্ছে হাফেজ আব্দুর রহীম ছাত্রাবাস। এখানে প্রায় ৩৫০ জনের বেশী ছাত্র অবস্থান করছে।

আরও পড়ুনঃ ইসলামের ইতিহাস | ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি

৮। তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা

তামীরুল মিল্লাত ট্রাস্ট দারা পরিচালিত তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে ইসলামী এবং আধুনিক শিক্ষার বাস্তব সমন্বয় সাধন করে ইসলামী আদর্শের বুনিয়াদে এই মাদ্রাসা গড়ে তোলা হয়েছে। ইসলামী জীবনদর্শন, ইসলামী সংস্কৃতি, ইসলামী ঐতিহ্য, ইসলামী মূল্যবোধ, অর্থনীতি ও রাজনীতি এবং সমাজনীতি ইত্যাতি ক্ষেত্রে মুসলিম সন্তানদেরকে আদর্শ নাগরিক রূপে গড়ে তোলা। বিশেষ করে নৈতিক অবক্ষয় থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করে চারিত্রিক উৎকর্ষ এবং মূল্যবোধ তৈরীর বাস্তব উদ্যোগই হচ্ছে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা। 

১৯৬৩ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তারপরে পর্যায়ক্রমে মহান আল্লাহ তায়ালার মেহেরবাণীতে বর্তমান উক্ত মাদ্রাসাটি পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে বিরাট মহীরূহে পরিণত হয়ছে। মুসলমান মেয়েদের মাঝে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখা যায়, কিন্তু সেই তুলনায় তাদের জন্যে মানসম্পন্ন স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান খুবই অপ্রতুল। নারীই গড়তে পারে একটি আদর্শ পরিবার এবং সুন্দর সমাজ। আর সেজন্য প্রয়োজন নারীকে পরিপূর্ণ দ্বীনি শিক্ষাতে শিক্ষিত করা। 

সামাজিক অবক্ষয় এবং নৈতিক বিপর্যয় থেকে মুসলিম উম্মাহর ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য এবং নারীকে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ নিয়ে ২০০০ সালের শুরুতে রাজধানীর উপকন্ঠে তামীরুল মিল্লাত ট্রাস্ট সূচনা করেন তামীরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদ্রাসা। তারই ফলশ্রুতিতে ঢাকার অদূরে মাতুয়াইল চিটাগাং বিশ্ব রোডের পাশে মনোরম পরিবেশে আবাসিক সুযোগ সুবিধেসহ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তামীরুল মিল্লাত মহিলা কামিল মাদ্রাসা। যুগের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে দাখিল ও আলিম স্তরে বিজ্ঞান এবং আইসিটি বিভাগ ও কামিল এম.এ শ্রেণীতে হাদীস, তাফসীর এবং ফিকহ বিভাগ চালু করেছে।

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১০ সাল থেকে চার বছর মেয়াদী ফাযিল সম্মান অনার্স কোর্স চালু করেছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল পরীক্ষায় তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সাফল্য উল্লেখযোগ্য। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সেরা ১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রতিষ্ঠানটি সকলের শীর্ষে থাকার গৌরব লাভ করতে সক্ষম হয়েছে।

তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা তারা কঠোরভাবে তাদের মাদ্রাসার নিয়ম-কানুন বজায় রাখে আর ইসলামি এবং একাডেমিক ভিত্তিতে তাদের ছাত্রদেরকে শিক্ষা প্রদান করে। তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা ক্ষমতা অসাধারণ ও চমৎকার। তারা পুরুষ এবং মহিলা উভয় ছাত্রদের উচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানের পুরুষ মাদ্রাসা অবস্থিত টঙ্গী গাজীপুর ও আরেকটি মহিলাদের জন্যে যা ডেমরার মাতুয়াইলে অবস্থিত। এই মাদ্রাসাটির উভয় বিভাগই চমৎকার পারফর্মেন্স দেখিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক

৯। ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা

উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম বিশিষ্ট দার্শনিক হযরত মাওলানা আজিজুর রহমান নেছারাবাদী কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) ১৯৫৬ সালে এই ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৫৬ সালে ঝালকাঠি পৌর এলাকার বাসন্ডা গ্রামে একটি ক্ষুদ্র মক্তব হিসেবে যাত্রা শুরু করে আজকের এই ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসাটি। কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) এর জীবদশায় ঝালকাঠি মাদ্রাসাটির দ্রুত প্রচার-প্রসার লাভ করতে শুরু করে। বর্তমানে সময়ে কালের পরিক্রমায় বরিশাল বিভাগের মাঝে ঝালকাঠি এনএস মাদ্রাসাটি একমাত্র অনার্স এবং মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপ লাভ করছে।

১৯৯৪ সালে হুজুরের অনুমতিতে তার একমাত্র সন্তান ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থায় সর্বচ্চো শিক্ষালাভকারী, পীরজাদা মাওলানা খলিলুর রহমান নেছারাবাদী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরেই অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান মাদ্রাসার পরিচালনা পদ্ধতির আমুল পরিবর্তন নিয়ে আছেন, মাদ্রাসাটি আধুনিকায়ন এবং যুগপোযুগী শিক্ষাপদ্ধতি গ্রহণ করলে ক্রমেই ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসার মধ্যে একটি সেরা মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন।

সে সঙ্গে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি, শিক্ষকমন্ডলীগণ, কর্মকর্তা কর্মচারী সহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং শুভাকাঙ্খিদের কার্যকর সহযোগীতা ও বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করে ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। পিতার প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরো বেশি উন্নত করতে তিনি দেশের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে তথ্য কালেক্ট করে তাদের থেকে সুচারু পদ্ধতিতে পড়াশোনার মান উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালানোর কারণে ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসায় পরিণত করতে সফল হয়।

বর্তমান সময়ে দাখিল ও আলিমে বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও ফাযিলে ২টি বিষয়ের উপর অনার্সসহ কামিলে হাদীস, তাফসীর এবং ফিকহ বিভাগ নিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বেশি ছাত্রের পদচারণায় মূখরিত ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসাটি। বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের ধারাবাহিকভাবে দেশ সেরা ফলাফল লাভ করার মাধ্যমে একটি ইর্ষণীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিগণিত হয়েছে।

ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসাটি রাজনীতিমুক্ত, ক্লাস টেস্ট, সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণ, দুর্বল ছাত্রদের জন্য ফিডব্যাক ক্লাস এবং শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের কারণে ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী এনএস কামিল মাদ্রাসা ফলাফলের দিকে প্রতি বছর শীর্ষস্থান অর্জন করছে। এছাড়াও আবাসিক ছাত্রদের জন্য টিউটর শিক্ষকের ব্যবস্থা, ঘণ্টাওয়ারী মনিটরিং এবং অভিভাবক সম্মেলনসহ অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনার কারনে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাসমূহে এই প্রতিষ্ঠান বারবারই গৌরবোজ্জল সাফল্য অর্জন করেছে।

১০। আল জামিয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফেনী

আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী কামিল মাদ্রাসা। তবে অনেকে এই মাদ্রাসাটি সংক্ষেপে ফালাহিয়া মাদ্রাসা নামেও চিনে। ফলাফলের দিক থেকে এই আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা ফেনী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগে শীর্ষে স্থান অর্জন করে থাকে এবং পুরো বাংলাদেশে মাদ্রাসার তালিকার শীর্ষে ২০ নাম্বারে অবস্থান করে। ২০১৮ সালে এই আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসা ফলাফলের দিক থেকে দাখিল পরীক্ষায় ফেনী জেলায় ১ম স্থান অর্জন করে।

ফেনী শহরের প্রাণকেন্দ্রে কুমিল্লা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ফালাহিয়া লেনে মনোরম পরিবেশে ১০০ শতাংশ জমি নিয়ে এই আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসাটি অবস্থিত। শহরের ০ পয়েন্ট দোয়েল চত্ত্বর থেকে মাদ্রাসাটির দূরত্ব শুধুমাত্র দেড় কিলোমিটার। ১৯৭৮ সালে ফেনী জেলায় ইসলামী শিক্ষার বিস্তারের জন্যে আজকের এই আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসাটিলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০০ সালে মাদ্রাসাটি সরকারি ভাবে স্বীকৃতি অর্জন করে। উচ্চ শিক্ষা ফাজিল এবং কামিল পরীক্ষার জন্যে ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অধিভুক্তি লাভ করে। তারপরে ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে সকল আলিয়া মাদ্রাসার সাথে এই আল জামেয়াতুল ফালাহিয়া কামিল মাদ্রাসাটিও আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি অর্জন করে।

১১। ছারছীনা দারুস সুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা, পিরোজপুর

ছারছিনা দারুস সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা বাংলাদেশে অন্যতম একটি সেরা ইসলামী বিদ্যাপীঠ। ছারছিনা দারুসসুন্নাত কামিল মাদ্রাসা তবে মাদ্রাসাটি সারা দেশে শর্ষিনা দারুসসুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা নামেও বেশ পরিচিত। পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি থানায় ছারছিনা গ্রামে ১৯১৫ সালে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃত টাইটেল (কামিল) মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসা ফলাফলের দিক থেকে সর্বদাই দেশের শীর্ষে স্থানে থাকে। এই মাদ্রাসা নীতি নৈতিকতা এবং আকীদা বিষয়ের উপরে জোর দেয়ার জন্য সারা দেশে বিখ্যাত। এই মাদ্রাসা থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০ জন ছাত্রের বেশি বোর্ড স্ট্যান্ড করছে।

১২। চুনতী হাকিমীয়া কামিল মাদরাসা, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম

১৩। কাদেরীয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া মাদরাসা, ঢাকা

১৪। বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসা, চট্টগ্রাম

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে এই ছিলো বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। আপনার বন্ধুবান্ধবদের মাঝে কারো না কারো বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন হতে পারে। তাই পোস্টটি আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করুন ও তাদেরকে বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদ্রাসা সম্পর্কে জানিয়ে দিন।

আরও পড়ুনঃ জুমার দিনের আমল ও ফজিলত | জুম্মার দিনের আমল ও ফজিলত 

তথ্যসূত্রেঃ Wikipedia

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)