বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক

বাংলাদেশের সেরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট | বাংলাদেশের সেরা পলিটেকনিক সমূহ — প্রযুক্তিগত শিক্ষা হচ্ছে জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থার থেকে আলাদা। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ক্যারিয়ারের অনুশীলনগুলো শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়গুলোতে সাধারণত ইনস্টিটিউট বা কলেজে অন্তর্ভুক্ত করে। এখানে বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত অনেক সরকারি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট এবং কলেজ রয়েছে। দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির অন্যতম কারণ কারিগরি শিক্ষা। যাতে করে বাংলাদেশ সরকার পেশাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় আরো বেশি করে উন্নয়নের জন্য আগ্রাসীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকের এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছেঃ

বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের সেরা ও প্রাচীনতম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবস্থিত। বর্তমানে মোঃ জাকির হোসেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ। এই পলিটেকনিক ইন্সিটিউটতে বর্তমানে অনেক কয়টি বিভাগ চালু রয়েছে যেমনঃ কম্পিউটার টেকনোলজি, সিভিল টেকনোলজি, ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি, ফুড টেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল টেকনোলজি, অটোমোবাইল টেকনোলজি ইত্যাদি। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১৯৫৫ সালে মাত্র ১২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের সেরা ১০ টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর মধ্যে একটি।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা মাদ্রাসার তালিকা

ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বিশেষত শুধুমাত্র ছাত্রীদের জন্য এবং বাংলাদেশে এটি ছাত্রীদের জন্য প্রথম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মহিলাদের শিক্ষার দিকে একটি নতুন দিগন্ত শুরু করেছে। এটি ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই ইনস্টিটিউটে আর্কিটেকচার টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, ইলেক্ট্রা-মেডিকেল টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, যন্ত্র এবং প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি, পর্যটন এবং আতিথেয়তা প্রযুক্তি প্রভৃতি বিভাগ রয়েছে। এই ইনস্টিটিউট শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত, ঢাকা ১২০৭। মহেন্দ্র কুমার সিকদার ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বর্তমান অধ্যক্ষ।

বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের একটি পুরনো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। তাদের বর্তমান অধ্যক্ষের নাম ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জয়নাল আবদিন এটি ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই ইনস্টিটিউটে সিভিল টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি এর মতো অনেক বিভাগ রয়েছে।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের অন্যতম সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান। এই ইনস্টিটিউট রাজশাহীর সপুরায় অবস্থিত এটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটির 14.69 একর বিস্তৃত ক্যাম্পাস ও ৭টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপার্টমেন্ট গুলোর নাম হলো সিভিল টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি, পাওয়ার টেকনোলজি, ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, মেকাট্রনিক টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি। বর্তমানে মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ মল্লিক রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ। 

বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একটি বড় এবং সুপরিচিত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এই ইনস্টিটিউটে মোট ছয়টি বিভাগ রয়েছে যেমন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন সিভিল টেকনোলজি, কনস্ট্রাকশন টেকনোলজি, ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি। এটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মো আনোয়ার হোসেন এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষ। এটি রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে অবস্থিত।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে অবস্থিত। তাদের বর্তমান অধ্যক্ষের নাম সাওকাত-উল-ইসলাম। এই প্রতিষ্ঠানটি ৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর 20 একর জমি রয়েছে। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অনেক বিভাগ রয়েছে যেমন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার টেকনোলজি, ডিপ্লোমা ইন ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ক্যান্সার হাসপাতাল

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হচ্ছে বাংলাদেশের রংপুরের একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি দেশের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহত্তম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি রংপুর বিভাগের রংপুর শহরের জুম্মাপাড়াতে অবস্থিত। রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিপরীতে বিভাগীয় কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অবস্থিত।

১৮৮২ সালে প্রযুক্তি শিক্ষায় দক্ষ জনসম্পদ তৈরীর করার লক্ষে ‍“বেইলী ব্রীজ গোবিন্দ লাল টেকনিক্যাল স্কুল” নামে আজকের এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে আইয়ুব খান সরকার কর্তৃক গৃহীত ৭ ধাপ কর্মসুচিতে সিভিল এবং পাওয়ার টেকনোলজি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ‍“রংপুর টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট”। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে মেকানিক্যাল এবং ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি অন্তর্ভুক্ত করে নতুন নামকরণ করা হয় ‍“রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট"। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে কম্পিউটার টেকনোলোজি এবং ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ইলেক্ট্রোমেডিক্যাল টেকনোলজি অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রসারিত করা হয়েছে।

রংপুর পলিটেকনিকের মূল ক্যাম্পাসে রয়েছে ৩ তলা বিশিষ্ট ২ একাডেমি ভবন, অফিস, লাইব্রেরী, আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ওয়ার্কশপ ভবন, জিমনেশিয়াম এবং ল্যবরেটরী এবং একটি ৫০০ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অডিটোরিয়াম। এছাড়াও এই ক্যাম্পাসে রয়েছে মসজিদ এবং শহীদ মিনার। প্রতিষ্ঠার প্রথম বর্ষে মাত্র ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং ৪টি প্রযুক্তি (সিভিল, ইলেট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল এবং পাওয়ার) নিয়ে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু হয়েছিল। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানে ৪ বছর মেয়াদি কোর্সে ৭টি বিভাগ চলছে। এখানে প্রতিটি বিভাগে দুটি করে শিফট চলমান এবং প্রতিটি শিফটে ৬০ জন করে মোট ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়।

রংপুর পলিটেকনিকের দুইটি বৃহৎ খেলার মাঠ রয়েছে। যার একটি কলেজের ভিতরে, অপরটি কলেজের বাইরে তিস্তা ছাত্রাবাসের সামনে। ছাত্রদের জন্য রয়েছে দুইটি এবং মেয়েদের জন্য একটি আবাসিক হল। তিস্তা ছাত্রাবাস, শাহজাহান কবির ছাত্রাবাস, তাপসী রাবেয়া ছাত্রীনিবাস। শাহজাহান কবির ছাত্রাবাসে মেধাক্রম অনুযায়ী ছাত্রদের চান্স দেওয়া হয়।

কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

এই ইনস্টিটিউটটি কুষ্টিয়ার অরুপাড়ায় অবস্থিত। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের ৪৯টি পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এটি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আজকাল এই ইনস্টিটিউটের সারা বাংলাদেশে বেশ সুনাম রয়েছে। বিভাগের নাম হলো- ডিপ্লোমা ইন সিভিল টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি, পাওয়ার টেকনোলজি। মোঃ লুৎফর রহমান এই ইনস্টিটিউটের বর্তমান অধ্যক্ষ।

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একটি অতি পরিচিত প্রতিষ্ঠান। এবং এটি দেশের সেরা প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান। এর অনেক বিভাগ আছে যেমন সিভিল টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি, ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি, পাওয়ার টেকনোলজি। সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সুশান্ত কুমার বসু সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ। এটি সিলেটের বড়াই কান্দিতে অবস্থিত।

ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মধ্যম পর্যায়ের প্রকৌশলীর জন্য। এটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ময়মনসিংহের মাসকান্দায় অবস্থিত। মোঃ ফরিদ উদ্দিন এই ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ।

পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পাবনায় অবস্থিত। এটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মোঃ শাজাহান আলী পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বর্তমান অধ্যক্ষ। তাদের বিভাগের নাম সিভিল টেকনোলজি, কনস্ট্রাকশন টেকনোলজি, ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, কম্পিউটার টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজি। এটি সর্বশেষ বাংলাদেশের সেরা ১০ টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর একটি।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)