সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে জেনে নিন

সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে জেনে নিন - সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে কি কি দেখে কিনবেন? আপনার বাজেটে যদি একটি নতুন ল্যাপটপ পছন্দ না হয়, তাহলে আপনি কিনে ফেলতে পারেন একটি পুরাতন/সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ অনেক কম দামে। কিন্তু আপনি যখন একটি পুরাতন ল্যাপটপ কিনতে যাবেন তখন অবশ্যই সেটা ঠিক ভাবে কাজ করে নাকি দেখে নিবেন। পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে যেসব জিনিস দেখে নেয়া অত্যন্ত জরুরী সেগুলি হলঃ

সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে

পেজ সূচীপত্রঃ সেকেন্ড হ্যান্ড ল্যাপটপ কেনার আগে

১। ল্যাপটপের স্ক্রীন

সম্ভবত এটি সবচেয়ে জরুরী জিনিস যেটা ল্যাপটপ কেনার আগে দেখা উচিত। কারণ আমরা সবসময় এই স্ক্রীনের দিকেই তাকিয়ে থাকবো, কিন্তু আমরা অনেকেই এটিকে তেমন গুরুত্ব দেইনা। আপনার ল্যাপটপের স্ক্রীন যদি কোনোভাবে ভেঙ্গে যায় তাহলে সেটা সারানো সবচেয়ে ব্যয়বহুল। আপনি যদি অনেক কম দামে ল্যাপটপ পেতে চান তাহলে স্ক্রীনে সমস্যা সহ ল্যাপটপ কিনতে পারেন, কিন্তু অবশ্যই সেই সমস্যা যেন খুব বেশি না হয়। 

যেমন, কোন ল্যাপটপের স্ক্রিন যদি সামান্য কোন কাজ না করে তাহলেও আপনি তা দিয়ে আপনার কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন, অথবা যদি স্ক্রীনের ব্রাইটনেস অনেক কম হয় তাও কাজ চালানো যায় বেশিরভাগ সময়। যদি স্ক্রীনের সমস্যা সহ কিনতে আপনার আপত্তি থাকে, তাহলে আগে অবশ্যই জেনে নিন স্ক্রীনের সমস্যাটি কি, না হলে পরে আপনার পকেট থেকে অনেক টাকা চলে যেতে পারে সেটি ঠিক করাতে। আর যদি আপনি স্ক্রীনের কোন সমস্যা ছাড়া ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে কেনার আগে অবশ্যই সেটা চালিয়ে ঠিক মত যাচাই করে নিন।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল কেনার আগে যা জানা দরকার

২। প্রসেসর

ল্যাপটপ কেনার আগে প্রসেসরটিও দেখে নিন। আপনার যদি স্লো কম্পিউটার পছন্দ না হয় তাহলে ভালো প্রসেসরের ল্যাপটপ কিনুন, যেমন কোর টু ডুও, কোর আই ৩, কোর আই ৫, কোর আই ৭, কোর আই ৯ ইত্যাদি।

৩। কীবোর্ড

কীবোর্ডও ল্যাপটপের অনেক জরুরী একটি অংশ, যদিও এটি বদলাতে তেমন খরচ পরে না, কিন্তু বদলানোটাই তো ঝামেলার কাজ, তাই আগেই দেখে নিন ঠিক আছে কিনা কীবোর্ডটি। কম ব্যবহৃত কীগুলোর একটি দুটি কম কাজ করলে বা কাজ না করলেও তেমন সমস্যা হয় না, কিন্তু খেয়াল রাখবেন বেশিরভাগ কীতে যাতে এই সমস্যা না থাকে। 

মাঝে মাঝে অনেক কী চাপতে অনেক জোড় দেয়া লাগে, আপনার ল্যাপটপটির ক্ষেত্রে এমন হচ্ছে নাকি দেখে নিন, কয়েকটাতে সমস্যা থাকলেও জরুরী কীগুলিতে যাতে এই সমস্যাটি না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

অনেক সময় একেক ল্যাপটপের কী এর ফরম্যাট একেক রকম হয়, কীবোর্ড ছোট বা বড় করার জন্য অনেক সময় অনেক কী বাদ দেয়া হয় বা যোগ করা হয়। তাই দেখে নিন আপনি যেটি কিনতে যাচ্ছেন সেটির ফরম্যাট কি আপনার পছন্দ হয় নাকি, আপনি সেই ফরম্যাটে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন কিনা।

কীবোর্ডের সাথে সাথে টাচপ্যাডটি ঠিক মত কাজ করছে কিনা তাও দেখে নিন। অনেক সময় ল্যাপটপের টাচপ্যাড কাজ করে না এবং আলাদা মাউস ব্যবহার করা লাগে, আপনি যেটি কিনবেন সেটি ভালোভাবে আগে চালিয়ে দেখে নিন।

আরো পড়ুনঃ পুরাতন ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয়

৪। ব্যাটারি

বেশিরভাগ পুরাতন ল্যাপটপেই ব্যাটারি অনেক দুর্বল থাকে বা নষ্ট থাকে। কেনার আগে তাই অবশ্যই জেনে নিন পাওয়ার কর্ড ছাড়া ল্যাপটপের চার্জ কতক্ষন থাকে। আপনার যদি পাওয়ার কর্ড ছাড়া তেমন ব্যবহার করা না লাগে, তাহলে আপনার নতুন ব্যাটারি না কিনলেও চলবে, আপনি ল্যাপটপের সাথের কর্ড দিয়েই কাজ চালাতে পারবেন। কিন্তু আপনার যদি ল্যাপটপটি পোর্টেবল হিসেবে ব্যবহার করা লাগে। তাহলে অবশ্যই আগে ব্যাটারির অবস্থা জেনে নিন এবং বদলানো লাগলে খরচ কেমন পড়বে তাও জেনে নিন আগেই।

৫। ব্যাটারি চার্জার বা পাওয়ার অ্যাডাপ্টার

ব্যাটারি ঠিক মত চলছে নাকি জানার চেয়ে চার্জার ঠিক মত চলছে নাকি সেটা জানা বেশি জরুরী। কারণ ব্যাটারির চার্জ যখনি শেষ হোক আপনাকে সেটি রিচার্জ অবশ্যই করতে হবে। তাই চার্জারটি বা অ্যাডাপ্টারটি ঠিক আছে কিনা তা অবশ্যই আগে দেখে নিন। কিছু কিছু ল্যাপটপের অ্যাডাপ্টার ইউনিভার্সাল হয় না, সেই ক্ষেত্রে আপনি যেটি কিনতে যাচ্ছেন সেটা কি আপনি চালাতে পারবেন নাকি অবশ্যই দেখে নিন।

৬। হার্ড ড্রাইভের সাইজ

আপনি যেই ল্যাপটপটি কিনতে যাচ্ছেন সেটির হার্ড ড্রাইভের সাইজ দেখে নিন আগেই, কারণ আপনার যদি অনেক ডেটা স্টোর করা লাগে এবং হার্ড ড্রাইভে জায়গা কম থাকে তাহলে আপনার আবার আলাদা করে হার্ড ড্রাইভ কেনা লাগতে পারে। তাই বেশি জায়গার হার্ড ড্রাইভ সহ ল্যাপটপ কেনাই ভালো। 

৭। মেমোরি সাইজ

হার্ডড্রাইভে অনেক জায়গা থাকলেও অনেক সময় দেখা যায় র‍্যাম কম থাকার কারণে আপনার ল্যাপটপ অনেক স্লো হয়ে যায়। কিন্তু র‍্যাম আপগ্রেড করা হার্ডড্রাইভ আপগ্রেড করা থেকে সহজ, তাই কম মেমোরির ল্যাপটপ কিনলেও আপনি পরে র‍্যাম বদলে আপনার ল্যাপটপের মেমোরি বাড়াতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ নতুন ল্যাপটপ কেনার পর করণীয়

৮। স্পিকার

ল্যাপটপের স্পিকারটি ঠিক আছে নাকি দেখা অনেক জরুরী। গান শুনতে বা মুভি দেখতে স্পিকার লাগে আমাদের। অনেক সময় স্পিকারের আওয়াজ স্পষ্ট থাকে না, বা ফাটা থাকে, সেটি আগেই দেখে নিন। হেডফোনের পোর্ট, ইউএসবি পোর্ট ও অন্যান্য পোর্টগুলোও ঠিক মত কাজ করছে নাকি চালিয়ে দেখে নিন।

৯। ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, ওয়েবক্যাম

ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই, ওয়েবক্যাম এগুলি ঠিকমত কাজ করছে নাকি দেখে নিন। আজকাল অনেকেই ওয়াই-ফাই দিয়ে নেট কানেক্ট করে থাকেন, তাই এটি ঠিক থাকা অত্যন্ত জরুরী। ব্লুটুথও কাজ করছে নাকি দেখে নিন। ওয়েবক্যামটি চলে নাকি দেখে নিন কেনার আগে।

১০। অপারেটিং সিস্টেম/ সফটওয়্যার

ল্যাপটপ চালাতে গেলে অবশ্যই একটি অপারেটিং সিস্টেম (যেমন- উইন্ডোজ, লিনাক্স ইত্যাদি) দরকার। বিভিন্ন সফটওয়্যারও দরকার হয় সেই সিস্টেমটি চালাতে গেলে। আপনি যেটি কিনবেন সেটাতে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করা আছে নাকি দেখে নিন। যদি না থাকে তবে বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করে নিন তার কাছে অরিজিনাল ডিস্ক আছে নাকি, যদি না থাকে তাহলে আপনার আলাদা করে ইন্সটলেশন ডিস্ক কেনা লাগতে পারে।

এ সব কিছু বাদেও আরও কিছু জরুরী জিনিস আছে, যেমন আপনার এই ব্র্যান্ডটি পছন্দ কিনা, এই ডিজাইনটি পছন্দ হচ্ছে কিনা, বা এই ল্যাপটপটি কি আপনার ভালো লাগছে কিনা ইত্যাদি। সব কিছু বিবেচনা করে যেই ল্যাপটপটি আপনার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে হবে এবং আপানার পছন্দসই হবে সেই ল্যাপটপটিই আপনার কেনা উচিত।

আরো পড়ুনঃ

পোষ্ট ক্যাটাগরি: