ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়ানোর উপায় | মোবাইলে ওয়াইফাই স্পিড বাড়ানোর উপায়

ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়ানোর উপায় — টেকনোলজির উৎকর্ষতায় বর্তমানে ইন্টারনেট আমাদের সবার হাতের নাগালে। বর্তমানে অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য বাসা-বাড়িতে ব্রডব্যান্ড সংযোগ নিয়ে রাউটারের মাধ্যমে ওয়াইফাই ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও বাসা-বাড়ি কিংবা অফিস সকল ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় যে, বাসা-বাড়ি এবং অফিসের সকল ডিভাইসগুলো সঠিক ভাবে ইন্টারনেট স্পীড পাচ্ছেনা। 

আর আমরা আজকের এই আর্টিকেলে গুরুত্বপূর্ণ ৫টি টিপস শেয়ার করেছি যেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার বাসা-বাড়ি এবং অফিসের ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়িয়ে নিতে পারবেন। ওয়াইফাই সংযোগের গতি শুধুমাত্র ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের সমস্যার কারনে কমেনা। ওয়াইফাই গতি ঠিক রাখার জন্য নিজেদেরও কিছু করণীয় আছে।

ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়ানোর উপায়

রাউটার বাড়ির মাঝখানে রাখুন

বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের মাঝখানে উঁচু কোন জায়গাতে রাউটার রাখার স্থাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞরা। যদি দেওয়াল পেরিয়ে ওয়াইফাই সিগন্যাল পাওয়ার প্রয়োজন থাকে, তাহলে ওয়াইফাই রাউটারে এন্টেনাগুলোকে সরল কোণে রাখতে হবে। ইট কিংবা কংক্রিটে বানানো মোটা দেওয়াল গুলো থেকে ওয়াইফাই রাউটারকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করুন।

ওয়াইফাই সংযোগ নেয়ার সময়ে তারের পরিমাণ কম রাখার জন্য জানালার আশেপাশে ঘরের এক কোণায় রাউটার রেখে দেয়া একটি ভুল সিদ্ধান্ত। সবথেকে ভালো ওয়াইফাই সিগন্যাল পাওয়ার জন্য রাউটারকে বাড়ির মাঝখানের ঘরে রেখে দিন। অবশ্যই মনে রাখবেন, ওয়াইফাই ওমনি-ডিরেকশনালি ছড়ায়। অর্থাৎ চোঙ থেকে শব্দ যেভাবে বাহির হয়ে থাকে অনেকটা সেই ভাবে রাউটারকে কেন্দ্র করে সিগন্যাল ছড়াতে থাকে। তাই ঘরের এক কোণায় রাউটার রাখলে অর্ধেক সিগন্যাল বাড়ির বাহিরে চলে যায়। যার কারণে ওয়াইফাই স্পীড এমনিতেই কম পাবেন।

আরও পড়ুনঃ ওয়াইফাই কি | ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে | ওয়াইফাই ব্যবহারের সুবিধা

চোখের উচ্চতায় রাউটার রাখুন 

মাটি থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় ওয়াইফাই রাউটারটি স্থাপন করলে সিগন্যাল সবথেকে ভালো হয়। মোটামোটি আপনার চোখের উচ্চতায় রাউটারটি স্থাপন করুন। সিগন্যালে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন কোন ডিভাইসের সাথে ওয়াইফাই রাউটারটি রাখবেন না। যেমনঃ মাইক্রোওয়েভ, কর্ডলেস ফোনের বেস, প্রিন্টার, অন্য কোনো রাউটার ইত্যাদি।

কম ডিভাইসে ওয়াইফাই ব্যবহার করুন

ওয়াইফাই কানেকশনের ডিভাইস সংখ্যা সীমিত আকারে দিন। বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান কিংবা পার্টি আছে। সেই সময় বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়- স্বজন সকলেই আসছেন। আর ঘরে থাকা সকল ডিভাইস কিংবা আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বন্ধুদের ডিভাইস গুলোতে সংযোগ দিলে ইন্টারনেট স্পীড ধীরগতির হবে। মনে রাখবেন এক সাথে বেশি ডিভাইসের সাথে সংযোগ দিলে ওয়াইফাই স্পীড অত্যন্ত কমে যাবে। 

বর্তমান সময়ের রাউটার গুলোতে ডিভাইস ব্লক করার অপশন আছে। যদি দেখেন কোনো একটি ডিভাইস বেশি পরিমাণে ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করছে, তবে সেই ডিভাইস ব্লক করে দিন। শুধুমাত্র ইন্টারনেট সার্ফ করার জন্য ওয়াইফাই ব্যবহার করতে বলুন। যদি কেউ কোনো কিছু ডাউনলোড করতে চায়, তবে তাকে অপেক্ষা করতে বলুন অথবা নিষেধ করে দিন।

রিপিটার ব্যাবহার করুন

আপনার ওয়াইফাই গতি বেশ কিছুটা বাড়িয়ে দিবে রিপিটার ব্যাবহার। বর্তমান সময়ে মার্কেটে এবং অনলাইন বিভিন্ন শপিং ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের রিপিটার আপনারা পেয়ে যাবেন। ওয়াইফাই রিপিটারের মূল্য মোটামুটি ১০০০ হাজার টাকা থেকে ২০০০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো রিপিটার পেয়ে যাবেন। রিপিটার কনফিগার করাটাও খুবই সহজ। আপনার বাড়িতে যদি কোনো পুরাতন কোনো ভালো ওয়াইফাই রাউটার থাকে তবে আপনি সেটাকে রিপিটার হিসেবে ব্যাবহার করতে পারবেন। তবে এই কাজটি করার জন্য সেটিং অপশনে গিয়ে কনফিগার করার প্রয়োজন হবে। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা পরবর্তীতে ইনশাআল্লাহ ওয়াইফাই রাউটার রিপিটার হিসেবে ব্যাবহার করার পদ্ধতি সম্পর্কে লিখবো।

আরও পড়ুনঃ WiFi পাসওয়ার্ড বের করার উপায় জেনে নিন 

ফ্রিকুয়েন্সি দেখে রাউটার কিনুন

বেশিরভাগ ওয়াইফাই রাউটার 2.4GHz ও 5GHz ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডে চলে। ৫ গিগাহার্জের ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ডের রিচ কম হলেও সংযোগের বাধা কম হয়। তবে হ্যাঁ ২.৪ গিগাহার্জের সংযোগের বাধা বেশি হয়। তাই যদি আপনি ওয়াইফাইয়ের গতি বাড়িয়ে নিতে চান তাহলে ৫ গিগাহার্জের ওয়াইফাই রাউটার ব্যাবহারের করার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার ইন্টারনেটের স্পিড যেমন বৃদ্ধি পাবে এবং কানেকশন বাধা কম হবে। 

মনে রাখা ভালো স্বল্প দূরত্বে 5GHz রাউটার বেশি কার্যকর। দূরত্ব কম হলেও স্পীড বেশি পাওয়া যায় এই কম্পাঙ্কে। একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ওয়াইফাই সিগন্যালের জন্য সবথেকে বড় বাধাগুলোর মাঝে অন্যতম বাধা হচ্ছে পানি এবং জানালা। আশপাশে পানির পাইপ থাকলে সেটা স্লো করে দিতে পারে ওয়াইফাইয়ের স্পীড।

রাউটার হার্ডওয়ার আপগ্রেড করে দেখুন

আউটডেটেড হার্ডওয়ারের কারনেও কিন্ত ইন্টারনেট স্পিড ধীরগতির হয়ে যায়। তাই অবশ্যই অবশ্যই আপগ্রেডেড মডেলের ওয়াইফাই রাউটার ব্যাবহার করার চেষ্টা করুন। পুরাতন রাউটারে ইন্টারনেটে স্পীড ধীর গতির হতে পারে। এছাড়াও অনেক সময় ওয়াইফাইয়ের স্পীড কম হওয়ার কারণ হতে পারে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের দেয়া ওয়াইফাই রাউটারের কারণে। বর্তমান সময়ে বাজারে থাকা সর্বাধুনিক টেকনোলজির রাউটার গুলো ব্যাবহার করে দ্রুতগতির ওয়াইফাই কানেকশন পাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুনঃ ওয়াইফাই সিগন্যাল বাড়ানোর উপায়

পোষ্ট ক্যাটাগরি: