ফ্রিল্যান্সিং কি - ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিং কি - ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো — অনলাইনের মাধ্যমে আয় করার কথা আসলে সর্বপ্রথম ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথাই মাথায় আসে। পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করে আজকাল অনেকেই স্বাবলম্বী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছে। তাছাড়া পার্ট টাইম কাজ হিসেবেও ফ্রিল্যান্সিং অনেক সহায়তা করছে। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করে জীবিকা নির্বাহ করা একটি পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আত্মনির্ভর হয়ে কাজ করা যায়, অন্যের অধীনে কাজ যারা করতে পছন্দ করেন না তারা স্বাচ্ছন্দে ফ্রিল্যান্সিং এর মত কাজ করতে পারেন। নিজের দক্ষতা, মেধা, অভিজ্ঞতা, শিক্ষাগত যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে অন্যের জন্য কাজ করে আয় করাই হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ফ্রিল্যান্সিং যেমন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে তেমনি দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনে ও বেকারত্ব দূর করে থাকে। 

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং শেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কোর্স করাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কোর্স করিয়ে থাকে। নিজের সুবিধা অনুসারে যেকোনো একটি কোর্স বেছে নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা যাবে। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক নলেজ ধাকতে হবে ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকা অবশ্যই জরুরি।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

ফ্রিল্যান্সিং কি

অনলাইন জগতের কাজের ভান্ডার হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। বিভিন্ন ধরনের কাজ ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে করা যায়। যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে থাকেন তাদের ফ্রিল্যান্সার বলা হয়ে থাকে। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্য অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সামান্য নীতিগত কিছু জ্ঞান দ্বারা এ কাজে সফলতা কখনোই আসবেনা। 

একজন প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং এর ওপর যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যে ধরনের কাজের প্রতি আকর্ষণ বা ঝোঁক রয়েছে সেই কাজের উপরই এগিয়ে যেতে হবে। ওয়েব ডেভলপার, ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, কনটেন্ট রাইটার, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সলেটর, মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট যে যেই বিষয়ে দক্ষ তাকে সেই বিষয়ের ওপর ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হবে। 

এতে কাজে নিপুণতা আসবে, একঘেয়েমি কাজ করবেনা বরঞ্চ কাজ করে আনন্দ পাওয়া যাবে। ফ্রিল্যান্সিং খুবই ধৈর্য এবং সময় সাপেক্ষও বটে। মেধা ও শ্রম দিয়ে লেগে থাকলে অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে। ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের লোকের সাথে পরিচয় হয় এবং অন্যের সাথে কমিউনিকেট করার মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠে সুন্দরভাবে। কাজের মাধ্যমে নিজেকে ভালোভাবে যাচাই করে নেয়া যায়। 

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শেখা যাচ্ছে। গুগল যা হচ্ছে জ্ঞান ভান্ডারের মহাসাগর। যার ভিতরে থাকা জ্ঞান সম্পূর্ণ ভাবে আহরণ করা করোর পক্ষেই সম্ভব নয়। যে কোন প্রশ্নের সমাধান গুগলের মাধ্যমে পাওয়া যায়, গুগলে সার্চ করে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখিয়ে থাকে। আজ আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো।

১। ইউটিউব

সোশ্যাল মিডিয়া জগতের সকল সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি কারী আ্যপ হচ্ছে ইউটিউব। ইউটিউবের মাধ্যমে শেখা যায়না এমন কোন কাজ নেই। রান্না থেকে শুরু করে হাতের কাজ, ব্যক্তি জীবনে প্রয়োজন বিভিন্ন কাজের থেকে নিয়ে সকল ধরনের সকল প্রকারের কাজের বা প্রয়োজনের ভিডিও টিউটোরিয়াল বিদ্যমান রয়েছে ইউটিউবে। 

ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের চ্যানেল রয়েছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভিডিও ক্লাস দেয়া আছে। এই ক্লাসগুলো দেখে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে হাতে খড়ি নিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের চ্যানেলে ভিন্ন ভিন্ন কাজের উপর বিভিন্ন ধরনের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা আছে। যার যে ধরনের কাজের ভিডিও দরকার সে সেই অনুযায়ী ভিডিও সার্চ করে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে নিচ্ছে। 

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইনিং, ওয়েব ডেভলপমেন্ট সহ আরও বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিষয়বস্তুর ওপর ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করা আছে। ঘরে বসে শুধুমাত্র ইন্টারনেট খরচ করে ফ্রিল্যান্সিং ফ্রিতে শেখার সুযোগ রয়েছে ইউটিউব এর মাধ্যমে।

২। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে

এখন অনেক ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং এর কোর্স করিয়ে থাকে, যা ঘরে বসে করাও সম্ভব এবং এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের কিছু ফি দিতে হয়। বিভিন্ন ধরনের কিছু নামকরা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা নিজেরা ফ্রিল্যান্সিং করার পাশাপাশি অন্যদেরকেও ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে শিখিয়ে আয় করছে ও নতুন নতুন ফ্রিল্যান্সার গড়ে তুলছে।

আরো পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইট

৩। IT BARI

২০১৪ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠা করা হয় আইটি বাড়ি। মূলত প্রযুক্তির জ্ঞান মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল এই ওয়েবসাইটটি। শুরুটা ওয়েবসাইট দিয়ে হলেও বর্তমানে আইটি বাড়ি এ দেশের মাটিতে নিজেদেরকে একটি ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে। আইটি রিলেটেড বিভিন্ন বেষ্ট কোয়ালিটির ভিডিও টিউটোরিয়াল সমূহ তাদের রয়েছে, যা দেখে ঘরে বসেই একজন নতুন স্টুডেন্ট কাজ শিখতে পারবে। এসইও, ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন ইত্যাদি রিলেটেড ভিডিও তারা বিক্রি করে থাকেন ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য।

৪। Creative IT Institute

বাংলাদেশ আরেকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হচ্ছে এটি। আন্তর্জাতিক মানের প্রকল্পগুলোর জন্য তারা তাদের ফ্রিল্যান্সারদের সফল ট্রেনিং দিয়ে থাকে। স্বল্পমূল্যে তাদের এখান থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের অনেক ভালো ভালো কোর্স করা সম্ভব। কোর্স গুলো হচ্ছে- গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোশন গ্রাফিক্স, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, 3D অ্যানিমেশন ইত্যাদি।

৫। Softtech-IT Institute

সফটটেক আইটি একটি ফ্রিল্যান্সিং শিক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। তাদের সকল কোর্স ৪ মাস মেয়াদী হয় এবং ৩ মাস কাজ শেখানোর পর এক মাস প্র্যাক্টিকাল কাজ করার মাধ্যমে স্টুডেন্টদেরকে এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

তাদের কোর্স সমূহ হলো- অ্যাডভান্সড ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট অনলাইন, প্রফেশনাল ক্রিয়েটিভ গ্রাফিক ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন অনলাইন, এডভান্স ডিজিটাল মার্কেটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান (এসইও), লারাভেল ও রিঅ্যাক্ট – সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, পিএইচপি, মাইএসকিউএল, ওয়ার্ডপ্রেস উকমার্স থিম ডেভলপমেন্ট ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব

৬। JL OUTSOURCING – Best outsourcing institute in Chittagong

ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং শেখার ওয়েবসাইট এটি | ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং থেকে ভালো আয় করার জন্য পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য JL OUTSOURCING ওয়েবসাইটটিতে বিভিন্ন প্রকার ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করানো হচ্ছে।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস কোর্স, ফ্রিল্যান্সিং গাইডলাইন কোর্স, গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে Fiverr আয়, বেসিক কম্পিউটার কোর্স, নতুনদের জন্য এমএস এক্সেল, মাইক্রোসফট অ্যাডভান্সড এক্সেল কোর্স, এমএস ওয়ার্ড বিগিনার্স কোর্স, এমএস ওয়ার্ড অ্যাডভান্সড কোর্স, মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট কোর্স, ফ্রিল্যান্সিং ডাটা এন্ট্রি কোর্স। 

ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ওয়ার্ডপ্রেস কোর্স সম্পূর্ণ করুন, সম্পূর্ণ জাভা ডেভেলপার কোর্স, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স, ডিজিটাল মার্কেটিং এর মৌলিক বিষয়, ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স, কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স, গ্রাফিক ডিজাইনারের জন্য ফ্রিল্যান্সিং গাইডলাইন, সফট স্কিল ডেভেলপমেন্ট। 

বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ফ্রিল্যান্সারদের আন্তর্জাতিকমানের কাজ করার জন্য বেশ উপযোগী করে তোলে। তাই ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে গড়ে তোলার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর উপর দক্ষতা ও নিপুণতা অর্জন করতে হবে। আশা করি আমাদের আজকের এই ফ্রিল্যান্সিং কি - ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে।

কমন কিছু প্রশ্ন উত্তর (FAQ)

১। ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে

যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং জগতে একেবারে নতুন হয়ে থাকেন তবে আপনাকে এটা শিখতে অনেক পরিশ্রমই করার প্রয়োজন হবে। নির্দিষ্টভাবে কোনো দীর্ঘমেয়াদি কোর্স যদি না করেন তাহলে কিছু একটা করা যাবেনা বলে মনে হয়না। আর এতে আপনার টাকাও বেশি খরচ হবেনা। আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে মার্কেটপ্লেসের যেকোনো কাজের কোর্স করানো হয়ে থাকে। 

তবে হ্যাঁ জেনে রাখা ভালো, কোর্স ভিত্তিক টাকা খরচের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমনঃ  যদি আপনি ওয়েব ডিজাইন শিখেন তবে আপনাকে মিনিমাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ৬ মাস মেয়াদী কোর্স করার প্রয়োজন হবে। এছাড়াও অন্যান্য ক্যাটগরি বিভিন্ন খরছ রয়েছে।

২। ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে কত টাকা আয় করা সম্ভব?

আপনি যদি এই পেশায় দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন তাহলে আমি বলবো ফ্রিল্যান্সিং করে আপনি আপনার একটি সাধারণ সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যদি আপনি মার্কেটপ্লেসে একেবারে নতুন হোন তাহলে শুরুর দিকে আপনি প্রতিমাসে ১০০ ডলার থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। কাজ করতে করতে যখন আপনি অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠবেন তখন আপনি প্রতিমাসে মিনিমাম ১ হাজার ডলার থেকে ১৬০০ ডলার মিনিমাম ইনকাম করতে পারবেন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: