মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকামমোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম ২০২২ - মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার উপায় — কায়িক শ্রমের পাশাপাশি আজকাল মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে। অনেকেই আছেন যারা এখন মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করাকে পেশাতে পরিণত করেছেন। বিভিন্ন ধরনের কাজ করার মাধ্যমে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। ফুল টাইম বা পার্ট টাইম বিভিন্ন ধরনের কাজ করার সুযোগ রয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে। 

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

মোবাইল এমন একটি জিনিস যা সবার হাতের মুঠোয় থাকে এবং এটি দিয়ে কাজ করাও সহজ হয়ে থাকে। মোবাইলের মাধ্যমে কাজ করাকে আজকাল ফ্যাশন আর ট্রেন্ডও বলা চলে। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে শুরু হওয়া এই কাজ এখন পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। এই কাজকে খুব ক্লাসি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নির্দিষ্ট কোন জায়গার বা নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন পড়ে না মোবাইল দিয়ে কাজ করার জন্য। 

যারা বাসার বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারেন না তাদের জন্য একটি মোক্ষম উপায় হচ্ছে মোবাইল দিয়ে ঘরের ভিতরে থেকে কাজ করা। নিজেকে কিছুটা স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়ে ওঠে। আমরা আজকে এমন কিছু কাজের বিষয়ে আলোচনা করবো যা দিয়ে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করা সম্ভব। চলুন তাহলে জেনে নেই মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম বা মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করুন 2022 সম্পর্কে।

১। ইউটিউব - মোবাইল দিয়ে ইউটিউব থেকে ইনকাম

বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব। ছোট থেকে বড়, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ইউটিউবের সঙ্গে পরিচিত। ইউটিউবের ভিডিও গুলো দেখেনি অথবা এই সম্বন্ধে জানে না এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে বর্তমানে। তবে খুব কম সংখ্যক লোকই জানে যে, ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা সম্ভব। ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার পরে সেই ভিডিও গুলোর ভিউয়ের উপর নির্ভর করে আয়ের পরিমাণ। যতবেশি ভিউ বা সাবস্ক্রাইবার ততবেশি আয়। 

বিভিন্ন ধরনের কনটেন্টের উপর ভিডিও আপলোড করে ইউটিউব থেকে সহজেই আয় করা সম্ভব। যে কাজগুলো মোবাইলের মাধ্যমেই করা যায়। মোবাইলে ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য ইউটিউবে আপলোডকৃত ভিডিও দেখতে হবে ৪ হাজার ঘন্টা এবং সাবস্ক্রাইবার সর্বনিম্ন ১০০০ হতে হবে এক বছরে। তাহলেই ইউটিউব থেকে আয় করা সম্ভব হবে। এরপর ভিডিও দেখার সময় ও সাবস্ক্রাইবার বাড়ার সাথে সাথে আয় ও বাড়তে থাকবে।

আরো পড়ুনঃ ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায়

২। ব্লগার - কিভাবে ব্লগার হওয়া যায়

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের জনপ্রিয় মুখ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ব্লগাররা। বিভিন্ন কন্টেন্টের উপর ব্লগ করে ভিডিও তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে সেখান থেকে পাওয়া ভিউ, লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ইত্যাদি দ্বারা আয় করা যায়। বিভিন্ন ফুড ব্লগিং, ট্রাভেল ব্লগিং, বিউটি কন্টেন্ট ব্লগিং, মেকআপ টিউটোরিয়াল, শিক্ষামূলক পোস্ট, শর্ট ফিল্ম, মিমস, ক্রাফট আইটেমস ইত্যাদির উপর ভিডিও করে যারা ব্লগ তৈরি করে তারাই ব্লগার। বর্তমানে ব্লগারদের জনপ্রিয়তা শীর্ষে রয়েছে। এদের আয় ও বাড়ছে সাথে এদের নামের পাশে সেলিব্রিটি তকমাও জুড়ে যাচ্ছে।

৩। আর্টিকেল রাইটিং - আর্টিকেল লিখে টাকা ইনকাম

অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগ সাইটে আর্টিকেল লিখার মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। নিত্য জীবনের বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয়তা উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন আর্টিকেল লেখা হয়ে থাকে। সামাজিক, লাইফ স্টাইল, ধর্মীয়, সাইন্স, ফিকশন, উপন্যাস, কবিতা, গল্প, রেসিপি, রাজনৈতিক, সরকারি বিভিন্ন বিষয়বস্তুর উপর প্রবন্ধ লিখে ব্লগ সাইটে জমা করার মাধ্যমে আয় করা যায়। এতে যেমন অন্যের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার মাধ্যমে উপকার হয়ে থাকে, তেমনি ভাবে আয় করা সম্ভব হয়ে থাকে। তাছাড়া ঘরে বসে বা পার্ট টাইম জব হিসেবেও আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ করা যায়।

৪। ফ্রিল্যান্সিং - ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে প্যাশনেট কাজ হিসেবে ধরা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিংকে। মূলত ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে পুরোটাই অনলাইন ভিত্তিক কাজ। যার কিছু কিছু কাজ মোবাইল দিয়েও করা যায়। ওয়েব ডেভলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সলেটর, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি কাজগুলো ফ্রিল্যান্সিং এর আওতাভুক্ত। আজকাল অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে নিয়োজিত করে নিয়েছে।ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে বিদেশি কারেন্সি অর্জিত করা সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ বাংলা আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইট

৫। ছবি বা ভিডিও বিক্রি করে আয়

এমন অনেক ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ইউনিক ছবি বা ভিডিও এর জন্য বেশ ভালো দাম দিয়ে থাকে। আপনার মোবাইলের ক্যামেরা যদি ভালোমানের হয়ে থাকে তাহলে তা দিয়ে খুব ভালো কিছু ছবি বা ভিডিও তৈরি করে এসব ওয়েবসাইটে বিক্রি করে আয় করা যেতে পারে।

৬। ফেসবুক - ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়

ফেসবুক ই-কমার্স এর মাধ্যমে আয় করার খুব ভালো একটি সুযোগ রয়েছে। এমন লোক খুব কমই দেখা যাবে যার একটি ফেসবুক একাউন্ট নেই। বর্তমানে প্রচলিত ধারা অনুযায়ী সবাই ফেসবুকের সাথে জড়িত, ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের তৈরিকৃত পণ্য অথবা বাইরে থেকে আমদানিকৃত পণ্য বিক্রি করা সম্ভব। অনেকেই আবার ফেসবুকে গ্রুপ বা পেইজের মাধ্যমে আয় করে থাকেন। 

গ্রুপে বেশি সংখ্যক মেম্বার এড হলে এবং পেজে ১০ হাজারেরও বেশি সংখ্যক ফলোয়ার থাকলে ফেসবুক মনিটাইজ করে আয় করা সম্ভব। এছাড়া ফেসবুকে যারা কিছু প্রিয় পরিচিত মুখ রয়েছে তারা অন্যের প্রোডাক্ট প্রমোট করে ভালো টাকা আয় করে থাকেন এর দ্বারা নিজের ও আয় হয় এবং অন্যের প্রোডাক্ট বিক্রি করে উদ্যোক্তার ও আয় বাড়ানো যায়।

৭। অনলাইন টিউশান

অনেকে অনলাইনের মাধ্যমে টিউশন দিয়েও আয় করে থাকেন। এক দেশ থেকে অন্য দেশে, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় অথবা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মোবাইলের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টিউশন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এতে করে বেকারত্ব দূর হচ্ছে এবং যার যে রকম ধরনের টিউশন প্রয়োজন সে সেই ধরণের টিউশনি পাচ্ছে। আরবী, বাংলা, ইংলিশ ইত্যাদি শিখিয়ে আয় করে থাকেন অনেকে। 

এছাড়া ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওয়েব ডেভলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইনিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর কাজ ও অনলাইনের মাধ্যমে শেখানো হয়। কেক বা বিভিন্ন রকম পিঠা থেকে শুরু করে অনেক ধরনের হাতের কাজ, শিল্পকর্ম, আর্ট অনলাইনের মাধ্যমে শিখিয়ে ও আয় করা যায়। বিভিন্ন ধরনের প্রফেশনাল মেকআপ আর্টিস্টরা ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে বিউটি কোর্স করিয়ে আয় করে থাকেন। 

৮। ইনস্টাগ্রাম

ইনস্টাগ্রাম ও আয় করার জন্য খুব ভালো উৎস। বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট বিক্রি করে বা ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে আয় করা যায় এবং যারা প্রমোট বা প্রোডাক্টের ব্র্যান্ডিং করেন তারাও উদ্যোক্তার কাছ থেকে আয় করে থাকেন অনেকটা ফেসবুকের মতোই।

৯। ব্লগিং

ব্লগিং হচ্ছে অনলাইনে মোবাইলের মাধ্যমে আয় করার খুবই ভালো একটি উৎস। নিজের ভালো একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে প্রতিদিন কিছু না কিছু নিয়ে ব্লগ তৈরি করে লেখালেখির মাধ্যমে খুব ভালোভাবে আয় করা যায়। বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি প্রচার বা নিয়মিত বিভিন্ন নিউজ প্রচারের মাধ্যমে ব্লগিং করা যায়। 

টিপস, ট্রিক্স ও বিভিন্ন ধরনের লেখার মাধ্যমে ব্লগিং ওয়েবসাইট টিকে স্বতঃস্ফূর্ত রেখে কাজ করলে ভালো আয় করা সম্ভব। তবে ওয়েবসাইটটিকে স্বতঃস্ফূর্ত রাখার জন্য অনেক সময় প্রয়োজন তাই ধৈর্য্য হারা না হয়ে অনেক সময় নিয়ে এর পিছনে লেগে থাকা প্রয়োজন তাহলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া সম্ভব হবে। একবার যদি ওয়েবসাইটটি রানিং হয়ে যায় তাহলে এর থেকে আয় করা খুব সহজ হয়ে দাঁড়াবে।

১০। অ্যাপ দিয়ে

মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ রয়েছে যা তারা বিভিন্ন ভাবে আয় করা সম্ভব। ফুড ডেলিভারি সার্ভিস অ্যাপগুলোর মাধ্যমে খাবার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আয় হচ্ছে। রাইড শেয়ারিং অ্যাপ এর মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে আয় হচ্ছে। বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য বিভিন্ন অ্যাপ আছে জামা-কাপড় থেকে শুরু করে ঘরের আসবাবপত্র পর্যন্ত অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করা সম্ভব। আজকাল মোবাইলের মাধ্যমে পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয় খুবই সহজেই। তাই যারা পণ্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় হস্তান্তর করে আয় করতে পারে তেমনি ভাবে যারা পণ্যটি ডেলিভারি করেন তারাও এর মাধ্যমে আয় করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।

আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব

১১। রিসেলিং

ব্যবহৃত ভালো পণ্য রিসেল করার মাধ্যমে আয় করা হচ্ছে। ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে গাড়ি, জমি, টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ওভেন, ভালোমানের ড্রেস, ডিজাইনার শাড়ি, গহনা, কিচেন এক্সেসরিজ, খেলনা ইত্যাদি রিসেল করার মাধ্যমে আয় হচ্ছে। পণ্য ঘরে না পড়ে থেকে প্রয়োজন অনুসারে কাজে দিচ্ছে অন্যের, এতে অন্যের উপকারের পাশাপাশি নিজেরও আয় হচ্ছে। 

১২। ভিডিও দেখে বা গেম খেলার মাধ্যমে

অনেক ধরনের অ্যাপ রয়েছে যারা এডভার্টাইজিং দেখার জন্য ও মোবাইলে গেম খেলার জন্য মোবাইল রিচার্জ দিয়ে থাকে। এভাবে ঘরে বসে অনায়াসে কিছু ভিডিও দেখে বা গেম খেলে মোবাইল রিচার্জ পাওয়া সম্ভব।

১৩। ক্রিপ্টো কারেন্সি

ক্রিপ্টো কারেন্সি হচ্ছে ভার্চুয়াল জগতের টাকা। যে টাকা অবশ্য হাতে ছোঁয়া যায় না কিন্তু এর মূল্য অনেক বেশি। ক্রিপ্টো কারেন্সি বিড করে অথবা কিনে রেখে দেয়ার মাধ্যমে টাকা আয় করা সম্ভব। বিড করার পরে অথবা রেখে দিলে কারেন্সির মূল্য বাড়ার সাথে সাথে এক্সট্রা আয় করা যায়। বিটকয়েন হচ্ছে এক ধরনের ক্রিপ্টো কারেন্সি। শুধুমাত্র মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। আপনার অলস সময়কে কাজে লাগান এবং নিজের হাত খরচ নিজেই বের করুন। এতে সময় ও কাটবে এবং আয় ও হবে।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: