সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি?

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি — ডিজিটাল মার্কেটিং করে প্রোডাক্ট প্রচার বা বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটিং প্লাটফর্ম। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্বন্ধে পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাইলে আপনি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে পারেন। কেননা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং রিলেটেড যাবতীয় বিষয়সমূহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

বর্তমানে মার্কেটিং করার জন্যে যতগুলি স্ট্রাটেজি আছে তার মধ্যে থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার স্ট্রাটেজি গুলি ক্রমেই অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তাই যদি আপনি সেই স্ট্রাটেজি গুলোকে ফলো না করেন তবে আপনার প্রোডাক্ট প্রচারে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকবেন। যা ডিজিটাল সময়ে আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এর জন্য মোটেও কোনো সুফল বয়ে আনবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি

কারণ বর্তমান সময়ে যতগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে। সেগুলোর একটিভ ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেখলে আপনি রিতীমত হতবাক হয়ে যাবেন। বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটা জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় বিলিয়ন এর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে।

এখন এই সুযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফ্রমকে কাজে লাগিয়ে যদি আপনি মার্কেটিং করার কৌশলগুলোকে প্রয়োগ করেন তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিয়ে খুব সহজেই আপনার প্রোডাক্টের কয়েকগুন বেশি পরিমাণে সেল বৃদ্ধি করতে পারবেন। যা আপনার মার্কেটিং ক্যারিয়ারকে অন্য লেভেলে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন

তাই আপনারও উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগানো এবং সোশ্যাল মিডিয়াত মার্কেটিং করার জন্যে যতগুলো হিডেন টিপস এন্ড ট্রিকস আছে। সেসকল গুলো ট্রিক্স সম্বন্ধে পূর্নাঙ্গ ধারণা রাখা অতীব জরুরি একটি বিষয়।

আমার আজকের আর্টিকেলটি মূলত সেই উদ্দেশ্য নিয়েই লেখা হয়েছে। আপনার যদি অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে কোনো নলেজ না থাকে অর্থাৎ এই বিষয়ে আপনার জিরো নলেজ থাকে। তাহলে আপনাকে প্রো লেবেলে পৌঁছানোর জন্যে আজকের এই পোস্টটি যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।

[নোটঃ আলোচনা করার পাশাপাশি আজকে এখানে কিছু হিডেন কৌশল সম্বন্ধে জানাবো। যে সকল বিষয় একজন অনলাইন মার্কেটারের ধারনা রাখাটা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়]

তো, এসকল রোবোটিক কথাবার্তা বাদ দিয়ে চলুন তাহলে সরাসরি মূল টপিকে যাওয়া যাক। আর আপনার হাতে শুধুমাত্র ১০টা মিনিট সময় নিয়ে আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়া শুরু করুন। তাহলে আমি কথা দিচ্ছি, আজকের পর থেকে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয়ে আরো অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি

আচ্ছা আপনি মূলত সোশ্যাল মিডিয়া বলতে কি বোঝে থাকেন? সাধারণত অনলাইনে যেসকল সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যম আছে সেই মাধ্যম গুলোকেই বলা হয় মূলত সোশ্যাল মিডিয়া। বিশেষ করে ফেসবুক, লিঙ্কডিন, টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবথেকে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া। যদি আপনি এতটুকু বুঝতে পারেন তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি তা সহজেই বুঝতে পারবেন। তোহ এবার চলুন জেনে নেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? 

বিভিন্ন রকম সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে যখন কেউ মার্কেটিং করে থাকে তখন সেই মার্কেটিং করার পদ্ধতিকে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়াতে (ফেসবুক, কুয়ারা টুইটার, ইউটিউব, লিঙ্কডিন, ইনস্টাগ্রাম) যখন কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় বা পণ্যকে প্রচার করা হয় তখন সেই মার্কেটিং পদ্ধতিকে বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। সেই মার্কেটিং হতে পারে আপনার কোন ব্যবসা অথবা প্রতিষ্ঠানের প্রচার কিংবা প্রসারের জন্যে। অথবা সেটা হতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রোডাক্ট প্রচারের জন্যে।

কিছুই বোঝেন নাই, তাইনা? একটু দেরি করুন, বিষয়টি নিয়ে আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া যাক। তা নাহলে পরবর্তী আলোচনাগুলো আপনি কিছুই বুঝতে পারবেন না। নিচের উদাহরণ পড়ুন—

মনে করুন আপনার একটি Online Shop আছে। সেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিকস সামগ্রী বিক্রি করে থাকেন। এখন আপনি চিন্তা করলেন যে, আপনার সেই অনলাইন শপ সম্পর্কে যেন আরও মানুষ জানতে পারে এবং তারা যেন আপনার ইলেকট্রনিকস পন্য গুলো কিনতে আগ্রহী হয়। সেজন্য আপনাকে Social Media গুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

যেমন ধরুন, আপনি মার্কেটিং করার জন্য Facebook কে বেছে নিলেন এবং ফেসবুকে গিয়ে আপনার পন্যের প্রচার করলেন। যার ফলে কিন্তু অনেক মানুষ আপনার সেই অনলাইন শপ সম্পর্কে জানতে পারবে। সেই সাথে অনেকেই আপনার ইলেকট্রনিক পন্য গুলো কিনতে আগ্রহী হবে। মূলত এই প্রক্রিয়াকে এক কথায় বলা হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

কেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন

আমি ওপরে একটা কথা বলছিলাম যে, বর্তমানে আমরা সবাই ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি। যে সময়টাতে আমরা আমাদের নিজের অজান্তেই সম্পূর্ণভাবে টেকনোলজি নির্ভর হয়ে পড়ছি। আর এই টেকনোলজি নির্ভরতার বেশিরভাগ জুড়ে আছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্ম।

এখন আপনি এই কথার সঙ্গে একমত হতে পারবেন কি-না, সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে আপনি আপনার নিজের দিক থেকেই একটু খেয়াল করে দেখুন। আপনি সকাল বেলা থেকে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত মোট কতবার ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার অথবা ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডয়া প্লাটফর্মে মোট কতবার অথবা কতটুকু সময় ব্যয় করছেন। সেই বসয় কি কখনও খেয়াল করে দেখেছেন?

তবে শুধুমাত্র আপনি নন, বরং আপনার মতো আরো বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষ আছেন, যারা আপনার চেয়েও বেশি সময় ব্যয় করছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। আর যেকোনো প্রতিষ্ঠান অথবা প্রোডাক্ট মার্কেটিং অর্থাৎ প্রোডাক্ট প্রচার করার জন্য আপনাকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। কারণ, যখন আপনার কাছে অনেক বেশি পরিমাণে অডিয়্যান্স থাকবে তখন খুব সহজে আপনার প্রতিষ্ঠানটি প্রসার লাভ করবে। 

আরও পড়ুনঃ ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার উপায়

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা

সুতরাং, আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার চিন্তাভাবনা করেন। তবে আপনি অনেক দিক থেকে লাভবান হবেন। তবে চলুন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সুবিধাগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আপনি মোট ২ ধরনের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। যেমন- ১।Targeted Audience ২। Close To Audience

আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার সময় প্রধানত এই ২টি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। প্রথমত, আপনি খুবই সহজে আপনার আশানুরূপ অডিয়্যান্সকে খুঁজে নিতে পারবেন। কারণ আপনি ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন যে, বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে অনেক বেশি Active User আছে।

দ্বিতীয়ত, আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্যে যেসকল অডিয়্যান্সকে আপনি টার্গেট করবেন, সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফ্রমকে কাজে লাগিয়ে সেই সকল অডিয়েন্সকে খুবই সহজে খুঁজে নিতে পারবেন। যা আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রসার পরিচিতি করার জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রোডাক্ট প্রচার চালানোর জন্যে সবচাইতে বড় টার্গেট হ'ল কাঙ্খিত প্রোডাক্ট কাঙ্খিত অডিয়েন্স কোথায় আছে সেটা খুজে বের করা। অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্টের চাহিদা কোন জায়গায় অথবা প্লাটফর্মে আছে সেটা খুঁজে বের করা। এই কাজটি যদি করতে পারেন তাহলে যেকোনো প্রোডাক্ট মার্কেটিং করা একদম পানির মতো সহজ হয়ে যায়।

মনে করুন, আপনি একজন টি-শার্ট ব্যবসায়ি। এক্ষেত্রে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্স হবে ১৫ বছর থেকে ৩৫ বছরের প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মানুষ। কারণ সাধারণত ১৫ বছর থেকে ৩৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষ টি-শার্ট ব্যবহার করেনা। সো ১৫ বছর থেকে ৩৫ বছর বছরের পুরুষ মানুষ যেখানে বেশি পরিমাণে রয়েছে সেই জায়গাতে আপনার টি-শার্ট এর বিজ্ঞাপন দিতে হবে। তাহলে খুব সহজেই আপনার প্রোডাক্ট প্রচার হবে আর টি-শার্টের সেল ও বৃদ্ধি পাবে।

যেহেতু ফেসবুক হ'ল নতুন জেনারেশনদের আড্ডাখানা। সেহেতু ফেসবুকে আপনার প্রোডাক্টের জন্য কোটি কোটি অডিয়েন্স আছে। সেই সঙ্গে আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিয়েন্সের বয়স থেকে শুরু করে একদম ক্লোজ টু ক্লোজ অ্যাড দেওয়া যায় বলে সহজেই যেকোনো পণ্য কাঙ্খিত ক্রেতার কাছে পর্যন্ত পৌছানো সম্ভবপর হয়।

এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের আরেকটি বড় সুবিধে হ'ল যে, ক্ষুদ্র অথবা মাঝারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজেই কম খরছে তাদের প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিতে পারে। যা অন্যান্য সকল প্লাটফর্ম যেমন- টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন অথবা প্রিন্ট মিডিয়াতে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সহজেই কম খরচে বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভবপর হয়না। কেননা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর থেকে অন্যান্য মার্কেটিং ব্যবস্থাগুলো অনুসরণ করা ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে অনেক ব্যয়বহুল হয়ে দাড়ায়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ভ্যালু কেমন | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয়

ভাই মনে রাখবেন সকল কাজেরই কিন্ত ভ্যালু আছে। আর কোনো কাজের ভ্যালু কেমন, তা আপনাকে নিজ থেকেই খুজে নিতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে কাজ করতে পারেন তবে আপনি যেকোনো কাজের ভ্যালু খুঁজে পাবেন।

মনে করুন, এমন অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র গ্রাফিক্স ডিজাইন করে মাসিক লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। আবার এমন অনেকে আছেন, যারা এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেন) এর কাজ করে নিজের একটা সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারছে। কাজেই ভ্যালু কেমন হবে সেটা আপনার কাজের দক্ষতা ও কোয়ালিটির উপরে নির্ভর করবে।

ঠিক একইভাবে যদি আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন আর সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের স্ট্রাটেজিকে ভালোভাবে বুঝতে পারেন, তবে ইনশাআল্লাহ আপনিও এই কাজের ভ্যালু খুঁজে পাবেন।

কিন্তুু যদি আপনি এই কাজের ডিমান্ড সম্বন্ধে জানতে চান। তবে আমি বলবো, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে সেই রকম ডিমান্ডেবল একটা কাজ। কারণ আমি পূর্বেই বলেছি, আমরা সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে অনলাইন অর্থাৎ প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছি। আর যদি আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনের মাধ্যমেই জীবনে কিছু করতে চান, তবে আপনার জন্য সেটা একদিন সুফল বয়ে আনবেই। তাই কাজের ডিমান্ড অর্থাৎ ভ্যালু নিয়ে কোনো ধরনের চিন্তা না করেই আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কাজে নিজেকে যুক্ত করে নিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়

কেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবেন | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গুরুত্ব

আপনি একটি বিষয় চিন্তা করে দেখুন তো, অনলাইনে এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা ইউটিউব থেকে মাসে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করছে। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে যারা অনলাইন থেকে ইনকাম তো দুরের কথা, তারা বছরের পরে বছর সেখানে শ্রম দিয়ে, কাজ করে নিজের ইউটিউব চ্যানেলটিকে গ্রো করতে পারছেন না। আপনি বলতে পারবেন কি, এই বৈষম্যের মূল কারণ কি?

এর প্রধান কারণ হচ্ছে শেখার প্রক্রিয়া। তারা শুরু থেকে ইউটিউব সম্পর্কে জেনেছে, ইউটিউবের সকল ট্রিকসগুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে পেরেছে। শুধুমাত্র সেই মানুষগুলোই ইউটিউবে সফলতা অর্জন করেছে এবং সেখান থেকে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করে যাচ্ছে।

ঠিক একইভাবে আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করতে চাইবেন। তখনও একইভাবে আপনাকে শুরু থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং প্লাটফর্মকে বুঝতে হবে। কারণ প্রত্যেকটা কাজের জন্য কিছু নিয়ম কানুন আছে।

যখন আপনি সেই কাজগুলো করবেন। তখন আপনাকেও সেই কাজের নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। ঠিক একইভাবে আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করবেন। তখন আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। কেউ আপনাকে হয়তোবা বললো যে, সোশ্যাল মিডিয়াতে মার্কেটিং করলে অনেক বেনিফিট পাওয়া সম্ভব হয়। আর এটা শোনার পরে আপনিও এই কাজের প্রতি হুমড়ি খেয়ে পড়বেন। বিষয়টা আসলে কিন্ত সেই রকম না। 

বরং আপনি যে কাজটি করতে ইছুক, সবার প্রথমে সেই কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। তাই যখন আপনি নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে চাইবেন তখন অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে শিখতে হবে। আপনাকে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোর হিডেন স্ট্রাটেজি গুলোকে খুঁজে নিতে হবে। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কিভাবে শিখবো | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্স

যদি আপনি অনলাইনের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে চান তবে আপনার জন্যে বেশ কয়েকটি পথ খোলা থাকবে। যেমন— ১। টাকা প্রদান করে এবং নিজের ইচ্ছায়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার জন্য আপনার শুধুমাত্র এই ২টি পথ উন্মুক্ত থাকবে। আপনি যে কোন একটি মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে পারবেন। তোহ চলুন বিষয়টি নিয়ে একটু ক্লিয়ার ধারনা দেখে নেই—

এখানে টাকা প্রদান করা বলতে আমি আপনাকে বোঝাতে চেয়েছি যে, কাজ শেখার জন্য আপনাকে টাকা ব্যয় করতে হবে। কারণ যদি আপনি কোনো মেন্টরের কাছে থেকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখতে চান। তবে আপনাকে সেখানে পেইড কোর্স ক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কিছু টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন হবে।

এছাড়াও যদি আপনি চান যে, কোনো ধরনের টাকা ব্যয় না করেই সম্পূর্ণ আপনার নিজের চেষ্টায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবেন। তবে আপনাকে গুগল বা ইউটিউবের মতো প্লাটফর্ম গুলোর সাহায্য নিতে হবে। প্রথমত আপনি গুগল থেকে অনেক কিছুই জানতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে। তাছাড়াও ইউটিউবে এমন অনেক ধরনের ভিডিও রয়েছে যেগুলো দেখে আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার টিপস & ট্রিকসগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

[⚠️Warning — কোর্স কেনার পূর্বে অবশ্যই খুবই সতর্ক থাকবেন। লক্ষ্য রাখবেন, আপনার কষ্টের উপার্জিত টাকাগুলো যেন কোনো চিটার-বাটপারের হাতে না যায়] 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এ কি কি শিখতে হবে

আপনি যখন নিজে এই সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। তখন আপনাকে এই বিষয়ে অনেক কিছুই শিখতে হবে। তবে হ্যাঁ একটা কথা মাথায় রাখবেন, তা হচ্ছে আপনি যা কিছুই শিখেন না কেন? শেখার লিমিট হতে হবে ১০০ তে ১০০।

কারণ কথায় আছে "অল্প বিদ্যা ভয়ংকর" এই বিষয় সম্পর্কে হয়তো আপনি আমার থেকে আরো ভালো করেই জানেন। আর অনলাইনে কাজ করার যেসসকল সেক্টর আছে সেগুলোতে অল্প অর্থাৎ সামান্য জ্ঞানে টিকে থাকা খুবই মুশকিল হয়ে দারাবে। তাই আপনি যে বিষয়ে কাজ শিখবেন, সেই বিষয়ে যেন কোনো ধরনের কমতি না থাকে, সেই দিকে আপনাকে যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে।

সুতরাং আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখবেন তখন আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয়কে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে শিখতে হবে। যেমনঃ

১. প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে হবে

সবার প্রথমে আপনাকে এই বিষয়টি বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে যে, আপনি মূলত কোন প্রোডাক্টের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন। এই বিষয়টি আপনাকে সবার প্রথমে খুজে নিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখার পূর্বে আপনার টার্গেটেড পণ্যকে খুজে নেওয়াটা অতীব জরুরী।

তবে হ্যাঁ এই পণ্যের ধরণ একেক জনের কাছে একেক ধরনের হতে পারে। যেমন- আপনার কোন একটি অনলাইন শপ থাকতে পারে অথবা আপনার কোনো ব্যবসা/প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে। সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার উপরে। 

আরও পড়ুনঃ নাম্বার দিয়ে মোবাইলের লোকেশন বের করার উপায়

২. টার্গেটেড অর্ডিয়্যান্স খুজে নেওয়া

এরপর আপনাকে বুঝতে হবে যে, আপনার পণ্যগুলোকে কোন ধরনের মানুষের জন্যে বানানো হয়েছে। যেমনটা পূর্বেই বলেছিলাম, একটি টি-শার্ট কিন্ত মহিলা মানুষ সহজেই কিনবে না। কিংবা একটি টি-শার্ট ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে বৃদ্ধ লোক কিনবে না। আপনার টি-শার্ট অর্থাৎ প্রোডাক্টের চাহিদা কার কার কাছে আছে, কোথায় আছে, সেই বিষয়টা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে?

[💡স্পেশাল টিপসঃ মনে রাখবেন যে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার জন্য সবচেয়ে বেশি অডিয়্যান্সের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ যতক্ষন আপনি আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সকে ডিটেক্ট করতে পারবেন না, ততোক্ষণ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা সত্বেও আপনি সফলতার ধারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না]

হ্যাঁ! এটা সত্যি যে আপনি অনলাইন হোক অথবা অফলাইনে। যখন আপনি মার্কেটিং সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত হবেন তখন আপনাকে আপনার অডিয়েন্সকে ভালোভাবে বোঝার ক্ষমতা রাখতে হবে। মনে করুন, যদি আপনি অনলাইনে একটি অনলাইন শপ তৈরি করেন। তবে আপনার সেই অনলাইন শপে শুধুমাত্র সেই সকল ব্যক্তিরা কেনাবেচা করবে। যারা মূলত অনলাইনে একটিভ ইউজার অর্থাৎ নিয়মিত অনলাইনে একটিভ থাকে।

অন্যদিকে যদি আপনি কৃষকদের জন্যে কোনো পণ্য অনলাইনে মার্কেটিং করতে চান। সেক্ষেত্রে কিন্ত আপনি আশানুরূপ অডিয়েন্সকে খুঁজে পাবেন না। কারণ কৃষকরা কিন্ত মাঠে খেত-খামারে কাজ করতে ভালোবাসে। তারা আমাদের মত সারাদিন অযথা মোবাইল ফোনে ফেসবুক, ইউটিউবিং করতে পছন্দ করে না। 

[💡নোটঃ তো প্রথমত আপনাকে আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বোঝতে হবে। তারপর আপনাকে খুঁজে নিতে হবে যে, আপনার সেই সকল প্রোডাক্টগুলোর চাহিদা কার কার কাছে আছে, কোথায় আছে, কোন ধরনের মানুষদের জন্যে প্রোডাক্টগুলো যথোপযুক্ত]

৩. প্রোডাক্ট প্রমোশন এন্ড বুস্টিং

আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফ্রম গুলোতে মার্কেটিং করবেন তখন আপনি প্রোমোট বা বুস্টিং শব্দ গুলোর সঙ্গে পরিচিত হবেন। আপনার জেনে রাখা ভালো যে, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সেক্টরে এ ২টি বিষয় অর্থাৎ প্রোমোট বা বুস্টিং বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

দেখুন, যখন আপনি ফেসবুক ব্যবহার করেন তখন ফেসবুক এর নিউজ ফিড স্ক্রল করতে করতে কোন না কোন সময় 'Sponsored' শব্দটি দেখতে পান এবং নিচে কোনো ভিডিও অথবা পোষ্ট নজরে পড়ে। এগুলো হচ্ছে মূলত আপনার মতো একজন ফেসবুককে পেমেন্ট করছে। যেন ফেসবুক তার প্রোডাক্ট বা কোম্পানি/প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক মানুষর কাছে সে বিষয়ে জানিয়ে দেয়। 

কারণ ফেসবুক হচ্ছে একটি সোশ্যাল মিডিয়া। আর যদি আপনি এই সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করতে চান তবে আপনাকেও এই অনুরুপ পদ্ধতিতে টাকা ব্যয় করে নির্দিষ্ট সংখ্যক অডিয়েন্সের কাছে প্রোডাক্ট পৌঁছাতে হবে।

[💡স্পেশাল টিপসঃ মনে রাখবেন, আপনি যদি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে চান। তবে আপনাকে পেইড প্রমোশন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখা জরুরি। অন্যথায় আপনার সকল টাকা এবং শ্রম পানিতে ভেসে যাবে ]

আরও পড়ুনঃ 5G কি? ৫ জি সম্পর্কে আপনার যা কিছু জানা দরকার

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোনগুলো

বর্তমান সময়ে যদি আপনি এই সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত হতে চান। তবে আপনার সামনে এমন ডজন খানেক সোশ্যাল মিডিয়ার তালিকা দেওয়া যাবে। কিন্তু আপনার জন্যে কোন সোশ্যাল মিডিয়াগুলো মার্কেটিং করার জন্য যথোপযুক্ত হবে তা আপনাকে নিজ থেকেই নির্বাচন করতে হবে।

এই বিষয়টি আরো একটু পরিস্কার করলে মনে হয় আপনার বোঝার সুবিধে হবে। তাই একটু মনোযোগ সহকারে কথাটা শুনুন। ধরুন, আপনি বাংলাদেশি লোকজনের কাছে টার্গেট করে মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন। তারজন্য আপনাকে খুঁজে নিতে হবে যে, বাংলাদেশে মানুষরা কোন সোশ্যাল মিডিইয়া প্লাটফর্ম গুলো সবথেকে বেশি ব্যবহার করে।

যেমনঃ আমাদের দেশে কিন্ত ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতে সবথেকে বেশি অ্যাক্টিভ থাকে। এখন যদি আপনি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়েই টুইটারে পেইড প্রোমোশন করেন। তবে কিন্তু আপনি তেমন বেশি লাভবান হতে পারবেন না। যতটা লাভবান হতে পারবেন ফেসবুক অথবা ইউটিউবে পেইড প্রোমোশন করে।

ঠিক এভাবেই আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে, আপনি মূলত কোন দেশের মানুষ জনকে টার্গেট করছেন আর টার্গেট করা মানুষগুলো কোন সোশ্যাল মিডিয়াগুলো সবথেকে বেশি ব্যবহার করছে। 

জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সাইট

আপনার সুবিধের জন্যে আমি বিশ্বের জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফ্রমের একটা তালিকা নিচে দিচ্ছি। আপনি এই তালিকার যেকোনো একটি অথবা অধিক সাইটকে কাজে লাগিয়ে সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী এক বা একাধিক সোশ্যাল মিডিয়াকে সিলেক্ট করে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করতে পারবেন। 

১। Facebook ২। Facebook Messenger ৩। YouTube ৪। Instagram ৫। Quora ৬। Twitter ৭।LinkedIn ৮। Pinterest ৯। WhatsApp

শেষ কথা

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিষয় নিয়ে অনেক কথাই বললাম। এখন আপনি মূলত কতটুকু বুঝতে পারছেন তা কিন্তু সম্পূর্ণ আপনার উপরেই নির্ভর করবে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্বন্ধে আমি আপনাকে বোঝানোর জন্যে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

তবে সকল বিষয় বিস্তারিত জানার পরে যদি আপনার মনে কোনো ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে। অথবা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকে। তাহলে আপনার জন্যে কমেন্ট বক্স সব সময় উন্মুক্ত আছে। কমেন্ট করে জানিয়ে দিন, আমি আপনার কমেন্টের আশায় রইলাম। আমাদের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ❤

আরও পড়ুনঃ বিটকয়েন কি ও কেন | কোথায় এবং কেন বিটকয়েন ব্যবহার করা হয়

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)