এফিলিয়েট মার্কেটিং কি | এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি — আপনি কি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে চান? আপনি যদি অনলাইনে আয় করার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আপনি নিশ্চয় সঠিক জায়গাতে আসছেন। আজকের এই আর্টিকেলে এফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing সম্পর্কে বিস্তারিত যত রকম বিষয় আছে, সব কিছুই তুলে ধরবো। এই আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করা যায়, কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখবেন, কিভাবে কাজ করবেন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা ইনকাম করা যাবে? এই সকল বিষয়াদি আপনার আয়ত্তে চলে আসবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

তো চলুন জেনে নেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং | Affiliate Marketing এর সম্পূর্ণ টিউটোরিয়াল, 

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

প্রথমেই জেনে নিন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? কেন আমরা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing নিয়ে কাজ শুরু করবো? এফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing হচ্ছে মূলত কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন কোম্পানীর কোন পণ্য Product অথবা কোন সেবা বিক্রি করে দিয়ে এবং প্রতিটি পণ্য বিক্রি বা Sale করার বিপরীতে বিক্রয়ের মূল্যের ওপর পারসেন্ট হারে কমিশন গ্রহণ করা।

অর্থাৎ যদি আপনি কোন প্রতিষ্ঠান বা কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সেবা বিক্রি বা Sale করে দেন, তাহলে সেই কোম্পানির পণ্য বিক্রয়ের উপর আপনাকে ২% থেকে ৭০% পর্যন্ত কমিশন প্রদান করবে। যদি আমি আরও সহজ ভাষায় বলি, ধরুন আপনি Amazon.com অথবা অন্যান্য অ্যাফিলিয়েট সাইটে অ্যাকাউন্ট করে সেখান থেকে কোন একটি প্রোডাক্ট যেমন; মোটরসাইকেল বিক্রি করে দিলেন। যদি মোটরসাইকেলটির দাম হয় ২০০০০০/- টাকা হয়ে থাকে আর যদি আপনি সেখান থেকে ৫% হারে কমিশন পেয়ে থাকেন তাহলে আপনার টাকা ইনকাম হবে। ২০০০০০*৫% = ১০০০০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুনঃ বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার নিয়ম

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে মূলত যেসকল কোম্পানিগুলো অফার করে থাকে তাদের অটো সফটওয়্যার থাকে। অটো সফটওয়্যারের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট বিক্রয় করার উপর বিভিন্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং তারা কমিশন প্রদান করে থাকে। প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি অনুসারে আপনি সাপ্তাহিক ও মাসিক অথবা যেকোন সময়ে পেমেন্ট তুলতে পারবেন। এটি মূলত একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি বেশ কিছু প্রোডাক্ট বা সেবা থাকে। সেই সকল সেবা বা প্রোডাক্ট আপনার ফেসবুক, ওয়েবসাইট, ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা যেকোন ডিজিটাল মার্কেটিং করে আপনি ঘরে বসেই কাজ করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং | Affiliate Marketing প্রোডাক্ট বা সেবা তিন ধরনের হয়

১। ডিজিটাল প্রডাক্ট

ডিজিটাল প্রোডাক্ট হচ্ছে যেসকল প্রোডাক্ট সাদৃশ্য নয় অর্থাৎ যে সকল ভার্চুয়ালভাবে ব্যবহার করতে হয়, সেই সকল প্রোডাক্টই হলো ডিজিটাল প্রোডাক্ট Digital Product। যেমন, সফটওয়্যার, ই-বুক, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন, ওয়েব হোস্টিং, অনলাইন ক্লাস, ভিডিও ইত্যাদি। অনলাইন যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing করে থাকেন তাদের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো Digital Product ডিজিটাল প্রোডাক্ট। ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি করার ক্ষেত্রে আপনি পেয়ে যাবেন ৫% থেকে শুরু করে ৭0% পর্যন্ত কমিশন।

২। ফিজিক্যাল প্রডাক্ট

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে Physical Product হচ্ছে যেসকল প্রোডাক্ট আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকি। যেমন, পোশাক-আশাক, ফার্নিচার, ইলেকট্রিক পণ্য, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, খাবার এবং ফলমূল ইত্যাদি। এই সকল প্রোডাক্ট বিক্রি বা সেল করে দিয়ে ২% থেকে শুরু করে ২0% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া যায়। এই সকল প্রোডাক্ট নিয়ে যদি আপনি Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডেলিভারির কথা মাথায় রাখতে হবে। আপনি যে কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করবেন সেই কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ডেলিভারি করছে কিনা এই সকল বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই অবশ্যই ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আরও পড়ুনঃ লিড জেনারেশন কি ? কেন শিখবেন | কেন লিড জেনারেশন গুরুপ্তপূর্ণ

৩। লিড জেনারেশন

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আরো একটি জনপ্রিয় প্রোডাক্ট হলো লিড জেনারেশন। মানে আপনি শুধুমাত্র তাদের পণ্যের জন্য মার্কেটিং করতে হবে আর আপনার ক্রেতারা তাদের টাকা বা ক্রেডিট খরচ করে কোন প্রোডাক্ট কেনার প্রয়োজন হবে না কিন্তু তার পরেও আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন। যেমন, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সাইনআপ, ই-মেইল সাবস্ক্রিপশন, ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব, অ্যাপ ডাউনলোড ইনস্টল, ভিডিও ভিউ ইত্যাদি।

অর্থাৎ এমন কিছু কিছু কাজ আছে যে আপনাকে বলা হবে একটি আন্ড্রয়েড অ্যাপ ১০০০ স্মার্টফোনে ডাউনলোড করে ইন্সটল করতে হবে, সেইজন্য আপনাকে সেই অ্যাপের লিঙ্ক ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যাতে করে সেই অ্যাপের লিঙ্কটি ক্লিক করে ক্রেতারা সেই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি তাদের স্মার্টফোন ডাউনলোড করে ইন্সটল করে। যখন কেউ আপনার সেই লিংক ক্লিক করে সেই অ্যাপটি ইন্সটল করবে তখন আপনি সেই অ্যাপের বিনিময়ে দেওয়া নির্ধারিত টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এই পদ্ধতিকে সিপিএ CPA মার্কেটিং ও বলা হয়ে থাকে।

কোথায় থেকে শিখবো

যদি আপনি প্রফেশনাল ভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing করার জন্য Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে কাজ শিখতে হবে। আর এই জন্য আপনাকে দুইটা মাধ্যম অনুসরণ করতে পারেন।

১। ফ্রি তে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখুন

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য অবশ্যই আপনাকে ২টি মাধ্যমের একটি অনুসরণ করতে হবে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ফ্রি মেথড। এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য আপনাকে ইউটিউবে Youtube এফিলিয়েট মার্কেটিং লিখে সার্চ করতে হবে। যার ফলে অনেক রকমের টিউটরিয়াল ভিডিও বা রিসোর্স আছে যেগুলো দেখে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন। 

এছাড়াও গুগলে এফিলিয়েট মার্কেটিং লিখে সার্চ করলে আপনি অনেক রিসোর্স পেয়ে যাবেন যেগুলো দেখে আপনি কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে পারবেন। এছাড়াও এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্রি ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে। যেগুলো সংগ্রহ করে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখে নিতে পারবেন। যার ফলে আপনার রির্সাস করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার টাকাও খরচ হবে না।

আরও পড়ুনঃ ইনস্টাগ্রাম থেকে টাকা আয় করার উপায়

২। পেইড ভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখুন

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং শেখার জন্য অবশ্যই আপনাকে ২টি মাধ্যমের যেকোন একটি অনুসরণ করতে হবে তার মধ্যে আরেকটি হচ্ছে পেইড মেথড বা টাকা খরচ করে এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখতে হবে। আপনি যদি কোন ট্রেনিং সেন্টার অথবা কোন কোর্স কিনে Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখেন তাহলে সেটি সেক্ষেত্রেই তার মধ্যে সীমাবদ্ধতা থাকে এবং অনেক অসম্পূর্ণ থেকে যায়, সেই সকল বিষয়গুলো পরবর্তীতে Google অথবা Youtube সার্চ করে আপনাকে নিজ থেকেই শিখে নিতে হবে।

কোন ট্রেনিং সেন্টার অথবা অনলাইনে কোন পেইড কোর্সে যুক্ত হয়ে Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং এর বেসিক ধারণা লাভ করতে পারেন। তারপরে বাকি কাজগুলো শেখার জন্য আপনার কাছে অনেকটাই সহজতর হয়ে যাবে। আর এই জন্য আপনাকে টাকা খরচ করা লাগতে পারে ১০ হাজার থেকে থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করতে পারবো

এখন কথা হলো আপনি এতো কষ্ট করে, অনেক সময় ব্যয় করে ফ্রি অথবা পেইড ভাবে Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং শিখলেন। তো কথা হচ্ছে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করতে পারবেন? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

যদি আপনার একটি ভালোমানের ওয়েবসাইট থেকে থাকে অথবা আপনার একটি ভালোমানের ইউটিউব চ্যানেল থাকে। আর সেখানে আপনি যদি আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্টের লিংক শেয়ার করেন, তাহলে সেই লিঙ্কটি থেকে যতবেশি প্রোডাক্ট বিক্রি হবে তত বেশি টাকা আপনার কমিশন হতে থাকবে আর এটির কোনো শেষ সীমানা নাই। তাই Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে একটি স্ট্যান্ডার পেশা বা মুক্ত পেশা।

অর্থাৎ যদি আপনার একটি ভালোমানের এফিলিয়েট ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে, যেখানে যদি ভালো পরিমাণে ভিজিটর বা কাস্টোমার থাকে, তাহলে আপনি যেখানেই অবস্থান করুন না কেন প্রতিদিন ২৪ ঘন্টায় আপনার টাকা আয় হতেই থাকবে। যত বেশি সেল বা বিক্রয় ততবেশি ইনকাম।

আরও পড়ুনঃ এসইও (SEO) কি এবং কেন দরকার হয় | এসইও কত প্রকার

কিভাবে কাজ করবো | এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ভালোমানের ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। সেই ওয়েবসাইটে প্রতিটি পণ্যের ভালোমন্দ উভয় বিষয়ে লিখতে হবে এবং প্রাইস কনটেন্ট লিখতে হবে। যে সমস্ত রিভিউ আর্টিকেলে থাকবে সেগুলো থেকে প্রোডাক্ট বিক্রির আর্টিকেল রয়েছে সেই আর্টিকেলে ভিজিটর পাঠাতে হবে আর সেখান থেকে ভিজিটররা আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করবে।

এছাড়াও যদি আপনার একটি ভালোমানের ইউটিউব চ্যানেল থাকে অথবা ইউটিউব চ্যানেল না থাকে তাহলে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে নিতে হবে যেখানে আপনার টার্গেটেড ভিজিটররা আসবে। অর্থাৎ আপনি যেসকল প্রোডাক্ট বিক্রি বা Sale করবেন সেই সকল প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিস্তারিত বা রিভিউ ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে এতে করে আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্টটি বিক্রি হবার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পাবে।

তাছাড়াও আপনি যদি ভালো ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। যেমন, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডিন ইত্যাদি বা অন্যান্য যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া।

বেশি আয় করার কিছু কার্যকরি উপায়

যদি আপনি Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক বেশি পরিমানে টাকা আয় করতে চান তাহলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে অনেক বেশি মার্কেটিং এর দিকে নজর দিতে হবে। আপনার প্রোডাক্ট অনেক বেশি কাস্টোমারের কাছে পৌঁছে দেবার মতো সক্ষমতা অর্জন করে নিতে হবে।

আমি নিম্নে কিছু রিসোর্স শেয়ার করলাম যেগুলা অনুসরণ করলে আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্ট বিক্রয়ের পরিমাণ অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক বেশি পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ অনলাইন থেকে আয় করার সহজ উপায়

সঠিক প্রোডাক্ট নির্বাচন করা

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে সঠিক প্রোডাক্ট নির্বাচন করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন সকল প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে হবে যাতে করে সেই সকল প্রোডাক্টের উপরে কাষ্টমারদের চাহিদা বেশি থাকে এবং এফিলিয়েট কমিশনের হারও বেশি পরিমানে দেয়। সেই জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং এ প্রোডাক্ট নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বারবার রিসার্স করাটা অত্যন্ত জরুরী। হ্যাঁ মনে রাখবেন আপনি যত বেশি বেশি পরিমাণে রিসার্স করবেন তত তারাতারি এফিলিয়েট মার্কেটিং-এ আপনার সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

সঠিক কোম্পানী বা ইন্ডাষ্ট্রি নির্বাচন

এফিলিয়েট মার্কেটিং- এ কোম্পানি বা ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোম্পানির প্রোডাক্ট আপনি বিক্রি করতে ইচ্ছুক সেই কোম্পানির প্রোডাক্টের কোয়ালিটি বা গুণগত মান কেমন, ডেলিভারি সিস্টেম ও কাস্টোমার সাপোর্ট কেমন আছে। এই সমস্ত বিষয়গুলো যদি ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনি সেই ইন্ডাস্ট্রি বা কোম্পানির প্রোডাক্টটি নির্বাচন করে নিতে পারেন। আর হ্যাঁ এখানে আরও একটি বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে প্রোডাক্টটির চাহিদা মার্কেটে কেমন আছে। যদি আপনি এমন কোন প্রোডাক্ট নির্বাচন করে থাকেন যেটির কোনো চাহিদা বাজারে নেই এবং কাস্টমারদের কেনার কোনো আগ্রহ নাই সেই সকল প্রোডাক্ট নিয়ে Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে গেলে আপনি সহজেই সফল হতে পারবেন না বা কখনও ভালো কিছু করতে পারবেন না।

আপডেট মার্কেটিং পদ্ধতি অবলম্বন করা

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে বর্তমান সময়ে ভার্চুয়াল যেসসকল আপডেট মার্কেটগুলো আছে সেই গুলোতে আপনাকে মার্কেটিং করতে হবে। মনে রাখবেন যত বেশি মার্কেটিং আপনি করতে পারবেন আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে অনেক বেশি। আর যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি হবে তত বেশি আপনার ব্যবসার সফলতা চলে আসবে। আপডেট মার্কেটিং গুলোর মধ্যে জনপ্রিয় মার্কেট হচ্ছে, ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।

আরও পড়ুনঃ SEO শিখে কিভাবে আয় করবো? SEO শিখে কত টাকা আয় করা যায়

ওয়েব সাইট তৈরি করা ও এস.ই.ও. করা

Affiliate Marketing এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম একটি তথ্যবহুল ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে হবে। আর সেই ওয়েবসাইটে প্রোডাক্টের বিস্তারিত তথ্য খুব সুন্দরভাবে সঠিক সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে হবে। ভালোমানের ছবি বা কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ছবি ব্যবহার করতে হবে যা দেখে কাস্টমার দেখেই প্রোডাক্ট ক্রয় করার জন্য আকৃষ্ট হয়। ওয়েবসাইটে এমন ভাবে আর্টিকেল দিতে হবে যাতে কাস্টমার খুব সহজেই পড়ে প্রোডাক্ট কেনার জন্য আকৃষ্ট হয়। আর ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং বা এস.ই.ও SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করতে হবে। তাহলে খুব সহজেই আপনার ওয়েবসাইটে টার্গেটেড কাস্টমার চলে আসবে এবং আপনার ওয়েবসাইট থেকে তারা প্রোডাক্ট ক্রয় করবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং করা

এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য বর্তমান সময়ে প্রচলিত যতগুলি মার্কেটিং সিস্টেম আছে তার মধ্যে অন্যতম মার্কেট হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। যেহেতু আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing ভার্চুয়ালি করে থাকি তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব অপরিসীম। ডিজিটাল মার্কেটিং করার বেশকিছু মার্কেটিং সিস্টেমের নাম হচ্ছে, ফেসবুক মার্কেটিং, টুইটার মার্কেটিং, ইন্সটাগ্রাম মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ব্লগ কমেন্ট, গেষ্ট ব্লগিং, প্রশ্নোত্তর, রেডিট অংশগ্রহন করা ইত্যাদি।

সোশ্যাল সিগন্যালের প্রতি খেয়াল রাখা

সোশ্যাল সিগন্যাল বলতে সাধারণত আমরা বুঝি যেসকল সোশ্যাল সাইটে আপনি মার্কেটিং করবেন তার সিগন্যালগুলো সারাক্ষন লক্ষ্য করা। যেমন আপনি যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করছেন, সেই পোস্টে কাস্টমাররা কি কি কমেন্ট করছে বা কাস্টমাররা কি কি জানতে চেয়েছে সেইসকল বিষয়ে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কাস্টমারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। তাহলে আপনার এফিলিয়েট প্রোডাক্ট বিক্রি অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুনঃ গেম খেলে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস

এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট | জনপ্রিয় কিছু এফিলিয়েট প্রোগ্রাম 

বর্তমান সময়ে অনেক এফিলিয়েট ওয়েবসাইট আছে সেই সকল সেরা সাইট গুলোর মধ্যে আমি জনপ্রিয় কয়েকটি কিছু Affiliate Marketing বা এফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিম্নে তুলে ধরলাম।

১। Amazon Affiliate Program: এটি মূলত ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বিক্রি বা সেল করার জন্য এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এবং এদের বেশকিছু ডিজিটাল প্রোডাক্ট আছে। বাংলাদেশে সব থেকে জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের অন্যতম হচ্ছে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম। অ্যামাজন প্রোগ্রামে অ্যাফিলিয়েটরা ৪% থেকে শুরু করে ১০% পর্যন্ত কমিশন পেয়ে থাকে। এছাড়াও দেশি বিভিন্ন ই-কমার্স ব্যবসায়ীরাও প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য ৫-১০% কমিশন দিয়ে থাকে অ্যাফিলিয়েটদের। সেখানে বহুব্রীহিতে অ্যাফিলিয়েটরা পাচ্ছেন ২০% কমিশন। ই-লার্নিং ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য প্লাটফর্মের তুলনায়ও এটি অনেক বেশি।

২। Ebay Partner Network: এই সাইটটি মূলত ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বিক্রি বা Sale করার জন্য এফিলিয়েট সাইট এবং এদের বেশকিছু ডিজিটাল প্রোডাক্ট আছে।

৩। Clickbank: এই সাইটটি মূলত লিড জেনারেশন, ডিজিটাল সার্ভিস সম্পর্কিত এফিলিয়েট প্রোগ্রাম।

সবশেষে আমাদের পরামর্শ

আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন এবং অবশ্যই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে তারপরে এফিলিয়েট মার্কেটিং Affiliate Marketing কাজ শুরু করবেন। কেননা যদি আপনি কোন কিছু না জেনে না বুঝে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করেন তাহলে আপনার সফলতার থেকে ব্যর্থতার হার বৃদ্ধি পাবে। আমরা চাই আপনি অবশ্যই অবশ্যই অনলাইনে ইনকামের জন্য সফলতা লাভ করুন এবং সেই পরামর্শ দিয়ে থাকি তাই।

ভালোভাবে কাজ শিখুন, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং যেকোনো একটি মাধ্যম আপনি বেছে নিন। তারপরে কাজে নেমে পড়ুন ইনশাআল্লাহ আপনি অবশ্যই অবশ্যই সফলতা অর্জন করবেন এই আশা সব সময় কামনা করি আমরা। বন্ধুরা যদি আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্ত।

আরও পড়ুনঃ ব্লগার থেকে টাকা আয় করার উপায়

পোষ্ট ক্যাটাগরি: