গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান: গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান

গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান, গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চান অনেকেই। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জনপদ গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান গুলোর মধ্যে অন্যতম হল:

সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ি, ফুলছড়ির বালাসী ঘাট, গোবিন্দগঞ্জের প্রাচীন মাস্তা মসজিদ, ঘেগার বাজার মাজার, জামালপুর শাহী মসজিদ, রাজাবিরাট প্রসাদ, গাইবান্ধা পৌর পার্ক, এসকেএসইন, ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার, হযরত শাহ জামাল (রাঃ) মাজার শরীফ, বর্ধনকুঠি, ড্রীমল্যান্ড, ড্রীম সিটি পার্ক, পাকড়িয়া বিল, রংপুর সুগার মিল, শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলিবাবা থিম পার্ক, হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু ইত্যাদি।

আজকের এই লেখায় আমরা এই সকল দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই আপনি যদি গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চান তবে লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। এবং আর্টিকেলটি তথ্যবহুল মনে হলে আপনার পরিচিত মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এতে করে তারা সহজেই গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে জানতে পারবে।

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান

(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান

  • সাদুল্লাপুরের নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ি
  • বালাসী ঘাট
  • প্রাচীন মাস্তা মসজিদ
  • জামালপুর শাহী মসজিদ
  • ঘেগার বাজার মাজার
  • ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক
  • রাজাবিরাট প্রসাদ
  • গাইবান্ধা পৌর পার্ক
  • এসকেএসইন
  • ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার
  • হযরত শাহ জামাল (রাঃ) মাজার শরীফ
  • বর্ধনকুঠি
  • ড্রীম সিটি পার্ক
  • পাকড়িয়া বিল
  • রংপুর সুগার মিল
  • শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • আলিবাবা থিম পার্ক
  • হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু

১। এসকেএস ইন

এসকেএস ইন

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে আমরা শুরুতেই যে স্থানটিকে রেখেছি তা হচ্ছেএসকেএস ইন। এটির অবস্থান রাঁধাকৃষ্ণপুর (তিন গাছ তল), গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা।

কিভাবে যাবেন:গাইবান্ধা জেলা শহর হতে রিক্সা, অটোরিক্সা যোগে সহজেই যেতে পারবেন।

নদী বিধৌত গাইবান্ধা জেলায় সবুজের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম 4 star রিসোর্ট SKS Inn. প্রায় ৬০ বিঘা জমি জুড়ে অবস্থিত এই রিসোর্টে ফ্যামিলি গেট টুগেদার, ডে-লং, কনফারেন্স, কর্পোরেট ইভেন্ট এবং বিবাহের অনুষ্ঠান সহ সকল প্রকার ইভেন্ট আয়োজন করতে পারবেন।

এসকেএস ইন এখানে আছে টুইন ও ফ্যামিলি রুম, ডিলাক্স রুম, গার্ডেন ভিউ ভিলা, ওয়াটার ভিলা, লেক ফ্রন্ট ভিলা, ফ্যামিলি ভিলা। এই এসকেএস ইন 4 star রিসোর্টে আপনারা স্বাচ্ছন্দে রাত্রী যাপন করতে পারবেন। এছাড়াও এখানে আরো যেসকল সুবিধা পাচ্ছেন তা হলো: সুবিশাল সুইমিংপুল, বোটিং, জিমনেশিয়াম, ফিশিং, সাইকেলিং, স্যুনা, ঝুুুলন্ত ব্রিজ, স্টিম বাথ, চিল্ড্রেন জোন।

এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় লাইভ বাউল গান, মিনি চিড়িয়াখানা, ইনডোর গেমস, ২৪/৭ রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, লন্ড্রি সুবিধাসহ আরো অনেক কিছু। পরিবারের সাথে এবং কর্পোরেট ইভেন্ট ছাড়াও এসকেএস ইন -কে কেন্দ্র করে গাইবান্ধা জেলা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহের ঐতিহাসিক/দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের জন্য ট্যুর প্ল্যান করতে পারেন যেকোনো দিন, যেকোনো সময়।

২। গাইবান্ধা পৌর পার্ক

গাইবান্ধা পৌর পার্ক

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মাঝে দ্বিতীয় নম্বর তালিকায় যে যায়গাটিকে নিয়ে আলোচনা করেছি তা হচ্ছে গাইবান্ধা পৌরপার্ক। এটির অবস্থান গাইবান্ধা পৌরসভা সংলগ্ন, গাইবান্ধা।

কিভাবে যেতে পারবেন: গাইবান্ধা জেলা বাসস্ট্যান্ড হতে রিক্সা, অটো রিক্সা করে সহজেই যেতে পারবেন।

গাইবান্ধা পৌর পার্ক হচ্ছে গাইবান্ধা পৌরসভার নিয়ন্ত্রধীন একটি উন্মুক্ত স্থান। এখানে রয়েছে একটি পুকুর এবং পুকুরপাড়ে রয়েছে জনসাধারণের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা। সকাল সন্ধ্যা বেলায় অনেক দর্শনার্থী এখানে আছেন বিনোদনের জন্য। দর্শনীয় স্থান হিসেবে আপনি এখানে ঘুরতে আসতে পারেন।

৩। প্রাচীন মাস্তা মসজিদ

প্রাচীন মাস্তা মসজিদ

গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান গুলোর মধ্যে তিন নম্বর পজিশনে যে যায়গাটি রেখেছি তা হচ্ছে গোবিন্দগঞ্জের প্রাচীন মাস্তা মসজিদ। এটির অবস্থান ফাঁসিতলা, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা।

কিভাবে যাবেন: গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হতে কোনো যানবাহন ব্যবহার করে মাস্তা মসজিদে যাওয়া যায় সহজেই।

গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর হতে প্রায় ০৩ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং কামারদহ ইউনিয়নের ফাঁসিতলা বাজার থেকে ০১ কিলোমিটার উত্তরে মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে মাস্তা মসজিদ অবস্থিত। যেকোনো যানবাহন ব্যবহার করে আপনি মাস্তা মসজিদে যেতে পারবেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পুরাতন মসজিদ গুলোর মধ্যে প্রাচীন মাস্তা মসজিদ স্থাপত্যের অপর একটি নিদর্শন। কামারদহ ইউনিয়নের মাস্তা গ্রামের প্রাচীন লাল মসজিদটিই 'মাস্তা মসজিদ' নামে পরিচিত। মসজিদ এলাকার জনশ্রুতি মতে এককালে এই এলাকায় বাদশা ফকির নামে একজন প্রভাবশালী ও ধর্মপরায়ন ব্যক্তির বাস ছিল। তিনি এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর এবং তাঁর উত্তারসুরীর আসল পরিচয় আজও মেলেনি।

প্রকৃতপক্ষে মসজিদটি কোন সময় নির্মিত হয়েছে তা কোন সূত্র থেকেই আজও জানা যায়নি। তবে মসজিদের নির্মাণ কৌশল ও মোঘল আমলের মসজিদ স্থাপত্যের বৈশিষ্ঠ্যের সূত্র ধরে অনুমান করা যায় মাস্তা মসজিদটি মোঘল আমলের কোন এক সময় নির্মিত হয়েছিল। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩৫ ফুট এবং প্রস্ত ১৬ ফুট। চার কোণে চারটি স্তম্ভ রয়েছে। একই আকারের তিনটি গম্বুজ আছে, দরজা তিনটি এটির কোন জানালা নেই এবং ভিতরে দুই সারিতে নামাজ আদায় হয়ে থাকে।

৪। ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার

ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান আর্টিকেলে আমরা চতুর্থ নম্বর তালিকায় যে স্থানটিকে রেখেছি তা হচ্ছে ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার। এটির অবস্থান গাইবান্ধার জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়া গ্রামে।

কিভাবে যাওয়া যায়: গাইবান্ধা জেলা শহর হতে রিক্সা, অটোরিক্সা অথবা ভাড়া করা মোটরসাইকেল যোগে যেতে পারবেন।

গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ০৩ কিলোমিটার দূরে গাইবান্ধা বালাসী সড়ক ঘেঁষে তারকাটায় ঘেরা একটি বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ। একপাশে বড় একটি ফটক। কৌতূহলী এই স্থান-স্থাপত্যের নাম ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার। ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারটি গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনেরপাড়া গ্রামে অবস্থিত।

এটি হচ্ছে মূলত একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যালয়। সংস্থাটি চর এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে। সরেজমিন পরিদর্শন করে ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার স্থাপত্য শিল্পে এক অনবদ্য সৃষ্টি। যা শুধু গাইবান্ধা তথা আমাদের দেশকে নয় অবাক করেছে বিশ্বকে। যার ফলশ্রুতিতে মিলেছে একাধিক বিদেশি অ্যাওয়ার্ড।

ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারটি সম্পূর্ণ মাটির নিচে অবস্থিত। অর্থাৎ ভবনের ছাদ ভূমি সবই সমতলে। ছাদে লাগানো আছে নানা জাতের ঘাস। উপর দিক থেকে দেখলে ঠিক অনেকটাই মহাস্থানগড়ের প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের ছবি ফুটে ওঠে। যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই যেকেউ অভিভূত হবেন। এই ভবনটিতে চলে দাপ্তরিক নানা ধরনের কর্মকাণ্ড। এছাড়াও এখানে আছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইনডোর গেমিং প্লেস এবং থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা। ভেতরের সকল কিছু এক কথায় দৃষ্টিনন্দন।

২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া মদনেরপাড়া গ্রামে প্রায় ০৮ বিঘা জমির উপর গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সেন্টারের ভবনের আয়তন ৩২ হাজার বর্গফুট। ‘আরবান কন্সট্রাকশন’ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারটির নির্মাণ কাজ করেন। এটি করতে মোট ব্যয় হয় আনুমানিক ০৮ কোটি টাকা এবং সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর।

ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারটিতে আছে দুইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যার মধ্যে একটি হচ্ছে শীতাতপ কেন্দ্র। কেন্দ্র দুইটিতে একসাথে ২০০ জন লোক প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এছাড়াও আবাসিক কক্ষ আছে ২৪টি। আবাসিক কক্ষগুলোর মাঝে শীতাতপ পাঁচটি। সবগুলো কক্ষে ৫০ জন লোক থাকতে পারবে। সেন্টারটিতে আছে উন্নতমানের খাবার ব্যবস্থা। একসাথে ৭০ জন লোক খেতে পারে।

এখানে পানি নিষ্কাশনের জন্য আছে পাঁচটি নর্দমা। যারা রাত্রী যাপন করবেন, তাদের জন্য আছে ইন্ডোর গেমিং ব্যবস্থা এবং বই পড়ার লাইব্রেরি। এছাড়াও এখানে নিয়মিত কেরাম বোর্ড খেলা, দাবা এবং ব্যাডমিন্টন খেলা চলে। লাইব্রেরিতে রয়েছে পাঁচ শতাধিক বইয়ের সমাহার।

ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারে আরো আছে আধুনিক ইন্টারনেট সুবিধা ও উন্নতমানের মিউজিক সিস্টেমের সুযোগ এবং মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর। ইলেক্ট্রিসিটি না থাকলে নিজস্ব জেনারেটরের ব্যবস্থা আছে।

জেনে অবাক হবেন সুন্দর স্থাপত্য নির্মাণের জন্য ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারটি ২০১২ সালে ‘এআরপ্লাসডি অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। লন্ডন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর্কিটেক্স রিভিউ এই পুরস্কারটি দেয়। এছাড়া চলতি বছর ‘আগাখান অ্যাওয়ার্ড ফর আর্কিটেকচার’ পেয়েছেন ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারের স্থপতি জনাব কাশেফ মাহবুব চৌধুরী। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একেডিএন) এই পুরস্কার দেয়।

ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ২৫ দিনই সেন্টারের নিজস্ব কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলে। স্থানীয়ভাবে তৈরি ইটের গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত ভবনটি দেখতে প্রতিদিনই ভীড় করে হাজারো দর্শনার্থী গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান হিসেবে আপনি এখানে ঘুরে আসতে পারেন আশা করি আপনার অনেক ভালো লাগবে।

৫। রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড

রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে আরেকটি পরিচিত জায়গা হল রংপুর সুগার মিলস। এটির অবস্থান মহিমাগঞ্জ, গোবিন্ধগঞ্জ, গাইবান্ধা।

কিভাবে যাওয়া যায়: গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হতে অটো বা সিএজি যোগে সহজেই যেতে পারবেন।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় কৃষিভিত্তিক মিল কারখানা গড়ে না উঠলেও এখানকার মাটি এবং জলবায়ু আখঁ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এই লক্ষ্যে ৩৫ একর জমি নিয়ে ১৯৫৪ সালে কাজ শুরু করে মহিমাগঞ্জ রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড নামে একটি চিনিকল যার স্থাপনার কাজ সমাপ্ত হয় ১৯৫৭ সালে।

১৯৫৭ থেকে ১৯৫৮ মৌসুম হতেই চিনি উৎপাদন শুরু হয়। চিনিকলটির দৈনিক মাড়াই ক্ষমতা ১৫০০ মেঃ টন। চিনিকলের আওতায় খামারের জমির পরিমান ১৯৮২.২০ একর। মিল এলাকায় আখঁ চাষ উপযোগী জমির পরিমান ৩৯,০০০ একর। আখঁ সাব জোনের সংখ্যা ৮টি এবং ৪২ টি ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

৬। মীরের বাগানের ঐতিহাসিক শাহ সুলতান গাজীর মসজিদ

মীরের বাগানের ঐতিহাসিক শাহ সুলতান গাজীর মসজিদ

গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান গুলো মাঝে আরেকটি স্থান হচ্ছে মীরের বাগানের ঐতিহাসিক শাহ সুলতান গাজীর মসজিদ। এটির অবস্থান দাড়িয়াপুর, গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা।

কিভাবে যেতে পারবেন: গাইবান্ধা জেলা শহর হতে বাসস্ট্যান্ড থেকে রিক্সা, অটোরিক্সা অথবা সি.এন.জি যোগে সহজেই যেতে পারবেন।

বর্তমান গাইবান্ধা জেলার দাড়িয়াপুরে অবস্থিত এই প্রাচীনতম মসজিদ। মসজিদ গাত্রের শিলালিপি থেকে পাওয়া তথ্য মতে ১৩০৮ ইং সালে সৈয়দ ওয়াজেদ আলী নামক এক ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এই মসজিদ আবিষ্কার করে সংস্কার করেন। পরবর্তীতে শাহ্ সুলতান নামক এক ধর্মযোদ্ধার নাম এর সাথে জড়িয়ে যায়। তাঁর নামেই এ মসজিদ পরিচিতি পায়। এছাড়াও এই মসজিদের পাশেই শাহ্ সুলতান গাজীর মাজার অবস্থিত। বর্তমানে প্রতি বৈশাখ মাসে এখানে মেলা বসে।

৭। শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

শিবরাম আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হচ্ছে আরেকটি গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান। এটির অবস্থান ছাইতান তলা, উপজেলা: সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা।

কিভাবে যেতে পারবেন: প্রথমে গাইবান্ধা শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় যেতে হবে এরপরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা হতে অটো রিক্সা অথবা সিএনজি যোগে ছাইতান তলা নামক স্থানে যেতে হবে।

শিবরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৮৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হোন। ২০০২ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়। আবাসিক এবং অনাবাসিক মোট ১২৩২ জন ছাত্রছাত্রী এই বিদ্যালয়টিতে পড়াশুনা করছে। আরো পড়ুন বর্তমানে সেরা ২৫টি ইউনিক বিজনেস আইডিয়া ২০২৪

৮। বালাসীঘাট

বালাসীঘাট

গাইবান্ধা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে খুবই বিখ্যাত স্থান ফুলছড়ির বালাসীঘাট। এটির অবস্থান গাইবান্ধা জেলা শহর হতে প্রায় ০৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে ফুলছড়ি উপজেলার, কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নে।

বালাসীঘাটে কিভাবে যেতে পারবেন: বাহিরের জেলা থেকে আসতে হলে প্রথমে বাস অথবা ট্রেন যোগে গাইবান্ধা জেলা শহরে আসতে হবে। গাইবান্ধা জেলা বাসস্ট্যান্ড হতে বালাসীঘাট যেতে রিক্সা, অটোরিক্সা ও সি.এন,জি.যোগে যেতে পারবেন। অটোরিক্সাতে ভাড়া ১৫০ টাকা, রিক্সা ভাড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

১৯৩৮ সালে ঢাকার সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলায় তিস্তামুখ ঘাট এবং জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাটে যমুনা নদীতে রেল ফেরির সার্ভিস চালু করা হয়।

তৎকালীন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর রংপুর জেলার গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগর ও ঠাকুরগাঁও জেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যাত্রী ও মালামাল পারাপারের জন্য যোগাযোগ গড়ে তুলতে এই ফেরি সার্ভিসটি চালু করে।

এরপর থেকেই এ ঘাট দিয়ে স্বল্পব্যয়ে অল্প সময়ে যাত্রী পারাপার, কৃষিপণ্য, ডিজেল, সার সরবরাহসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করা হতো। ১৯৯০ সালের পর যমুনা নদীর নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ফেরি সার্ভিসটি তিস্তামুখ ঘাট থেকে বালাসীঘাটে স্থানান্তর করা হয়।

বালাসীঘাটের মনোরম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোরসহ সকল বয়সের মানুষ। অনেকেই সকালে সপরিবারে বেড়াতে এসে সারাদিন থেকে সন্ধ্যার পূর্বে বাড়ি ফিরছেন। সাথে নিয়ে ফিরছেন আনন্দময় স্মৃতি। শহর থেকে প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার দূরে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের কুলঘেষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত বাঁধ এলাকা ধীরে ধীরে সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।

বালাসীঘাট বাঁধ এলাকা সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে বিকেলে এখানে অনেকেই দল বেঁধে বন্ধুবান্ধব ও পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসেন।

ঈদ, পূজা, নববর্ষ ও ভেলেন্টাইন ডে সহ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে এলাকাটি ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠে। ব্রক্ষ্মপুত্র নদের উত্তাল ঢেউ, নির্মল বাতাস আর বাহারি নৈসর্গিক প্রকৃতি আগতদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেয়।

দর্শনার্থীরা এখানে এসে নদীর পাড়ে ঘুরে বেড়ানো, নদীতে নৌকাভ্রমণ, চরের মাঝে ফসলের জমিতে হাটতে এবং নদের উপর বেধে রাখা বাংলাদেশ রেলওয়ের ফেরীর ওপরে দাঁড়িয়ে নদীর বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ পান।শুধু জেলা শহর থেকেই নয়, আশপাশের জেলাগুলো থেকেও অনেকে এখানে বেড়াতে আসেন। পাশাপাশি আরো জানতে এখনই পড়ে ফেলতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আরো একটি পোস্ট ঢাকার পার্শ্ববর্তী দর্শনীয় স্থান

৯। আলীবাবা থিম পার্ক

আলীবাবা থিম পার্ক

রাক্ষুসী তিস্তা নদী কখনো শান্ত, আবার কখনো পানির হু হু শব্দ। আবার শুকিয়ে গেলে শুধুই ধু ধু বালুচর। যেখানে স্থায়ী গাছগাছালি, পশুপাখি আর মানুষের কোনো অস্তিত্ব নেই। সেই তিস্তার ঠিক তীর ঘেসে স্থানীয় চরবাসীকে স্বাবলম্বী করে তোলার স্বপ্ন নিয়ে নির্মিত হয়েছে 'আলীবাবা থিম পার্ক'। আরব্য উপন্যাসের সহস্র রজনীর 'আলীবাবা ও চলিস্নশ চোর' গল্প অবলম্বনে নির্মাণাধীন বিনোদন কেন্দ্রটি এখন অনেকটা দৃশ্যমান।

সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ চেতন্য-ইমামগঞ্জ বাজার হয়ে সোজা উত্তর দিকে গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার সম্মিলন স্থান তিস্তা নদীর বালুচরে ৩০ একর জমির ওপর চমৎকার এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে আলীবাবা থিম পার্কের অবস্থান।

সরেজমিন আলীবাবা থিম পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, আরব্য উপন্যাসের সেই জাদুর শব্দ চিচিং ফাঁক বলে দরজা খুলে মণি-মাণিক্য না মিললেও থিম পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে, মহান আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত নির্মাণাধীন ২০ মিটার উঁচু ভাস্কর্য, আছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদ আল-আকসা, পবিত্র কাবা শরীফ, হযরত ফাতেমার বাড়ি, জর্ডানের মরুভূমির সেই সাহাবীর গাছসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের খোদাই চিত্র।

দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সিমেন্ট দিয়ে গাছের আদলে তৈরি বসার চেয়ার। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম রাস্তা। সমুদ্রের বড় মাছের খাদ্য সংস্থান কিভাবে হয় ও আগ্নেয়গিরির গলিত লাভা এবং বড় বড় সাপ কিভাবে মানুষকে দংশন করতে পারে তাও দেখা যাবে এ থিম পার্কে। পার্কের উত্তরে থাকছে পাহাড় এবং পানির উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা, থাকবে পানির ঢেউ, সেই ঢেউয়ে মেতে উঠবে দর্শনার্থীরা। সঙ্গে থাকবে পিকনিক স্পট ও রিসোর্ট সেন্টারও।

স্থানীয়দের ধারণা, অশ্লীলতা মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র হবে আলীবাবা থিম পার্ক। পুরো পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে মানুষের জন্য বিনোদনের অন্যতম একটি জায়গা। তিস্তার ভরা যৌবনে পার্কটি হয়ে উঠবে আরও মনোরম। দর্শনার্থীরা পাবে নির্মল হাওয়া।

আলীবাবা থিম পার্কের মালিক ইয়ার আলী জানান, 'ব্যতিক্রমধর্মী বিনোদন দিতেই আমার এ উদ্যোগ। আমার এ পার্ক চালাতে হাজার হাজার লোকের দরকার হবে। কাজেই এখানে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। আমি বিশ্বাস করি বেকারত্ব ঘোচাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে আমার এ পার্কটি। আরো পড়ুন ময়মনসিংহ আবাসিক হোটেল ভাড়া কত

১০। বর্ধনকুঠি

বর্ধনকুঠি

গাইবান্ধা জেলার বিখ্যাত স্থান গুলোর মধ্যে আরেকটি স্থান হচ্ছে বর্ধনকুঠি। এটির অবস্থান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।

কিভাবে যেতে পারবেন: গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা হতে অটোরিক্সা কিংবা সিএনজি যোগে যেতে পারবেন।

সুদূর প্রাচীন কাল থেকে (বর্তমান) গোবিন্দগঞ্জ উপজেলাধীন বর্ধনকুঠি তৎকালীন রাজা বাদশাদের গূরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট ছিল। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে এখানে রাজা রামপাল এখানে বাসুদেব মন্দির নির্মাণ করেন। তখন রাজা মানসিংহ বাংলার সুবাদার ছিলেন। ইংরেজ আমলে তা জমিদার বাড়ী হিসেবে খ্যাতি পায়।

পুরাকালে পুন্ড্র বধন, মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালের বরেন্দ্র এবং আজকের বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা জেলার ইতিহাস সাদৃত গোবিন্দগঞ্জ তানা বর্তমানে তার প্রাচীন এতিহ্যের অনেক কিছু হারাতে বসেছে। নজির হিসেবে বর্ধন কুটি অন্যতম। বিধ্বস্ত রাজবাড়রি উন্মুক্ত অংশের বিভিন্ন রকমের সুসজ্জিত ছায়ঘন কৃক্ষ, ফাকে ফাকে শিল্পীর নিপুল হস্তে গড়া এককালের ধোকর মমত ক্ষষিষ্ণু দালান কোঠা আর তার অংশ বিশেষে গড়ে উঠা গোবিন্দগঞ্জ কলেজ আজ ও বর্ধন কুঠর স্বৃতিচিহ্ন বক্ষে ধারন করে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে।

নাম করনঃ অনেকের ধারণা, গোবিন্দগঞ্জ থানা সদরে অবস্থিত বর্ধন কুঠি প্রচীন বধন কোট নামে পরিচিত ছিল। কোন সূত্রে ধরে এ স্থানের না বর্ধন কোট বা কাল ক্রমে বধন কুটি হয়েছ্, তাঁর গুরুত্ব উদঘটন করা বর্তমান প্রজন্মের কাছে অনেকটা দুরুহ হয়ে দাড়িয়েছে। আদিকালে এ স্থানে বর্ধন নামে একজন শক্তিধর নরপতি ছিলেন তার নামানুসারে এ স্থানের নাম হয়ছে বধনকোট, যা কালক্রমে বধন কুটতে রুপ নিয়েছে। নাম করণের ক্ষেত্রে অনেকে এ কাথা ও মনে করেন, বর্তমানে যে, স্থানটি বর্ধনকুটি নামে পরিচিত সেই স্থানটি শক্তিদর বর্ধন বংশীয় কোন এক উত্তরসুরী (পরবর্তীতে) স্থায়ী বসতি গড়েন, তখন তাদের বংশীয় নামের সূত্র ধরে বধনকোট বা বদন কুঠি নামে সৃ্ষ্টি হয়। আরো পড়ুন কক্সবাজারে দেখার জন্য সেরা ১০টি স্থান

১১। জামালপুর শাহী মসজিদ

জামালপুর শাহী মসজিদ

গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে সাদুল্লাপুর উপজেলার অন্তর্গত বড় জামালপুর গ্রামে জামালপুর শাহী মসজিদ এর অবস্থান। লোকমুখে জানা যায়, প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে ইসলাম ধর্ম প্রচার করার উদ্দেশ্যে ইরাক থেকে ৩৬০ জন আউলিয়া বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। এদের মধ্যে গাইবান্ধা শহরে আগমনকারী সুফি হযরত শাহ জামাল (রঃ) এর তত্ত্বাবধানে এই ঐতিহাসিক শাহী মসজিদটি নির্মিত হয় এবং তাঁর নামানুসারে ইউনিয়ন পরিষদ এবং মসজিদের নামকরণ করা হয়। মসজিদের উত্তর পাশে হযরত শাহ জামালের মাজারের অবস্থান।

জামালপুর শাহী মসজিদটি দীর্ঘদিন মাটির চাপা পড়েছিল। পরবর্তীতে ৬০ শতকে গাইবান্ধা মহকুমা প্রশাসক হক্কানী কুতুবউদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি মসজিদ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। হঠাৎ প্রচন্ড ঝড়ে মসজিদের স্থানে গজিয়ে উঠা বটগাছ ভেঙ্গে পড়লে স্থানীয় লোকজন মসজিদটি দেখতে পায়। এই কারণে অনেকে একে গায়েবি মসজিদ হিসেবে অবহিত করেন। মসজিদের সামনে একটি বিশালাকারের দিঘী রয়েছে, আর দীঘিটিকে ঘিরে নানা লোককথা প্রচলিত আছে।

জামালপুর শাহী মসজিদের নিচের দেয়াল ৭২ ইঞ্চি ও উপরের দেয়াল ৫৬ ইঞ্চি পুরুত্ব বিশিষ্ট। মসজিদের ভিতরে মাত্র ২ কাতারে নামাজ আদায় করার সুযোগ ছিল তাই মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে মসজিদ সম্প্রসারণ ও সংস্কার করা হয়। বর্তমানে দ্বিতল এই শাহী মসজিদে একত্রে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

১২। ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক

ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিণমারী গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক। ১৯৯৫ সালে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রশিদুন্নবী চাঁদ প্রায় ১৭ একর জমিতে গাইবান্ধা জেলা শহরের অন্যতম এই বিনোদন কেন্দ্রটি নির্মাণ করেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক-এ আছে দেশি-বিদেশি বৃক্ষ, ফুলের বাগান, ভাস্কর্য এবং বিভিন্ন স্থাপনা।

ড্রিমল্যান্ড পার্কের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে সরু রাস্তার দুই পাশজুড়ে শোভাবর্ধণ করে থাকা নানা রকম দেশি বিদেশি ফুলের গাছ। দর্শনার্থীদের বসে বিশ্রাম নেয়ার সুবিধার জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে বেঞ্চ ও শেড নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্কের মাঝখানে গাছগাছালিতে ঘেরা শান বাঁধানো একটি সুন্দর পুকুর রয়েছে।

আর বৃক্ষের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে ২৫৫ জন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ও গুণীজনদের ভাস্কর্য। এছাড়া এখানে আরও আছে বাংলাদেশের বিশাল মানচিত্র, পলাশী যুদ্ধক্ষেত্রের মানচিত্র, জীবজন্তুর ভাস্কর্য এবং নানান রকম খেলাধুলার ব্যবস্থা। প্রবেশ মূল্য: ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্কে প্রবেশ করতে ১০ টাকার টিকেট কাটতে হয়।

কিভাবে যাবেন: গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে পলাশবাড়ী উপজেলার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। গাইবান্ধা হতে বাস বা সিএনজিতে চড়ে সহজেই পলাশবাড়ী যাওয়া যায়। এবং সেখান থেকে সহজেই এই স্থানে যেতে পারবেন। আরো পড়ুন ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোর নাম

১৩। রাজাবিরাট প্রসাদ

পাল রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময়ে অষ্টম শতাব্দীর শেষ ভাগে (৭৪৩ -৮০০ খৃষ্টাব্দ) দক্ষিণ পূর্ব বাংলার সমতটে দেব বংশ নামে একটি রাজ বংশ প্রবল প্রতাপে রাজত্ব করতেন। আলোচ্য রাজাবিরাট এই দেব বংশ ও পূন্ড্র নগরের আওতাভুক্ত। বলা হয়ে থাকে যে, মহাভারত রচনার প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে (বর্তমান) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় এই রাজ প্রাসাদটি ছিল।

তথ্যসূত্রঃ gaibandha.gov.bd

পোষ্ট ক্যাটাগরি: