শাবান মাসের ফজিলত

শাবান মাসের ফজিলত - শাবান মাসের ফজিলত নিয়ে আপনারা বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে চান। হিজরি মাসের অষ্টম মাস হচ্ছে শাবান মাস। শাবান মাসে অনেক ফজিলত ও আমল রয়েছে। এ মাস বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ।

সূচিপত্রঃ শাবান মাসের ফজিলত

আজকের এই পোস্টটি শাবান মাসের ফজিলত, শাবান মাসের আমল নিয়ে সাজানো হয়েছে। শাবান মাসের ফজিলত ও গুরুত্বপূর্ণ আমল জানতে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। তাহলে চলুন জেনে নেই শাবান মাসের ফজিলত।

শাবান মাস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য

আরবি মাসের অষ্টমতম মাস হচ্ছে শাবান মাস। এই মাস ২৯ দিন কিংবা ৩০ দিন হয়ে থাকে। দিন নির্ভর করছে সম্পূর্ণ চাঁদ দেখার উপর। মূলত রজব মাসের পরেই শাবান মাস আছে। শাবান মাসের বিশেষ দিবস হচ্ছে লাইলাতুল বরাত। অর্থাৎ শবে বরাত।

আরো পড়ুনঃ মাহে রমজানের শুভেচ্ছা

শাবান মাসের দোয়া

শাবান মাস হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ  ফজিলতপূর্ণ মাস। এই মাসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) বেশী বেশী দোয়া করতেন এবং দোয়া করার নির্দেশ দিতেন। বরকতময় মাস প্রিয় নবি হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর কাছে বেশি বেশি একাধিক দোয়া করতেন। তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ-

আরবি উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।’

বাংলা অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। অর্থাৎ রমজান পর্যন্ত হায়াত দান করুন।

আরবি উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বাল্লিগনা রামাদান ওয়া আইন্না আলা সিয়ামিহি ওয়া ক্বিয়ামিহি।’

বাংলা অনুবাদ : হে আল্লাহ! আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন এবং রমজানে (দিনের বেলায়) রোজা পালন এবং (রাতের জেগে) নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন।

শাবান মাস একটি মর্যাদাপূর্ণ মাস। এ মাসে বেশী বেশী দোয়া পাঠ করতে হবে। তাই আপনি শাবান মাসে দোয়া করতে চাইলে উপরের দোয়াগুলা পাঠ করতে পারেন।

শাবান মাসের ফজিলত

আরবি মাসের অন্যন্য মাসের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত মাস হচ্ছে শাবান মাস। আরবি মাসের অষ্টম মাস হচ্ছে শাবান মাস। শাবান মাসের পূর্ণনাম হচ্ছে আশ শাবানুল মুআজজম’। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) এই মাসে বেশী নফল ইবাদত করতেন।

তাই এই মাসে আমাদের বেশী বেশী নফল ইবাদত করা উচিত। নবীজি (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী ধরে এ দোয়া বেশি বেশি পাঠ করতেন,  ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগ না রমাদান’।

অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন। আর শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫ তারিখের রাতকে লাইলাতুল বরাত অর্থাৎ ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। লাইলাতুল বরাতে অনেক ফজিলত রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের ফজিলত

শাবান মাসের আমল ও ফজিলত

মুসলিম বিশ্বের কাছে ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হচ্ছে শাবান মাস। নবীজী (স.) এই মাসে সবচেয়ে বেশী নফল ইবাদত করতেন। নবিজী (স.) রমজানের দুই মাস আগে রোজা রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতেন। এই জন্যই বলা হয়, শাবান মাস নবিজীর মাস এবং রমজান মাস হচ্ছে আল্লাহর মাস। শাবান মাসের আমল, দোয়া ও ফজিলত নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

নবিজী (স.) শাবান মাসে বেশী বেশী ইবাদত বন্দেগী করতেন ও রোজা পালন করতেন। তাই শাবান মাসের আমল হিসেবে আপনি নফল রোজা রাখতে পারেন এবং বেশী বেশী ইবাদত করতে পারেন।

হাদিস অনুসারে, হযরত আয়েশা (রা.) আনহা বর্ণনা করেছেন, নবীজি (স.) রোজা রাখতেন, তখন জিজ্ঞাসা করা হত এ শাবান মাসে আর রোজা ছাড়বেন না; তিনি রোজা ভাঙ্গতে শুরু করতেন। এই আলোকে বোঝা যায় নবীজি শাবান মাসে রোজা রাখতেন।

শাবান মাসের রোজা

নবীজি শাবান মাসে রোজা রাখতেন, কবর জিয়ারত করতেন, বেশী বেশী ইবাদত বন্ধেগী করতেন। বিশেষ করে আরবি মাসের অন্যন্য বিশেষ করে অন্যান্য মাসগুলো মতো মধ্য শাবানে রোজা রাখার পাশাপাশি লাইলাতুল বরাত উদযাপনে রোজা ও ইবাদত করার দিক নির্দেশনাও আছে হাদিসের নির্দেশনায়।

তবে এই দিনটিতে মুসলিম বিশ্ব অন্য অনুষ্ঠান ও উদযাপন করে। লাইলাতুল বরাত হচ্ছে বরকতময় একটি রাত। তাই মুসলিম বিশ্বের উচিত এই রাতে আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের জন্য বেশী বেশী দোয়া করা।

নবিজীর অনুসরণ ও অনুকরণে সুন্নাত রোজা

নবীজি শাবান মাসে নফল রোজা রাখতেন। তবে আপনি যদি নবীজির অনুসরণ ও অনুকরণে রোজা রাখতে চান তাহলে নিচে সুন্নাতে রোজা দেখুন। নবীজি (স.) সপ্তাহে দুটি করে রোজা রাখতেন-

সাপ্তাহিক রোজা-

(১) নবীজি সোমবারে রোজা রাখতেন।

(২) নবীজি বৃহস্পতিবারে রোজা রাখতেন।

মাসিক রোজা-

মাসিক রোজা হচ্ছে প্রতি চান্দ্র মাসের- ১, ১০, ২০, ২৯ ও ৩০ তারিখে রয়েছে নফল রোজা। নবিজী (স.) রজব মাসে প্রায় ১০ টি নফল রোজা রাখতেন এবং শাবান মাসে ২০ টি নফল রোজা রাখতেন।

আইয়ামে বিজের রোজা

শাবান মাসের আইয়ামে বিজের রোজা নিসফা শাবানের অন্তর্ভূক্ত। এমনিতেই শাবান মাস অনেক ফজিলতপূর্ণ মাস। এই মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিজের নফল রোজা রাখা হয়।

আরো পড়ুনঃ ইফতারে কি খাওয়া উচিত

শাবান মাসে বিয়ের ফজিলত

ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে সকল দিন এবং মাস বিবাহের জন্য শুভ। তবে অনেকে মনে করেন শাবান মাসে বিয়ে হলে বেশী ফজিলত পাওয়া যায়। মূলত শাবান মাস হচ্ছ অনেক বরকতময় একটি মাস। এ সময়ে নবীজির সুন্নত মেনে চলা আব্যশক। যদি কেউ ইসলামি মতে বিবাহ করতে চায় তাহলে করতে পারবে। ইসলামি মতে সকল মাস শুভ।

শাবান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৩ 

আরবি মাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শাবান মাস হচ্ছে অষ্টম। একজন মুসলিম হিসেবে শাবান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৩ জেনে রাখা  প্রয়োজন। শাবান মাসের মধ্য রয়েছে একটি ফজিলতপূর্ণ দিন সেটি হচ্ছে লাইলাতুল বরাত অর্থাৎ শবে বরাত। এই রাতের অনেক ফজিলত রয়েছে। মুসলমানদের আরবি হিজরী মাসের ক্যালেন্ডার জেনে রাখা জরুরী। তাই আপনি শাবান মাসের ক্যালেন্ডার সংগ্রহ করে রাখতে পারেন।

শাবান মাসের অন্যতম কাজ 

রমজান মাসের রোজা পালনের জন্য শাবান মাসের চাঁদের হিসাব রাখা জরুরী। কেননা হাদিসে হযরত মুহম্মদ (স.) ঘোষণা করেছেম, তোমরা রমজানের জন্য শাবানের চাঁদের হিসাব রাখো।’  তাই মুসলমানের শাবান মাসের অন্যতম কাজ হচ্ছে শাবান মাসের চাঁদের হিসেব রাখা।

শেষ কথাঃ শাবান মাসের ফজিলত নিয়ে

হিজরি মাসের অন্যতম ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ মাস হচ্ছে শাবান মাস। এই মাসে নবীজি (স.) বেশী বেশী ইবাদত করতেন এবং নফল রোজা রাখতেন। তাই মুসলিমদের উচিত নবীজির উম্মত হিসেবে শাবান মাসে নফল রোজা রাখা এবং ইবাদত করা।

শাবান মাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হচ্ছে লাইলাতুল বরাত। আজকের এই পোস্টে শাবান মাসের ফজিলত ও শাবান মাসের দোয়া আমল নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সম্মানিত পাঠক, আজকের পোস্টটি তথ্যবহুল হলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)