দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ – দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ –দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ — প্রিয় পাঠক সবাইকে আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহ তায়ালার রহমতে আপনারা সকলেই অনেকবেশি ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তায়ালার রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে এই আর্টিকেলে আমরা দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। 

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ

এখানে আমরা দোয়া কুনুুতের আরবি উচ্চারন এবং দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ দুুটোই দেখবো এবং দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ সম্পর্কে জানবো। এছাড়াও আরো জানবো দোয়া কুনুত কখন পড়তে হয়, দোয়া কুনুতের ফজিলত, বিতর নামাজে দোয়া কুুুনুত না পড়লে কি হয়? এরকম এই দোয়া সম্পর্কিত সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

পেজ সূচীপত্রঃ

দোয়া কুনুত কি?

দোয়া কুনুত হচ্ছে একটি বিশেষ দোয়া যে দোয়াটি বিতর নামাজের ৩য় রাকাতে পড়তে হয়। হানাফী মাজহাব মতে বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া হলো ওয়াজীব।

দোয়া কুনুত আরবী উচ্চারণ

اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্‌তাঈ’নুকা, ওয়া নাস্‌তাগ্‌ফিরুকা, ওয়া নু’’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ’, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, – ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা – আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্‌ফারি মুলহিক্ব।

আরো পড়ুনঃ আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

দোয়া কুনুত এর বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। সম্পর্ক ছিন্ন করি ও পরিত্যাগ করি যারা তোমার অবাধ্যতা করে ৷ 

হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।

দোয়া কুনুত কোন সুরার অংশ?

অনেকেই আছেন যারা জানেন না কিংবা অনেকেই প্রশ্ন করেন দোয়া কুনুত কোনো সুরার অংশ কি-না? এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, দোয়া কুনুত কোন সুরার অংশ নয় বরং দোয়া কুনুত এটা হচ্ছে একটা বিশেষ দোয়া। দোয়া বিতর নামাজের ৩য় রাকাতে পাঠ করতে হয়।

আরো পড়ুনঃ ফজরের নামাজের শেষ সময়

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়লে কি হবে?

অনেকেই আছেন যারা জানতে চান যে, বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়লে কিংবা কোনো কারণে বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়তে ভুলে গেলে করনীয়? এতে করে কি নামাজ আদায় হবে? হানাফি মাযহাব মতে, বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পাঠ করা হচ্ছে ওয়াজিব। কোনো কারণে দোয়া কুনুত পাঠ করতে ভুলে হলে সাহু সিজদা দিতে হবে। অন্যথায় নামাজে ওয়াজিব তরখ করার কারণে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।

প্রশ্নঃ আমি দোয়া কুনূত মুখস্থ পারিনা। এখন বিতরের ৩য় রাকাতে দোয়া কুনুতের সময় আমি কি করবো? উত্তরঃ বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। এটি তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা এবং সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে তাকবীর বলে হাত বেঁধে পড়তে হয়। সুতরাং আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোয়া কুনূত মুখস্থ করুন।

ইমাম নববী বলেন, জেনে রাখুন অগ্রগণ্য মাযহাব মতে, কুনুতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তাই যেকোনো দোয়া পড়লে এর দ্বারা কুনুত আদায় হয়ে যাবে। এমনকি দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কুরআনের আয়াত পড়লেও কুনুতের উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে যাবে। তবে, হাদিসে যে দোয়া এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববীর ‘আল-আযকার, পৃষ্ঠা-৫০)

আরো পড়ুনঃ ছেলেদের ইসলামিক নাম অর্থসহ

দোয়া কুনুতের পরিবর্তে তিনবার সূরা ইখলাস পড়া যাবে কি?

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পাঠ করা ওয়াজিব। দোয়া কুনুতের পরিবর্তে তিনবার সূরা ইখলাস পড়া গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সূরা ইখলাস কুনুত কিংবা দোয়া সম্বলিত সূরা নয়। কুনুতের উদ্দেশ্য হলো দোয়া করা। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দোয়া ব্যতীত অন্য যেকোনো দোয়া পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে এবং নামাজ সহীহ হয়ে যাবে। অবশ্য হাদীসে বর্ণিত দোয়া যেমনঃ ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা’ এটা পড়া সুন্নত। তাই হাদীসে বর্ণিত এই দোয়া কেউ না জানলে দ্রুত শিখে নিবেন।

যেকোনো দোয়া পড়লে এর দ্বারা কুনুত হয়ে যাবে। এমনকি দোয়া সম্বলিত এক বা একাধিক কুরআনের আয়াত পড়লেও কুনুতের উদ্দেশ্য হাছিল হয়ে যাবে। তবে, হাদিসে যে দোয়া এসেছে সেটা পড়া উত্তম। (ইমাম নববীর ‘আল-আযকার ৫০)। কেউ যদি এক্ষেত্রে কোনো দোয়া না পাঠ করে তাহলে তাকে পুনরায় নামাজ আদায় করে নিতে হবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/৪২; রদ্দুল মুহতার ১/৪৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/২৮০)।

দোয়া কুনুতের ফজিলত

আবু দাউদের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, হাসান ইবনে আলী রাঃ এই দোয়াটি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কাছে থেকে শিখেছিলেন। আবু দাউদ আরও বলেছেন যখন মুসলমানদের উপরে কোনো বিপদ কিংবা বিপর্যয় চলে আসতো তখন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এই দোয়াটি পাঠ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামাজে রুকুর পূর্বে দোয়া কুনুত পড়তেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, ‘আমি ১ রাতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে ছিলাম। তিনি শয্যাত্যাগ করলেন এবং ২ রাকাত নামাজ পড়লেন। এরপর উঠে বিতর আদায় করলেন। 

প্রথম রাকাতে ফাতিহা পাঠ করার পর সূরা আ’লা পাঠ করলেন। তারপর রুকু এবং সিজদা করলেন। ২য় রাকাতে ফাতিহা এবং কাফিরূন পাঠ করলেন এবং রুকু-সিজদা করলেন। ৩য় রাকাতে ফাতিহা এবং ইখলাস পাঠ করলেন। তারপর রুকুর পূর্বে কুনুত পড়লেন।’

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ ছবি

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ ছবি
পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)