ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২২

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম ২০২২ — ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে সমস্যা নেই এমন মানুষ আমাদের দেশে খুব কমই পাওয়া যাবে। কারো নিজের নামের সমস্যা তো আবার কারো বাবার নামের সমস্যা। আসল নাম আক্কাস আলী ভোটার আইডি কার্ডে নাম আসে ঝাক্কাছ আলী। বাংলাদেশে এই সমস্যাগুলো খুবই স্বাভাবিক। এছাড়াও জন্ম তারিখ নিয়ে সমস্যা হয় যেটা পরে গিয়ে গুরুতর হয়ে দাঁড়ায়।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম

আর যখন মাথায় আসে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের চিন্তা তখন এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় পড়তে হয় চরম বিপদে। কোনো কোনো সময় অসাধু ব্যক্তির খপ্পরে পরে অর্থদন্ডও দিতে হয়। তাই আজকে কথা বলবো ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম সেই বিষয়গুলো নিয়ে। মূলত ২ ভাবে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর জন্য আবেদন করা যায়। 

১। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি বিকাশ/রকেট/ডাচ বাংলা এর মাধ্যমে জমা দিয়ে তার রশিদ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ফরমের সাথে পিন দিয়ে আটকিয়ে জমা দিলে সংশোধনের কার্যক্রম শুরু হয়। 

২। আরেকটি মাধ্যম হলো অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করা। আপনি চাইলে ঘরে বসে নিজেই নিজের মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অফিসে যাওয়া আসার কষ্ট করার প্রয়োজন হয়না এবং সময়ও বেঁচে যায়। মূলত এই পদ্ধতিটিই সহজ। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ঘরে বসে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করাই ভালো। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট হলো services.nidw.gov.bd উক্ত সাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করলে ওই ভোটারের ছবি, নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখসহ যাবতীয় তথ্য দেখা যাবে এবং এগুলো এডিট করার মাধ্যমে আবেদন করা যায়। 

আরো পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে যা যা লাগে

যদি নামের বানান ভুল থাকে বা অন্য নাম চলে আসে এবং নামের আগে মোঃ/মোছাঃ যোগ করতে বা বাদ দিতে চান, সেক্ষেত্রে আবেদনের সাথে নিম্নের সনদ গুলো জমা দিতে হবে-

এসএসসি সনদঃ এক্ষেত্রে আবেদনকারীর এসএসসি/সমমান পরীক্ষার সনদের ফটোকপি আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। অথবা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন এর আবেদন করার সময় স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। এক্ষেত্রে স্ক্যান কপি কত বাইট হবে বা রেজুলেশন কত হবে সেটা উল্লেখ করে দেয়া থাকবে।

জন্ম নিবন্ধন সনদঃ আবেদনকারীর অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি অর্থাৎ ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ সবার জন্য বাধ্যতামূলক। যদি আপনি বিবাহিত হন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ না থাকে তাহলে আবেদনের সাথে নিম্নোক্ত কাগজপত্রগুলো জমা দিতে হবে।

১। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ অর্থাৎ ডিজিটাল জন্ম সনদের ফটোকপি (বাধ্যতামূলক) ২। সন্তানদের ভোটার আইডি কার্ডের কপি অথবা শিক্ষা সনদ অথবা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি থাকে) ৩। স্বামী/স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ডের কপি (যদি থাকে) ৪। সার্ভিস বই/এমপিও শীটের কপি (চাকরি জীবি হলে) ৫। কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ (যদি থাকে) ৬। পৌর মেয়র/চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)। 

আরো পড়ুনঃ স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার নিয়ম | স্মার্ট কার্ডের ভুল সংশোধন

[বিঃদ্রঃ আপনি যদি বিবাহিত না হন তাহলে একটু খেয়াল করে দেখবেন যেসব কাগজপত্রে আপনার নাম সঠিক করে লেখা আছে। সে সব কাগজপত্র আবেদনের সাথে জমা দেবেন। যদি নামের পদবী সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্রে যা যা জমা দিতে হবে- ১। এসএসসি সনদ (যদি থাকে) ২। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ/ ডিজিটাল জন্ম সনদ (বাধ্যতামূলক) 

৩। স্বামী/স্ত্রীর ভোটার আইডি কার্ডের কপি (যদি থাকে) ৪। কাবিননামা/বৈবাহিক সনদ (যদি থাকে) ৫। সন্তানদের ভোটার আইডি কার্ড এর কপি অথবা শিক্ষা সনদ অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ (যদি থাকে) ৬। পাসপোর্টের কপি (যদি থাকে) ৭। ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি (যদি থাকে) ৮। পৌর মেয়র/চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র ইত্যাদি (যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।

এবার আসুন ভোটার আইডি কার্ড এ জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য যা যা করতে হবে সেগুলো একবার দেখে নেই। এক্ষেত্রেও উপরোক্ত কাগজপত্রের মধ্যে যে কাগজপত্রগুলো আপনার আছে সেগুলো আবেদনের প্রাথমিক অবস্থায় জমা দিতে হবে। 

যদি আপনার সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রের মধ্যে যে যে কাগজগুলো আপনার আছে সেগুলোর সাথে একটি এ্যাফিডেভিট/হলফনামা জমা দিতে হবে। হলফনামা অবশ্যই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত হতে হবে, নোটারী পাবলিক থেকে না করাই ভালো। আর সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের আবেদনগুলোতে যত কাগজপত্রই দেন না কেন সেখানে সরেজমিন তদন্ত করার প্রয়োজন হয়। 

উপজেলা নির্বাচন অফিসার সরেজমিন তদন্ত করে রিপোর্ট তৈরী করে প্রেরণ করবেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তদন্ত প্রতিবেদন ও আপনার দাখিলকৃত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আপনার আবেদন অনুমোদন করতে বা বাতিল করতে পারে। ভোটার আইডি কার্ড থেকে নিজের সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তনের আবেদনগুলো সহজে অনুমোদন পায় না। কারণ সেখানে অনেক কিছু বিচার বিশ্লেষণ করার থাকে এবং সেগুলো সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আবেদন চলমান অবস্থায় থাকে। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য যে পরামর্শ এখানে দেয়া হলো আপনি যদি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে পরামর্শ নেন তাহলে তারাও আপনাকে এই একই ধরণের পরামর্শ দেবে। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন সম্পর্কে উক্ত পরামর্শটি একটি সঠিক পরামর্শ। ভালো লাগলে কমেন্টস ও শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

আরো পড়ুনঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)