নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২১

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২১ — ভোটার আইডি কার্ড করা বা কার্ডের সংশোধন করা সবকিছুই বেশ ঝামেলা পূর্ণ কাজ। পূর্বে যাদের এই কাজের অভিজ্ঞতা আছে তারাই মাত্র স্বীকার করবেন যে দিনের পর দিন ঘুরে ঘুরেও অনেক সময় কাজের কাজ কিছুই হয়না। আবার দেখা যায় অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে টাকা পয়সা নষ্ট করেন অথচ সময় লাগে ঠিক একই পরিমাণ। কিন্তু এই ২০২১ সালে এসেও এসব ঝামেলা পোহাতে কার বা ভালো লাগে? 

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২১

যেখানে খাবার থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য অনলাইনে অর্ডার করতে পারা যায়, লেখাপড়া থেকে অফিস সব হয়ে গেছে অনলাইনে সেখানে অতি প্রয়োজনীয় ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন, সংশোধনের মতো কাজ করতে কিনা সময় + অর্থ দুটোই খরচ হয়। ঠিক এই সমস্ত সমস্যা সমাধানেই আজকে দেখাব কিভাবে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক, প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে হবে আমাদের নির্বাচন কমিশনকে যারা এত সুন্দর এবং সহজ একটি সার্ভিস আমাদের জন্য রেডি করেছেন। তবে চলুন দেখে নেই কিভাবে আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করবেন।

কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন

১। এস.এস.সি সনদপত্র - (বয়স প্রমাণের সনদ)

২। জন্ম নিবন্ধন - (বয়স প্রমাণের সনদ)

৩। পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/টি.আই.এন - (বয়স প্রমাণের সনদ)

৪। ইউটিলিটি বিলের কপি/বাড়ী ভাড়ার রশিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ – (ঐ এলাকায় সচরাচর বসবাস করেন এরুপ কোনো প্রমাণ)

৫। নাগরিকত্বের সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

৬। বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর আই ডি কার্ডের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

তবে রেজিস্ট্রেশনের পুর্বেই কিছু বিষয় জেনে নেওয়া প্রয়োজন

১। আপনি ইতোমধ্যে ভোটার হয়ে থাকলে পুনরায় আবেদন করার প্রয়োজন নেই। নিবন্ধিত ব্যাক্তি পুনরায় আবেদন করলে সেটি দন্ডনীয় অপরাধ।

২। নতুন ১৮ বয়সের অধিক, প্রবাসী বা বাদপড়া ভোটারগণ এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।

৩। নিজের পূর্ণনাম ছাড়া সকল তথ্য বাংলায় ইউনিকোডে পুরণ করতে হবে।

এখন চলুন তবে দেখে নেই কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

১। প্রথমে এই লিংকে প্রবেশ করুন।

২। এরপরে Full Name (English) লেখা ফিল্ডে ইংরেজিতে আপনার সম্পুর্ন নাম লিখুন।

৩। এখন Date of Birth ফিল্ডে আপনার সঠিক জন্মতারিখ টি লিখুন।

৪। এবারে ক্যাপচা হিসেবে একটা ফিল্ড দেখতে পাবেন যেখানে একটা বক্সের মধ্যে কিছু লেখা থাকবে। সেই লেখাটা তার নিচের ফিল্ডে সঠিক ভাবে প্রবেশ করিয়ে Continue বাটনে ক্লিক করুন।

৫। এখন আপনার সামনে মোবাইল নাম্বার ইনপুটের জন্য একটি ফিল্ড পাবেন যেখানে আপনার একটি মোবাইল নাম্বার দিবেন। অবশ্যই চালু আছে এমন নাম্বার দিবেন কারণ সেই নাম্বারে OTP বা একটি বিশেষ কোড যাবে আপনাকে ভেরিফাই করার জন্য।

৬। এবারে আপনার মোবাইলে যাওয়া কোড টি Verification ফিল্ডে প্রবেশ করান এবং Continue এ ক্লিক করুন।

৭। এখন আপনার সামনে আসবে Username এবং Password ফিল্ড। Username এর ঘরে একটি ইউনিক ইউজারনেম দিবেন এবং Password ফিল্ড গুলো শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিয়ে পূরণ করে Continue এ ক্লিক করুন। যদি দেখেন "Username Already Exists” লেখা দেখাচ্ছে তাহলে আপনার ইউজারনেম টি পরিবর্তন করে অন্য কোন ইউনিক ইউজারনেম দিবেন।

যদি সব ঠিকঠাক পূরণ করে থাকেন তাহলে সফল ভাবে আপনার একাউন্ট তৈরি হবে যে একাউন্ট থেকেই আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড আবেদন সহ ভোটার আইডি কার্ড এর সংশোধন ও করতে পারবেন। এখন যদি দেখেন আপনি অটোমেটিক লগড ইন হয়ে আছেন তাহলে আপনার ড্যাশবোর্ড এ প্রবেশ করবেন এবং যদি দেখেন লগ ইন হয়ে নেই তাহলে লগ ইন করে নিবেন একটু আগে দেয়া ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে।

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য পূরণ

১। এরপরে প্রোফাইলে ক্লিক করে এডিট বাটনে ক্লিক করতে এবং সেখানে নিচের মতো স্ক্রিন পাবেন।

২। এখানে দেখুন " ব্যক্তিগত তথ্য" - " অন্যান্য তথ্য" - "ঠিকানা" নামে তিনটি ট্যাব আছে। এই তিন ধাপেই আপনি আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

৩। এখন একের পর এক সব তথ্য পূরণ করে পরের ট্যাব অর্থাৎ " অন্যান্য তথ্য" তে ক্লিক করে এবং পরে "ঠিকানা" ট্যাবে ক্লিক করে সমস্ত তথ্য পূরণ করে দিবেন।

৪। এবারে উপরের দিক থেকে "পরবর্তী" বাটনে ক্লিক করলে কাজপত্র আপলোডের অপশন পাবেন।

৫। সেখানে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করবেন। যে যে কাগজ প্রয়োজন হতে পারেঃ এস.এস. সি সনদ - (বয়স প্রমানের সনদ), জন্ম নিবন্ধন - (বয়স প্রমাণের সনদ), পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/টি.আই.এন - (বয়স প্রমানের সনদ), ইউটিলিটি বিলের কপি/ বাড়ী ভাড়ার রশিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ – (ঐ এলাকায় সচরাচর বসবাস করেন এরুপ কোন প্রমান), নাগরিকত্বের সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), বাবা, মা, স্বামী/ স্ত্রীর আই. ডি কার্ডের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), তবে ক্ষেত্র বিশেষে কাগজপত্রের প্রয়োজনের ভিন্নতা প্রয়োজন হতে পারে।

৬। এখন শেষ ধাপ হিসেবে সমস্ত তথ্য একবার চেক করে সাবমিট করে ফেলুন। তাহলেই আপনার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবে।

৭। এখন আপনি আপনার ড্যাশবোর্ড থেকে আবেদন ফর্মটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন এবং পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন।

ভেরিফিকেশন ধাপ

আপনার নিকটস্থ জেলা বা উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে আপনার আবেদনপত্র এবং পুর্বের বলা কাগজপত্র সব জমা দিন। এবারে সমস্ত তথ্য ভেরিফাই করে আপনাকে নির্বাচন কমিশন থেকে আপনাকে জানানো হবে। এবং সেই সময় আপনাকে পরবর্তী ধাপ সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হবে অর্থাৎ কিভাবে আইডি কার্ড সংগ্রহ করবেন সে সমস্ত তথ্য জানিয়ে দেয়া হবে।

অতিরিক্ত

রেজিস্ট্রেশন সহ আরো অন্যান্য ধাপ এবং নিয়ম চাইলেই নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সহজেই দেখে নিতে পারবেন এবং নিজেকে আপডেট রাখতে পারবেন। https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ভিজিটের মাধ্যমে আপনি সকল তথ্য হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রশ্ন - উত্তর এর মাধ্যমে সকল পদ্ধতি সম্পর্কে আপডেট থাকতে ভিজিট করুন https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/faq?tab=faq-general

পরিশেষে

আশা করি ধাপগুলো দেখেই বুঝতে পেরেছেন কত সহজ এবং দ্রুত প্রক্রিয়া। ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট খোলার মতই সহজেই আপনি আবেদন করতে পারবেন এবং তথ্য ভুল হবার সম্ভাবনা থাকবে না। যেকোনো সমস্যা বা প্রশ্ন থাকলে জানিয়ে দিন কমেন্ট বক্সে। ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)