আলহাজ্ব নামের অর্থ কি | আলহাজ্ব মানে কি

আপনাদের মাঝে অনেকেই আছেনা যারা প্রতিনিয়ত অনলাইনের সাহায্যে জানতে চান আলহাজ্ব নামের অর্থ কি কিংবা যারা আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন করেছেন যে, আলহাজ্ব নামের বাংলা অর্থ জানতে চাই এবং আলহাজ্ব নামের বাংলা অর্থ সম্পর্কে খুঁজছেন।

এছাড়াও আলহাজ্ব নামের অর্থ এভাবেও টাইপ করে অনুসন্ধান করছেন এবং ইন্টারনেটের সাহায্য জানতে চাচ্ছেন আলহাজ্ব কি ইসলামিক নাম? মূলত আপনাদের এই সকল প্রশ্নের সকল উত্তর দেওয়ার জন্যেই আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।

আলহাজ্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে মনোযোগ সহকারে লেখাটি পড়ুন। আশা করি বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়লে আমি আশা করি আপনার জন্য অনেক উপকারে আসবে আলহাজ্ব মানে কি সেটা জানার জন্য।

(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)

আলহাজ্ব নামের অর্থ কি

প্রিয় পাঠক আপনি এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি বিস্তারিত পড়লে আলহাজ্ব মানে কি, আলহাজ্ব অর্থ কি, আলহাজ্ব নামের বাংলা অর্থ, আলহাজ্ব নামের অর্থ, আলহাজ্ব নামের ইসলামিক অর্থ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা | মধু খাওয়ার উপকারিতা কি

আলহাজ্ব নামের অর্থ কি

সাধারণত আলহাজ্ব নামটি ছেলেদের নাম রাখা হয়ে থাকে। আলহাজ্ব নামটি অনেক সুন্দর একটি নাম।আলহাজ্ব নামের মতোই আলহাজ্ব নামের অর্থটাও কিন্ত খুবই সুন্দর। আলহাজ্ব নামের অর্থ হলো একাধিকবার হজ্ব পালনকারী। এছাড়াও আবার অনেকেই জানতে চান আলহাজ্ব নামের আরবি অর্থ কি? আলহাজ্ব এবং হাজী শব্দের মানে একই অর্থাৎ যিনি মক্কায় হজ্ব করেছেন। এছাড়াও আলহাজ্ব নামের আরো আরবি অর্থ হচ্ছে একাধিকবার হজ্ব পালনকারী। এখন কথা হচ্ছে হজ্ব করে নামের আগে আলহাজ্ব লাগানো যাবে কি? চলুন সেটা সম্পর্কে জেনে নেইঃ

নামের আগে আলহাজ্ব লাগানো যাবে কি

ইসলামের ৫টি স্তরের মাঝে সালাত এবং হজ্ব ২টি বিষয়। হজ্ব প্রত্যেক মুসলমানের জীবনে ১ বার ফরয। দিনে ৫ বার নামাজ আদায় করতে হয়। হজ্জ্ব করে আসার পরে নামের আগে হাজী এবং আলহাজ্ব শব্দটির ব্যবহার হয়ে আসছে অনেক দিন ধরেই। এক্ষেত্রে এমন অনেক কথা প্রচলিত রয়েছে যে, ১ বার হজ্ব করলে হাজী এবং ২ কিংবা ৭ বার হজ্ব করলে তাকে আলহাজ্ব বলা হয়ে থাকে। 

প্রকৃত পক্ষে এই কথাটির কোনো ভিত্তি নেই। তবে দীর্ঘ সময় ধরে  নামায আদায় করলেও নামের পূর্বে নামাযী কিংবা মুসল্লি শব্দটি ব্যবহার করতে দেখা যায়না। অনেকেই হইতো এই প্রশ্ন করতে পারেন? মৌলিক কোনো বিষয় না লিখে কেন আমরা এই সামান্য বিষয়টুকু নিয়ে লিখছি? এই বিষয়টি নিয়ে কেন এতাে কথাবার্তা করছি?

হজ্জ্ব গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলেও বর্তমান সময়ে যেন এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি ফ্যাশনের মতো রুপ লাভ করছে। কতিপয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, মাওলানা পরিচয়ধারী ব্যক্তি সহ মসজিদের ইমাম, বক্তা এবং পীরদের মধ্যে হাজী কিংবা আলহাজ্ব নামের ব্যপক প্রচলন দেখা যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ আছেন যারা অতি উৎসাহী হয়ে ডাবল হাজী শব্দটিকে ব্যবহার করেন। এই ভাবে সূরা ফাতিহা শরীফ মুখস্ত বলতে পারলেই যদি ফাতিহায়ে হাফেজ কিংবা হাফেজে ফাতিহা বলার প্রচলন চালু হয়, তবে একটা সময় প্রকৃত নাম খুজে পাওয়ার জন্য দীর্ঘসময় লাগবে। 

আরও পড়ুনঃ বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

ডাবল এবং ট্রিপলবাজ না হয়ে আমাদের সকলের ঈমান আক্বীদাকে বিশুদ্ধ করাটাই মূল উদ্দেশ্য হওয়া প্রয়োজন। ডাক্তার হতে গেলে যেমন এমবিবিএস পাস করার দরকার হয় ঠিক একই ভাবে আলহাজ্ব কিংবা হাজী হওয়ার জন্য হজ্জ্ব করার প্রয়োজন হয়। হজ্জ্বের মতো একটি পবিত্র বিষয়কে নিছক দুনিয়ার অন্যান্য সকল কাজের মতো মনে করা মারাত্মক ভাবে গুনাহের কাজ। কোনো ইবাদত করেই যদি টাইটেল লাগানো হয় তবে যারা শুধুমাত্র শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করেন তাদের কি শুক্রাজামাত বলা লাগবে? উত্তর হবে মোটেও না।

আমি অনেক জনের মুখে শুনেছি সেটা হচ্ছে সকল বক্তার নামের আগে আলহাজ্ব রয়েছে আমার নামের আগে আলহাজ্ব থাকবে না সেটা হয়না। এবং হজ্জ্ব করলে মাহফিলের প্রোগ্রাম বেশি বেশি পাওয়া যায়। টাকা পয়সার তো কোনো কমতি নাই, এক্ষণ হজ্জ্ব না করলেও মানুষ খারাপ বলে, তাই অল্প বয়স হলেও আমাকে হজ্জ্ব করে আসা দরকার। যার ফলে মানুষ সহজেই বিশ্বাস করবে। হজ্ব করার পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেশ ভালো চলবে।

পবিত্র হজ্জ্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হওয়ার অনেকগুলো শর্ত আছে। সে সকল শর্তের দিকে আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। অন্যান্য সকল ইবাদতগুলোর মতো হজ্ব করার মাঝে অনেকের মধ্যে অহংকার আছে। নামের আগে আলহাজ্ব এবং হাজী  শব্দ ব্যবহার করাটা হচ্ছে বেশিরভাগ সময় অহংকারের ব্যবহারিক রুপ। সওয়াবের পরিবর্তে যদি ছবির চাদরে এবং অহংকারের জন্য কোটি কোটি কবীরা গুনাহে পাপ হয়ে থাকে তবে টাকা-পয়সা, সময় এবং জীবন সবগুলোই হবে বিফল। 

অথচ গর্ব এবং অহং কার সম্বন্ধে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহ কোনো আত্ম-অহংকারী, দাম্ভিক মানুষগুলোকে ভালোবাসেন না। নিশ্চয় মহান আল্লাহ তায়ালা আত্ম-অহংকারী, দাম্ভিক ব্যক্তিকে কখনো পছন্দ করেননি। পবিত্র হাদীছ শরীফে মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- যার অন্তরে বিন্দু পরিমান অহংকার থাকবে, সেই ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা মাদ্রাসার তালিকা | বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসা

কোনো মানুষ অহংকার করার অধিকার রাখেনা। অহংকার হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার চাদর। এটাকে টানাহেঁচড়া করা আমাদের উচিত না। কাউকে যদি হাজী সাহেব বলা হয় তাহলে সমাজে তার প্রভাব বৃদ্ধি পাবে এবং আস্থাও বৃদ্ধি পাবে। উক্ত আস্থাকে ব্যবহার করে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার জাল ফেলতে পারে, জনগনের মুখের প্রশংসার জন্য পঞ্চমুখ হয়েই থাকবে। এমনি নিরর্থক চিন্তা ভাবনা করাটা নিতান্তই বোকামি ব্যতীত আর কিছুই না। হজ্জ্ব করতে টাকা পয়সা এবং শারীরিক শক্তির দরকার আছে। যা সালাত এবং সাওমের জন্যে প্রয়োজন হয়না। 

আপনাদের মাঝে যারা হজ্জ্ব করতে যাবেন তাদের সকলের এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখা দরকার। প্রত্যেক ইবাদতের উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন এবং আল্লায় তায়ালার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওনার সন্তুষ্টি লাভ করা। এই মহান উদ্দেশ্যগুলোকে সামনে রেখে ইবাদত কবুলের শর্তসমূহ পূরণ করলেই আশা করা যায় মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা পাওয়া যাবে। ইনশাআল্লাহ্‌।

আমাদের দেশে অনেক ছেলে সন্তানের নাম রাখা হয় আলহাজ্ব। আপনিও আপনাদের পরিবারের পুত্র বা ছেলে সন্তানের জন্য আলহাজ্ব নাম রাখতে পারেন। আপনার পরিবারের ছোটো ছেলে শিশু সদস্যের নাম আলহাজ্ব রাখতে পারেন। প্রিয় পাঠক আশা করি আপনারা আলহাজ্ব নামের বাংলা অর্থ, আলহাজ্ব নামের ইসলামিক অর্থ সম্পর্কে জানতে পারছেন। আমি আশা করি আলহাজ্ব নামের অর্থ সম্পর্কে জানতে পেরে আপনার অনেক উপকার আসবে। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে আমরা নিম্নে আলহাজ্ব নামের সঙ্গে কিছু উপাধি যুক্ত করে কিছু নাম বানিয়েছি। আশা করি আলহাজ্ব নামের সঙ্গে কিছু উপাধি যুক্ত আপনাদের সকলের পছন্দ হবে। 

আলহাজ্ব আহনাফ, আলহাজ্ব ইসলাম, আলহাজ্ব চৌধুরী, আলহাজ্ব হাসান, আলহাজ্ব উদ্দিন, আলহাজ্ব হাওলাদার, আলহাজ্ব আহমেদ, আলহাজ্ব রায়, আলহাজ্ব অধিকারী, আলহাজ্ব হোসেন, আলহাজ্ব মনোয়ার, আলহাজ্ব হুসাইন, আলহাজ্ব মুন্তাসির, মোহাম্মদ আলহাজ্ব, আব্দুল আলহাজ্ব, প্রিন্স আলহাজ্ব, আলহাজ্ব সরকার, আলহাজ্ব ইফতিয়ার, আলহাজ্ব কবীর, আলহাজ্ব নোমানী, আলহাজ্ব হাওলাদার, আলহাজ্ব হক। এছাড়াও অনেকের প্রশ্ন আলহাজ্ব কি ইসলামিক বা আরবি নাম। জি হ্যাঁ আলহাজ্ব নামটি হচ্ছে ইসলামিক নাম।

আরও পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম | তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

পোষ্ট ক্যাটাগরি: