স্মার্ট টিভি এবং এন্ড্রয়েড টিভির মধ্যে পার্থক্য

স্মার্ট টিভি এবং এন্ড্রয়েড টিভির মধ্যে পার্থক্য — অনেকগুলি টিভি ব্র্যান্ডের সাথে আজ এমন একটি সিদ্ধান্তে আসা কঠিন যেটি আপনার লিভিং রুম, রান্নাঘর বা শোবার ঘরে অনেক বছর ধরে থাকবে। আমাদের অনেকেরই বিভিন্ন ধরণের ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলি বুঝতে অসুবিধা হয় এবং যারা খুব বেশি প্রযুক্তি-বুদ্ধিমান নয় তাদের জন্য একটি স্মার্ট টিভি এবং একটি অ্যান্ড্রয়েড টিভির মধ্যে পার্থক্য বোঝা বেশ বিভ্রান্তিকর হতে পারে। দুটি টিভির খুবই মিল, আপনি এমনকি বলতে পারেন যে একটি অ্যান্ড্রয়েড টিভি মৌলিকভাবে এক ধরনের স্মার্ট টিভি। 

যাইহোক, কিছু পার্থক্য রয়েছে যা আপনার বাড়ির জন্য অন্যটির চেয়ে আরও উপযুক্ত করে তুলতে পারে। তাই আমরা আপনার জন্য এটি সহজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই রহস্যের সমাধান করতে এবং আপনার ঝামেলার অবসান ঘটাতে। আমরা এমন বিষয়বস্তু নিয়েছি যা আপনি আমাদের মূল্যবান গ্রাহক, আপনার পরিস্থিতির জন্য উপযুক্ত টিভি বেছে নিতে ব্যবহার করতে পারেন। এই দুটির মধ্যে পার্থক্য করতে সাহায্য করার জন্য এখানে মূল বিষয়গুলি দেওয়া হল। শুরুতেই স্মার্ট টিভি নিয়ে কথা বলা যাক-

স্মার্ট টিভি এবং এন্ড্রয়েড টিভির মধ্যে পার্থক্য

স্মার্ট টিভি

স্মার্ট শব্দের অর্থ ভালোমান ও রুচি যা মানুষের মনের মধ্যে ভালো লাগা বা আনন্দের সৃষ্টি করে। স্মার্ট বলতে শুধুমাত্র নতুন ফ্যাশন বা স্টাইলকে বোঝায় না বরং নতুনত্বের ছোয়াকে বোঝায়। এই স্মার্ট শব্দটির সাথে যদি আমরা টেলিভিশন যার সংক্ষিপ্ত নাম টিভি যোগ করি তাহলেই তার নাম হয়ে যায় স্মার্টটিভি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে যে টিভির মধ্যে ফ্যাশন বা ডিজাইন করা আছে তাই কি স্মার্ট টিভি?না তা নয়।

স্মার্ট টিভি হচ্ছে এমন এক ধরনের টিভি যা এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মে অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে প্রস্তুত করে ইন্টারনেট এক্সেস করা যায়। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি পূর্বে থেকে ইন্সটল করা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ (যেমনঃ ইউটিউব, টুইটার, ব্রাউজার প্রভূতি) ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজে ব্যবহার করতে পারেন। স্মার্ট টিভির ফাংশন কোম্পানি ভেদে বিভিন্ন রকম হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিটি কোম্পানির নিজস্ব গোপনীয়তায়তা রয়েছে। 

আরও পড়ুনঃ QR Code কি | QR Code কিভাবে কাজ করে

কোনো কোম্পানি বর্তমানে তাদের স্মার্ট টিভিতে গুগল প্লে স্টোর ইন্সটল করেছে। যাতে একজন ব্যবহারকারী ব্যক্তি তার ইচ্ছে মত অ্যাপ ডাউনলোড করে পরবর্তীতে ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাউনলোড করা অ্যাপ গুলো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়না। তবে ব্যবহারকারী যদি তার স্মার্ট টিভিতে ভালো নেট বা ওয়াইফাই কানেকশন দেয় সেক্ষেত্রে খুব সহজেই সে ইউটিউব ব্যবহার করতে পারে। শুধু তাই নয় স্মার্ট টিভিতে ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াও এর পাশাপাশি ইন্টারনেট ছাড়া যেমন ডিস এন্টেনা ব্যবহার করা যায়।

ব্যবহারকারীদের জীবন আরো সহজ ও সাচ্ছন্দ করার লক্ষ্যে স্মার্ট টিভিতে বেশ কিছু নতুন নতুন ফাংশন বা ফিচার যোগ করা হচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে-অভ্যন্তরীণ মেমোরি ও একটি ড্রাইভ (ফ্লাশ কার্ড বা ডিস্ক)। যাতে ব্যবহারকারীগণ খুব সহজেই পুরনো বা পছন্দনীয় যেকোন ফাইল বা ভিডিও সংরক্ষণ করতে পারেন, ইউটিউব চ্যানেল এক্সেস, স্কাইপি কনভারসেশন এমনকি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপকে সরাসরি টিভির স্ক্রিনে সংযুক্ত করা সহ রয়েছে বিভিন্ন ফিচার। এবার আমরা কথা বলব এন্ড্রয়েড টিভি নিয়ে-

এন্ড্রয়েড টিভি

এন্ড্রয়েড টিভি হলো এক ধরনের স্মার্ট টিভি যেখানে সেটআপ বক্সের পাশাপাশি মিডিয়া স্ট্রিমিং পরিসেবা গুলোকে ক্ষমতা দেয়। এন্ড্রয়েড টিভিতে মূলত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে এন্ড্রয়েড টিভিতে নতুন সকল ফিচার থাকে। এখানে ব্যবহারকারী শুধুমাত্র এন্ড্রয়েড টিভিতে ইনস্টল থাকা অ্যাপ সামগ্রী ব্যবহার করতে পারেন না বরং তার ইচ্ছেমত সে অ্যাপ ডাউনলোড করে স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারেন। 

এমনকি ভিডিও গেমসও খেলতে পারেন। এর মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ স্টোরেজ রয়েছে। এতে এন্ড্রয়েড টিভি সফটওয়্যার ছাড়াও রয়েছে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট। বর্তমানে নতুনভাবে এন্ড্রয়েড টিভির ডিসপ্লে ব্যাকআপ তৈরি হচ্ছে HDR (HDR10 এবং HLG ফরমেট) সাপোর্ট। যা ছবি বা ভিডিও কে ঝকঝকে ও বাস্তব করে তোলে।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করুন

স্মার্ট টিভি এবং এন্ড্রয়েড টিভির মধ্যে পার্থক্য কি

স্মার্ট টিভি এবং এন্ড্রয়েড টিভির মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। শুধুমাত্র এদের সুবিধা এবং অসুবিধা এদের মধ্যে পার্থক্য তৈরী করেছে। একটি কথা বরাবরের মতো প্রচলন আছে যে, সকল এন্ড্রয়েড টিভি স্মার্ট টিভি কিন্তু সকল স্মার্ট টিভি এন্ড্রয়েড টিভি না। কারণ এন্ড্রয়েড টিভিতে স্মার্ট টিভির চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। স্মার্ট টিভিতে পূর্বে ইন্সটলড করা অ্যাপ সমূহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় কিন্তু নতুনভাবে অ্যাপ ইনস্টল সুবিধাজনক নয় হলেও বেশি কার্যকর হয় না।

অপরদিকে এন্ড্রয়েড টিভিতে পূর্বে থেকে উন্নত মানের কিছু ফিচার ইনস্টল করা থাকলেও প্লে স্টোরের মাধ্যমে নতুন নতুন পছন্দনীয় অ্যাপসমূহ নামিয়ে সহজে কাজ করা যায়। স্মার্ট টিভিতে রিমোট এন্ড্রয়েড টিভির চেয়ে তুলনামূলকভাবেমূলক ভাবে ধীর গতিতে কাজ করে। এন্ড্রয়েড টিভিতে উন্নতমানের সেন্সর ব্যবহার করায় এটি খুব দ্রুত কাজ করে এটি।

এছাড়াও এন্ড্রয়েড টিভিতে HDMI বা VGA কেবল কানেক্ট থাকায় যে কোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এর সাথে সংযুক্ত করা যায় কিন্তু স্মার্ট টিভিতে তা সম্ভব নয়। এন্ড্রয়েড টিভিতে এর আল্ট্রা প্রজেক্ট টেকনোলজি ব্যবহার করায় ছবি বা ভিডিও যতটা ক্লিয়ার বা বাস্তব মনে হয় এবং স্মার্ট টিভিতে ঠিক ততটা মনে হয় না।

আরও পড়ুনঃ ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর উপায়

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)