ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস

আমরা অনেক সময় আমাদের ভয়েস চেঞ্জ করার উপায় অনুসন্ধান করে থাকি। বিশেষ করে, আমরা যখন কোন বন্ধুর সাথে প্রাঙ্ক করতে চাই অথবা ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে চাই। যাইহোক, আমরা বিভিন্ন কারণে আমাদের ভয়েস পরিবর্তন করতে পারি অথবা অন্য কোন বিভিন্ন কারণে ভয়েস চেঞ্জ করার দরকার হতে পারে।

ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস

আর তাই, আমাদের দরকার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থেকে ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে এমন কয়েকটি ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপস বা ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব, যেগুলো দিয়ে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল থেকে ভয়েস চেঞ্জ করা যায়। আজকের এই তালিকায় আলোচনা করা বেশিরভাগ অ্যাপসটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়, তবে এসব অ্যাপসের ভেতরে থাকা কিছু ফিচার ব্যবহার করার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করতে হবে।

আর আপনি চাইলে, সে সমস্ত অ্যাপসে থাকা Limited ফিচার ব্যবহার করেই আপনার ভয়েস চেঞ্জ করতে পারেন। তবে, বিভিন্ন কলিং অ্যাপ ব্যবহার করার সময় রিয়েল টাইম পরিবর্তন করার জন্য আপনাকে এ সমস্ত ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস গুলো থেকে সাবস্ক্রিপশন নেওয়া লাগতে পারে।

এ সমস্ত অ্যাপসগুলো শুধুমাত্র মজা এবং এ জাতীয় কার্যক্রমের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আপনি যদি এসব ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস ব্যবহার করে কোন অপরাধমূলক কার্যক্রম করেন, তাহলে সেটি সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। এসব দায়ভার এ সমস্ত অ্যাপস কিংবা Technical Care BD কর্তৃপক্ষ নিবে না।

চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে আজকের তালিকার কিছু ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস দেখে নেওয়া যাক, যেগুলো ব্যবহার করে আপনি অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন থেকে ভয়েস চেঞ্জ করতে পারেন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

1. Baviux Voice Changer with Effect - ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস

Baviux হলো অ্যান্ড্রয়েড এর জন্য Available থাকা সবচাইতে জনপ্রিয় ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপস গুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম। আর এটি অন্যান্য ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপস গুলোর চাইতে ব্যবহার করা সহজ। তবে, আপনি এই ভয়েস চেঞ্জ অ্যাপসটি ব্যবহার করে কল করার সময় রিয়েল টাইম ভয়েস পরিবর্তন করতে পারবেন না। আপনি এই অ্যান্ড্রয়েড ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপটি দিয়ে শুধুমাত্র আপনার মোবাইল স্টোরে যে থাকা ফাইলগুলো Import করে, সেগুলোর ভয়েস চেঞ্জ করতে পারবেন।

এই ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপটি ব্যবহার করা সহজ এবং এখানে আপনি প্রায় ৪০ টির ও বেশি ইফেক্ট চয়েস করার অপশন পাবেন। আর এই ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপসটি ব্যবহার করে ভয়েস চেঞ্জ করার পর, সেটি সেভ করা, শেয়ার করা অথবা সেটিকে রিংটোন অথবা নোটিফিকেশন Tone হিসেবে সেট করা ও অনেক সহজ।

যদিও এই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। তবে, এই অ্যাপসটির ভেতরে থাকা কিছু প্রিমিয়াম ইফেক্ট কেনার জন্য আপনাকে অর্থ খরচ করতে হবে। এমনকি আপনি কিছু বিজ্ঞাপন দেখেও এ সমস্ত ইফেক্ট গুলো আনলক করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ ভয়েস চেঞ্জ করার সফটওয়্যার

2. Live Voice Changer - Prankcall

অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে লাইভ ভয়েস চেঞ্জিং এর জন্য Prankcall একটি অন্যতম সেরা অ্যাপ। যদিও এই ভয়েস চেঞ্জার অ্যাপটিতে শুধুমাত্র ১১ টি ভয়েস ইফেক্ট রয়েছে। তবে, এটি আজকের তালিকায় আলোচনা করা একমাত্র অ্যাপ, যা দিয়ে লাইভ কল করার সময় ভয়েস চেঞ্জ করা যায়।

এই ভয়েস চেঞ্জিং আপনি আপনি বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন, তবে লাইভ ভিডিও কল ফিচার আনলক করার জন্য আপনাকে ৭ ডলার দিয়ে সাবস্ক্রিপশন করতে হবে।

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য এই অ্যাপসটিতে Effects গুলো ছাড়াও একটি সহজ 12-Band Equalizer রয়েছে, যা ব্যবহার করে আপনি আপনার প্রতিটি সাউন্ড আরো বেশি কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এখানে আপনাকে বলে রাখি যে, এই অ্যাপটি শুধুমাত্র IOS ব্যবহারকারীদের জন্য Available রয়েছে।

3. Snapchat

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই Snapchat অ্যাপস টি সম্পর্কে পরিচিত। অনেকেই হয়তোবা এই শুধুমাত্র একটি সোশ্যাল সাইট হিসেবে চেনে এবং এটি চেহারা পরিবর্তন করার জন্যই অনেক বেশি জনপ্রিয়। কিন্তু, আপনি এই অ্যাপসটি ব্যবহার করে নিজের চেহারা চেঞ্জ করার পাশাপাশি ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য ও এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন।

Snapchat অ্যাপস দিয়ে ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য আপনাকে যেকোনো একটি ভিডিও রেকর্ড করার পরে নিচে থাকা বাম দিকের লাউড-স্পিকার আইকনটিতে দীর্ঘক্ষণ ট্যাপ করে ধরে থাকতে হবে। আর তারপরেই আপনি এই অ্যাপটিতে আপনার ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাক্সেস পেয়ে যাবেন। 

এখানে আপনার ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য বেশ কিছু অপশন রয়েছে। যেমন: Alien অথবা Robot ভয়েস। সবচাইতে ভালো হয়, আপনি যদি এখানে থাকা প্রত্যেকটি ভয়েস ইফেক্ট চেক করেন এবং আপনার জন্য উপযুক্ত ভয়েসটি সিলেক্ট করেন। এরপর আপনার ভয়েসটি কেমন শোনাচ্ছে তা চেক করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে Speed Modifiers ও ব্যবহার করতে পারেন।

একবার আপনি ভিডিও রেকর্ড করার পরে, ফিল্টার গুলো আনার জন্য শুধুমাত্র বাম বা ডান দিক থেকে Swipe করুন‌। তারপর, Slow-motion বা‌ স্পিড বাড়ানোর জন্য Snail এ Tap করুন। আপনার ফোনে ইতিমধ্যেই হয়তোবা স্ন্যাপচ্যাট আপনি রয়েছে। তাই আপনি এখনই আপনার ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন।

4. Voice Changer

আপনি যদি আপনার মেমোরিতে থাকা যে কোন অডিও ফাইল এর ভয়েস চেঞ্জ করতে চান, তাহলে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য এটি একটি সেরা ভয়েস চেঞ্জার অ্যাপ হতে পারে। ‌তবে, অন্য সকল অ্যাপস এর মতোই এটিও আপনাকে হয়তোবা সন্তুষ্ট করতে নাও পারে।

যাই হোক, আপনি এই অ্যান্ড্রয়েড ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপস টি ব্যবহার করে খুব সহজেই আপনার মোবাইলের ফাইলগুলো Import করে সেগুলোর ভয়েস চেঞ্জ করতে পারবেন।

আপনি আপনার ফোনের মেমোরি থেকে যে কোন একটি ভয়েস সিলেক্ট করে সেটিকে বেশ কিছু ইফেক্ট দিয়ে ভয়েস চেঞ্জ করতে পারবেন। ‌এর মধ্যে রয়েছে, Robot, Alien, Bee এবং আরো কিছু ভয়েস ইফেক্ট। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে এই ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপসটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। তবে, এই অ্যাপটি ব্যবহার করার সময় আপনি ভিতরে বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন।

আরো পড়ুনঃ মোবাইলের ডিলিট করা ছবি ফিরিয়ে আনার উপায়

5. Voice Changer by AndroidRock

আপনি যদি এই মুহূর্তে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপ খুঁজে থাকেন, তাহলে উপরের অন্যান্য সকল অ্যাপস গুলোর মত এটিও আপনাকে ভয়েস চেঞ্জ করার সুবিধা প্রদান করবেন। আপনি এই অ্যান্ড্রয়েড ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপসটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার ভয়েসকে Robot, Duck, Alien, Chipmunk এবং আরো অন্যান্য সকল ভয়েসে পরিবর্তন করার সুযোগ পাবেন।

এই অ্যাপটি দিয়ে ভয়েস চেঞ্জ করার প্রক্রিয়াটি ও বেশ সহজ। এক্ষেত্রে আপনি যে কোন একটি ভয়েস ইফেক্ট সিলেক্ট করে সরাসরি যেকোনো অডিও রেকর্ড করতে পারবেন অথবা চাইলে মেমোরি থেকে যেকোনো অডিও কে অন্য কোন ভয়েস ইফেক্ট দিয়ে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। 

তবে, আপনার কাছে অন্যান্য সকল ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপসগুলোর মধ্যে থেকে এই অ্যাপটি অনেক বেশি পুরাতন মনে হতে পারে। কেননা, এই অ্যাপসটি ইউজার ইন্টারফেস অন্যান্য সকল অ্যাপসের মতো অতটা আকর্ষণীয় নয়। আর এখানে আপনাকে বলে রাখি যে, আপনি কিন্তু এই ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপস টি ব্যবহার করে কল করার সময় লাইভ ভয়েস পরিবর্তন করতে পারবেন না।

সেই সাথে, অ্যাপসটি ব্যবহার করার সময় আপনাকে বিজ্ঞাপনের মত কিছু বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হবে। আর বিজ্ঞাপনের জন্যই মূলত আপনি সেই অ্যাপটি ফ্রি ব্যবহার করতেন পারবেন। এই অ্যান্ড্রয়েড ভয়েস চেঞ্জিং অ্যাপসটি নিয়মিত আপডেট নিয়ে আসে এবং আপনি কোন সময় এটির ইউজার ইন্টারফেস পরিবর্তনের ও আপডেট পেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ড্রোন ক্যামেরা দাম কত

ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস নিয়ে শেষ কথা

আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারণে আমাদের রেকর্ড করা ভয়েস অথবা লাইভ ভয়েস পরিবর্তন করতে চাই। আর এজন্য আমরা ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস খুঁজে থাকি। এখন থেকে আপনার যদি ভয়েস চেঞ্জ করার দরকার পড়ে, তাহলে আপনি আজকের এই তালিকায় আলোচনা করা অ্যাপসগুলোর মধ্য থেকে যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারেন এবং ভয়েস চেঞ্জ করতে পারেন। 

আশা করি আজকের আলোচনা করা ভয়েস চেঞ্জ করার অ্যাপস গুলো আপনার যেকোন ভয়েস চেঞ্জ করার জন্য অনেক বেশি উপকারে আসবে। ধন্যবাদ, আসসালামু আলাইকুম।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: