সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম | সহজ কিস্তিতে লোন

হাসিবুর
লিখেছেন -

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম - আমাদের বিভিন্ন সময় ব্যক্তিগত কারণে টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়ে থাকে। আমরা অনেক সময় মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ধার নিয়ে আমাদের প্রয়োজন মিটিয়ে থাকি। এছাড়াও আমাদের ব্যক্তিগত কাজে কিংবা ব্যবসায়ী কোন কাজে আমাদের ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রায় সকল ব্যাংকেই সুদের হার অনেক বেশি। আর এই জন্যই আমরা সব সময় কম সুদে ব্যাংক লোন নিতে চাই। 

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমি আপনাদের সাথে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। তাই আপনি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তবে চলুন জেনে নেই সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম নিয়ে কিছু কথা

আমাদের ব্যক্তিগত কারণে কিংবা আর্থিক সংকটের কারণে ব্যাংক থেকে লোন বা ঋণ নিতে হয়। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের সুদের পরিমাণ অনেক বেশী। তাই আমরা অনেকেই কম সুদে ব্যাংক থেকে লোন নিতে চায়। 

যদি আমরা কম সুদ ব্যাংক থেকে ঋণ নেই তবে আমরা অনেক সুবিধা পাব। এছাড়াও আমাদের মাদের বাৎসরিক সুদ অনেক কম দিতে হবে। তাই আপনি যদি এই মুহূর্তে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তবে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ব্যাংক লোন কি?

ব্যাংক লোন হলো ব্যাংক যখন গ্রাহকের আর্থিক সংকটে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুদের উপর ভিত্তি করে ব্যাংক থেকে গ্রাহকের অর্থ প্রদান করে এবং সেই অর্থ সপ্তাহিক কিংবা মাসিক ভিত্তিতে সুদ সহ ব্যাংক কতৃপক্ষকে ফেরত দিতে হয়। 

এই পদ্ধতিতে ব্যাংক থেকে আপনি যে অর্থ গ্রহণ করবেন তাকে ব্যাংক লোন বলা হয়। লোন শব্দটি মূলত ঋণ শব্দ থেকেই উৎপত্তি হয়েছে। লোন হলো ইংরেজী শব্দ। এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো ঋণ। আশা করি ব্যাংক লোন কি তা আপনি জানতে পারলেন।

আরো পড়ুনঃ কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার নিয়ম

কম সুদে ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায়

যদি আপনি এই মুহূর্তে ব্যাংক থেকে টাকা লোন নেওয়ার চিন্তা করে থাকেন তবে আপনার অবশ্যই কম সুদে ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায় জেনে রাখা প্রয়োজন। কেননা আপনি কখনো চাইবেন না বেশী সুদে ব্যাংক থেকে লোন নিতে। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি সবগুলো ব্যাংক মিলে প্রায় অর্ধশত বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে। 

একজন ব্যক্তি চাইলে এসব ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারে। কিন্তু সকল ব্যাংক থেকে আপনি কোন ধরনের সুদ ছাড়া লোন নিতে পারবেন না। হাতেগোনা কয়েকটি ব্যাংক আছে তারা কম সুদে গ্রাহকের লোন দিয়ে থাকে।

আপনি এই ব্যাংকগুলো থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন। আপনারা অনেকেই আছেন সবচেয়ে কম সুদে লোন কোন প্রতিষ্ঠানগুলো দিয়ে থাকে তা জানেন না। আর এই কারণেই অনেক উদ্যক্তা ভাই-বোনেরা প্রথম অবস্থায় ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আর্থিক অবস্থায় ভেঙে পড়ে। তাই আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চলুন তবে কম সুদে ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে যে ব্যাংকগুলো সেসম্পর্কে জেনে নেই। 

সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক - সহজ কিস্তিতে ব্যাংক লোন দেয় কোন ব্যাংক

যদি আপনি এই মুহূর্তে ব্যাংক থেকে টাকা লোন নিতে চান তবে আপনাকে সবচেয়ে কম সুদে কোন কোন ব্যাংক লোন দেয় এটা জেনে রাখতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রায় ৫০ টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে। এর মধ্যে এমন প্রায় দশটি ব্যাংক রয়েছে, যে ব্যাংকগুলো সুদের হার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। এই দশটি ব্যাংকের সুদের হার ৮ শতাংশের অনেক কম। নিচে সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংকগুলো তা উল্লেখ করা হলোঃ

  • রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক 
  • বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক
  • বিদেশি হাবিব ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক এনএ
  • কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন
  • ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান
  • ওয়ারি ব্যাংক
  • এইসএসবিসি
  • ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেড
  • আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড

এছাড়াও বাংলাদেশের আরও বেশ কয়েকটি ব্যাংক রয়েছে তারা ব্যাংকের সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। নিচে ব্যাংকগুলোর নাম উল্লেখ করা হলোঃ

  • সিটি ব্যাংক
  • ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক
  • পূবালী ব্যাংক
  • সীমান্ত ব্যাংক
  •  ইস্টার্ন ব্যাংক
  • এনসিসি ব্যাংক
  •  প্রাইম ব্যাংক
  • সাউথইস্ট ব্যাংক
  • ঢাকা ব্যাংক
  • আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক
  •  ডাচ-বাংলা ব্যাংক
  •  মার্কেন্টাইল ব্যাংক
  • স্টান্ডার্ড ব্যাংক
  • বিসিবিএল
  • ব্যাংক এশিয়া
  • ট্রাস্ট ব্যাংক
  • শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
  • যমুনা ব্যাংক 
  • আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড

উপরোক্ত ব্যাংকগুলো ব্যাংকের সুদের হার ১০ শতাংশ এর নিচে নিচে ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। আপনারা চাইলে উপরোক্ত ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উক্ত ব্যাংকগুলোতে গেলে তারা আপনাকে সহজে লোন প্রদান করবে।

আরো পড়ুনঃ RFL Web Do কাজ করার নিয়ম আরএফএল ওয়েব ডিও

কোন ব্যাংকের সুদের হার কত শতাংশ?

ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাইলে যে ব্যাংক থেকে লোন নিবেন সে ব্যাংকের সুদের হার কত শতাংশ এই সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জেনে রাখতে হবে। তাছাড়া আপনি চাইবেন কম সুদে ব্যাংক থেকে লোন নিতে তবে চলুন জেনে নেই কোন ব্যাংকের সুদের হার কত শতাংশ।

১। ব্যাংক এশিয়ায় সুদের পরিমাণ ১০ থেকে ১৩ শতাংশ 

২। আইএফআইসিতে সুদের হার ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ

৩। এক্সিম ব্যাংক সুদের হার ১৩ থেকে ১৬ শতাংশ

৪। মার্কেন্টাইলে সুদের হার ১০ থেকে ১৩ শতাংশ 

৫। মিউচুয়াল ট্রাস্টে সুদের হার- ১১ থেকে ১৪ শতাংশ

৬। ওয়ান ব্যাংকে সুদের হার ১১ থেকে ১৫ শতাংশ

৭। প্রাইম ব্যাংক সুদের হার ১০ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ

৮। সিটি ব্যাংকে সুদের হার ১৩ শতাংশ

৯। ব্র্যাক ও ঢাকা ব্যাংক সুদের হার ১০ থেকে ১৩ শতাংশ 

১০। ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে সুদের হার সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১৩ শতাংশ 

১১। ইস্টার্ন ব্যাংক ব্যাংকে সুদের হার ১০ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ

ব্যক্তিগত লোন (Personal Loan) পেতে কি কি যোগ্যতা লাগবে?

ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে হলে আপনার অবশ্যই কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে তবেই আপনি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিচে কি কি লাগবে তা উল্লেখ করা হলোঃ

১। ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের জন্য আবেদনকারীর বয়স নুন্যতম ২১ বছর এবং সর্বচ্চ ৬০ বছর হতে হবে।

২। পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির অবশ্যই মাসিক আয় থাকতে হবে। মাসিক আয় কিংবা বার্ষিক আয় না থাকলে আপনি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নিতে পারবেন না। 

৩। গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি প্রয়োজন হবে।

৪। চাকরিজীবীদের আইডি কার্ড লাগবে

৫। আবেদনকারীর বিগত ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট অবশ্যই ক্লিয়ার থাকতে হবে। 

৬। বিগত মাসের সেলারি স্লিপের প্রয়োজন হবে।

৭। ব্যাংক থেকে লোন নিতে হলে জামিনদার বা গ্যারান্টার লাগবে।

৮। আবেদনকারী ও জামিনদারের দুইকপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে।

৯। আবেদনপত্র আবেদনকারীর নিজের স্বাক্ষর থাকতে হবে।

১০। গ্যাস বিল কিংবা বিদ্যুৎ বিলের কপি থাকতে হবে।

১১। চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে সেলারি একাউন্ট থাকতে হবে।

১২। ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স লাগবে।

১৩। আবেদনকারীর সকল তথ্য নির্ভুল ও সঠিক থাকতে হবে।

ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে এবং কি কি যোগ্যতা লাগবে তা আলোচনা করেছি। আপনার ব্যাংক লোন নেওয়ার আগে অবশ্যই এই অংশটুকু দেখে নিবেন। সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার জন্য উক্ত কাগজপত্র গুলি নিয়ে আপনার পছন্দের ব্যাংকের নিকট গেলে তারা আপনাকে সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করবে।

আরো পড়ুনঃ কিস্তিতে ওয়ালটন এসি - ওয়ালটন এসি কিস্তিতে কেনার নিয়ম

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম ২০২৩

আপনি যখন ব্যাংক থেকে লোন নিবেন তখন কিন্তু ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের শর্ত জুড়ে দিবে। এই জন্য আপনাকে অবশ্যই সহজ কিস্তিতে লোন উত্তোলন করতে হবে। আজকের এই পোস্টের উপরের অংশে সবচেয়ে কম সুদে লোন ও কম সুদে ব্যাংক লোন দেয় কোন ব্যাংক তা আলোচনা করেছি। এখন আমরা জানব কোন কোন ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে। তবে চলুন জেনে নেই বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংক সহজ কিস্তিতে ব্যাংক লোন দিয়ে থাক সেটা জেনে নেই।

সহজ কিস্তিতে ঋণ দিয়ে থাকে গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, আশা ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, টিএমএসএস, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। আপনি এই ব্যাংকগুলো থেকে সহজে লোন নিতে পারবেন। এছাড়াও আপনি মাসে তিনবার সাপ্তাহিক সহজ কিস্তিতে লোন উত্তোলন করতে পারবেন। আশা করি আপনি আজকের পোস্টের এই অংশটুকু পড়ে জানতে পারলেন সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম।

শেষ কথাঃ সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম নিয়ে

আমাদের বিভিন্ন সময় ব্যাক্তিগত কাজে কিংবা ব্যবসায়িক কাজে টাকা পয়সা প্রয়োজন। আর টাকা-পয়সার জন্য আমরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকি এবং সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক কিস্তিতে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করি। সুপ্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার পরিচিতদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

ব্লগ ক্যাটাগরি: