হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি

হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি - আপনার শরীর নিশ্চয়ই হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ে। তার জন্য আপনি হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন। তবে আজকের এই পোস্টটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি

আমরা অনেকেই প্রায় সময় বলে থাকি, কাজ করতে ভালো লাগছে না। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে, কাজের প্রতি মনোযোগ আসছে না। এগুলো মূলত হলো শরীর দুর্বলতার লক্ষণ। অনেক সময় অনেকেই এই সমস্যায় পড়ে অনেক মানুষ অজ্ঞান ও হয়ে যেতে পারেন। 

এছাড়াও শারীরিক দুর্বলতা কাজের প্রতি উৎসাহ একেবারে নষ্ট করে দেয়। তাই আজকের এই পোস্টটিতে আমি হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন জেনে নেই হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ গুলো কি কি।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ নিয়ে কিছু কথা

কখনো কখনো মানুষ শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। আর এই ক্লান্তি অনুভবের কারণেই মূলত মানবদেহ দুর্বল হয়ে পড়ে। দেহের এক বা একাধিক মাংসপেশীর কার্মযক্ষমতা কমে যাওয়ার প্রবণতাকে দুর্বলতা বলে। 

অনেক মানুষ আছে যারা দুর্বল লাগার অনুভব করতে পারেন, কিন্তু শারীরিকভাবে শক্তিক্ষয় উপলব্ধি করতে পারেন না। তো যাইহোক, আজকে আমি আপনাদের সাথে হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এই পোস্টটি পড়ুন।

দুর্বলতা কি?

দুর্বলতা হচ্ছে এক বা একাধিক মাংসপেশীর কার্মযক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার প্রবণতাকে বোঝায়। অনেক মানুষ আছে তারা তাঁদের দুর্বল লাগার অনুভূতি উপলব্ধি করতে পারেন, কিন্তু শারীরিকভাবে কোনো শক্তিক্ষয় উপলব্ধি করতে পারে না। 

আবার অনেক মানুষ আছেন যারা কার্যক্ষমতা হ্রাসের বিষয়টি শুধুমাত্র শারীরিক পরীক্ষার সময় উপলব্ধি করতে পারেন। একে সাধারণত “অবজেক্টিভ উইকনেস” বলা হয়। শারীরিক ও মানুষিকভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে সব কাজেই মানুষ অনীহাবোধ করে।

দুর্বলতা হল ক্লান্তি বা ক্লান্তির অনুভূতি বা শক্তি হ্রাস অনুভব করা। অতিরিক্ত কাজ, মানসিক চাপ বা ঘুমের অভাবের কারণে কিছু সময়ের জন্য দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। দুর্বলতার জন্য মেডিকেল পরিভাষা হল অ্যাথেনিয়া

দুর্বলতা আপনার সারা শরীরে বা একটি নির্দিষ্ট জায়গায়, যেমন আপনার বাহু বা পায়ে ঘটতে পারে।শারীরিক অসুস্থতা বা বিভিন্ন ব্যাধির কারণেও দুর্বলতা হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী (দীর্ঘস্থায়ী) অবস্থা, যেমন মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা একটি কম সক্রিয় থাইরয়েড, দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে। স্বল্পমেয়াদী (তীব্র) অবস্থা, যেমন একটি চিমটি করা শিরা বা মূত্রনালীর সংক্রমণ, এছাড়াও আরো অন্যান্য বিষয় দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কোনটা ভালো

শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

দুর্বলতার সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে: শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান কম হলে, ফ্লু, থাইরয়েড রোগ, রক্তসল্পতা, হতাশা বা উদ্বেগ, ঘুমের অভাব, অব্যবস্থাপিত বা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিউর, চিন্তা ও ভয় থেকেও শরীর দুর্বল হয়

ভিটামিন বি-১২ এর অভাব, প্রস্রাব পায়খানা চেপে রাখলেও শরীর দুর্বলহতে পারে, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যা প্রায়ই উদ্বেগের চিকিৎসার জন্য হালকা ট্রানকুইলাইজার গ্রহণ করার সময় ঘটে, নির্দিষ্ট পেশী রোগ, ডায়রিয়া ও বমি হলে, কেমোথেরাপি, সঠিকভাবে খাদ্য গ্রহণ না করলে ইত্যাদি কারণে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। 

শরীর দুর্বল হওয়ার অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে: ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদপিন্ডে হঠাৎ আক্রমণ, স্নায়ু বা পেশী আঘাত রোগ যা স্নায়ু বা পেশী প্রভাবিত করে, অপরিমিত মাত্রা ড্রাগ গ্রহণ, ভিটামিন ওভারডোজ সেবন

যদিও ক্যান্সারের কারণে দুর্বলতা দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ধীরে ধীরে প্রদর্শিত হতে পারে, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণে দুর্বলতা প্রায়ই অবিলম্বে ঘটে। দুর্বলতা অনুভব করা ছাড়াও, অন্যান্য উপসর্গ যেমন শ্বাসকষ্ট, ব্যথা এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন দেখা দিতে পারে।

শরীর দুর্বল হওয়ার লক্ষণ

বেশিরভাগ লোকই এক সময় বা অন্য সময়ে শরীরে দুর্বলতা অনুভব করেন। এই সময়ে ব্যক্তি কোনো কাজ করতে ভালো লাগে না। সর্বদা ক্লান্ত এবং অলস বোধ. শরীর কোনো কাজ করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, কোনো বিশেষ অংশে দুর্বলতা অনুভূত হলে এই অংশ নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয়। ব্যথা, ক্র্যাম্প অনুভূত হয়। 

মাথা ঘোরা: শরীরে দুর্বলতা অনুভব করলে আপনার মাথা ঘোরা হতে পারে। এই উপসর্গটিকে একেবারেই উপেক্ষা করবেন না, কারণ অনেক সময় লো বিপিও মাথা ঘোরাতে পারে। এই সময়ে আপনি দুর্বল বোধ করতে পারেন। 

হাঁপানি: যখন আপনি দুর্বল বোধ করেন, তখন আপনি কিছু করতে চান না। এই সময়, আপনি অলস বোধ করেন, যার কারণে আপনি বারবার হাঁপাতে থাকেন।

ক্লান্তি: শরীরে দুর্বলতা থাকলে আমাদের শরীর কোনো কাজ করতে পারে না। আমরা সবসময় ক্লান্ত বোধ করি। আপনি যদি প্রায়ই ক্লান্ত বোধ করেন তবে এটি শরীরের দুর্বলতার লক্ষণ হতে পারে।

অনিয়মিত হৃদস্পন্দন: আপনি যদি দুর্বল বোধ করেন তবে আপনার হৃদস্পন্দনও অনিয়মিত হতে পারে। এই সময়, কখনও কখনও হৃদস্পন্দন বাড়তে পারে, আবার কখনও এটি হ্রাস পেতে পারে। 

অস্থিরতা: শরীরে দুর্বলতার কারণে আপনি অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তি অনুভব করতে পারেন। এই অবস্থায় আপনার কাজ করতে অসুবিধা হতে পারে।

পেশী শক্তির অনুভূতির অভাব: যখন আমরা দুর্বলতা অনুভব করি তখন আমরা শক্তি অনুভব করি না। আমাদের পেশী ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ কি খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয়

হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি

মানুষ প্রাকৃতিক জীব। মানুষের শরীর সব সময় সুস্থ্য থাকে না। মানুষ শারীরিকভাবে কখনো কখনো দুর্বল হয়ে পড়ে।। মানবদেহের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেলে এই দুর্বলতা অনুভব হয়। হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ বিভিন্ন থাকতে পারে। 

তবে সঠিক কারণ নির্ধারণ করে সঠিক চিকিৎসা করলেই শরীরের দুর্বলতা কেটে যাবে। আজকের পোস্টে আপনারা এখন জানতে পারবেন হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি এই ব্যাপারে। নিচে হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণগুলো উল্লেখ করা হলো।

ডায়বেটিস হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

শরীরে দুর্বলতার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ডায়বেটিস। ডায়বেটিসের ফলে শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ হচ্ছে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় যার ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। ফলে শরীরে দুর্বলতা অনুভব হয়। এটিই ডায়বেটিসের লক্ষণ। 

ডায়বেটিস রোগীর রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে স্বাভাবিক দেহের কর্মকাণ্ডে সমস্যা তৈরি হয়, যার ফলে রোগীরা অল্প কাজেই হাঁপিয়ে উঠেন এবং দুর্বলতা অনুভব করে থাকেন। তাই এই দুর্বলতার সমস্যার সমাধান করতে নিয়মতান্ত্রিক জীবন-যাপন পরিচালনা করতে হবে এবং প্রতিদিন ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।

আমিষের অভাব হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

আমিষের অভাবে অনেক মানুষের শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। মানুষের শরীরে যদি আমিষের অভাব দেখা দেয় তবে হাত ও মুখ ফুলে যায়, পায়ের গোড়ালি ফুলে যায়, পেটে পানি হয়, ধীরে ধীরে দুর্বলতা বেড়ে যায় ইত্যাদি এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। 

তাই আমিষের ঘাটতি পূরণ করতে হলে নিয়মিত পনির, মাংস, দুধ, ছানা, ডিম, বাদাম, বিভিন্ন রকম সবুজ শাক-সবজি ইত্যাদি আমিষ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। তাহলে শরীরে আমিষের অভাব পূরণ হয়ে যাবে।

অতিরিক্ত চিন্তা করা হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত চিন্তা করা। অতিরিক্ত চাপের ফলে আমাদের মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। আর মানসিক চাপের সৃষ্টি হলে মস্তিষ্কের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। 

ফলে মস্তিষ্ক অবসাদগ্রস্থ হয় যায় এবং আমাদের শরীরও অনেক দুর্বলতা অনুভব করে। তাই আপনি কোন ভাবেই অতিরিক্ত চিন্তা করবেন না। ঠান্ডা মাথায় সকল কাজ করবেন তবেই আপনার শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

প্রয়োজনের তুলনায় কম খাওয়া শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

শরীরের দুর্বলতা দূর করতে হলে খাবার খাওয়ার প্রতি একটু বেশী নজর দিতে হবে। আপনার দেহে যদি সুষম খাবারের ঘাটতি থাকে তবে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। 

তাই শরীরকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখার জন্য সুষম খাবার খেতে হবে এবং প্রতি ৩/৪ ঘণ্টা পর পর সামান্য পরিমাণ হলেও কিছু খাবার খান। তাহলে আপনার শরীরে দুর্বলতা কেটে যাবে। আর আপনি চেষ্টা করবেন সঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার তাহলে শরীরে দুর্বলতা আসবে না।

শারীরিক পরিশ্রম না করা শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণে আমাদের শরীরে দুর্বলতা অনুভব হতে পারে। বেশী কাজের চাপে আমরা দুর্বল হয়ে পড়ে। আবার আলসেমিতেও আমরা দুর্বল হয়ে পড়ি। যদি আপনি নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম কিংবা ব্যায়াম করেন তবে আপনার শরীরের ক্যালারি খরচ হবে এবং শরীর সুস্থ্য রাখতে সহয়তা করে। 

তাই যত আপনি অলস জীবন পার করবেন তত আপনার শরীর দুর্বলতা অনুভব হবে। তাই আমাদের শরীর সুস্থ্য রাখতে চাইলে প্রতিদিন কিছু সময় হলেও শারীরিক পরিশ্রম কিংবা ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়ামের ফলে শরীর সুস্থ্য রাখা সম্ভব এবং শরীরের দুর্বলতা দূর করা সম্ভব।

দেহে পানিশূন্যতা হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ

মানবদেহে পুরো শরীর জুড়ে রয়েছে পানি। আর আমাদের দেহে পানিশূন্য হয়ে পড়লে আমরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। এর কারণ হচ্ছে পানিশূন্যতার কারণে রক্তে পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। পানিশূন্যতার ফলে মাথা ব্যাথা, অবসাদ ও দুর্বলতা সহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। 

তাই দেহে পানিশূন্যতা দূর করতে চাইলে প্রতিদিন আমাদের সবাইকে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। পানি পান করার ফলে শরীরের দুর্বলতা দূর হবে এবং শরীর সুস্থ্য থাকবে।

ক্রনিক কিডনি রোগের কারণে দুর্বলতা অনুভব হতে পারে

মানবদেহে কিডনি দেহের ছাঁকনির কাজ করে থাকে। কিডনি আমাদের দেহ থেকে প্রসাবের মাধ্যমে বিষাক্ত ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। যদি কারও শরীরে যদি কিডনির ক্রনিক রোগ হয়, তবে বিষাক্ত ও বর্জ্য পদার্থ প্রসাবের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণে বের হতে পারে না। 

যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই আপনার যদি এই ক্রনিক কিডনি রোগ দেখা দেয় তবে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।

কাজের প্রতি মন বসে না

আপনার শরীর যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তবে আপনার কোন কাজের প্রতি মন বসে না। সব কাজে আলসেমি দেখা দেয়া। তাই সমস্যা সমাধান করতে চাইলে অবশ্যই শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে অথবা ব্যায়াম করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ আমের উপকারিতা ও অপকারিতা

হঠাৎ শরীর দুর্বল হলে করণীয় - শরীর দুর্বল হলে করণীয়

অনিয়মিত জীবনযাপন বা ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে দুর্বলতা হতে পারে। এ ছাড়া সবসময় মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকাও শরীরে দুর্বলতার কারণ হতে পারে। আপনি কিছু প্রতিকার চেষ্টা করে শরীরের দুর্বলতা দূর করতে পারেন।

শরীরের দুর্বলতা কাটাতে ভিটামিন-সি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন-সির অভাব পূরণে বেশি করে টকজাতীয় ফল যেমনঃ লেবু, কমলা, আঙুর খেতে হবে। এছাড়া পুঁইশাক, পালংশাক, লেটুসপাতা ও মরিচ বেশি খেতে পারেন। এগুলোও ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার।

শরীর সুস্থ রাখতে সবচেয়ে ভাল খাদ্য হল দুধ। নানা ধরণের স্বাস্থ্যকর ভিটামিনে ভরপুর দুধ আমাদের দেহের দুর্বলতা খুব সহজেই দূর করে। এবং দুধের ক্যালসিয়াম উপদান আমাদের দেহের হাড় মজবুত করে। যখনই শরীর খারাপ লাগবে তখন ১ গ্লাস দুধের সাথে ১ চামচ মধু মিশিয়ে খান।

শরীরের দুর্বলতা দূর করতে সবার আগে ক্যাফেইন থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। এ জন্য চা, কফি এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও অ্যালকোহল গ্রহণ এড়িয়ে চলুন। ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে দুর্বলতা এড়াতে অতিরিক্ত ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই ডায়েটিং করেন। এমন পরিস্থিতিতে দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে। তাই ডায়েটিং এড়িয়ে চলুন। আপনার ডায়েটে উচ্চ ক্যালসিয়াম, উচ্চ প্রোটিন এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।

নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন, এর জন্য তরল খাদ্য গ্রহণ করুন। সারাদিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে পরিপূর্ণ ঘুমও প্রয়োজন। শরীরের দুর্বলতা দূর করতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান।

আপনার খাদ্যতালিকায় পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। ব্যালেন্স ডায়েট করার চেষ্টা করুন। ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড ইত্যাদি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এগুলিতে পুষ্টি থাকে না, এটি অলসতার কারণ হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ টিউমার চেনার উপায়

শরীর দুর্বল হলে কি খেতে হয় - শরীর দুর্বল হলে কি খাওয়া উচিত

অনেক সময় সারাদিন শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীরের সমস্ত শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়। আপনি অত্যন্ত অলস এবং দুর্বল বোধ করতে শুরু করেন। কিছু লোক কোনো কাজ বা কঠোর পরিশ্রম না করেও দুর্বল এবং কম শক্তি অনুভব করে। 

স্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে আপনি সহজেই এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন। অনেক সময় শরীরকে আরও পরিশ্রম করতে বা যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে, যদি সেই জিনিসগুলি আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত না করা হয়, তবে আপনি দুর্বলতা বা কম শক্তির মাত্রা অনুভব করতে পারেন। শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে নিচের কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন

OnlyMyHealth-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজকাল বেশিরভাগ মানুষই চিজ, বার্গার, পিজ্জা ইত্যাদি জাঙ্ক ফুড খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই খাবারগুলো আপনার কাছে অবশ্যই সুস্বাদু লাগবে, কিন্তু এগুলো শরীরের দুর্বলতা দূর করে না। দুর্বলতা দূর করার জন্য এই খাবার গুলো আপনাকে শক্তি দিয়ে পূর্ণ করে না। 

পনির, বার্গার, পিৎজা, চাউমিন, ক্যান্ডির মতো খাবারে পুষ্টির পরিমাণ নগণ্য, যা শরীরের চাহিদা পূরণ করে না। প্রক্রিয়াজাত খাবার, প্যাকেটজাত খাবার ইত্যাদিতে প্রিজারভেটিভ, সোডিয়াম, ট্রান্স ফ্যাট ইত্যাদি বেশি থাকে, যা আপনাকে অলস করে তোলে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, আপনার আরও বেশি করে অপ্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া উচিত, যাতে বিপাক বৃদ্ধি পায় এবং দুর্বল পেশীগুলি মেরামত হয়।

প্লেটে মৌসুমি ফল ও সবজিকে স্থান দিন

শারীরিক দুর্বলতা, অলসতা, কম শক্তির মাত্রা ইত্যাদি দূর করতে যতটা সম্ভব আপনার খাদ্যতালিকায় মৌসুমি ফল ও সবজি রাখুন। এতে অনেক ধরনের ভিটামিন, মিনারেল থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ভিটামিন বি ১২ যুক্ত ফলমূল ও শাকসবজি খেলে মাংসপেশির দুর্বলতা, ক্লান্তি দূর করা যায়। এই ফল ও সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা প্রদাহ দূর করে। প্রদাহের কারণে শরীরে দুর্বলতা অনুভূত হতে থাকে।

ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ের পরিবর্তে ভেষজ চা পান করুন

কিছু লোক মনে করে যে চা, কফি ইত্যাদির মতো বেশি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাওয়া শরীরের দুর্বলতা, ক্লান্তি, কম শক্তির স্তর ইত্যাদি দূর করতে পারে, তবে তা নয়, কারণ এতে পুষ্টি যথেষ্ট নয়। এগুলো অতিরিক্ত গ্রহণ করলে পানিশূন্যতার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। আপনি চিনিহীন চা, কালো চা, গ্রিন টি বা অন্য কোন ভেষজ চা খেতে পারেন।

খাদ্যতালিকায় বাদাম এবং বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন

শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি দিতে খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের বীজ, বাদাম, শুকনো ফল ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে সঙ্গে সঙ্গে শক্তি যোগায়। বাদামে ক্যালোরিও কম এবং সহজে হজম হয়। মাংসপেশিতে দুর্বলতা, ক্লান্তি ইত্যাদি অনুভব করলে একমুঠো বাদাম ও বীজ খান। 

এগুলোর পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল পদার্থ খাওয়া উচিত, যাতে গ্রীষ্মে পানিশূন্যতার কারণে দুর্বলতা ও ক্লান্তির অনুভূতি না হয়। মেটাবলিজম বাড়াতে পুরো শস্য, জটিল কার্বোহাইড্রেট, চর্বিহীন প্রোটিন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন।

শরীর দুর্বলতা কাঁটাতে ডিমের উপকারিতা

প্রোটিন যুক্ত খাবার ডিম শরীরের দুর্বলতা কাটাতে অনেক কার্যকর। ডিম হচ্ছে প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। এটি খেলে তা দেহের কোষ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং এতে লুটেইন ও জিক্সানথিন (ক্যারোটিনয়েড) থাকায় তা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ও বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া ডাল ও মটরজাতীয় খাবারেও প্রোটিন থাকে।

দুর্বলতা দূর করতে কী খাবেন?

এখানে দশটি খাবার রয়েছে যা আপনাকে শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করতে পারে: কলা- কলা পটাসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা সঠিক পেশী এবং স্নায়ুর কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।পালং শাক- পালং শাক একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি যাতে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম, যা শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।

মিষ্টি আলু- মিষ্টি আলু কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিনের একটি ভাল উৎস যা শক্তি জোগাতে পারে এবং শারীরিক শক্তি বাড়াতে পারে। কুইনোয়া- কুইনোয়া একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ শস্য যা কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিনের একটি ভাল উৎস।

স্যামন- স্যামন একটি চর্বিযুক্ত মাছ যাতে রয়েছে ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহ কমাতে এবং পেশী দুর্বলতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। বাদাম- বিশেষ করে বাদাম, আখরোট এবং কাজু, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বির একটি ভাল উৎস যা শারীরিক শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

বেরি- বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেলের একটি বড় উৎস যা শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। দই- দই প্রোটিন এবং প্রোবায়োটিকের একটি ভাল উৎস যা হজমের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং শারীরিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

ডিম- ডিম প্রোটিন ও ভিটামিনের ভালো উৎস যা শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। গোটা শস্য- গোটা শস্য, যেমন বাদামী চাল এবং পুরো গম, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এবং খনিজগুলির একটি ভাল উত্স যা শারীরিক শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

শরীর দুর্বল হলে কি কি সমস্যা হয়

শরীরের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। কিডনি ও লিভারের কর্মক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পেটব্যথা, শরীরব্যথা, ওজন কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, অধিক পিপাসা, অধিক প্রস্রাব, দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে আসা, চুল পড়া, চুলকানি, ঠোঁট ফেটে যাওয়া প্রভৃতি হতে পারে স্বল্প কিংবা দীর্ঘ মেয়াদে ভিটামিন সেবনে।

কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর দুর্বল হয়

ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে শরীর দুর্বল হয়। রক্তে লোহিত রক্তকণিকা, স্নায়ু কোষ এবং ডিএনএ তৈরির জন্য মানুষের শরীরে প্রতিদিন ভিটামিন বি ১২ প্রয়োজন। এছাড়াও, ভিটামিন বি ১২ শরীরের অনেকগুলি কার্য সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয়। 

রক্তের RBC হিমোগ্লোবিন ধারণ করে এবং এটি শরীরের শিরাগুলির মাধ্যমে অক্সিজেন এবং অন্যান্য পুষ্টি পরিবহন করে। যখন হিমোগ্লোবিন কমে যায় এবং স্নায়ু দুর্বল হয়ে যায়, তখন অক্সিজেন বা পুষ্টি কোনোটিই শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সঠিকভাবে পৌঁছায় না। এ অবস্থায় শরীরের কী অবস্থা হবে তা অনুমান করা যায়।

এই কারণেই ভিটামিন B12 এর অভাবে সারা শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। স্নায়ুর দুর্বলতার কারণে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে পড়ে। ভিটামিন B12 এর অভাবে রক্তশূন্যতা হয়। এ কারণে স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কাজ ঠিকমতো হয় না। 

যেহেতু আমাদের শরীর ভিটামিন বি ১২ তৈরি করে না, তাই প্রতিদিন খাবার থেকে ভিটামিন বি ১২ পাওয়া আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। প্রতিদিন আমাদের 2.4 মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন B12 প্রয়োজন।

ক্লান্ত, উদ্বিগ্ন এবং দুর্বল বোধ করার একটি সম্ভাব্য কারণ হল আয়রন, ভিটামিন ডি বা ভিটামিন বি-১২ এর কম মাত্রা। অনেক বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন যে আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য শতাংশে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে। ভিটামিন ডি-এর কম মাত্রায় পেশী দুর্বলতা এবং ব্যথা হতে পারে।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাবের লক্ষণ

হাত ও পায়ে অসাড়তা - হার্ভার্ড হেলথের মতে, ভিটামিন বি 12 এর অভাবে হিমোগ্লোবিন কমে যায় যার কারণে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিকমতো হয় না। তাই এর প্রথম প্রভাব শরীরের শেষ প্রান্তে অর্থাৎ পায়ে দেখা যায়। মনে হয় হঠাৎ পায়ের মধ্যে একটা অনুভূতি হচ্ছে। কখনও কখনও পা একবারে অসাড় হয়ে যায়। রোগটি বেশি তীব্র হলে হাত, পা ও উরু কাঁপতে থাকে এবং কাঁপতে থাকে।

হাঁটতে অসুবিধা- ভিটামিন B12 এর অভাবের কারণে স্নায়ু কোষ তৈরি হয় না। যখন স্নায়ু কোষ তৈরি হবে না, তখন স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়বে। এতে শরীর নিয়ন্ত্রণ হবে না। এ কারণে হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে। হাঁটার সময় বয়স্করা পড়ে যেতে পারে।

রক্তসল্পতা- ভিটামিন B12 এর অভাবের কারণে RBC থেকে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি হয়। একে অ্যানিমিয়া রোগ বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের রক্তস্বল্পতার অভাব বিশাল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

জিহ্বা ফুলে যাওয়া - ভিটামিন B12 এর অভাব হলে জিহ্বা ভারী হয়ে যায় এবং জিহ্বা ফুলে যায়। জিহ্বা ফুলে গেলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

চিন্তা করতে অসুবিধা - ভিটামিন B12 এর অভাবের কারণে চিন্তা করতে অসুবিধা হয়। কোন কিছুতে মনোনিবেশ করতে অসুবিধা হয়। কারণ অক্সিজেন ঠিকমতো মস্তিষ্কে পৌঁছায় না।

দুর্বলতা, ক্লান্তি - যখন স্নায়ু দুর্বল হয় এবং অক্সিজেন শরীরের অঙ্গে পৌঁছায় না, তখন শরীরে দুর্বলতা এবং ক্লান্তি দেখা দেয়।

ভিটামিন B12 এর ঘাটতি কিভাবে পূরণ করবেন

দুধ, দই, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, গোটা শস্য, বিটরুট, আলু, মাশরুম, মৌসুমী সবুজ শাকসবজি, তাজা ফল থেকে ভিটামিন B12 পাওয়া যায়। শুধুমাত্র গোটা শস্য থেকে ভিটামিন B12 পাওয়া যায় না, এর থেকে প্রোটিন, ফাইবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সহ অনেক ধরনের পুষ্টি পাওয়া যায়।

শরীর দূর্বলতার ঔষধ

অতিরিক্ত কাজ এবং কারণ জনিত কারণে অনেক সময় আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে করে আমরা অনেক সময় চিন্তিত হয়ে পড়ি। অনেকেই আবার শরীর দুর্বল কাটানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন তন্মদ্ধে উল্লেখযোগ্য একটি হচ্ছে ঔষধ সেবন করা।

অনেক সময় আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে ডাক্তারকে না দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে আছি এবং তা সেবন করে থাকি। আমরা আসলে বুঝতে পারি না যে আমাদের কি হয়েছে। কিন্তু ডাক্তারকে না দেখিয়ে যে ওষুধ সেবন করেছি তা আমাদের শরীরের জন্য যথেষ্ট কিনা সে সম্পর্কে আমরা কোনো খোঁজ রাখি না। 

যেকোনো শারীরিক সমস্যা হলে আমরা প্রথমত ওষুধ সেবন করব না। আমাদের সকলের উচিত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা। ডাক্তার দেখানোর পর ডাক্তার যে ওষুধ গুলো নিতে বলবে সেই ওষুধ নিয়ে নিয়মিত পদ্ধতি অনুযায়ী সেবন করা। শরীর দূর্বলতার ঔষধ হিসেবে আপনি ভিডিওতে উল্লেখ করা ঔষধটি সেবন করতে পারেন। ইনশাআল্লাহ আপনার শরীর দুর্বলতা সমস্যা ভালো হয়ে যাবে।

শরীর দূর্বলতার ঔষধ

মেয়েদের শরীর দুর্বল হলে করণীয়

নারীরা তাদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে খুবই উদাসীন, সে কারণেই ৩৫-৪০ বছর বয়সে শরীরে ক্লান্তি ও দুর্বলতা বাড়তে থাকে। নারীদের শরীরে ব্যথাসহ নানা সমস্যা শুরু হয়। অনেক সময় দুর্বলতার সমস্যা এতটাই বেড়ে যায় যে দৈনন্দিন কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। 

ক্লান্তি এবং দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে, সঠিক পুষ্টি প্রয়োজন। আপনি আপনার খাদ্যের খুব যত্ন নিন। খাবারে এমন জিনিস রাখুন, যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করে। আসুন জেনে নিই মেয়েদের শরীর দুর্বল হলে করণীয় এবং ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করতে নারীদের কী খাওয়া উচিত?

শুকনো ফলঃ প্রত্যেকেরই খাদ্যতালিকায় শুকনো ফল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি শরীরকে সুস্থ ও প্রাণবন্ত রাখে। বাদাম খাওয়া শরীরকে অনেক রোগ থেকে দূরে রাখে। ড্রাই ফ্রুট খাওয়া শরীরকে সতেজ রাখে। ড্রাই ফ্রুট মেদ বাড়ায় না এবং পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। প্রতিদিন শুকনো ফল খেলে ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর হয়। 

দুধ পানঃ মহিলাদের খাদ্যতালিকায় দুধ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এটি সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেয়। দুধ পান করলে শরীর ক্যালসিয়াম পায় এবং হাড় মজবুত হয়। মহিলাদের অবশ্যই দুধ এবং দুধের পণ্য যেমন দই, পনির বা বাটারমিল্ক পান করতে হবে। দুধ পান করলে মাংসপেশির ব্যথা কমে। রাতে এক গ্লাস দুধ পান করলে মহিলাদের শারীরিক দুর্বলতা ও ক্লান্তি কমে যায়। 

আয়রনঃ শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে ক্লান্তি ও দুর্বলতা বেশি অনুভূত হয়। আয়রন আমাদের শরীরের কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দিতে কাজ করে। যার কারণে ক্লান্তি ও দুর্বলতা লেগেই থাকে। তাই পালংশাক, বীটরুট, ডালিম, মটরশুটি, মটর, ব্রকলি এবং মিষ্টি আলুর মতো আয়রন সমৃদ্ধ জিনিসগুলিকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। 

প্রচুর পানি পান করুনঃ শরীরে পানির অভাব থাকলেও মহিলাদের ক্লান্তি ও দুর্বলতার সমস্যা বেড়ে যায়। তাই শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখার চেষ্টা করুন। ডিহাইড্রেশন অনেক রোগের কারণ হয়। ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করতে দিনে অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করুন। এর কারণে হজমশক্তিও ভালো থাকে। 

প্রচুর ফল খানঃ মহিলাদের খাদ্যতালিকায় ফলের পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রতিদিন ১টি করে কলা খেতে হবে। কলা খেলে শরীর তাৎক্ষণিক শক্তি পায়। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়, যা শরীরে শক্তি যোগায়। কলা খাওয়া ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। ডায়েটে অবশ্যই আপেল, ডালিম এবং অন্যান্য মৌসুমি ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।

সহবাসের পর শরীর দুর্বল হলে করণীয়

আপনার ডায়াবেটিস না থাকলে সহবাসের পর গুড়ের সাথে দুধ পান করুন এবং ডায়াবেটিস হলে চিনি ছাড়া দুধের সাথে চারটি রতি শিলাজিৎ খান, এতে সহবাসের পর শরীর দুর্বলতা দূর হবে এবং আপনি আবার যৌ-ন মিলনের শক্তি পাবেন। অথবা এই পদ্ধতিতে যদি আপনি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পান তবে বিকল্প ওষুধের সাহায্য নিন। অথবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

সহবাসের পর শরীর দুর্বল হলে করণীয়

শরীর দুর্বল হলে করণীয় ভিডিও

শরীর দুর্বল হলে করণীয়

শেষ কথাঃ হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি

মানবদেহে যেকোন সময়ে শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাই এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমি আপনাদের সাথে হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি এই নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। 

আপনি এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে হঠাৎ শরীর দুর্বল হওয়ার কারণ কি তা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। যদি আজকের এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)