রমজানের ছোট ছোট আমল

রমজানের ছোট ছোট আমল- পবিত্র রমজান মাসের মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এ মাসে মুসলমানেরা বেশী বেশী ইবাদত বন্দেগী করে থাকে। রোজার মাস হলো আল্লাহর কাছে তাকওয়া অর্জনের প্রশিক্ষণের মাস। বছরের অন্যন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের ইবাদত আল্লাহর কাছে দ্রুত কবুল হয়। রমজান মাসে কিছু ছোট ছোট আমল আছে যেগুলো আমল করলে অনেক নেকি ও সাওয়াব পাওয়া যায়।

রমজানের ছোট ছোট আমল

পেজ সূচিপত্রঃ রমজানের ছোট ছোট আমল

আজকে আমি আপনাদের সাথে রমজানের ছোট ছোট আমল নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল। তাহলে চলুন জেনে নেই রমজানের ছোট ছোট আমলগুলো। 

রমজানের ছোট ছোট আমল নিয়ে কিছু কথা 

প্রত্যক মুসলিমের উপর রমজানের মাসের রোজা ফরজ করা হয়েছে। একজন দায়িক্তবান মুসলিম হিসেবে আপনার রমজান মাসের প্রত্যকটি রোজা ভালোভাবে রাখার চেষ্টা করতে হবে। কেননা এই রমজান মাসের রোজার প্রতিদান স্বয়ং মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই দিবেন। 

তাই আমাদের প্রত্যকের উচিত রমজানের রোজা পালন করা। রমজানের রোজা পালন করার পাশাপাশি বেশ কিছু ছোট ছোট আমল আছে যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি অনেক নেকি ও সাওয়াব পাবেন। তাই আপনি এই রোজার মাসে ছোট ছোট আমলগুলো আমল  করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ রমজানের ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

রমজানের ছোট ছোট আমল 

রমজান মাসে আমাদের প্রত্যকের সিয়াম পালন করা দরকার। সিয়াম পালনের সাথে সাথে রমজানে ছোট ছোট আমল আছে যেগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে আপনি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারবেন। এমন কি এই আমলগুলো নিয়ম করার ফলে আপনি অনেক নেকই সাওয়াব অর্জন করতে পারবেন। তাই এই রমজান মাসের সময়টুকু অযথা নষ্ট না করে রমজানের এই ছোট ছোট আমলগুলো নিয়মিত অনুসরণ করতে পারবেন। নিচে রমজানের ছোট ছোট আমল উল্লেখ করা হলো।

সিয়াম পালন করা 

রমজান মাসের শ্রেষ্ঠ আমল হচ্ছে সিয়াম পালন করা। আপনি যদি একজন প্রকৃত মুসলিম হয়ে থাকেন তবে আপনি অবশ্যই রমজানের ৩০ টি রোজা রাখতে পারেন। সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। 

পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করা 

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে সাথে আদায় করলে বেশী সাওয়াব হয়। রমজান মাসের একটি ফরজ ইবাদত হচ্ছে সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। আপনি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাতের পর আপনি নফল নামাজ ও বেশী বেশী আদায় করতে পারেন। তাই সময়মত নামাজ আদায় করতে হবে। 

শুদ্ধভাবে কুরআন মাজিদ পাঠ করা 

রমজানে ছোট ছোট আমলের কথা বলতে গেলে কুরআন মাজিদ পাঠ করা বলতেই হবে। কেননা শুদ্ধভাবে কুরআন তিলওয়াত করলে কয়েকগুন বেশী নেকি পাওয়া  যায়। আপনি যদি সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন মাজিদ পাঠ করতে না জানেন তবে এই রমজান মাসে সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করা শিখে নিন। সহীহ শুদ্ধ কুরআন পাঠ এবং এর অর্থ বুঝলে আপনার ইবাদত করতে আরও বেশী সহজ মনে হবে। 

অন্যকে কোরআন মাজিদ পাঠ করা শিখানো 

সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন মাজিদ পাঠ করলে মহান আল্লাহ অনেক বেশী খুশি হন। আপনি যদি সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করতে পারেন তবে আপনি অন্যকে শুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করা শিখিয়ে দিন। তাহলে আপনারও কুরআন পাঠ করা হয়ে যাবে। আর যে কুরআন পাঠ করা শিখতে চায় সে ও শুদ্ধভাবে কুরআন মাজিদ পাঠ করতে পারবে। রমজানে ছোট ছোট আমল করতে হলে অন্যকে কোরআন মাজিদ পাঠ করা শিখিয়ে দিন। 

মুসলিম ভাইদের সালাম দিন 

রমজানের ছোট ছোট আমলের মধ্য মুসলিম ভাইদের সাথে দেখা হলে সালাম ও কুশল বিনিময় করা অন্যতম একটি আমল। আপনার সাথে যদি কোন মুসলিম ভাই কিংবা বোনের সাথে দেখা হয় তবে আপনি “আসসালামুয়ালাইকুম” বলে সালাম সম্ভেষণ করতে পারেন। মহান আল্লাহ সালাম দিলে বেশী খুশি হন। তাছাড়াও আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) মুসলিম ভাইদের সাথে দেখা হলে সালাম দেওয়ার নির্দেশ করেছেন। 

বেশী বেশী দান করা 

রমজান মাসে  বেশী সাওয়াব পাওয়ার পেতে চাইলে বেশী বেশী দান করতে পারেন। যদি আপনার দান করার সামর্থ্য থাকে তবে আপনি বেশী বেশী গরিব-মিসকিন কিংবা ইয়াতিমদের দান করতে পারেন। দান করার ফলে আপনার সম্পদ কিংবা টাকা পয়সা আল্লাহর রহমতে বেড়ে যাবে। মহান আল্লাহ ইয়াতিম-মিসকিনদের দান করার জন্য বেশী খুশি হয়ে থাকেন। তাই আপনার যদি টাকা পয়সা বেশী থাকে তবে আপনার আশে পাশের মানুষের সাহয্য - সহযোগিতা করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ রমজানের কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত

বেশী বেশী আল্লাহর জিকির করা

রমজান মাসের সবচেয়ে ভালো আমল হলো প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর জিকির করা। রোজার মাসে বেশী বেশী আল্লাহর জিকির করতে পারেন। আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শেষে সুবহানআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ আকবার সহ আল্লাহর জিকির করতে পারেন। আল্লাহর জিকির করলে আপনি আপনার মনের মধ্য অন্য রকম প্রশান্তি উপলব্ধি করতে পারবেন। 

উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা 

রমজান মাসে আপনার চরিত্র গঠনের একটি সেরা সময়। আপনি রমজান মাস ব্যতীত অন্য মাসে আপনার চরিত্র গঠনের জন্য সময় দিতে পারেন না বিভন্ন ধরনের ব্যস্ততার কারণে। তাই রমজানে ছোট ছোট আমলের মধ্য উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করাও একটি আমল হতে পারে। তাই আপনি নিয়মিত ভালো ভালো কাজ করে আপনার চরিত্রটাকে আরও সুন্দর করে নিতে পারেন। 

গরিবদের ফিতরা দেওয়া

রোজার মাসে গরিব-মিসকিনদের ফিতরা দিতে পারেন। বিভিন্ন ইসলামি সংস্থা থেকে ফিতরার অর্থ প্রদানের তালিকা দেওয়া থাকে। তাই আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ ফিতরার টাকা থাকে তবে তা আপনি আপনার এলাকার ইয়াতিম, গরিব-মিসকিনদের দিতে পারেন। আল্লাহ গরিবদের দান করলে আপনার প্রতি অনেক রহমত বর্ষিত করবেন, 

দাঁত মিসওয়াক করা

প্রত্যক রোজাদার মুসলিম ভাই-বোনেদের নিয়মিত দাঁত মিসওয়াক করা উচিত। কেননা দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে এবং ইফতারের আগে আপনি দাঁত মিসওয়াক করতে পারেন। তাছাড়া স্বয়ং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে নিয়মিত মিসওয়াক করতেন। 

অন্যকে ইফতার করানো 

প্রত্যক মুসলিম নর-নারীর উপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। তাই আপনার যদি অন্যকে ইফতার করার সামর্থ্য হয়ে থাকে তবে আপনি রোজাদার ভাই-বোনেদের ইফতার করাতে পারেন। তাছাড়া অন্যকে ইফতার করার ফলে আপনি এই রোজার প্রতিদান পাবেন মহান আল্লাহর কাছে। তাই রোজাদার মুসলিম সবাইকে ইফতার করানো উচিত।

দোয়া মুখস্থ করা 

রমজান মাসে আমরা সাওয়াব পাওয়ার আশায় বেশী বেশী ইবাদত বন্দেগী করি। আর ইবাদত করার জন্য আমাদের দোয়া পাঠ করতে হয়। তাই আপনার উচিত এই রমজানে সকল দোয়া মুখস্থ করা। যেমনঃ ইফতারের দোয়া, সাহরির দোয়া, টয়লেটে যাওয়ার দোয়া ইত্যাদি।

আরো পড়ুনঃ রোজার মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৩

আমাদের শেষ কথাঃ রমজানের ছোট ছোট আমল নিয়ে 

প্রত্যক মুসলমানের রমজান মাসের রোজা পালন করা আবশ্যক। তবে রমজানের সিয়াম পালনের পাশাপাশি রমজানের ছোট ছোট আমল রয়েছে যেগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে নেকি ও সাওয়াব পাওয়া সম্ভব। 

সুপ্রিয় পাঠক, আজকে আমি আপনাদের সাথে রমজানের ছোট ছোট আমল, রমজানের আমল ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি রমজানের ছোট ছোট আমলগুলো জানতে পারলেন। রমজানের ছোট ছোট আমল নিয়ে আপনার যদি কিছু জানার থাকে তবে আপনি এই পোস্টের নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এছাড়াও এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হলে আপনার মুসলিম বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে জানিয়ে দিতে পারেন। ধন্যবাদ।  

পোষ্ট ক্যাটাগরি: