ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম - অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম - অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম → ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য বাংলাদেশের প্রায় বেশিরভাগ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। কারণ ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় যখন জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু করে।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

সূচীপত্রঃ ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

তখন অনেকেই চাকরির কারণে হোক বা অন্য কোনো কারনেই যে যে স্থানে ছিলো ঐ স্থানের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদন ফরম পূরণ করেছেন। যার কারণে বেশিরভাগ নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নিজ এলাকার ঠিকানা দেয়া নেই বা ভুল হয়েছে। 

তাছাড়া পরিচয়পত্র যখন তৈরি করা বা নিবন্ধন করা শুরু করে তখন অনেক নাগরিকই এর গুরুত্ব বুঝতে পারেনি বা গুরুত্ব দেয়নি। উক্ত কারণে ঐ সময়ে ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্রে অনেক ভুল থেকে গেছে। নির্বাচন অফিসের এনআইডি/জাতীয় পরিচয়পত্র শাখা সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়ছে।

বেশিরভাগ আবেদনে নাম সংশোধন, জন্ম তারিখ সংশোধন এবং ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার আবেদন। বিশেষ করে এনআইডিতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন না হওয়ায় অনেকে চাকরি, জমি ক্রয়-বিক্রয় এবং পাসপোর্ট তৈরি করতে না পারার জটিলতায় ভোগছেন।

জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। ভোটার এলাকার পরিবর্তন করার জন্য বা সংশোধন করার জন্য কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় এবং অনলাইনে কি ভাবে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যায় সেই বিষয়টি তুলে ধরা হলো।

জাতীয় পরিচয়পত্র ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন কমিশন বা নির্বাচন অফিস কর্তৃক প্রদত্ত ফরম-১৩ পূরণ করে আপনার নিজ উপজেলা নির্বাচন অফিসে সশরীরে উপস্থিত হয়ে আবেদন করতে হবে। 

ভোটার এলাকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নতুন কোন কার্ড প্রদান করা হয়না। কেউ ভোটার এলাকা পরিবর্তন কৃত ঠিকানায় নতুন কার্ড নিতে চাইলে তাকে পুরাতন কার্ড জমা দিয়ে নতুন কার্ডের জন্য ২৩০ টাকা সরকারি ফি সোনালি ব্যাংকে জমা দিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন জমা দিয়ে নির্ধারিত সময় পর নতুন কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম - ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে

১। ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য আবেদনকারীকে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে।

২। যে এলাকায় পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছে সেই এলাকার চেয়ারম্যান/মেয়র অথবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত নাগরিকত্ব সনদ জমা দিতে হবে।

৩। পৌর/ইউনিয়ন ট্যাক্স রশিদ/বিদ্যুৎ বিল/পানি বিল/বাড়ি ভাড়ার প্রমানপত্র/ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম জমা দিতে হবে।

৪। ফরম-১৩ এর ২য় পৃষ্ঠায় ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য আবেদনকারীকে শনাক্তকারী হিসেবে এলাকার জনপ্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ নাম,স্বাক্ষর ও সিল থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি

অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন বলতে শুধুমাত্র ভোটারের বাড়ির নাম্বার,ডাকঘর এবং পোস্টকোড পরিবর্তন করতে পারবে। এ ছাড়া ভোটার এলাকা, উপজেলা, জেলা পরিবর্তনের জন্য আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের সম্পূর্ণ ঠিকানা ফরম-১৩ পূরণ করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য নিন্মোক্ত ধাপ ও নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

১। অনলাইনে ভোটার ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য প্রথমে আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

২। অনলাইনে আপনার জন্ম নিবন্ধন বা ইউটিলিটি বিল এর কপিটা জাতীয়তার সার্টিফিকেট হিসেবে আপনার ঠিকানা পরিবর্তন করুন।

৩। আপনার এনআইডি সংশোধনের জন্য যে নির্ধারিত ফি আছে তা ব্যাংকে জমা দিন।

৪। সকল তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে নির্ধারিত স্থানে আপলোড করুন।

আরো পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম - ধাপসমূহ

অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য আপনি কম্পিউটার অথবা মোবাইল ব্যবহার করে আবেদন করতে পারবেন। নিন্মে অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের পদ্ধতি বা ধাপগুলো দেয়া হলো-

১। অনলাইনে ভোটার ঠিকানা পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে আপনাকে এনআইডির অফিসিয়াল সাইট services.nidw.gob.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনার এনআইডি নম্বর ও পাসওয়ার্ড প্রদান করে একাউন্ট করে লগইন করতে হবে।

২। লগইন করার পর আপনার সামনে আপনার জন্ম তারিখ,বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রদর্শিত হবে।

৩। আপনাকে নিজের ছবি তুলে নজের মুখ যাচাই করতে হবে।

৪। সাইটের ঠিকানা অপশনে ক্লিক করুন।

৫। ঠিকানা পরিবর্তন করার লক্ষে এডিট বাটনে ক্লিক করুন। আপনাকে এডিট করার সুযোগ দেওয়া হবে।

৬। আপনার বর্তমান ঠিকানা ঠিক রাখতে চান তাহলে টিক দিন আর যদি স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান তাহলে তার পাশে মার্ক করুন।

৭। আপনার ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আপনার বাসা হোল্ডিং নাম্বার পোস্ট অফিস এবং পোস্ট কোড সঠিকভাবে লিখুন। এরপর নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।

৮। আপনি যে ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন তা আপনার সামনে স্ক্রীনে প্রদর্শিত হবে। সবকিছু সঠিক হলে পরবর্তী পেজে প্রবেশ করুন।

৯। অনলাইনে আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য নির্ধারিত ফি ২৩০ টাকা বিকাশ, রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করুন।

১০। নির্ধারিত ফি প্রদান নিশ্চিত হওয়ার পর আপনার দেওয়া তথ্যগুলা পরিবর্তন হবে এবং আপনি সফল হয়েছেন তা আপনাকে জানাবে।আপনি এর একটি প্রিন্ট কপি ডাউনলোড করে নিবেন।

আরো পড়ুনঃ দালাল ছাড়া বিদেশ যাওয়ার উপায়

ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম

ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম
ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম

ভোটার এলাকার নম্বর জানার উপায়

ভোটার আইডি কার্ডে ভোটার এলাকার নম্বর উল্লেখ করা থাকেনা। গত কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভোটার এলাকার নম্বর এবং নাম দেখা যেত। কিন্ত এখন উক্ত অপশনটি বন্ধ করে দিয়েছে। 

তাই আপনি চাইলেও অনলাইন থেকে আর আপনার ভোটার এলাকার নম্বর এবং ভোটার এলাকার নাম দেখতে বা জানতে পারবেন না। এখন হয়তো আপনি প্রশ্ন করবেন কোনো ভাবেই কি ভোটার এলাকার নম্বর এবং ভোটার এলাকার নাম যাবে? 

প্রিয় পাঠক ভোটার এলাকার নম্বর উল্লেখ থাকে ভোটার তালিকাতে। আর আপনি ভোটার তালিকা দেখতে পারবেন নির্বাচন অফিসে। আপনি আপনার সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থাকা নির্বাচন ফিসে যোগাযোগ করলে আপনার ভোটার তালিকা দেখতে পারবেন এবং সেখান থেকে আপনার ভোটার এলাকার নম্বর দেখতে পারবেন। 

এছাড়া নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা আপনার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করে ভোটার এলাকার নম্বর আপনাকে জানিয়ে দিতে পারবে।

প্রিয় পাঠক ভোটার এলাকার নম্বর জানার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে আপনার নিকটস্থ জনপ্রতিনিধীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। কারণ নির্বাচনের সময়ে প্রত্যেকে ভোটার তালিকার সিডি ক্রয় করেন এবং প্রিন্ট করে তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন। যদি তারা উক্ত তালিকা সংরক্ষণ করে রাখেন তবে আপনি সেখান থেকে আপনার ভোটার তালিকা চেক করতে পারবেন এবং আপনার ভোটার এলাকার নম্বর দেখতে পারবেন।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে তা নিদিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে হ্যাঁ কখনো কখনো এই সকল কার্যক্রম ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। আবার কখনও কখনও ১ মাসের বেশিও সময় লেগে যায়। 

এই বিষয়টি সম্পূর্ণই নির্ভর করবে এই বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের তাদের কাজের ব্যস্ততার উপরে। তারা যত দ্রুততার সাথে আপনার কাজ করবে ততদ্রুত আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন হয়ে যাবে।

যদি আপনি দ্রুততার সাথে আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান তবে অফিসে আবেদন জমা দেওয়ার পরে কর্মকর্তাদের আপনার ব্যস্ততা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলুন যাতে করে তারা দ্রুততার সাথে কার্যক্রম শুরু করে দেয়। 

আবেদনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে অর্থাৎ প্রথম ম্যাসেজ আসার পরে যে উপজেলায় ভোটার ছিলেন আপনি সেখানকার অফিসে যোগাযোগ করে এবং আবেদন দ্রুততার সাথে অনুমোদন করে দিতে অনুরোধ করতে পারেন।

একজন বাংলাদেশী কোন কারনবশত ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা ভুল করে থাকে তাহলে কেবল সে তার ভোটার এলাকার ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবে। তবে মনে রাখতে হবে অনলাইনে আপনি শুধুমাত্র আপনার বাড়ী নম্বর এবং পোস্ট অফিস, পোস্টকোড পরিবর্তন করতে পারবেন অন্য কোনো ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন না।

উপরে বর্ণিত আর্টিকেল পড়ে আপন সহজে আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন অফলাইনে অর্থাৎ সশরীরে নির্বাচন অফিসে গিয়ে অথবা অনলাইনে ঘরে বসে।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: