পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো

যদি আপনি এই মুহূর্তে সরকারি কিংবা বেসরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হতে চান তবে আপনাকে পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই ব্যাপারে জেনে রাখতে হবে। কেননা আপনি যে ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করতে চান সেই ডিপার্টমেন্টে সম্পর্কে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা থাকে তবে কোন ধরনের সমস্যা ছাড়াই সব কয়টি সেমিস্টার ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারবেন। 

পলিটেকনিকে পড়াশোনা করার জন্য আপনাকে সবচেয়ে যে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে তা হচ্ছে ভালো সাবজেক্ট। এক্ষেত্রে পলিটেকনিক কোনো ম্যাটার করে না। অর্থাৎ ভালো পলিটেকনিক নয় ভালো সাবজেক্ট নির্বাচন করুন দেখবেন জীবন বদলে যাবে। 

কেননা বর্তমানে এমন অনেক সাবজেক্ট আছে যেগুলোর বাজার চাহিদা কম অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি জব সার্কুলারে তেমন বেশি নিয়োগ নেই বললেই চলে। তাই এমন একটি সাবজেক্ট সিলেক্ট করুন যা আপনাকে আপনার পরবর্তী উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমি আপনাদের সাথে পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। তাই এই পোস্টটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো

পলিটেকনিক নিয়ে কিছু কথা

পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে বিভিন্ন ধরনের বিষয় রয়েছে এর মধ্যে থেকে কোন বিষয়টির চাহিদা সবচেয়ে বেশী এই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির বাজারে কোন সাবজেক্টের গুরুত্ব বেশী এই ব্যাপারে আপনারা অনেকেই জানতে চান। এসএসসি পরীক্ষার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিক কলেজে ভর্তির জন্য ছুটাছুটি শুরু করে। যদিও অনলাইনে আবেদন করতে হয়। 

তো শিক্ষার্থীরা কোন বিষয় সিলেকশন করবে এই ব্যাপারে জানা না থাকার কারণে তাঁদের পছন্দের সাবজেক্ট সিলেক্ট করতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা জানতে চাই পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই সম্পর্কে জানতে চায়। প্রিয় শিক্ষার্থী, আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে তুমি তোমার পছন্দের ডিপার্টমেন্ট চয়েজ করে নিতে পারবেন।

পলিটেকনিক ইন্সটিউট কি? পলিটেকনিক ইন্সটিউট হলো কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বাস্তব ও কর্মমুখী শিক্ষার প্রয়োগ করা হয়।

পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো

পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এবং কোনগুলোতে বর্তমানে চাকরির বাজারে ডিমান্ড বেশী এই ব্যাপারে সকলেই জানতে চায়। পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে বিভিন্ন অনেক ধরনের ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এখানে সব কয়টি বিষয়গুলো ভালো। চাকরির বাজারেরও প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনার কাছে যে বিষয়টি ভালো লাগে আপনি সেই বিষয় নিয়ে পড়তে পারেন। তবে বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে পলিটেকনিকে বেশ কিছু ভালো ভালো ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ভালো ডিপার্টমেন্টগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।

  • ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি
  • মেকানিক্যাল টেকনোলজি
  • সিভিল টেকনোলজি
  • কম্পিউটার টেকনোলজি
  • পাওয়ার টেকনোলজি
  • ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি
  • আরএসি টেকনোলজি 
  • টেক্সটাইল
  • সার্ভে

উপরের বেশ কয়েকটি সবচেয়ে ডিপার্টমেন্টগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এখান থেকে আপনার পছন্দের সাবজেক্ট বাছাই করে পড়াশোনা করতে পারেন। আপনার যে বিষয়ে পড়াশোনা করতে বেশী আগ্রহ আছে আপনি সে বিষয়টি বাছাই করে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকা - সরকারি পলিটেকনিক কলেজের তালিকা ২০২৩

১। ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি - Electrical Technology

সারাবিশ্বের প্রেক্ষাপটে ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজির চাহিদা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। যেকোনো পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা এই ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করতে চায়। বাংলাদেশের চাকরির বাজারের বর্তমানে ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজির চাহিদা অনেক বেশী। শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে বর্তমানে এই বিষয়টি অনেকেই পড়াশোনা করে থাকে। যদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি নিয়ে পড়তে চান তবে নির্ধিদায় ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন। প্রতিবছর এই টেকনোলজির সরকারি এবং বেসরকারি উভয়ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।

২। মেকানিক্যাল টেকনোলজি - Mechanical Technology

বিশ্বে মেকানিক্যাল টেকনোলজির চাহিদা অনেক বেশী। বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেকানিক্যাল টেকনোলজির শিক্ষার্থী অনেকেই চাকরি করছে। তাই আপনি যদি এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে চান তবে নির্ধিদায় মেকানিক্যাল টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে পড়শোনা করলে অবশ্যই আপনাকে দক্ষতার সহিত পড়াশোনা শেষ করতে হবে।

৩। সিভিল টেকনোলজি - Civil Technology

যদি আপনি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষ করে সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চান তবে পনি সিভিল টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন। সুনিয়নিয়ন্ত্রিত ও সুপরিকল্পিত নগর, বহুতল ভবন, উন্নত সড়ক পথ, ব্রিজ, কালভার্ট, বিমানবন্দর নির্মাণে সিভিল টেকনোলজির কোন বিকল্প নেই। তাই একজন দক্ষ সিভিল প্রকৌশলের চাহিদা অনেক বেশী। তাই যদি আপনি একজন দক্ষ সিভিল প্রকৌশল হতে চান তবে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সিভিল টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।

৪। কম্পিউটার টেকনোলজি - Computer Technology

যদি আপনি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে কম্পিউটার টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তবে আপনাকে সাধুবাদ জানাই। বর্তমানে কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের চাকরি বাজারে চাহিদা প্রচুর রয়েছে। ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার টেকনোলজির ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশে কম্পিউটার প্রকৌশলদের চাহিদা অনেক বেশী। 

বাংলাদেশে প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরি সুযোগ-সুবিধা কম থাকলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টেকনোলজির চাকরির সুবিধা অনেক বেশি। যদি আপনি সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি না করেন তবে ফ্রিল্যান্সিং করে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার টেকনোলজির চাহিদা অনেক বেশী তাই আপনি নির্ধিদায় কম্পিউটার টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা ১০ সরকারি পলিটেকনিক

৫। পাওয়ার টেকনোলজি - Power Technology

পাওয়ার বা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উড়োজাহাজ চালানো থেকে শুরু করে যাবতীয় সব যানবাহন সহ অসংখ্য কাজ সম্পন্ন করা হয়। শক্তি এক রূপ থেকে অন্য রূপে যেতে পারে খুব সহজেই। শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তিগত দিক থেকে টেকনোলজি বা বিভাগের মাধ্যমে কাজ করা হয় তাকে পাওয়ার টেকনোলজি বলা হয়ে থাকে। 

এটি বাংলাদেশ কিংবা সারা বিশ্বের একটি ডিমান্ডবেল সাব্জেক্ট। বাংলাদেশের বিভিন্ন নামীদামী প্রতিষ্ঠানে এই ডিপার্টমেন্টের চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি যদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাওয়ার টেকনোলজি নিয়ে পড়তে চান তবে নির্ধিদায় ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন।

৬। ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি - Electronics Technology

বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি চাকরির সার্কুলার কম থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির চাহিদা ব্যাপক রয়েছে। আর যদি আপনি বিদেশে যেতে পারেন তো আর কথাই নেই। সেখানে এই ডিপার্টমেন্টের চাকরির সুবিধা ব্যপক রয়েছে। কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয় বলতে হলে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজির কথা বলতেই হবে। তাই আপনি যদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি নিয়ে পড়তে চান তবে নির্ধিদায় ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন।

৭। আরএসি টেকনোলজি - RAC Technology

বর্তমান বাংলাদেশে আরএসি টেকনোলজির চাহিদা অনেক বেশী। একজন দক্ষ আরএসি টেকনোলজির শিক্ষার্থী সহজেই যেকোনো রেফ্রিজারেশন কিংবা এসি ঠিক করে দিতে পারে। আর এখন যে হারে রেফ্রিজারেশন কিংবা এসির ব্যবহার বেড়েছে সে হারে এসির কর্মচারীও বেড়েছে। এটি ভবিষ্যতের একটি ডিমান্ডেবল সাব্জেক্ট। 

চাকরি বাজারেও এই বিষয়ের চাহিদা অনেক বেশী। আর বিদেশে যেতে পারলে ভালোমানের চাকরির সন্ধান পাওয়া যাবে। তাই আপনি যদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আরএসি টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তবে নির্ধিদায় আরএসি টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট সিলেকশন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা সরকারি মেডিকেল কলেজের তালিকা

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিতে পারে। তবে চলুন জেনে নেই সেই সমস্ত সকল প্রশ্নের উত্তরগুলো

ভবিষ্যতের জন্য কোন পলিটেকনিক ডিপার্টমেন্ট ভালো?

বাংলাদেশে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ভবিষ্যতের জন্য প্রায় সব ধরনের ডিপার্টমেন্ট ভালো। তবে কম্পিউটার টেকনোলজি, মেক্যানিক্যাল, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এসব সবচেয়ে ভালো।

পলিটেকনিক এর বিষয় গুলো কি কি?

পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের এর বিষয় গুলো সিভিল, কম্পিউটার, ইলেকট্রিক্যাল, আর্কিটেকচার, মেকানিক্যাল, কেমিক্যাল, অটোমোবাইল, রেফ্রিজারেশন ও এয়ার কন্ডিশনিং, ফুড, পাওয়ার, এনভায়রনমেন্ট, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি।

শেষ কথা

পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হওয়ার আগে অবশ্যই আমাদের কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয়ে জেনে রাখা প্রয়োজন। কেননা আপনার ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনার উপর নির্ভর করছে আপনার ভবিষ্যত। তাই বিষয় সিলেকশন করার আগে ভালো করে চিন্তা করে ডিপার্টমেন্ট সিলেক্ট করতে হবে। 

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আজকে আমি আপনাদের সাথে পলিটেকনিকে কোন ডিপার্টমেন্ট সবচেয়ে ভালো এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যদি এই পোস্টটি আপনার কাছে তথ্যবহুল মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: