রক্তদানের উপকারিতা ও অপকারিতা

রক্তদানের উপকারিতা ও অপকারিতা — আমাদের শরীরের মূল অংশ হলো রক্ত। আমরা রক্তমাংসের মানুষ। অনেক সময়েই ফেসবুকে রক্তদান কর্মসূচি দেখা যায়। রক্তদানের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। যেখানে তরুণ-তরুণীরা স্বেচ্ছায় অসুস্থ ব্যক্তিদের রক্ত দান করে। আপনিও চাইলে রক্ত দিয়ে একজন মানুষের উপকারে আসতে পারেন। অনেকে ভাবতে পারেন যে, রক্ত যার দরকার তাকে দিয়ে আপনার লাভ কি? 

আচ্ছা, ধরুন আপনার মা রক্তের অভাবে মৃ- ত্যুর সাথে লড়াই করছে। আপনার রক্ত তার সাথে ম্যাচ করছে না। তাহলে তো অন্য কারো কাছেই আপনাকে ছুটতে হবে। তাই যখন পারবেন রক্ত দিন। রক্ত দিলে আপনি যেমন অন্যকে উপকার করবেন, তেমনই তারাও আপনার উপকার করবে। চোখ বড় বড় হয়ে গেলো নাকি? নামিয়ে ফেলুন, নাহলে উপকারী দিক গুলো জানবেন কি করে! সাধারণত ১৮ বছর বয়স থেকে পূর্ণবয়স্ক পর্যন্ত প্রত্যেক নর-নারী রক্ত দিতে পারবে। এখন রক্তদানের উপকারিতা দিক গুলো বলি। 

রক্তদানের উপকারিতা ও অপকারিতা

ওজন কমাতে রক্ত দিন

বর্তমানে অনেক বড় একটি সমস্যা হলো ওজন আধিক্য। অতিরিক্ত ওজনের কারণে আমরা বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকি। এক্ষেত্রে আপনি রক্ত দান করুন। রক্ত দান করলে যেই পরিমাণ ক্যালরি খরচ হয়, তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওইযে বলেছিলাম না রক্ত দান করলে ক্যালরি খরচ হয়! এই ক্যালরি খরচের মাধ্যমে আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এতে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায় এবং হার্ট সুস্থ থাকে। 

বিনামূল্য শরীর পরিক্ষা

আমরা অনেক সময়ে শরীরের পরীক্ষা করতে ডাক্তারের কাছে ছুটে থাকি। এক পরীক্ষা হতে না হতেই আরেক পরীক্ষা। খাতা কলমের পরীক্ষা ভাববেন না আবার! শরীর চেকআপের কথা বলছি। রক্তদানের আগেও কিন্তু কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় একদম বিনামূল্যে। সেগুলো হলো- হেপাটাইসিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, ম্যালেরিয়া, সিফিলস, এইডস ইত্যাদি। দেখলেন তো রক্তদানের সাথে সাথে বিনামূল্যে হয়ে গেলো আপনার পরীক্ষা। যেই পরীক্ষা কিনা অনেকদিন ধরে করবেন করবেন ভাবছিলেন। 

আরও পড়ুনঃ ওজন বাড়বে কিভাবে | দ্রুত ওজন বাড়ানোর উপায়

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

আমার এক বন্ধু কয়েকদিন আগে বলছিলো, আমার বোন সারাদিন হতাশায় ভুগে। সেভাবে তার রুমমেটের মতো তারও ক্যান্সার হবে। আমি বললাম কেন? সে কি ধুমপান করে? উত্তরে না। কি বলছিস এমনেই। তোর বোন না একটি সংস্থার পক্ষ থেকে নিয়মিত রক্তদান করে? হ্যাঁ তা করে। তাহলে তো ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কম। তাই নাকি? হ্যাঁ। এমনই আপনি যদি নিয়মিত রক্তদাতা হোন তাহলে আপনার ক্যান্সারে ঝুঁকি কমে যায়। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 

আপনাদের মধ্যে অনেকেই সামান্য জ্বর হলে বা সর্দি কাশি হলেই দুর্বল হয়ে যান। এজন্য রক্তদান করলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে আপনি সামান্যতম উপসর্গে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না। তবে এর জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাওয়া দাওয়াও করতে হবে। আর অসুস্থ থাকা অবস্থায় রক্ত দিতে যাবেন না। যখন সুস্থ থাকবেন তখন দিবেন। যাতে পরবর্তী সময়ে অসুস্থ হলে গুরতর কোনো সমস্যা না হয়।

রক্তদানের অপকারিতা

আপনাদের মনে এখন প্রশ্ন জাগতে পারে যে, রক্তদানের উপকারিতা তো বললাম, রক্তদানের কোনো ক্ষতিকর বা অপকারি দিক আছে কি-না। আপনি রক্তদান করলে আপনার কোনো শারীরিক সমস্যা হবে না। তবে আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৬৫ এর মধ্যে হতে হবে এবং ওজন কমপক্ষে ৪৫ কেজি হতে হবে। তার সাথে আপনাকে রক্ত দেওয়ার সময়ে সম্পূর্ণ সুস্থ, রোগ মুক্ত ও ফিট হতে হবে। যদি আপনি রক্ত দেওয়ার জন্য ফিট না হয়েও রক্তদান করেন তাহলে শারীরিক সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

আবার, ওইযে পরীক্ষার কথা বলেছিলাম না! যদি আপনার পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী আপনি কোনো বড় রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে হতাশ হবেন না। এমনটা ভাববেন না যে, রক্ত দিতে এসে আপনি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মূলত পরীক্ষাটি যেকোনো সময়ে করলেই রোগে আক্রান্ত থাকতেন। তাই ভাগ্যকে দোষ দিবেন না। চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিন এবং রোগের চিকিৎসা করান।

আরও পড়ুনঃ জুমার দিনের আমল ও ফজিলত | জুম্মার দিনের আমল ও ফজিলত

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)