চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয় - চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

হাসিবুর
লিখেছেন -

অনেকেই চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয় - চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। আজকাল সকলেই নিত্য নতুন খাবার নিয়ে সচেতনতা মেনে চলে এবং বিভিন্ন খাবার সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে খাবারটি সেবন করে যে সেটি কি তার শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নাকি স্বাস্থ্যকর নয়।

সেসব ক্ষেত্রে ভেবে দেখলে দেখা যাচ্ছে চিয়া সিড পুষ্টি সম্পন্ন একটি খাবার। এটি খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যায় তেমন শরীর সুস্থ ও রাখা যায় এবং শরীরের পুষ্টিহীনতা দূর হয়।

চিয়া সিড মূলত সকালে খালি পেটে খেলে উপকারিতা পাওয়া যায়। রাতে পরিষ্কার নরমাল পানির সাথে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটি খালি পেটে সেবন করলে যাদের অতিরিক্ত মাত্রায় ওজন তাদের ওজন হ্রাস পেতে পারে।

সকালে এবং রাতে, ঘুমানোর আগে বা ঘুমানোর পরে গ্লাস পানির সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে অথবা দুই চা চামচ লেবুর সাথে মিশিয়ে খেলে ওজন ও হ্রাস পায়। খাওয়ার ৩০ মিনিট আগেও ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যাবে।

আপনি যদি নিয়মিত চিয়া সিড সুস্থ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারি তাহলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। নিত্য নতুন খাবারে সচেতনতা ফলো করলেও চিয়া সিড প্রত্যেকটি খাবারের সাথে যুক্ত করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

চিয়া সিড কি

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড একটি সালভিয়া উদ্ভিদের বীজ যেটি মরুভূমিতে জন্মায়। এটি মূলত মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। এটি একটি ভেষজও খাদ্য যেটি আমরা শস্য খাদ্য তালিকায় রাখতে পারি। এটি দেখতে মূলত তিলের দানার মত। চিয়া সিডে আছে দুধের চেয়েও পাঁচ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম এবং আরো রয়েছে কমলার চেয়েও সাত গুণ ভিটামিন। মুরগির ডিমের থেকেও তিনগুণ বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।

পুদিনা গাছের থেকে উৎপন্ন ছোট বিজি হচ্ছে চিয়া সিড। পানিতে ভেজানোর ফলে চিয়া সিড ফুলে যায় ১২ গুন পর্যন্ত বড় হয়ে যায়। প্রাচীন আমল থেকে চিয়া সিডের গুরুত্ব অপরিসীম কেননা এটি বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সকলেরই দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগ বা বিভিন্ন ধরনের সমস্যাই দেখা দিয়ে থাকে সেগুলোর ক্ষেত্রে এটি সেবনের ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাহায্য করে।

অতিরিক্ত ওজন তাদের ওজন প্রতিরোধে এবং কমাতে সহায়তা করে। বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দিলে ইটি সেবনের ফলে তাৎক্ষণিক সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। চিয়া সিড আবার ক্ষুধা মেটানোতেও সহায়তা করে থাকে। রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার করলেও নানান উপকারিতা পাওয়া যায়। এটিকে একটি ওষুধ উপাদান বলা যেতে পারে।

চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা

  • পৃথিবীর বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাবার। প্রাচীন আমলের অ্যাসটেক জাতিরা এটিকে স্বর্ণের চেয়েও মূল্যবান মনে করত। বিভিন্ন ভাবে বীজ জাতীয় সকল খাবারই স্বাস্থ্যকর এবং দেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। চিয়া সিডে রয়েছে বিভিন্ন প্রোটিন, ক্লোরোজেনিক এসিড, ভেষজ উপাদান, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, কেলসিয়াম এই সকল উপাদান রয়েছে।
  • চিয়া সিড এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং আরও রয়েছে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।
  • চিকিৎসকের মতে চিয়া সিড খাওয়ার ফলে হৃদরোগের সমস্যা দূর হতে পারে। আবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমতে পারে। দেহে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করতে পারে। এটি খাওয়ার ফলে শরীরে শক্তি পাওয়া যায়।
  • চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করে তুলে। হাড়ের ক্ষয় বা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে সেটি দূর করতে পারে এবং শরীরে হাড়গুলোতে শক্তি আনে। হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় চিয়া সিড অত্যন্ত ভালো কাজ করে।
  • এটি রক্তে প্রবেশ করে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। এটি সেবনের ফলে দেহে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে আনে। এটি এসিডিটির সমস্যা ও দূর করতে সহায়তা করে। আবার যাদের রাতে ঠিকঠাক মতো ঘুম হয় না তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

সাধারণত সকল খাবারের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খাওয়া যায়। সুস্বাদু ফলের সাথে বা ফলের জুসের সাথে এটি মিশিয়ে খাওয়া যায়। এটি মূলত একটি নিরপেক্ষ ছাদের খাবার এর জন্যই সকল খাবারের সাথে এটি মিশিয়ে খাবার খাওয়া যায়। ফলের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায় আবার পানির সাথে মিশিও খাওয়া যায়।

এছাড়াও সুপ, সালাত, শরবত সকল ভাবি এটি খাওয়া যায়। অত্যন্ত গরমের মধ্যে যদি এটি শরবত বানিয়ে খাওয়া যায় তাহলে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং শরীরে শান্তি ভাব দেখা দিবে। স্বাস্থ্য এবং সচেতন মানুষের খাবারে তালিকায় এটি একটি অন্যতম খাবার হয়ে উঠেছে।

চাইলে ভোরে খালি পেটেও একটি খাওয়া যায় আবার দিনে বিভিন্ন সময়ে কোথাও থেকে বাড়িতে এসে এটি খাওয়া যায়। বিশেষ করে এটি পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ফুলিয়ে সেটি পানিসহ বা অন্য কোন খাবারে মিশে যদি খাওয়া যায় তাহলে অত্যন্ত উপকারিতা পাওয়া যায়।

এটি অত্যন্ত নিরাপদ একটি খাবার যোগ্য ভেষজ খাবার। চিয়া সিড মূলত আলাদা করে কোনোভাবে রান্না করা লাগে না এটি কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়েই সেবন করা যায়। এছাড়াও ফলের সাথে দই মিশিয়ে এবং তার মধ্যে চিয়া সিড মিশিয়ে খেলে শরীর অত্যন্ত সুস্থ থাকে। দৈনন্দিন জীবনে যত ধরনের রোগ বালাই বা ক্লান্ত ভাব দূর হয়ে যায়।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড এর দাম

বর্তমানে বাজার মূল্যে এটির দাম ১ কেজি চিয়া সিড এর দাম ১০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। আবার অনলাইন মার্কেটপ্লেজে ৫০০ গ্রাম থেকে ১০০০ গ্রাম আকারে ইচ্ছামত কেনাকাটা করা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এটি পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন মুদি দোকানে চিয়া সিড পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম চিয়া সিড ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় পাওয়া যায়।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও যদি তাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য বা বাচ্চা সুস্থতার জন্য খাওয়ানো হয় তাহলে বাচ্চা সুস্থ থাকবে। আমরা যদি দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড রাখি তাহলে আমাদের জন্য এটি খুবই ভালো।

চিয়া সিড কিভাবে খেতে হয় - চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম নিয়ে শেষকথা

চিয়া সিডের আরেক নাম তকমাদানা। চিয়া সিডে উচ্চমাত্রায় ফাইবার এবং প্রোটিন থাকায় ওজন সম্পূর্ণ মানুষের খাওয়ার ফলে ওজন কমাতে সহায়তা করে। এটি ওজন কমাতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে এবং এটি যাদের ওজন বেশি তাদের জন্য বেশি কার্যকরী।

অনেকের খাবার হজমে সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে খাবার হজমের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং খাবার হজমের সহায়তা করে। যাদের খাদ্য হজমে সমস্যা থাকে তাদের ক্ষেত্রে চিয়া সিট খাওয়ার ফলে খাদ্য হজম এবং পরিপাকে সহায়তা করে।

শরীরকে সুস্থ রাখবে, শরীরের শক্তি দিবে এবং সকল জায়গায় চলাফেরাই পরিপূর্ণভাবে শান্তি মিলবে। এটি মূলত ভেষজ খাবার তাই সকল ভাবে আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে এটি সহায়তা করে। এটি নিয়মিত খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে এবং সুস্থ থাকা যাবে। সকল মানুষের শরীরে সুস্থতার জন্য চিয়া সিডের গুরুত্ব অপরিসীম।

আরো পড়ুনঃ

সোলাস ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

ব্লগ ক্যাটাগরি: