বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ - বিভিন্ন কারণেই বাচ্চাদের সর্দি-কাশি হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঠান্ডা লাগা। বুকে কফ আটকে থাকা বা নাক দিয়ে পানি পরা।

সর্দি-কাশি হওয়ার ফলে বাচ্চারা ঠিকমতো নিঃশ্বাস নিতে পারে না বুকে বিভিন্ন শব্দ অনুভব হয়। ঠিকঠাক মত খাবার খেতে পারে না, নাক এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে। অনেকেই আমরা গরম থেকে ঠান্ডার মধ্যে চলে যাই এরকম হঠাৎ পরিবর্তনের কারণে শিশুদের সর্দি কাশি দেখা দেয়।

আবার শীতের দিনেও সর্দি কাশির সমস্যা শিশুদের দেখা দেয় সেই ক্ষেত্রে শিশুদের দেখা যায় শীত আসলেই ঘরে ঘরে ঠান্ডা কাশির সমস্যা দেখা দেয়। সর্দি কাশিকে আবার ইনফ্লুয়েঞ্জা ও বলা যেতে পারে।

এগুলো মূলত শিশুদের দেহেই বেশি দেখা দেয়, বেশিরভাগ শিশুরাই সর্দি কাশিতে বা ইনস্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়। তারা অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা শরীরের সহ্য করতে পারে না তাই তাদের এই ক্ষমতা সহ্য করতে না পারায় সর্দি-কাশি তাদের আকড়ে ধরে।

চলুন বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক এবং কিভাবে সর্দি কাশি দেখা দেয় কিভাবে এটি ঘরোয়া ভাবে চিকিৎসা করা যায় আবার কিভাবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা যায় সকল তথ্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধ | বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশি কেন হয়

ভিন্ন ধরনের ভাইরাস নাক বা মুখ দিয়ে প্রবেশ করে দেহের মধ্যে সর্দি কাশির সৃষ্টি করে এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার সৃষ্টি করে। ভাইরাস মূলত হাঁচি কাশির মাধ্যমে বাতাসের সাথে মিশে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

শিশুদের মূলত তিন থেকে চার বারের মতো বছরে হাঁচি কাশি সমস্যা লেগেই থাকে। আর কোন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু শিশুর ক্ষেত্রে কিছুটা পরিমাণে বেশি সময় নিয়ে এই ধরনের সর্দি কাশির সমস্যা দেখা দেয়।

শিশুদের ক্ষেত্রে সর্দি কাশি বেশি পরিমাণেই দেখা দেয় কেননা শিশুরা এই সকল সর্দি কাশিতে বেশি ভুগে থাকে। নবজাতক শিশুরা যখন অতিরিক্ত মাত্রায় গরম বা ঠান্ডা একত্রে সহ্য করতে পারে না তখন তাদের দেহে ঠান্ডা কাশি সমস্যা একটু বেশি পরিমাণেই দেখা দেয়।

তারা তো খুবই ছোট তাদের কতটুকুই বা সহ্য ক্ষমতা রয়েছে তাই যখন গরম ঠান্ডা ও একসাথে পরে তখন তাদের যদি উষ্ণ তাপমাত্রায় রাখা না হয় তখন তাদের বুকে কফ জমে যায় এবং নাক দিয়ে পানি পড়ে এবং তাদের নিঃশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয়ে ওঠে। তারা ঠিকমতো নিশ্বাস নিতে পারে না খাবার খেতে পারে না এবং ঘুমের অনেক ব্যাঘাত ঘটে।

তাই সকল মা-বাবাকে শিশুদের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে বা যদি অন্যান্য পরিবারের সদস্য থাকে তাদেরকেও সেই ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে শিশুর অবস্থা সম্পর্কে। শিশু শরীরে তাপমাত্রা নিয়মিত দেখতে হবে শিশুটিকে সুস্থ আছে নাকি অসুস্থ।

শিশুর খাদ্য তালিকায় সুস্থ খাবার রাখতে হবে। শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে এবং নবজাতক শিশু হলে বুকের দুধ পরিমাণ মতো খাওয়াতে হবে।

আরো পড়ুনঃ কতদিন পর প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয়

সর্দি কাশি হওয়ার লক্ষণ

সর্দি কাশি হওয়ার কিছু লক্ষণ নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

  • সর্দি কাশি দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণে নাক দিয়ে পানি পড়ে চোখ দিয়ে পানি পড়ে। 
  • শিশুদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে তাপমাত্রা দেখা দেয় এবং জ্বর জ্বর অনুভব হয়। 
  • শিশুরা গলার খুসখুস হওয়ার কারণে ঠিকমতো খাবার খেতে পারে না খাবার গিলতে খুবই কষ্ট হয়। 
  • কান বন্ধ হয়ে থাকে শ্রবণে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। কানের পেছনে ব্যথা অনুভব হয়। 
  • গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা সহ সারা শরীরে ব্যথা অনুভব হয় কাশির সাথে শরীরে ও ব্যথা ধরে যায়। বাচ্চারা অতিরিক্ত কাশি হওয়ার ফলে বমিও করে শরীরের দুর্বলতা অনুভব হয়। 
  • সর্দি কাশি দেখা দিলে বাচ্চারা প্রচুর পরিমাণে ঘুমায়। 
  • বিশেষ করে রাতের দিকে প্রচুর পরিমাণে কাশি হয় এবং বুকে ব্যথা করে শিশুরা এই সময় কাশির জন্য রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারে না।

সর্দি কাশি হলে সারানোর ঘরোয়া উপায়

  1. শরীরকে যতটা পারা যায় উষ্ণতায় রাখার চেষ্টা করা। 
  2. পর্যাপ্ত পরিমাণে সুস্থ খাবার খাওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া। 
  3. তাদেরকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খাওয়ানো উচিত এবং মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো খুবই কার্যকরী।
  4. বাচ্চাদেরকে কমলা লেবুর রস খাওয়ালেও কার্যকারিতা পাওয়া যায় কিন্তু সেই বাচ্চা গুলো হতে হবে দুই বা তিন বছর বয়সের মত। কমলালেবুর রসের অনেক কার্যকারিতা রয়েছে কেননা কমলা লেবুর রস খাওয়ালে শিশুদের কফ তাড়াতাড়ি কেটে যায় এবং গলা খুসখুস কম করে। 
  5. শিশুদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো বাতাস সম্পূর্ণ ঘরের মধ্যে রাখা জরুরী কেননা শিশুদেরকে পরিমাণ আলো বাতাসে রাখলে তারা সুস্থ থাকবে এবং শ্বাসকষ্ট কমে যাবে কাশি ও কমে যাবে বুকে কফ থাকলেও সেটি আস্তে আস্তে স্বস্তি দিবে। 
  6. শিশুদের ক্ষেত্রে কাশি দেখা দিলে তাল মিছরি খাওয়ালে সেটি তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে আসে তাল মিস্ত্রি শিশুদের জন্য খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি খাবার যেটি খাওয়ার ফলে শিশুদের সর্দি কাশি বা ঠান্ডা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 
  7. আবার আদা বা তুলসী পাতার রস যদি মধু দিয়ে খাওয়া যায় তাহলে দ্রুত কাজ করে। 
  8. আবার সর্দি কাশির ফলে জমা কম দূর করতে হলুদ মেশানো দুধ খাওয়া যেতে পারে। 
  9. যতটা পারা যায় শিশুদেরকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখা উচিত। 
  10. শিশুদেরকে যতটা পারা যায় রোদে রাখা উচিত কেননা রোদে রয়েছে ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন ডি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সহায়তা করে।

সর্দি কাশি হলে কোন ওষুধ খেতে হবে

সর্দি কাশি কমানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ যেমন বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যেতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাসকের সিরাপ রয়েছে সেটি শিশুদের বা বড় সকলের জন্যই খাওয়ার উপযোগী।

যেহেতু এখানে বলা হয়েছে শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ওষুধ প্রযোজ্য সেই ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ঘরোয়া উপায়ে আদা ছেচে সেটি রস করে সিরাপের মত শিশুদেরকে সেবন করানোর হলে দ্রুত এটি কাজ করবে।

এবং মধু দিয়েই সিরাপ বানিয়ে খাওয়ালে শিশুদের জন্য এটি অতিরিক্ত কার্যকরী হয়ে উঠবে কেননা শিশুদের কে বাহিরের পরামর্শ অনুযায়ী ছাড়া যদি কোন এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয় তাহলে সেটি শিশুর জন্য হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াবে এবং শিশুর দেহে আরো অন্যান্য রোগ বাসা বাঁধবে এতে করে শিশু ধীরে ধীরে আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।

আরো পড়ুনঃ সাফি সিরাপ এর উপকারিতা | সাফি সিরাপের উপকারিতা

বাচ্চাদের সর্দি কাশি দূর করার ঔষধ

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নতুন কয়েকটি সিরাপ সর্দি কাশি দূর করার ক্ষেত্রেঃ

  • এবেক্স
  • তুসকা
  • এডোলেভ
  • ই-কফ
  • রেমো কফ

এই সকল ঔষধ গুলো শিশুদের ঠান্ডার জন্য খুব উন্নত মানের ঔষধ।

শেষ কথা

নিজেরা সচেতন থাকলেই শিশুদেরকেও সচেতন রাখা যাবে শিশুদেরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে কেননা শিশুদের জন্য অপরিষ্কার ঘর খুবই মারাত্মক। শিশুদেরকে যতটা পারা যায় পরিষ্কার স্থানে রাখা উচিত পরিস্কার কাপড়চোপড় পড়ানো উচিত এবং যারা সর্দি কাশিতে আক্রান্ত তাদের থেকে দূরে রাখা উচিত।

ঘরে বা বাহিরে কেউ যদি ধূমপান করে তাদের থেকে শিশুদেরকে বিরত রাখা উচিত তাদের সংস্পর্শে যেন না যায় সেই দিকে খেয়াল রাখা উচিত। ঠান্ডা থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় কেননা সর্দি কাশি ঔষধ ছাড়া ধীরে ধীরেই ঠিক হয়ে যায়। যতটা পারা যায় সুস্থ পরিবেশের সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা এবং শিশুদেরকে যত্নসহকারে বৃদ্ধি করা।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: