বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম সম্পর্কে জানার প্রয়োজন পড়ে অনেকেরই। কেননা আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চাদের মাঝে বেশির ভাগে সর্দি কাশির সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু কথা হচ্ছে জ্বর সর্দি হলে বাচ্চাদেরকে কোন ঔষধটি সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ানো যাবে!

বাচ্চাদের জন্য কি কাশির অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ রয়েছে? যদি থেকে থাকে তাহলে বাচ্চাদের কাশির অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম কি? বাচ্চাদের শুকনো কাশি হলে কোন সিরাপ খাওয়ানো যাবে? বাচ্চাদের কাশির সিরাপ টোফেন কতটা কার্যকরী? আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মূলত এই সকল প্রশ্নের উত্তর দেব আপনাদের।

তাহলে আসুন বাচ্চাদের সর্দি কাশির ওষুধের নাম এবং বাচ্চাদের সর্দি কাশির অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম ও দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক আজকের এই ছোট্ট আলোচনা পর্বের মাধ্যমে।

(toc) #title=(সূচিপত্র)

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশির জন্য কার্যকরী বেশ কয়েকটি ঔষধ রয়েছে। যেগুলোর কিছু ঔষধ ট্যাবলেট আবার কিছু পাউডার বা সাসপেনশন অর্থাৎ সিরাপ জাতীয়। তাই আজকে আমরা বাচ্চাদের সর্দি-কাশির ট্যাবলেট ওষুধের নাম, বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ ঔষধের নাম, বাচ্চাদের কাশির অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের নাম আলাদা আলাদাভাবে জানাবো আপনাদেরকে।

তবে হ্যাঁ তার আগে জেনে নেওয়া হল জরুরী যে একজন বাচ্চা শিশুর সাধারনত কি কি কারণে সর্দি কাশি হয়ে থাকে। তাই এ পর্যায়ে আমরা বাচ্চাদের সর্দি কাশি কেন হয় সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

আর হ্যাঁ বাচ্চাদের সর্দি কাশির ওষুধের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কেও জানাবো আপনাদেরকে। তাহলে আসুন ধারাবাহিকভাবে বাচ্চাদের সর্দি কাশি থেকে দ্রুত সুস্থ করার উপায় সম্পর্কে অবগত হওয়া যাক। 

আরো পড়ুনঃ কাতিলা গাম ও তালমাখনা খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হওয়ার কারণ  | বাচ্চাদের সর্দি কাশি কেন লাগে?

বাচ্চাদের সর্দি কাশি হওয়ার জন্য একাধিক কারণ রয়েছে। সেগুলো হলো:

  • জীবাণুর সংক্রমণ
  • আবহাওয়া পরিবর্তন
  • মায়ের ঠান্ডা লাগা
  • বুকে অতিরিক্ত বাতাস বসে যাওয়া
  • বেলা গড়িয়ে গোসল করানো সহ প্রভৃতি।

বড়দের থেকে বাচ্চা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম থাকে। আর তাই অল্পে ই সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে বাচ্চা শিশু। যেসকল শিশু এখনো পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করে তাদের মায়ের যদি কোনরকম ঠান্ডা লেগে যায় তাহলে সেই ঠান্ডা বা সর্দি কাশির সমস্যা বাচ্চাদের মাঝেও দেখা দেয়। আর এজন্য প্রত্যেকটি মা-বাবার এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া অতীব জরুরী।

আরো পড়ুনঃ কাশির সিরাপ - বাচ্চাদের কাশির সিরাপ এর নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশি প্রতিরোধের উপায় | বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঘরোয়া টোটকা

দেখুন ওষুধ খাওয়ালে রোগ সেরে যাবে এটা স্বাভাবিক। তবে কিছু কিছু রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ ঔষধ না খাওয়ানোর বিনিময়েও করা সম্ভব। তাই বাচ্চাদের সর্দি কাশির সমস্যাকে নিরাময়ের জন্য এ পর্যায়ে আমরা ঘরোয়া কিছু টোটকা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত করবো আপনাদেরকে।

১। আমরা অনেক সময় বাচ্চার স্বস্তির কথা চিন্তা করে সিলিং ফ্যান অথবা টেবিল ফ্যান চালু করে তাদেরকে সরাসরি শুইয়ে দেই। এতে করে প্রচন্ডভাবে বাতাস বুকে বসে যাবার কারণে গলায় কফ এবং সর্দির মতো সমস্যা দেখা দেয় শিশুদের। তাই এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হতে হবে। অতএব চেষ্টা করবেন বাচ্চার গায়ে কথা বা চাদর দিয়ে ঢেকে রাখবার অথবা ফ্যানের পাওয়ার কিছুটা হলেও স্বাভাবিক রাখবার। যাতে করে বাচ্চার বুকে অতিরিক্ত বাতাস না লাগে।

২। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে যেকোনো মানুষেরই সর্দি কাশি লেগে যায়। তাই যদি কোন শিশুর মায়ের সর্দি বা কাশির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কিছু সময়ের জন্য হলেও তার বুকের দুধ না খাওয়ানোই উত্তম। কেননা বাচ্চারা বুকের দুধ খাওয়ার ফলে মায়ের সমস্যায় ভুগে থাকে।

এর জন্য নিজে সাবধানতা অবলম্বন করবেন এবং যদি আপনি নিজেও সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে বড়দের সর্দি কাশির জন্য যে ওষুধগুলো রয়েছে সেগুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত খাবেন এবং যতদ্রুত সম্ভব নিজেকে সুস্থ করার চেষ্টা করবেন। কেননা একজন মা অসুস্থ মানে একজন সন্তানও অসুস্থ হতে চলেছে এমনটাই ইঙ্গিত করে।

৩। বাচ্চাদের সর্দি কাশি প্রতিরোধের জন্য সব সময় সতর্ক থাকুন। তাদেরকে সঠিক সময় গোসল করান এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। যেহেতু জীবাণু সংক্রমণ এবং অনিয়মিত গোসল করানোসহ আনুষঙ্গিক কারণ গুলো বাচ্চাদের জ্বর সর্দি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত, তাই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে সাবধান হতে হবে আর তবেই আপনি আপনার শিশুকে সুস্থ রাখতে পারবেন।

৪। আর যদি বাচ্চা শিশু সর্দিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে তাহলে তাকে ঔষধ খাওয়ানোর পূর্বে ঘরোয়া কিছু জিনিস খাওয়াতে পারেন। যেমন ধরুন মধু। যদি আপনার শিশুর বয়স দেড় বছরের বেশি হয় তাহলে মধু খাওয়াতে পারেন। তবে অবশ্যই আসল ভেজালমুক্ত মধু সংগ্রহ করার চেষ্টা করবেন এক্ষেত্রে। আর হ্যাঁ বাচ্চার বয়স যদি দেড় বছরের কম হয় তাহলে এই টিপসটি এড়িয়ে চলবেন অবশ্যই।

৫। বাচ্চা শিশুদের বয়স যদি ছয় মাসের বেশি হয় তাহলে সর্দি কাশি সারিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যে আদার রস খাওয়াতে পারেন। কেননা দুই থেকে তিনবার অতিরিক্ত হলে দুই থেকে তিন দিন যদি নিয়ম মেনে আদার রস খাওয়ানো যায় তাহলে শুকনো কাশি সহ যেকোনো সর্দি কাশির সমস্যা খুব দ্রুত সেরে যায় বাচ্চাদের।

৬। আপনি চাইলে মধু এবং লেবু এই দুইটি একসঙ্গে মিশিয়ে বাচ্চার সর্দি-কাশির সমস্যাকে সাড়িয়ে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে দুই টেবিল চামচ মধু এবং ২ টেবিল চামচ দেশী লেবুর রস মিশিয়ে কিছু সময় পর পর বাচ্চাকে খাওয়াবেন।

একইভাবে আদা ও মধু একসঙ্গে মিশিয়ে এই পানীয়টি খাওয়াতে পারেন আপনার শিশুকে সর্দি কাশি প্রতিরোধে। আরো রয়েছে দুধ ও মধুর মিশ্রণ। মূলত এক কাপ গরম দুধে দুই চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে যদি একটা বাচ্চাকে পান করানো যায় তাহলেও খুব দ্রুত সর্দি কাশির সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।

তবে হ্যাঁ আমরা যে টিপস গুলো আপনাদেরকে দিয়েছি, চেষ্টা করবেন যদি আপনার শিশুর বয়স এক বছর অথবা ১ বছরের বেশি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেই মেনে চলবার। কেননা অতিরিক্ত ছোট শিশুদেরকে এগুলো খাওয়ানো একদমই উচিত হবে না। তাই বাচ্চা শিশুদের ক্ষেত্রে সর্দি কাশি দ্রুত ঠিক করতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বেটার।

তবে এক বছরের বেশি বয়সী বাচ্চাদেরকে আপনি যদি এই ঘরোয়া টোটকা গুলো খাওয়ান তাহলে অবশ্যই দ্রুত সর্দি কাশি সেরে যাবে। এবার আসুন ধারনা নেওয়ার উদ্দেশ্যে জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের কাশির সিরাপ এবং সর্দি-কাশির ঔষধের নাম সমূহ।

আর হ্যাঁ সেগুলো জানার পূর্বে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখা জরুরী বাচ্চাদেরকে কোন কিছুই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়াতে যাবেন না। কেননা অতিরিক্ত ছোট বাচ্চাদের শরীরে উল্টাপাল্টা ওষুধ প্রবেশ করলে সেটা ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মা বাবা হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব সাবধানতা অবলম্বন করা এবং বাচ্চাদের ওষুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।

আরো পড়ুনঃ নাকের পলিপাস এর ড্রপ নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম

বাচ্চাদের সর্দি কাশির জন্য বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। এ পর্যায়ে আমরা বাচ্চাদের সর্দি কাশির জন্য কিছু প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ ওষুধের নাম সাজেস্ট করব। যথা:

  • Xcel 60ml
  • Xcel 100 ml
  • Xcel 120 ml
  • Napa 50 ml
  • Napa 60ml
  • Napa 100 ml
  • Fast 60 ml
  • Ace 60 ml

বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম (সিরাপ ঔষধ)

বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ ওষুধের নাম গুলো হলো:

  • এডোলেফ
  • রিমোকফ
  • ই কফ
  • এডোভাস
  • তুসকা সিরাপ
  • মধু ভাস সিরাপ
  • এবেক্স সিরাপ
  • এমবক্স সিরাপ
  • নেকটার সিরাপ
  • ওকফ সিরাপ

আর এই ওষুধের দাম গুলো জানতে নিচের অংশটুকু পড়ুন। কেননা আর্টিকেলের শেষ পর্যায়ে আমরা বাচ্চাদের সর্দি কাশির সিরাপ ওষুধের দাম আপনাদের সুবিধার্থে তুলে ধরেছে। যথা:

  • তুসকা সিরাপ: বাচ্চাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় তুস্কা সিরাপ এর বাজার মূল্য মাত্র ১০০ মিলি ৬৫ টাকা। 
  • মধু ভাস সিরাপ: বাচ্চাদের মধু ভাস নামক সিরাপ ঔষধটির বাজারমূলক ১০০ মিলি ১০০ টাকা। 
  • এবেক্স সিরাপ: বাচ্চাদের এপেক্স সিরাপ এর বাজার মূল্য ১০০ মিলি মাত্র ৩৫ টাকা।
  • এমবক্স সিরাপ: বাচ্চাদের এম বক্স সিরাপ ঔষধটির বাজার মূল্য ১০০ মিলি মাত্র ১৫০ টাকা। 
  • নেকটার সিরাপ: বাচ্চাদের নেকটার সিরাপ ওষুধ টির বাজার মূল্য ১০০ মিলি মাত্র ৪০ টাকা।
  • এডোলেফ: বাচ্চাদের এডলেফ কাশির সিরাপটির বাজারমূল্য ১০০ মিলি ৬৫ টাকা। 
  • রিমোকফ: বাচ্চাদের রিমোকফ কাশির সিরাপ ঔষধটির বাজার মূল্য ১০০ মিলি ৫৫ টাকা এবং ২০০ মিলি ১০৫ টাকা। 
  • ই কফ: বাচ্চাদের ই কফ নামক কাশির সিরাপটির বাজার মূল্য ১০০ মিলি মাত্র 50 টাকা।
  • এডোভাস: বাচ্চাদের এডভাস সিরাপ ঔষধটির বাজার মূল্য ১০০মি ৬৫ টাকা এবং ২০০ মিলি ১০৫ টাকা মাত্র।
  • ওকফ সিরাপ: বাচ্চাদের ও কফ সিরাপ ঔষধটির বাজার মূল্য ১০০ মিলি মাত্র ১১০ টাকা
  • এমব্রোক্সল: বাচ্চাদের এমব্রোক্সল সিরাপ ঔষধটির বাজার মূল্য মাত্র ৫৫ টাকা।

উপসংহার

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, বাচ্চাদের সর্দি কাশির ঔষধের নাম সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি এখানে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং যেকোনো শারীরিক সমস্যায় পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। মনে রাখবেন সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা এবং আপনার সতর্কতা আপনার, আপনার পরিবার এবং আশেপাশের নিকটস্থ মানুষদের জীবন পর্যন্ত বাঁচিয়ে দিতে পারে। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: