সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায় ২০২৪

ভূমিকা: দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ২০০৭ সালে সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এবং কোরিয়া সরকারের পক্ষে হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস অব কোরিয়া (এইচ.আর.ডি কোরিয়া) বর্তমানে কোারিয়ার অভিবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়

প্রতিবছর এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস)- এর আওতায় বাংলাদেশি প্রার্থীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে। কোরিয়া সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোটার চেয়ে রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রার্থী বেশি হলে লটারির মাধ্যমে কোরীয় ভাষা পরীক্ষা অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।

প্রার্থীগণ নির্ধারিত সময়ে কোরিয়া সরকার কর্তৃক কোরীয় ভাষা-দক্ষতা অর্জন ও স্কিল টেস্টে অংশগ্রহণ কওে দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪ বছর ১০ মাসের জন্য উচ্চ বেতনে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানায় চাকুরি করার সুযোগ পায়।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের সম্পূর্ণ সরকারিভাবে স্বল্প ব্যয়ে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। দুই সরকারের সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী বোয়েসেল ব্যতীত অন্যকোনো জনশক্তি রফতানিকারী এজেন্ট বা মধ্যস্বত্বভোগী বা কোরীয় ভাষাশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোরিয়ায় কর্মী প্রেরণের সুযোগ নেই।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

ইপিএস-এর মূল উদ্দেশ্যঃ

  • স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদ অভিবাসন।
  • কোরিয়াসহ সকল দেশের শ্রমিকের সমমর্যাদাকরণ।
  • কোরীয় ভাষায়-দক্ষতা ও স্কীল টেস্টের মাধ্যমে যোগ্য কর্মী নির্বাচন করা।
  • দক্ষিণ কোরিয়াতে নির্ধারিত সময়ে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও অর্থ অর্জন এবং নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের পর জাতীয় উন্নয়নে দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে অবদান রাখ।

দক্ষিণ কোরিয়া গমনের যোগ্যতা :

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এস.এস.সি/সমমানের ডিগ্রি।
  • বয়স ১৮-৩৯ হতে হবে।
  • বৈধ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • কোরীয় ভাষা পড়া, লেখা ও বোঝার পারদর্শিতা এবং কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
  • যাদের ফৌজদারি অপরাধে জেল বা অন্য কোনো শাস্তি হয়নি।
  • যাদের কালার ভিশনে কোনো সমস্যা নেই।
  • যারা দক্ষিণ কোরিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থান করেনি।
  • মাদকাসক্ত ব্যক্তিগণ অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য প্রার্থীদের করণীয়

(ক) ১ম ধাপ আবেদনের তারিখ ও সময় ঘোষণা:

  • প্রতি বছর নিবন্ধনের সময় ঘোষণা করা হয়।
  • তারিখ ও সময় জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
  • ওয়েবসাইটের ঠিকানা- www.boesl.gov.bd

(খ) ২য় ধাপ প্রার্থীদের অনলাইনে প্রাথমিক নিবন্ধন করার পদ্ধতি :

  • নির্ধারিত সময়ে বিকাশ পেমেন্ট গেটওয়ে-এর মাধ্যমে নিবন্ধন ফি ৫০০/- (পাঁচশ) টাকা পরিশোধ করতে হবে ও বিকাশ পেমেন্ট-এর ট্রানজেকশন আইডি সংগ্রহ।
  • নির্ধারিত ফরম অনুযায়ী পাসপোর্টকপিসহ আবেদন সম্পন্ন করা।
  • বিকাশ পেমেন্ট ট্রানজেকশন আইডি নম্বও আবেদন ফরমে উল্লেখ করে বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইটে প্রদান।
  • নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর কনফারমেশন ফরম প্রিন্ট কর।

(গ) ৩য় ধাপ নিবন্ধনকৃত প্রার্থীদের লটারি

  • প্রাপ্ত সঠিক আবেদন থেকে লটারির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন।
  • লটারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য তারিখ ও সময় বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
  • নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে বোয়েসেল অফিসে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত ২১০০/- টাকা ফি জমা দিয়ে চূড়ান্ত ভাবে নিবন্ধন করা।

(ঘ) ৪র্থ ধাপ প্রত্যেক প্রার্থীকে কোরীয় ভাষায় অংশগ্রহণ:

  • নিজ উদ্যোগে কোরীয় ভাষা শিখতে হবে।
  • বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত সরকারি টিটিসিগুলোতে সুযোগ রয়েছে।
  • যে কোনো বেসরকারি কোরীয় ভাষা প্রশিক্ষণ সেন্টার থেকে কোরীয় ভাষা শেখা যায়।

(ঙ) ৫ম ধাপ চূড়ান্ত নিবন্ধনকৃত প্রার্থীদের কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ:

  • প্রতিবছর এইচ.আর.ডি কোরিয়া কর্তৃক কোরীয় ভাষা পরীক্ষার তারিখ ও সময় ঘোষণা করা হয়।
  • এইচ.আর.ডি কোরিয়া কোরীয় ভাষা পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে।
  • কোরীয় ভাষা পরীক্ষার স্থান ও সময় বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইটে প্রকশ করা হবে।

(চ) ৬ষ্ঠ ধাপে কোরীয় ভাষা পরীক্ষা অংশগ্রহণকারীদের করণীয়:

  • এইচ.আর.ডি কোরিয়া কোরীয় ভাষা পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে থাকে। প্রার্থীকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
  • কোরীয় ভাষা পরীক্ষার ফলাফল বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে প্রচার করা হবে।
  • কোরীয় ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের এইচ.আর.ডি কোরিয়া কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে কম্পিটেন্সি টেস্ট ও স্কীল টেস্ট গ্রহণ করা হয়।

(ছ) ৭ম ধাপ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের করণীয়:

  • এইচ.আর.ডি কোরিয়া স্কীল টেস্টে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফলাফল ঘোষণা করা যাতে স্কীল টেস্টের চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ন প্রার্থীদের ফলাফল জেলা ভিত্তিক সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য নোটিশ বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
  • উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিজ নিজ এজলার সিভিল সার্জনের মধ্যেমে নির্ধারিতে তারিখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।
  • বোয়েসেল-এ নির্ধারিত জব এপ্লিকেশন ফরমসহ পাসপোর্ট কপি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ জমা করতে হয়।
  • চূড়ান্ত উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তথ্য জব রোস্টারের জন্য বোয়েসেল এইচ.আর.ডি কোরিয়ার ডাটাবেইজ সার্ভারে তথ্য প্রদান করে থাকে।
  • বোয়েসেল কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য এইচ.আর.ডি কোরিয়া যাচাই করে থাকে এবং পর্যায়ক্রমে জব রোস্টার সম্পন্ন করে।
  • জব রোস্টারের মেয়াদ রোস্টারভুক্ত হওয়ার দিন থেকে ১ম ধাপে এক বছর ও ২য় ধাপে এক বছরসহ মোট ২ বছর।

(জ) ৮ম ধাপ রোস্টারকৃত প্রার্থীদের লেবার কন্ট্রাক্ট ইস্যুর পর করণীয়:

  • কোরিয়াস্থ স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (এসএমই)-এর চাহিদা মোতাবেক উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কর্মী হিসেবে নিয়োগের জন্য কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হয়।
  • কোরিয়াস্থ কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয় এসএমই কর্তৃক কর্মী নিয়োগের চাহিদা যাচাই বাচাই করে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
  • কোরিয়াস্থ কর্মসংস্থান ও শ্রম মন্ত্রণালয় বাৎসরিক কোটা অনুযায়ী এসএমই-এর চাহিদার প্রেক্ষিতে রেন্ডম ভিত্তিতে জব রোস্টার থেকে লেবার কন্ট্রাক্ট প্রদান করে থাকে।
  • বোয়েসেল ও এইচ.আর.ডি কোরিয়ার নির্ধারিত SPAS থেকে লেবার কন্ট্রাক্ট গ্রহণ ও অনুমোদন করে থাকে।

(ঝ) ৯ম ধাপ লেবার কন্ট্রাক্ট প্রাপ্ত কর্মীদের করণীয়:

  • লেবার কন্ট্রাক্ট প্রাপ্ত কর্মীদের বিকেটিটিসি'তে ৪৮ ঘণ্টার প্রিলিমিনারী প্রশিক্ষণ, যক্ষা পরীক্ষা ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহের জন্য বোয়েসেল ওয়েবসাইটে নোটিশ প্রদান ও এসএমএস প্রেরণ করে থাকে।
  • লেবার কন্ট্রাক্ট প্রাপ্ত কর্মীগণ প্রিলিমিনারী প্রশিক্ষণ সম্পন্নের পর বোয়েসেল অফিসে মূল পাসপোর্ট, প্রশিক্ষণ সনদ, ভিসা ফরম, নির্ধারিত ই৯/ই১০/এইচ২ স্ট্যাটাস ফরম, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ভিসা সংক্রান্ত সকল ডকুমেন্টস এবং বোয়েসেল-এর সার্ভিস চার্জ ২৩,১৮৪/- (ভ্যাটসহ), বোয়েসেল ডাটাবেইজ ফি ২০০/-, ভিসা ফি ৫,১০০/-, বহির্গমন ফি ৩,৫০০/-, স্মার্ট কার্ড ফি ২৫০/- এবং উৎসে আয়কর বাবদ ৮০০/- টাকাসহ সর্বমোট ৩৩,০৩৪/- টাকার পে-অর্ডার এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিলে ১১৪৫/- টাকার পৃথক পে-অর্ডার প্রদান করতে হয়। এছাড়া রি-এন্ট্রি (কমিটেড/স্পেশাল সিবিটি) কর্মীদের পৃথক পে-অর্ডার প্রদানের প্রয়োজন নেই।
  • কোরিয়াগামী জেনারেল কর্মীদের ফেরতযোগ্য একলক্ষ টাকার পে-অর্ডার এবং কমিটেড/স্পেশাল সিবিটি কর্মীদের ফেরতযোগ্য তিন লক্ষ টাকার পে-অর্ডার বোয়েসেলকে প্রদান করতে হয়।

(ঞ) ১১ ধাপ সিসিভিআই (ভিসা) প্রাপ্ত কর্মীদের করণীয়:

  • বোয়েসেল সিসিভিআই প্রাপ্ত কর্মীদের ভিসা স্ট্যাম্পিং করার জন্য ঢাকাস্থ কোরিয়া দূতাবাসে পাসপোর্ট জমা করে।
  • ভিসা ও এইচ.আর.ডি কোরিয়া থেকে ফ্লাইট-এর তালিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে ফ্লাইটের জন্য নির্ধারিত এয়ারলাইন্সে টিকেটের জন্য বোয়েসেল বুকিং দিয়ে থাকে।
  • সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জ্ঞাতার্থে ফ্লাইটের তারিখ, টিকেটের টাকা জমা সংক্রান্ত ও বোয়েসেল কর্তৃক ৩ দিনের কোরীয় ভাষা ও কালচার প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য বোয়েসেল-এর ওয়েবসাইটে প্রচার ও এসএমএস প্রেরণ করা হয়।
  • বোয়েসেল-এর তথ্যের ভিত্তিতে কর্মীকে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স অফিসে উপস্থিত হয়ে টিকেটের নির্ধারিত অর্থ জমা প্রদান করতে হবে।
  • দক্ষিণ কোরিয়া গমনের পূর্বে বোয়েসেল কর্তৃক নির্ধারিত ৩ দিনের কোরীয় ভাষা ও কালচার প্রশিক্ষণ উপস্থিত হয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
  • দক্ষিণ কোরিয়া গমনের পূর্বে বোয়েসেল কর্তৃক ৮ ঘণ্টার আচরণ পরিবর্তন প্রেরণা প্রশিক্ষণ সম্পন্নের পর সংশ্লিষ্ট কর্মীকে পাসপোর্ট ও টিকেট বিতরণ করা হয়।
  • বোয়েসেল-এর প্রতিনিধি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উপস্থিত হয়ে দক্ষিণ কোরিয়াগামী কর্মীদের বিদায় জানায়।
  • বোয়েসেল কর্তৃক কোরিয়া গমনরত কর্মীীগণকে এইচ.আর.ডি কোরিয়া, কোরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও কোরিয়া নিয়োগকারী কোম্পানি বিমানবন্দর থেকে গ্রহণ করে প্রশিক্ষণ ও মেডিকেলের উদ্দেশ্যে কর্মীদেরকে KBIZ Training Center-এ নিয়ে যায়। প্রশিক্ষণ শেষে তারা চাকরিতে যোগদান করে।
  • নিয়োগপ্রাপ্তকর্মী EPS এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যে কোনো সময় তাঁর চাকরি সংক্রান্ত তথ্য নিজেই জানার সুযোগ রয়েছে।
  • কোরিয়ায় চাকুরিতে যোগদানের পর কর্মীগণ প্রাথমিকভাবে ৩ বৎসর এরপর আরও ১ বৎসর মাস চাকুরি করতে পারবে। বৈধভাবে উক্ত চাকুরি সম্পন্ন করলে পুন:রায় কোরিয়া যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় পুনরায় চাকরি (রি-এন্ট্রি) প্রাপ্তির সুযোগ :

MoU-এর শর্তানুযায়ী বিদেশি শ্রমিকরা কোরিয়াতে ৪ বৎসর ১০ মাস চাকরি সম্পন্ন শেষে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এ পদ্ধতিতে কোরিয়ার মালিকরা এক দিকে যেমন দক্ষ শ্রমিক হারাচ্ছিল, অপরদিকে বিদেশি শ্রমিকদের অবৈধভাবে কোরিয়া অবস্থানের প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে কোরিয়া সরকার ২০১২ সাল থেকে মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থে কোরিয়া ভাষায় দক্ষ এবং কোরিয়ায় কর্মে অভিজ্ঞতা আছে এমন কর্মীদের রি-এন্ট্রি সিস্টেম চালু করেছে। প্রথমবার কোরিয়াগামী কর্মীগণ কোরিয়াতে ৪

বৎসর ১০ মাস চাকুরি করার পর দ্বিতীয়বারের জন্য পুনরায় কোরিয়াতে রি-এন্ট্রির সুযোগ পায় এবং আরও ৪ বৎসর ১০ মাস চাকরি করতে পারে। রি-এন্ট্রি নিম্নবর্ণিত দুই ভাবে হয়ে থাকে :

  1. কমিটেড: যারা কোরিয়ায় চাকরি পরিবর্তন না করে বৈধভাবে ৪ বৎসর ১০ মাস চাকরির প্রথম মেয়াদ সম্পন্ন করেছে যে সকল কর্মী দেশে ফেরত আসার পূর্বে সর্বশেষ কোম্পানি হতে নতুন জব কন্ট্রাক্ট পেলে সে কমিটেড কর্মী হিসেবে বিবেচিত হয় এবং দেশে এসে তিন মাস ছুটি উপভোগ করার পর পুনরায় ২য় মেয়াদের জন্য কোরিয়ায় গমন করে। এ সকল কর্মীর পুনরায় কোরিয়া ভাষায় পরীক্ষা প্রদান করতে হয় না।
  2. স্পেশাল সিবিটি: যারা কোরিয়ায় বৈধভাবে চাকুরি পরিবর্তন করেছে এবং সর্বশেষ কোম্পানিতে ন্যূনতম ০১ (এক) বৎসর কাজ সম্পন্ন করেছে এবং তারা ৪ বৎসর ১০ মাস চাকুরির করার পর দেশে ফেরত এসেছে শুধু তারাই স্পেশাল সিবিটিতে অংশগ্রহণের যোগ্য বিবেচিত হয়। এসব কর্মীরা কোরিয়া থেকে দেশে ফেরত এসে বিনা লটারিতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে সিবিটিতে অংশগ্রহণ করে এবং এদের মধ্যে যারা সিবিটি পাশ করে তারা সরাসরি জব রোস্টারে অন্তর্ভুক্ত হয়। অত:পর জব অফার প্রাপ্তি সাপেক্ষে পুনরায কোরিয়ায় যেতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়া গমনের তথ্য :

২০০৮ সাল থেকে কোরিয়ায় গমনের জন্য কোরিয়া কর্তৃক কোরিয়া ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট ২৭,৩৬৩ জন যোগ্য কর্মীর তথ্য জব রোস্টারের জন্য এইচ.আর.ডি কোরিয়ার নির্ধারিত Sending Public Agency System (SPAS)-এর মাধ্যমে ডাটাবেইজ সার্ভারে প্রেরণ করা হয়। উক্ত কর্মীদের মধ্যে থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ২১,৬৬৯ জন কর্মী দক্ষিণ কোরিয়া গমন করেছে। অবশিষ্ট প্রার্থীগণের দক্ষিণ কোরিয়ায় গমন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।

আরো পড়ুনঃ প্রবাসীদের জন্য কোন ব্যাংক ভালো

উপসংহার :

দক্ষিণ কোরিয়াগামীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও ভাষা পরীক্ষা থেকে শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়া গমন পর্যন্ত প্রত্যেকটি কার্যক্রম অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে কোনো ব্যক্তি বা বোয়েসেল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।

এখানে উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় চাকরির জন্য রোস্টারভুক্ত হওয়াই কোরিয়ায় চাকরির নিশ্চয়তা বহন করে না। বোয়েসেল এবং HRD-Korea কোন প্রার্থীকে চাকরি প্রদান করতে পারে না, চাকরি পাবার জন্য এ প্রতিষ্ঠান দুটি প্রার্থী এবং চাকরিদাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

কোরিয়ায় চাকরি দাতা হচ্ছে সেখানকার ছোট ছোট বেসরকারি কোম্পানি। কোন্ কোম্পানি কোন্ কর্মীকে জব অফার প্রদান করলেই কেবল তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় চাকরি পাবেন। কোরিয়া ভাষা পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেটের মেয়াদ ২ (দুই) বৎসর বহাল থাকে এবং যে কোনো কর্মীর রোস্টারের মেয়াদ ১ (এক) বৎসর।

এ মেয়াদ কালের মধ্যে কোনো চাকরিদাতা কোম্পানি কোনো প্রার্থীকে জব অফার প্রদান না করলে তার কোরিয়া যাবার সুযোগ নেই। তাঁর নাম রোস্টার থেকে বাদ হয়ে যাবে। তবে প্রার্থীর বয়স ৩৯ বৎসরের মধ্যে থাকলে তিনি পুনরায় অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে লটারিতে নাম আসলে এবং কোরীয় ভাষা পরীক্ষা পাশ করে আবার রোস্টারভুক্ত হতে পারবেন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: