মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায়

মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায় — আমাদের মানবদেহের যেসকল অঙ্গ বা অংশ বেশি দামি বা প্রয়োজনীয় তার মধ্যে সবচেয়ে দামি অংশ হচ্ছে মানুষের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক। এই মস্তিষ্ক একজন মানুষের সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্ক ছাড়া মানুষ পাগল বা জড়বস্তু যেকোনো একটি বলা চলে। কারণ মানুষ ঠিক তখনই পাগল হয় যখন তার ব্রেইন আর কাজ করেনা। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ তার ব্রেইনকে কাজে লাগিয়ে জীবন পরিচালনা করে থাকে। 

মানুষ তার ব্রেইনকে দুইভাবে ব্যবহার করতে পারে। একজন মানুষ চাইলে তার ব্রেইনকে ভালো কাজের পেছনে ব্যবহার করতে পারেন আবার অনুরূপভাবে সে চাইলে তার ব্রেইনকে খারাপ কাজে ব্যবহার করতে পারে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে বিষয়টি ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। মানুষ ভালো কাজের মাধ্যমে সকালের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকেন। আর ভালো কাজ করার জন্য মেধাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষের বুদ্ধি ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও বর্তমানে প্রাপ্ত বয়সের মানুষেরও জ্ঞান-বুদ্ধির ঘাটতি দেখা যায়। আর তাই এই কথাটি প্রায়সই শুনতে পওয়া যায় যে লোকটির বয়স হয়েছে কিন্তু বুদ্ধি হয়নি। আর তাই আজকের এই আর্টিকেলের আমরা মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায় বা মেধা শক্তি বাড়ানোর কিছু কার্যকরী উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন তাহলে জেনে নেই মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায় সমূহ

মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায়

মানসিক চাপ‌ কমানো

মানুষ সামাজিক জীব। প্রতিটি মানুষই চায় একটু স্বাচ্ছন্দ্যভাবে সামাজে বসবাস করতে। একজন মানুষ যখন তার সামর্থের বাইরে কোনো কিছু করে তখনই তার উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দীর্ঘদিন যাবৎ মানসিক চাপে ভোগা ব্যক্তিগন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো তার স্মৃতি শক্তির ব্যাঘাত ঘটা। আর তাই যেকোনো প্রকার মানসিক চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মানসিক চাপ থেকে সামর্থের বাইরে কখনো অতিরিক্ত কিছু না করা। এতে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়না। তাই সর্বদা আমাদের সকলকেই মানসিক চাপ থেকে বেঁচে থাকতে হব।

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম | মেধা শক্তি বাড়ানোর উপায় 

মানুষের বিশ্রামের জন্য যত সব পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো ঘুম। ঘুমের মাধ্যমে একজন মানুষ পূর্ণ বিশ্রাম নিতে পারে। কোনো কারণে যদি কারো পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তাহলে যে শুধুমাত্র তার শারীরিক ভাবে অস্বস্তি বোধ হবে তাই নয় বরং এর ফলে মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা হয় না। যার ফলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি বা কোনো কিছু মনে রাখতেও বাধার সৃষ্টি হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের ফলে মানুষের মনে স্বচ্ছ চিন্তাশক্তির জাগরণ ঘটে।

আরও পড়ুনঃ রোদে পোড়া দাগ তোলার উপায়

নিয়মিত ব্যায়াম | স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায়

ব্যায়াম মানুষের শরীরকে সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে খুবই প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে। তবে এই ব্যায়াম একদিন করে বসে থাকলে চলবে না বরং নিয়মিত কা্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম অনুসরণ করতে হবে বা চর্চা করতে হবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে মানুষ যে শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে তা নয় বরং মানসিকভাবেও প্রশান্তি লাভ হয়। আমরা জানি আমাদের ব্রেনে হিপোক্যাাম্পাস নামক একটি অংশ আছে যা আমদের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করে। 

ব্যয়াম করার ফলে হিপোক্যাাম্পাস উত্তেজিত ও স্ফিত হয়ে যায় এর মাধ্যমে এটি স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করে। একজন ব্যাক্তির নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে মন প্রফুল্ল থাকে। শুধু তাই নয় নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এর মাধ্যমে মস্তিষ্ক খুব দ্রুত কাজ করে।

প্রোটিন ও ওমেগা-থ্রি জাতীয় খাবার খাওয়া | মেধা বৃদ্ধির খাবার

অনেক আগে থেকে প্রচলিত একটি কথা ছিল যে খাবারের সময়ে বাবা-মা হয় তো বলতো যে মাছের মাথা খাও বুদ্ধি হবে। আসলেই তাই বর্তমানে এক গবেষণায় দেখা গেছে মাছের তেল এ ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই দরকার। এছাড়াও ওমেগা-৩ ব্রেন সেল তৈরি করতে সক্ষম এর পাশাপাশি প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খেতে হবে। কারণ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য মানুষের মস্তিষ্ক কে সতেজ রাখে।

ধুমপান না করা | মাথার ব্রেন ভালো রাখার উপায়

ধূমপান মানে বিষপান। আমরা সকলে জানি যে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এটি জানা শর্তেও অনেকেই ধুমপান করে। অথচ এটি খুব ভালোভাবেই তাদের অজান্তেই নিরব ঘাতকের মতো কাজ করছে। এটি শুধু মানসিক বা শারীরিকভাবেই ক্ষতি সাধন করে না বরং মস্তিষ্কেরও ক্ষতি করে। আর তাই ধুমপানকে এড়িয়ে চলতে হবে এর ফলে মস্তিষ্ককে অনেক বয়স পর্যন্ত কার্যক্ষম রাখা যায়।

মস্তিষ্ককে কার্যক্রম ধরে রাখা

মস্তিষ্ককে সবসময় নতুন কিছু তৈরি করা, নতুন কিছু জানা, নতুন কিছু নিয়ে চিন্তা করা এসকল কাজ দ্বারা মস্তিষ্ককের ধারোনার প্রসার করা সম্ভব। আর তাই সর্বদাই মস্তিষ্ককে কাজে লাগাতে হবে যেকোনো কাজ করার আগে চিন্তা ভাবনা করে পরে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কোনো কাজ বা অহেতুক না করে নতুন কিছু চিন্তা করতে হবে যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায়। 

এছাড়াও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের চিন্তা করে খেলা যেতে পারে। পাশাপাশি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যেমন-দুধ, ডিম, কলা প্রভৃতি। গবেষণায় দেখা গেছে যে কলা মানুষের মস্তিষ্ক কে ঠা্ন্ডা রাখতে সহায়তা করে। আর তাই সর্বদা পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

আরও পড়ুনঃ চকলেট খাওয়ার অসুবিধা

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)