ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর উপায় — ওজন কমানোর জন্যে অনেকেই বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকেন। খাবার না খাওয়া থাকা সহ বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেন অনেকেই। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে যদি ওজন কমাতে না পারেন তবে পূর্ববর্তী পরিকল্পনাগুলো বাদ দিন। গ্রহণ করতে পারেন নতুন কোন পদ্ধতি। আপনার খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিন। তবে হ্যাঁ কখনোই না খেয়ে থাকবেন না। আপনার ৩ বেলা খাবারকে ৫ অথবা ৬ বেলা করে খেতে পারেন। যার ফলে আপনার শরীরও আগের চেয়ে অনেক ভালো থাকবে।

ওজন কমানোর উপায় | ওজন কমানোর তিনটি কার্যকরী উপায়

১। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওজন বৃদ্ধি পায় এই ধরনের খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে চিনি ও অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার। যখন আপনি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চাইবেন তখন আপনার ক্ষুধার মাত্রা নিচে নামিয়ে আনতে হবে। আপনার শরীরের মধ্যে জমে থাকা চর্বি কমাতে কাজ করুন। চর্বি কমানোর অন্যতম উত্তম উপায় হচ্ছে বেশি বেশি পানি পান করা। বিশেষ করে তা হালকা গরম পানি। বেশি বেশি পানি খাওয়ার কারণে আপনার কিডনি ভালো থাকবে। আর এটা পেট মোটা হওয়াকে কমাতে সাহায্য করবে।

এই পদ্ধতি যদি আপনি অনুসরণ করেন তাহলে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ১০ পাউন্ড অথবা এর চেয়েও বেশি ওজন কমানো সম্ভব। এতে করে আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী ওজন কমবে। যার ফলে আপনার কম ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হবে। সেটা আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিয়ে নিতে পারবেন। চর্বি কমানো এই পদ্ধতি সহজ ভাবেই আপনাকে ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করবে। সবথেকে বড় কথা হচ্ছে শর্করাজাতীয় খাবার ও স্টেক খাওয়া কমাতে হবে।

আরও পড়ুনঃ হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়

ওজন কমানোর খাবার তালিকা | ওজন কমানোর সহজ উপায়

খাদ্যা অভ্যাসে কিছু কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসুন। আপনার প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায় এমন সকল খাবারযুক্ত করুন যাতে করে আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে। আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি চর্বিযুক্ত এবং সবুজ শাকসবজি, একটি প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখুন। পুষ্টির এই উপকরণ গুলো রেখে প্রতিদিন ২০-৫০ গ্রাম রাখুন। আপনার খাবার এর তালিকার প্রোটিনের উৎসগুলোকে রাখুন। এগুলি হচ্ছে গরু এবং মুরগির মাংস, সামুদ্রিক মাছ ও চিংড়ি এবং ডিম। ওজন কমানোর সময়ে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত না।

উচ্চ প্রোটিনযুক্ত রয়েছে এমন ৬০% খাবার গুলো বাদ দিলে এতে করে আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে অল্প ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ওজন হ্রাস করা গেলেও একটি জিনিস আপনাকে মানতেই হবে। প্রোটিনযুক্ত খাবার হচ্ছে পুষ্টির রাজা। ফুলকপি, পাতাকপি, লেটুস পাতা, টমেটো, শসা ইত্যাদি খাবার গুলো হচ্ছে কম কার্বনযুক্ত সবজি।

আপনি কম কার্বনযুক্ত খাবার গুলো দিয়ে প্লেট ভর্তি করে ফেললেন। এই উপকরণ গুলি দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে খাবার খেলেও আপনার শরীরে ওজন বাড়বে না। সবজি, মাছ, মাংস, ভিটামিন এবং খনিজ খাবার খেলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। নিয়মিত আপনি ৫-৬ বার খাবার খান। যখনই আপনার নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হবে, তখনই আপনি খাবার গ্রহণ করুন। তবে হ্যাঁ ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই চর্বি খাবার খেতে ভয় পাবেন না। আর সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, প্রতিদিনের আপনার খাবার এর তালিকায় পরিপূর্ণ পুষ্টিযুক্ত উপকরণ রেখে দিন।

ওজন কমানোর উপায় ব্যায়াম | ওজন কমানোর উপায় ব্যায়াম

ওজন কমানোর জন্য আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম খুবই কার্যকর একটি পদ্ধতি। ওজন কমানোর জন্য সপ্তাহে আপনাকে ২ থেকে ৩ দিন জিমে যেতে হবে। জিমে গিয়ে শুধুমাত্র বসে থাকলে হবেনা। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে উপযুক্ত ব্যায়াম গুলো করতে হবে। যদি আপনি জিমে নতুন যাওয়া শুরু করে থাকেন তাহলে প্রথম দিনেই কষ্টকর ধরনের ব্যায়াম করা উচিত না। এতে করে উল্টো ফল হবার সম্ভাবনা হতে পারে। তাই ব্যায়াম করার পূর্বে প্রশিক্ষকের সাথে পরামর্শ করুন। তাহলে আপনি যে কারণের জন্য ব্যায়াম করবেন সেই ফলটা পাবেন।

আরও পড়ুনঃ মেদ কমানোর সহজ উপায়

ওজন কমানোর ১৫টি সহজ উপায় | ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায়

মেদ কমানো মূলত তেমন কোন কঠিন কাজ না সামান্য ধৈর্য ও একটু ইচ্ছে থাকলেই শরীরের ওজন কমানো সম্ভব। আর সেটি যদি ঘরোয়া উপায়ে করা যায়, তাহলে তো খারাপ হয়না, কি বলুন? ওজন কমানোর সহজ উপায় জানিয়েছে বার্তা সংস্থা UNB। চলুন জেনে নেই সেই ওজন কমানোর উপায় গুলো:

গ্রিন টি

গবেষণায় জানা গেছে, প্রতিদিন ৪ কাপ গ্রিন টি খেলে প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালরি কমিয়ে আনা সম্ভব। গ্রিন টিতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা দেহের ওজন সঠিক রাখতে সাহায্য করবে। তাই প্রতিদিন গ্রিনটি অবশ্যই পান করুন।

খাবার তালিকা

যেদিন থেকে আপনি ওজন কমানোর কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন, সেই দিন প্রথমেই কি কি খাবার খাবেন, কখন খাবেন তার একটি তালিকা তৈরি করে নিন।

নাচ

আপনি যদি নৃত্যশিল্পী না হয়ে থাকেন, তবে গানের সাথে পায়ে তাল মিলিয়ে নিন। ১০ মিনিট সময় ধরে তাল মিলিয়ে নিন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫৮% ক্যালরি হ্রাস করতে পারবেন।

মসলাদার খাবার

শুধুমাত্র সেদ্ধ খাবার কখনও খাবেন না। মসলা জাতীয় খাবার যেমন—ধনে, জিরে গুঁড়া হলুদ ইত্যাদি মসলাগুলোকে কখনো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া যাবেনা। কেননা এই মসলাই আপনার শরীরে ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

ফোনে ঘুরে কথা বলুন

ফোনে যখন কথা বলবেন তখন একটা জায়গাতে বসে থেকে কখনই কথা বলবেন না। সবসময় চেষ্টা করবেন ঘুরে ঘুরে কথা বলার। এইভাবে ১০ মিনিটে ৩৬% ক্যালরি নষ্ট করা সম্ভব।

পানি পান করুন

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পান করার কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে টক্সিন বাহির করে দেওয়া সম্ভব হয়।

ঘর মুছুন

ওজন কমানোর জন্য বাড়ির কাজ করুন। যেমন- ঘর মুছলে সবথেকে বেশি ক্যালরি নষ্ট করা সম্ভব হয়। এইভাবে ৪২% ক্যালরি নষ্ট করা যায়।

চিনিকে না বলুন

ওজন কমানোর জন্য চিনি খাওয়া একেবারে পরিহার করুন। এক চা চামচ চিনিতে মোট ১৬% ক্যালরি থাকে। তাই চা অথবা দুধ খাওয়ার সময়ে কখনই চিনি দিয়ে খাবেন না।

আরও পড়ুনঃ রাগ কমানোর সহজ উপায়

তাড়াতাড়ি রাতের খাবার শেষ করুন

রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নিন। কেননা রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যদি রাতে আপনার খিদে পায় সেই সময় এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন।

জগিং করুন

ওজন কমানোর জন্য বাইরে দৌড়াবার কোনো প্রয়োজন নেই। পারলে নিজের ঘরের মাঝে জগিং করতে পারেন।

দিনে ঘুম বাদ দিন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত দরকার। কিন্তু কখনও আপনি দিনের বেলাতে ঘুমাবেন না। এতে করে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

আস্তে আস্তে খান

যখন আপনি খাবার খাবেন তখন তারাহুড়া করে না খেয়ে ধীরে ধীরে খান। এতে করে আপনার পেট ঠিকঠাক ভাবে ভরবে। যদি খুব বেশি তাড়াহুড়া করে খাবার খান তাহলে প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি খাবার আপনি খেয়ে ফেলতে পারেন।

খাবার আগে পানি খান

খাবার খাওয়ার পূর্বে সবসময় এক গ্লাস করে পানি পান করুন। এছাড়া জাঙ্ক ফুড খাবার একেবারেই খাবেন না। যেমন- বার্গার, ক্রিম বিস্কুট ইত্যাদি। যতটা সম্ভব বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়ার। এতে করে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও মুটিয়েও যাবেন না।

ছোট প্লেটে খান

প্লেট পরিবর্তন ফেলুন। যে প্লেটে খাবার খান, তার চেয়ে ছোট ছোট প্লেটে খাবার খান। এতে করে মনে হবে আপনি অনেক বেশি খেয়ে ফেলছেন। তাই আপনি কম খাবার খেতে শুরু করবেন।

খিদে পেলে পপকর্ন খান

শুধুমাত্র সিনেমা হলে গেলেই যে পপকর্ন খাবেন তা কিন্ত নয়। যখনই আপনার খিদে পাবে তখনই আপনি পপকর্ন খেতে পারেন। এটি হচ্ছে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। তাই মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কম।

আরও পড়ুনঃ স্মৃতি শক্তি কেন হারায়? মনে রাখার সহজ উপায়

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)