মেদ কমানোর সহজ উপায় | পেটের মেদ কমানোর সহজ উপায় জেনে নিন

একটা বয়সের পর মানুষ নিজের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা রকম বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে থাকেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণ মেদ ও চর্বি বেড়ে যাওয়া। জানা গেছে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ আছে যারা তাদের প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা ভুঁড়ি বা মেদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে থাকেন। আর শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলের মানুষ এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত থাকেন।

আর বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে খুব দীর্ঘ সময় ঘরে বসে থাকায় এই বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তাই ঘরে বসে আপনি কিভাবে আপনার মেদ ও ভুঁড়ি কমিয়ে নিবেন। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কি পরামর্শ দিচ্ছেন তা দেখে নেয়া যাক আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে। 

সকাল বেলার নাস্তা বাদ না দেয়া

সকালের নাস্তা কে দিনের সবচেয়ে গুরুপ্তপূর্ণ খাবার বলা হয়ে থাকে। তবে আমরা অনেক এই সকালে ঘুম থেকে উঠে নানা রকম কাজের জন্য ঝাঁপিয়ে পরি। যার ফলে সকাল এর নাস্তা আর খাওয়া হয় না।কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞরা বা ডাক্তাররা বলছেন শরীর এর ওজন, মেদ, চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কখনও সকালের নাস্তা বাদ দেয়া উচিত না। 

কারণ হচ্ছে আপনি যদি সকাল এর নাস্তা না খাওয়ায় শরীরে বার বার ক্ষুধা লেগে থাকে। যার ফলে সারাদিন অল্প অল্প করে অপরিমিত নানা রকম তেল চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহন করতে হয়। এই রকম খাবার গ্রহন করার ফলে শরীর এর ভিতর অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহন করা হয়। যার ফলে আপনার শরীরে জমতে থাকে অতিরিক্ত পরিমান মেদ। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন নিয়ম করে সকাল এর নাস্তা গ্রহন করতে হবে।

নিদিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ

অনেক এর মাঝে একটা ভুল ধারনা আছে যে দুপুর বেলা বা রাতে খাবার না খেলে শরীর এর ওজন কমতে থাকে। এই ধারনা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কোন এক বেলা খাবার গ্রহন না করার ফলে শরীরে যেমন দুর্বলতা এবং পুষ্টি সমস্যা দেখা যায়। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত ক্ষুধার কারনে মিষ্টি জাতীয় এবং চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহন এর আগ্রহ বেশি থাকে। 

আসলে আপনার শরীরে দুরত হারে ক্যালোরি বারন করতে চাইলে কোন বেলার খাবার বাদ না দিয়ে প্রতিদিন একটা নিদিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহন করা। নিদিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ার ফলে শরীর এর ক্ষুধা,হজম শক্তি এবং শরীর এর অভ্যন্তরীণ পরিপাক কার্যকলাপ একটা নিদিষ্ট অনুপাতে চলতে থাকে। যার ফলে ওজন, মেদ নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়ে থাকে। তাই আপনাকে প্রতিদিন একটি তালিকা অনুযায়ী খাবার গ্রহন করতে হবে। এই পদ্ধটি অনুসরন করার ফলে শরীর নানা রকম কার্যকলাপ ঠিক ভাবে চলতে থাকে এবং কোলেস্ট্ররোল , ইনসুলিন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

স্নাকস জাতীয় খাবার না খেয়ে বেশি পরিমান পানি পান করা

বেশি পরিমান পানি পান করার ফলে শরীর এর মধ্যে ওজন কমে যাবে। এ রকম ধারনা ভুল। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় মানুষ ক্ষুধা আর তৃষ্ণা এর তুলনা মুলক পার্থক্য বুঝতে পারে না। যার ফলে অনেক সময় স্নাকস জাতীয় খাবার গ্রহন করে থাকে। যার ফলে শরীর এর মধ্যে গ্রহন করা হয়ে থাকে অতিরিক্ত পরিমান ক্যালোরি।

যা একজন মানুষের এর জন্য ভালো কিছু না। তাই আপনার নিদিষ্ট সময়ে ছাড়া ক্ষুধা পেলে আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরি জাতীয় খাবার গ্রহন না করার ফলে বেশি পরিমান পানি পান করতে পারেন। যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহন হবে না। এমন টাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ

এই পদ্ধটি শরীর এর অজন,মেদ কমানোর জন্য বেশ কার্যকর একটি উপায়। আঁশ এবং ফাইবার জাতীয় খাবার শরীর এর মেদ ও ওজন কমানোর জন্য খুবই কার্যকরী। ফলমুল, লাল চাল, মটর, সবজি, ডাল জাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে আঁশ থেকে থাকে। এছাড়া প্রতিদিন এর স্নাকস জাতীয় খাবার খাওয়ার পরিবর্তে ফলমুল, ইত্তাদি খাবার গ্রহন করা উচিত। আর আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহন ওজন নিয়ন্ত্রণ এর জন্য বেশ কার্যকর এমন টাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

কর্মঠ থাকা

বর্তমান সময়ে আমরা কেউ তেমন কাজ কর্ম করতে চাই না। যার ফলে শরীর এর মধ্যে দেখা দেয় নানা রকম অসুখ অসুবিধা। শরীর এর ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ব্যায়াম এর কাজ করার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু ব্যায়াম না করেও ঘরের মধ্যে ছোট খাটো কাজ করে শরীর এর ক্যালোরি ব্রান হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে। যেমন; ঘর পরিস্কার করা, থালা বাসন মাঝা , কাপর ধোয়া এর মতো কাজ নিয়মিত ভাবে করতে থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব হয়। আর বেশি সম্ভব হলে আপনাকে সকাল বিকাল ব্যায়াম করা উচিত। 

খাবার ছোট প্লেট ব্যবহার করা এবং ধীর গতিতে খাবার গ্রহন করা

এটি একটু অস্বাভাবিক শোনালেও এই পদ্ধটি ব্যবহার করা সবার জন্য ভালো। একটু ছোট আকারের খাবার প্লেট ব্যবহার করার ফলে কম পরিমান খাবার গ্রহন করা সম্ভব হয় বা স্বাভাবিক এর চেয়ে খাবার গ্রহন এর পরিমান কম থাকে। আর মানুষের শরীর এর পাকস্থলির পূর্ণ হওয়ার পর মস্থিকে ২০ মিনিট পর বার্তা পেীছায় যে তার পেট ভরে গেছে। 

এই কারনেই পেট ভরে যাওয়ার আগেই খাবার বাদ দেয়া উচিত। আর আপনি যদি ধীর গতিতে খাবার গ্রহন করে থাকেন তাতে প্রয়োজন এর চেয়ে অল্প পরিমান খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহন করা সম্বভাবনা কমে যায়। 

পছন্দের খাবার বাদ দিবেন না

ওজন কমানো বা নিয়ন্ত্রনের উদ্দেশ্য করা পরিকল্পনা থেকে আপনার পছন্দের খাবারটি কিন্তু কখনও বাদ দিবেন না। আর আপনি যদি সেই প্রিয় খাবার টি তালিকা থেকে বাদ দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার মধ্যে সেই খাবার টি খাওয়ার আগ্রহ বেশি দেখাবে। 

তবে আপনার প্রিয় খাবার টি যদি পিজ্জা, বিরিয়ানি এর মতো উচু মাত্রায় তেল চর্বি জাতীয় খাবার হয়ে থাকে তাহলে সেই খাবার গুলি নিয়মিত না খেয়ে মাঝে মাঝে খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার বা খাদ্য বজায় রাখলে এবং আপনার শরীর এর চাহিদা অনুযায়ী ক্যালোরি গ্রহন করলে মাঝে মধ্যে নিজেকে একটু ছাড় দিতেই পারেন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)