কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো

কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো - প্রিয় পাঠক আপনি কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো এই বিষয়টি নিয়ে জানতে চাচ্ছেন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম ভাইরাল একটি টপিক হলো টিকটক ভিডিও। বাংলাদেশের টিকটক প্লাটফর্ম থেকে বর্তমানে বহু তারকা বের হয়েছে।

কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো

আরো পড়ুনঃ টিকটক ভিডিও কিভাবে বানাবো

সূচিপত্রঃ কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো

ইউটিউব বা ফেসবুকে ভাইরাল হতে প্রচুর কাঠখোড় পোড়াতে হয়। তবে অতিরিক্ত কষ্ট ছাড়াই টিকটক ভিডিও ভাইরাল করে পরবর্তীতে ভিউয়ার্সদেরকে দিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচুর পরিমাণে ফলোয়ার নিয়ে আসা যায়।

ইউটিউব, ফেসবুক যেমন একটা সিস্টেম বা অ্যালগরিদম এর উপর কাজ করে ঠিক তেমনি টিকটকও একই পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। অনেকেই বলেন যে "টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয় না কেন" অথবা "টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো কিভাবে"। আপনার ভিডিও মেকিং ঠিক আছে, আপনি ভালো টপিকে ভিডিও বানাচ্ছেন তবে পর্যাপ্ত ভিউ আপনার ভিডিওতে আসছে না। এর কারণ, হলো আপনি সঠিক ভাবে সব কিছু করতে পারছেন না।

টিকটক ভিডিও একটা করেও ভাইরাল করা যায়। তবে সে রকম ইউনিক বিষয় গুলো আপনার বুঝতে হবে। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় - ২০২০ সালে শুধু "বিনোদ" নামটি এত বেশী পরিমাণে ভাইরাল হয় এশিয়াতে যা হয়ত অনেকেই শুনেছেন। কোনো জিনিসকে বেশি পরিমাণে ভাইরাল করার জন্য বেশ কিছু জিনিস আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।

বন্ধুরা, আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় হলো, কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো বা টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায়। আপনি যদি একজন নিয়মিত টিকটকার হয়ে থাকেন তাহলে আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি নিশ্চয়ই চান যে, আপনার টিকটক ভিডিও গুলো অল্প সময়ে যেন ভাইরাল হয়ে যায়। চলুন তাহলে কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো সে সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায়

টিকটকে একজন ইউজার ২ ভাবে ভিডিও দেখতে পারে। একটি হলো ফলো করা ক্রিয়েটরদের আর দ্বিতীয় হলো "For You" তে। আপনার ভিডিও গুলো যখন বার বার "for you" তে চলে যাবে তখন ভিডিও এমনিতেই প্রচুর ভিউ পেয়ে যাবে।

টিকটকের অ্যালগরিদম এর মধ্যে, যে ভিডিও গুলো ভিউয়ার "রিটার্নিং " দেখে সেগুলা মুহুর্তের মধ্যে " ফর ইউ" তে চলে যায়। এখন, আপনাদের মাথায় প্রশ্ন আসতে পারেন "রিটার্নিং ভিউ " আবার কি? রিটার্নিং ভিউ হলো- ধরুন, আপনার তৈরি করা ভিডিও ৩০ সেকেন্ড। একজন ভিউয়ার ভিডিওটি ৩০ সেকেন্ড দেখার পরে নিচে স্ক্রল না করে আবার আপনার ভিডিও টাই দেখা শুরু করলো। এটাকে মূলত রিটার্নিং ভিউয়ার বলে।

এই প্রসেসটার মাধ্যমে টিকটক সিস্টেম বুঝে যায় যে, এই ভিডিও টি ইউজারদের কাছে ব্যাপক ভালো লেগেছে। তাই ভিডিও মুহুর্তের মধ্যে সবার কাছে ছড়িয়ে দেয়। তাই আপনার ভিডিওটি যেন শেষ পর্যন্ত ইউজার দেখে সেভাবে চিন্তা করে ভিডিও গুলো বানাতে হবে। এছাড়াও একটি টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার জন্য অনেক গুলো নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হয়। যেগুলো নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে দিলামঃ

ট্রেন্ডিং টপিকে ভিডিও পাবলিশ করা

টিকটক ভিডিও গুলোকে ভাইরাল করার একটি টপ সিক্রেট হলো ট্রেন্ডিং টপিক গুলো নিয়ে ভিডিও বানানো। ট্রেন্ডিং টপিক গুলো যে কোনো শ্রেণীর মানুষের কাছে ভালো লাগে। সেটা যেকোনো টপিক এই হোক না কেন।

টিকটকে সাধারণত ট্রেন্ডিং টপিক হিসেবে ধরা হয় কোনো গানের মিউজিককে। যেকোনো একটি গান অতিরিক্ত পরিমাণে ভাইরাল হলে সে গানটি দিয়ে টিকটকে ভরে যায়। আপনাকে নিজেকে সবসময় আপডেট রাখতে হবে। যেকোনো একটা মিউজিক ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে সেটার উপরে ভিডিও বানাতে হবে।

এ ক্ষেত্রে আপনি যে মিউজিকটি দিয়ে টিকটক বানাবেন সেটা নিজে ডাউনলোড করে কখনো ইউজ করবেন না। ডাউনলোড না করে কোনো সাউন্ড ভাইরাল হলে সেই সাউন্ড এর মধ্যে ঢুকলে "USE NOW" অপশন পাবেন। সেখান থেকে আপনার ভিডিওতে যদি সাউন্ডটি ব্যবহার করেন তাহলে সাউন্ড এর স্থানে আপনার ভিডিওটি অটোমেটিক প্রোমোট হয়ে যাবে।

এক্ষেত্রে আপনার ভিডিও ভাইরাল চান্স অনেক বেড়ে যাবে। কারণ এই সাউন্ডের উপরে যদি কোনো ইউজার টিকটক ভিডিও খুজে আপনার ভিডিওটি সেখানে পেয়ে যাবে। তাই চেষ্টা রাখবেন সবার আগে আগে ভাইরাল টপিক বা সাউন্ডের উপর ভিডিও তৈরি করার। তাহলে আপনার ভিডিও গুলোকে টিকটক বেশী পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে।

আরো পড়ুনঃ বিটকয়েন একাউন্ট খোলার নিয়ম

ট্রেন্ডিং হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করা

টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার জন্য হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করা অনেক বেশী জরুরী। অনেকেই ভিডিও আপলোড করার পর হ্যাশ ট্যাগ দিতে ভুলে যান। আবার অনেকে সঠিক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করতে পারেন না। কোন ধরণের হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করবেন, হ্যাশট্যাগ কোথায় পাবেন। অনেকে তো এটাও জানেন না যে হ্যাশট্যাগ বিষয়টা আবার কি।

চলুন জেনে নেই হ্যাশট্যাগ সম্পর্কে - হ্যাশট্যাগ হলো মূলত একেক টা কী-ওয়ার্ড। টিকটক আপনার দেওয়া হ্যাশট্যাগ থেকে বুঝে নেয় আপনার ভিডিওটি কোন বিষয়ে ও আপনার ভিডিওতে কি কি রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনাকে ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ গুলো ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটা ট্যাগের উপরে আলাদা ভাবে আপনাদ ভিডিও গুলো ভাইরাল হবে। হ্যাশট্যাগ মূলত হলো- টিকটকে সাধারণত কোন কোন টপিকে মানুষজন কি লিখে সার্চ করে থাকে।

আপনি যখন একটি নতুন টিকটক একাউন্ট খুলতে যাবেন তখন আপনি কি ধরণের ভিডিও দেখতে চান সেটা সিলেক্ট করতে বলে। আর আপনি যদি ইউজার বেশী যে ট্যাগে সেগুলা ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয়ে যাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে।

ভিডিও কোয়ালিটি ভালো রাখা

টিকটক ভিডিওকে ট্রেন্ডিং এ নিতে হলে আপনার তৈরি করা ভিডিওর কোয়ালিটি অনেক ভালো রাখতে হবে। আপনার ভিডিও কোয়ালিটি যত খারাপ হয় তাহলে টিকটক অটোমেটিক আপনার ভিডিওটি ডাউন করতে থাকবে। ভিডিও এডিটিং এর সময় রেজুলেশন সবসময় এইচডি রাখার চেষ্টা করবেন। কারণ আপনার ভিডিও এর কোয়ালিটি যতবেশী ভালো হবে টিকটকে আপনার ভাইরাল হওয়ার চান্স অনেক বেড়ে যাবে।

প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ভিডিও পাবলিশ করা

আপনি ভিডিও আপলোড এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় বেছে নিবেন। আপনি যদি প্রতিদিন একই সময়ে ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আপনার ভিডিও গুলো বেশী বেশী ভাইরাল হতে থাকবে। টিকটক সে সব ক্রিয়েটরদেরকে বেশী ফোকাস করে যারা রেগুলার একটা সময়ে ভিডিও গুলো আপলোড করে।

ভাইরাল হওয়া টিকটকারদের সাথে ডুয়েট করা

টিকটক ভিডিও ভাইরাল হতে কার্যকরী অন্যতম ভুমিকা পালন করে ডুয়েট করা। যারা ইতিমধ্যে টিকটকে অনেক ফেমাস রয়েছে তাদের সাথে ডুয়েট করুন। কারণ, তারা ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়ে আছে। তাই তাদের ভিডিও গুলো ট্রেন্ডিং এ রয়েছে। আর আপনি যদি বেশী বেশী ডুয়েট করতে থাকেন তাদের ফলোয়ারদের কাছেও আপনার ভিডিও গুলো অটোমেটিক ভাবে চলে যাবে। তখন ভাইরাল হতে খুব বেশী সময় নিবে না।

আরো পড়ুনঃ কিভাবে লোকেশন ট্র্যাক করা যায়

ভিডিওতে ইউনিক কিছু রাখা

প্রতিটা ভিডিওতে চেষ্টা করবেন ইউনিক কিছু রাখার। মানুষ ইউনিক জিনিস গুলো বেশী পছন্দ করে। সেটা হতে পারে লেইম জিনিস বা ভালো জিনিস। সাধারণত টিকটকে লেইম জিনিস গুলো বেশী ভাইরাল হয়ে যায়।

যেমন- টিকটকার অপুর প্রতি ভিডিওতে হাসি। এমন কিছু রাখুন যা ভিউয়ারকে বিনোদন দিবে। তাহলে ভিউয়ার আপনার ভিডিও নিয়ে বেশী বেশী মিমস, ফানি ভিডিও তৈরি করবে। আর অন্যদিকে আপনি প্রচুর ফলোয়ার পেয়ে যাবেন ও ভাইরাল হয়ে যাবেন।

শেষ কথা - কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করলাম কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো সে সম্পর্কে। আপনারা যারা মূলত আসলে জানতে চেয়েছিলেন যে, কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো। তাদের জন্য আজকের এই আলোচিত উপরোক্ত বিষয় টিকটক ভিডিও ভাইরাল করার উপায় গুলো অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

টিকটক ভিডিও আপলোড করার ক্ষেত্রে যদি আপনি উপরোক্ত নিয়মগুলো সঠিক ভাবে অনুসরণ করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার টিকটক ভিডিও খুবই তাড়াতাড়ি ভাইরাল হবে। প্রিয় পাঠক টিকটক ভাইরাল হওয়ার করার উপায় নিয়ে আর আপনার জন্য রইলো না কোনো বাধা।

আর যদি আপনি টিকটক সম্পর্কিত আরো অন্যান্য বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানতে চান তবে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানিয়ে দিবেন। সাথে আজকের আয়োজন "কিভাবে টিকটক ভিডিও ভাইরাল করবো" লেখাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: