জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি, ছেলে ও মেয়ের উভয়ের জন্যই জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো ও কার্যকরী পদ্ধতি কি! মূলত এই সম্পর্কে সবাই জানতে আগ্রহী। কেননা এখন প্রত্যেকেই সন্তান জন্মদানে বেশ সতর্ক।

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি

একটা সময় ছিল যখন জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে মানুষ খুব একটা সচেতন ছিল না, এমনকি এটা নিয়ে এতোটুকু পরিমাণ ভাবতো না পর্যন্ত। কিন্তু এখন প্রত্যেক স্বামী-স্ত্রী এ ব্যাপারে সতর্ক। আর তাই প্রত্যেকেই জানতে চায় জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি!

কেননা জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা রকমের পদ্ধতি রয়েছে। আর কোন পদ্ধতি জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকরী, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কোন পদ্ধতি অধিক বেশি সুবিধাজনক, সে সম্পর্কে জানার আগ্রহ একটু বেশিই থেকে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

আর তাই আজকের নিবন্ধনটিতে আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি নিয়ে আলোচনা করব আপনাদের সাথে। তো আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট পরামর্শ পেতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল স্কিপ না করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

(toc) #title=(সুচিপত্র)

জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি

জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য একের অধিক পদ্ধতি রয়েছে। এমনকি মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি একরকম, অন্যদিকে ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অন্যরকম। আর তাই যারা সদ্য বিয়ে করেছেন অথবা একটু দেরিতে সন্তান নিতে আগ্রহী, কিংবা ইতিমধ্যে একটা সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন কিন্তু পরের সন্তান নিতে দেরি করতে চান অথবা শুধুমাত্র এক সন্তানেরই বাবা-মা হয়ে থাকতে চান তাদের মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা আলাদা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

আর আপনার প্রশ্নটি যদি হয়ে থাকে এটি যে জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি? তাহলে বলবো এটা আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করবে। কারণ একেক দম্পত্তির জন্য একেক রকম পদ্ধতি ভালো। আর তাই সকল ধরনের দম্পতিদের চাহিদার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ পরামর্শ, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক পরিবার পরিকল্পনা সেবার প্রয়োজন রয়েছে। অতএব জন্মনিয়ন্ত্রণের যে পদ্ধতি বা যে মাধ্যমটি আমার কাছে ভালো মনে হবে সেটা আপনার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে।

মূলত একই পদ্ধতি সবার জন্য প্রযোজ্য হতে পারে না। আর তাই মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি ও কি কি, পাশাপাশি ছেলেদের জন্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি ও কি কি এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি, জন্মনিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী পদ্ধতি, দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, পাশাপাশি জন্মনিয়ন্ত্রণের ডিজিটাল বা আধুনিক সংস্করণ পদ্ধতি সম্পর্কে আমরা ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করব। যেগুলোর মধ্যে থেকে একটি পদ্ধতি আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন জন্মনিয়ন্ত্রণ এর ক্ষেত্রে।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার উপায়: টিউমার ভালো করার ঘরোয়া উপায়

মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি ও কি কি? মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কয়টি এটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কেননা মহিলাদের ক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি হিসেবে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে যেগুলোর মধ্যে অধিক বেশি পরিচিত বা উল্লেখযোগ্য পদ্ধতিগুলো হলোঃ

১। জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল সেবন

২। পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব

৩। আই ইউ ডি সি অর্থাৎ নন-হরমোনাল কপার-টি এবং

৪। গর্ভনিরোধক এর জন্য অপাশন ব্যবহারসহ প্রভৃতি।

ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

আপনি যদি একজন ছেলে হয়ে থাকেন এবং ছেলেদের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি সেটা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পয়েন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা ছেলেদের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণের কিছু মাধ্যম বা পদ্ধতি রয়েছে। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত পদ্ধতি হলোঃ ১। কন-ডম ব্যবহার এবং ২। শু-ক্রাণু যো-নির বাইরে ফেলা।

তবে হ্যাঁ, জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য অবশ্যই বিভিন্ন পদ্ধতি বা মাধ্যম এর আশ্রয় নেওয়ার পূর্বে আরও বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি কোনটি এ সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে আমরা এ পর্যায়ে কিভাবে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি চয়ন করতে হয় সে সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরব।

তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় বুঝতে হবে এবং জেনে বুঝে আমাদের উল্লিখিত পদ্ধতি গুলো প্রয়োগ করতে হবে।

১। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনার সঙ্গী রাজি কি না! কেননা আপনি ছেলে হোন অথবা মেয়ে। এক্ষেত্রে যদি দুজনের মত এক না থাকে তাহলে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা কখনোই পসিবল নয়। আর তাই আপনার সঙ্গে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিতে রাজি রয়েছেন কিনা এ সম্পর্কে শুরুতেই জানুন।

২। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করতে যাচ্ছেন সেটার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা, পাশাপাশি ওই পদ্ধতিটি গ্রহণের জন্য আপনাকে মোটামুটি কেমন খরচ করতে হবে অর্থাৎ সেটা ব্যয়বহুল কি না!

৩। আপনাদের বাছাইকৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ঠিক কতটা সহজ এবং কতদিন পর আপনার সিটি আবার ব্যবহার করতে হতে পারে এই সম্পর্কেও অবগত হওয়া জরুরী। পাশাপাশি আরও জানতে হবে গর্ভধারণ রোধে আপনি যে পদ্ধতিটি বেছে নিচ্ছেন সেটা কতটা কার্যকরী।

আর হ্যাঁ, অবশ্যই মনে রাখবেন– আমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য যে পদ্ধতিগুলো উল্লেখ করবো সেটা আপনার বয়স এবং শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে নির্বাচন করা হচ্ছে কিনা। আর তাই আমরা মূলত আমাদের উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করার পূর্বে সাজেস্ট করব, দীর্ঘস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নেবার। কেননা সুপরামর্শ এবং সঠিক নির্দেশনা আপনার জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

তাহলে এবার আসুন জেনে নেই বাংলাদেশে মূলত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে কোন কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয় এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি, অস্থায়ী পদ্ধতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত।

বাংলাদেশে জনপ্রিয় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ কি কি? জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কি কি

বাংলাদেশের মতো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে যেগুলো সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য তা আমরা এ পর্যায়ে সাজেস্ট করব আপনাদেরকে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয় কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমূহ সম্পর্কে।

১। কন-ডম ব্যবহার ২। খাবার বড়ি ৩। জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন ৪। আইইউডি ৫। ভ্যাসেকটমি ৬। টিউবেকটমি এবং ৭। ইমপ্ল্যান্ট

আরো পড়ুনঃ সিজারের পর মায়ের খাবার তালিকা

সবচেয়ে কার্যকর গর্ভনিরোধক পদ্ধতি কোনটি?

এখন কথা হচ্ছে, সবচেয়ে কার্যকর গর্ভনিরোধক পদ্ধতি কোনটি অর্থাৎ জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী? ইতোমধ্যে আমরা বলেছি প্রত্যেকের জন্য একই পদ্ধতি সমান কার্যকরী নয় এবং প্রত্যেকের জন্য একটাই পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য নয়। আর তাই, সবচেয়ে কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো পড়ুন।

✓ আপনি যদি নব দম্পত্তি হয়ে থাকেন অর্থাৎ নতুন বিবাহিত হয়ে থাকেন অথবা কম বয়সী নারী পুরুষ হয়ে থাকেন তাহলে জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আপনাকে স্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে অর্থাৎ আপনার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হবে স্থায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। মানে নারীদের ক্ষেত্রে লাইগেশন অন্যদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে ভ্যাসেকটমি পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।

✓ যে সকল স্বামী-স্ত্রীর ইতোমধ্যে সন্তান ধারণ করা সম্পন্ন হয়েছে। যারা দীর্ঘ বিরতির পরে সন্তান নিতে ইচ্ছুক তাদের জন্য কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে বার্থ স্পেসিং পদ্ধতি। এর জন্য মূলত তিন মাস মেয়াদী একটি হরমোনাল ইনজেকশন, কিংবা তিন বছর মেয়াদী ইমপ্ল্যান্ট, অথবা পাঁচ বছর মেয়াদী জেডেল নয়তো মুখে খাওয়ার বরি সেবন করতে হবে।

যারা একটি অথবা দুটি সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন তাদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো ও কার্যকরী মাধ্যম হচ্ছে এটি। তাই আপনি যদি ইতোমধ্যে এক সন্তানের বাবা-মা হয়ে থাকেন তাহলে জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম গুলোর মধ্যে এটি আপনার জন্য আদর্শ মাধ্যম বলে নির্বাচন করতে পারেন।

✓ যারা নতুন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে জড়িয়েছেন অর্থাৎ অল্প বয়সী দম্পতি তাদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হচ্ছে পাঁচ বছর মেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ইমপ্লেন্ট। তবে এর বাইরেও জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি, কন-ডম প্রভৃতি সহজলভ্য ও সমাদৃত এবং কার্যকরী জন্মনিয়ন্ত্রণ মাধ্যম হিসেবেও সুপরিচিত।

✓ যারা ইতোমধ্যে সন্তানের বাবা-মা হয়েছে এবং পরবর্তীতে আর সন্তান নিতে ইচ্ছুক নন তাদের জন্য মূলত আলাদা একটা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে। সেটা হলো পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব। তাই আপনার পরিকল্পনা যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য এই পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারেন।

জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি

জন্মনিয়ন্ত্রণের আধুনিক পদ্ধতি গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কন-ডম ব্যবহার। কেননা আপনি যদি একজন সতর্ক ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে কন-ডম ব্যবহার করে দীর্ঘ সময় জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে আপনার জন্য কোনটা অধিক বেশি কার্যকরী সেটা ভালোভাবে নির্বাচনের জন্য আর্টিকেলটি পুনরায় পড়ুন।

অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গুলো আমরা আলোচনার মাধ্যমে ইতোমধ্যে তুলে ধরেছি। তবে বিষয়টি ক্লিয়ার করার জন্য এ পর্যায়ে অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলো আবারো সাজেস্ট করব। আর হ্যাঁ অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গুলো জানানোর পূর্বে আরেকটি কথা হচ্ছে– জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকে স্বাভাবিকভাবে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হচ্ছে স্থায়ী পদ্ধতির উন্নতি অস্থায়ী পদ্ধতি। আর অস্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হচ্ছেঃ

১. ব্যারিয়ার পদ্ধতি, যেমন কন-ডম, ডায়াফ্রাম

২. প্রাকৃতিক পদ্ধতি, যেমন মাসিকের হিসাব রেখে মিলন করা, শুক্রাণু যো-নির বাইরে ফেলা

৩. স্টেরয়েড কন্ট্রাসেপটিভ, যেমন পিল, ইনজেকশন, ইমপ্ল্যান্ট

৪. আইইউসিডি, যেমন কপারটি

দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হচ্ছেঃ ১। ইমপ্ল্যান্ট ২। আইইউডি

এই পর্যায়ে আমরা ইমপ্ল্যান্ট কি এবং কিভাবে কাজ করে কারা ব্যবহার করতে পারবেন তা জেনে নিবঃ

ইমপ্ল্যান্ট কিঃ ইমপ্ল্যান্ট হচ্ছে শুধুমাত্র প্রজেস্টোরেন হরমোন সমৃদ্ধ অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যা মহিলাদের বাহুতে চামড়ার নিচে স্থাপন করা হয়ে থাকে। প্রকারভেদে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী এই পদ্ধতির কার্যকারিতার সময় নির্ভর করে এর রডের সংখ্যা ও হরমোনের ধরনের ওপরে।

ইমপ্ল্যান্ট প্লাস্টিক কিংবা সিলিকন রাবারের তৈরি এক বা একাধিক ক্যাপসুল বিশিষ্ট হয়ে থাকে, যার ভিতরে কৃত্রিম প্রজেস্টোরেন হরমোন থাকে। চামড়ার নিচে স্থাপনের পরপরে ক্যাপসুলের গায়ের অসংখ্য অনুবীক্ষণিক ছিদ্র দিয়ে নির্দিষ্ট মাত্রায় হরমোন নিঃসৃত হতে থাকে।

ইমপ্ল্যান্ট কিভাবে কাজ করেঃ ডিম্বস্ফুটন রোধ করে। ইমপ্ল্যান্ট পুরো ৩ থেকে ৫ বছরই সম্পূর্ণরূপে ডিম্বস্ফুটন রোধ করে। এন্ডোমেট্রিয়াম এর পুরুত্ব কমিয়ে দেয়। সারভিক্সের নিঃসরণের বা শ্লেষ্মার ঘনত্ব বাড়ায়।

ইমপ্ল্যান্ট কারা ব্যবহার করতে পারবেঃ ১। নব দম্পতি ২। যারা বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ান ৩। যারা দীর্ঘদিনের জন্য জন্ম বিরতি চান ৪। যারা ইস্টোজেন সমৃদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন না।

এই পর্যায়ে আমরা আইইউডি কি এবং কিভাবে কাজ করে কারা ব্যবহার করতে পারবেন তা জেনে নিবঃ

আইইউডি কি? (আইইউডি বা Intra-uterine device হচ্ছে জরায়ুতে স্থাপন উপযোগী অস্থায়ী দীর্ঘমেয়াদি গর্ভনিরোধক/জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ)

আইইউডি কিভাবে কাজ করেঃ আইইউডি শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াকে বাধা দিয়ে থাকে। আইইউডি জরায়ুতে ও ফেলোপিয়ান টিউবে এনজাইম, কপার অণু, প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এবং শ্বেতকণিকা (ম্যাক্রোফেজ) বৃদ্ধি করে দেয়, যা শুক্রাণুর কার্যকারিতাকে নষ্ট করে দেয় এবং নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে।

আইইউডি কারা ব্যবহার করতে পারবেঃ বাংলাদেশে প্রজননক্ষম যেকোনো বিবাহিত মহিলা যার কমপক্ষে ১টি জীবিত সন্তান আছে তিনি আইইউডি ব্যবহার করতে পারবেন।

যেগুলোর সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি। তো যদিও আপনাদের এই বিষয় দুটি ক্লিয়ার না হয় তাহলে ইমপ্ল্যান্ট জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে এখনই গুগলে সার্চ করতে পারেন অথবা আমাদের আর্টিকেলটি পুনরায় পড়তে পারেন।

প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

বর্তমানে মানুষ আধুনিক পদ্ধতিগুলো জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বেশি প্রয়োগ করে থাকে। তবে আপনি যদি আপনার জন্য প্রাকৃতিক পদ্ধতি অধিক বেশি কার্যকরী মনে করেন অথবা হঠাৎ করে কনসিভ করলেও কোন সমস্যা না থেকে থাকে তাহলে আপনার জন্য প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হিসেবে যেগুলো রয়েছে সেগুলো হচ্ছেঃ মাসিকের হিসাব রেখে মিলন করা ও শু-ক্রাণু যো-নির বাইরে ফেলা।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পিল | জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো?

জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের পিল সেবন করে থাকেন। আর তাই জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রত্যেকেরই থেকে থাকে। আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন এবং জানতে চান জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো? তাহলে এখনই আমাদের ওয়েবসাইটের উক্ত পোস্টটি পড়তে পারেন। কেননা আমরা ইতোমধ্যে পিল খাওয়ার নিয়ম কি এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো এ সম্পর্কিত আর্টিকেল ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছি আমাদের ওয়েবসাইটে।

রিলেটেড পোষ্টঃ জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল কোনটা ভালো

জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ইসলাম কি বলে

ভাই যদি আপনি এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তবে আমি আপনাকে বলব আপনি চমৎকার একটি প্রশ্ন করেছেন। আমি সন্তানদের কিভাবে খাওয়াব, পরাবো কিভাবে, এসকল বিষয় চিন্তাভাবনা থেকে যদি কোন ব্যক্তি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন, তবে সেটি সম্পূর্ণ হারাম হবে। কেননা রিজিকের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ রাব্বুলআলামিন, রিজিকদাতা মহান আল্লাহ তায়ালা।

কিন্তু আমাদের সম্মানিত স্কলাররা বলেছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র দুটি অবস্থাতে করা যাবে। প্রথমত, এই মুহূর্তে যদি স্ত্রীর গর্ভে সন্তান আসে, তবে স্ত্রীর বড় ধরনের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা বিপদ হতে পারে, অর্থাৎ শারীরিক কোন কারণে এই অবস্থায় জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আগে যে সন্তানটি হয়েছে তাঁর অধিকার আছে ০২ বছর মায়ের বুকের দুধ পান করার। অর্থাৎ মায়েরা সন্তানদের দুধ পান করাবে ০২ বছর পর্যন্ত। এই ০২ বছরের মধ্যে যদি মা গর্ভধারণ করেন, তবে আগের সন্তান অসুস্থ হয়ে যেতে পারে কিংবা তাঁর অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

মূলত এই ০২টি কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, এই ০২টি কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। কিন্তু হ্যাঁ খাওয়ানো, পরানোর কথা ভেবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা জায়েজ নেই। এটি হচ্ছে হারাম কাজ। ইসলামে শরিয়া সম্মত কারণে, যৌক্তিক কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণের অবকাশ আছে।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দাম বাংলাদেশ

অনেকেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করতে চান। অনেকেই আছেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশনের দাম বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দাম বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চান। মূলত জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন দাম নির্ভর করে আপনি মূলত কতদিনের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন নিতে চাচ্ছেন তার উপর। 

সাধারণত অল্পদিনের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন এর দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাছাড়া যদি আপনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন নিতে চান তবে আপনি খুব অল্পদামে আবার দেখা যায় প্রায় সময় বিনামূল্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের ইনজেকশন দিয়ে থাকে।

পরিশেষে

তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, সবচেয়ে কার্যকর জন্ম নিয়ন্ত্রণ কোনটি? জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি কোনটি? আশা করি আমাদের আলোচনার পরবর্তীতে সেটা আপনাদের কাছে সুস্পষ্ট। তবুও যদি কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থেকে থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানান। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: