মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল

মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল - প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল নিয়ে আলোচনা করব। আর কিছুদিন পর শুরু হতে চলেছে ইসলাম ধর্মে সব থেকে বড় ইবাদতের মাস হলো মাহে রমজান। অনেকেই মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল করবে এই বিষয় সম্পর্কে জানে না। বিশেষ করে তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই আর্টিকেলে মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল

সূচিপত্রঃ মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল

আপনি যদি মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন পবিত্র মাস এবং আল্লাহ তাআলার কাছে সবথেকে প্রিয় মাস মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ভূমিকাঃ মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল

আল্লাহতালার কাছে যে কয়টি মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর মধ্যে রমজান হলো অন্যতম। রমজান মাসের গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে অন্য সকল মাসের চাইতে অনেক গুণ বেশি। কারণ সকল ইবাদত নিজের জন্য করা হলেও রমজান এর রোজা গুলো একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য করা হয়। সাধারণত তাই মাহে রমজানের গুরুত্ব আল্লাহ তায়ালার কাছে এতটা বেশি।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল, মাহে রমজানের আগের আমল, মাহে রমজানের প্রস্তুতি, মাহে রমজানের আমল এবং মাহে রমজানের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।

মাহে রমজানের আগের আমল

আর কিছুদিন পর শুরু হতে চলেছে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস হল মাহে রমজান। প্রত্যেক মুসলিমকে মনে রাখতে হবে রমজান মাস হল ভোগ বিলাসের মাস নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের মাস নয়। রমজান মাস হল আল্লাহ তাআলার এবাদত করার মাস। রমজান মাসের আগে থেকেই আমাদেরকে কিছু আমল শুরু করে দিতে হবে।

যেমন তওবা ইস্তেগফার করা - রমজানের আগেই সব গুনাহ থেকে তাওবা ইস্তেগফার করতে হবে। কোন অন্যায়কারী যদি ভাবে সে রমজান মাসে এসেছে সব গুনা এমনিতেই ক্ষমা হয়ে যাবে তাহলে বিষয়টি এমন নয়। তাকে আগে থেকেই তওবা এবং ইস্তেগফার করে রমজানের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

রমজানের রোজার মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া - রমজান মাসের সম্পূর্ণ সওয়াব এবং ক্ষমা পেতে হলে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। সারা জীবনে যত গুনাহ করেছি রমজান সে সব গুনাহ থেকে অন্যায় এবং প্রার্থনা করতে হবে। আমরা যেন আল্লাহ তায়ালার কাছে এই মাসে ক্ষমা চেয়ে নিতে পারি সেজন্য প্রস্তুত হতে হবে।

রমজানের সব উপকারিতা স্মরণ করা - বরকতময় মাস হলো রমজান মাস। কোরআন সুন্নায় যেসব ফজিলত মর্যাদা ও উপকারিতা বর্ণনা রয়েছে রমজান শুরু হওয়ার আগেই সেই সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেখানো পথ স্মরণ করে আমাদের এবাদত বন্দেগী করতে হবে।

রমজান শুরুর আগে কাজা রোজা আদায় করা - বিশেষ করে মেয়েদের রমজান মাসে কয়েকটা রোজা কাজা হয়ে যায়। সাধারণত এটা প্রাকৃতিক বিষয় এটা সকল মহিলার হয়ে থাকেন। সেই জন্য আমাদেরকে পরবর্তী রমজান শুরু হওয়ার আগেই কাজা রোজা গুলো সম্পন্ন করে নিতে হবে। এরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।

রমজানের ফরজ রোজার নিয়ম কানুন জেনে নেওয়া - আমরা অনেক সময় রোজার নিয়ম কানুন না জেনে ভুল করে থাকি। তাই রমজান শুরু হওয়ার আগে ফরজ রোজার নিয়ম কানুন গুলো আমাদেরকে জেনে নিতে হবে। যেন রমজান মাসে রোজাগুলো নষ্ট হয়ে না যায় সেজন্য এগুলো জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মাহে রমজানের প্রস্তুতি

রমজানের জন্য প্রস্তুত হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দীর্ঘ এক বছর পর মাহে রমজান আমাদের কাছে ফিরে আসে। মুসলিমের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস হল মাহে রমজান। মাহে রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের দরজা গুলো খুলে দেয় এবং জাহান্নামের দরজা গুলো বন্ধ করে দেয়। তাই বোঝাতে চাইছে আল্লাহতালার কাছে রমজান মাসের গুরুত্ব কতটা বেশি।

তাই রমজান মাসের ইবাদত গুলোর জন্য আমাদেরকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। অনেক সময় বিভিন্ন রকম ভুলের কারণে আমরা মাহে রমজানে ভুল করে থাকি এবং সেই জন্য আমাদের রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই আমাদেরকে মাহে রমজানের প্রস্তুতি নিতে হবে।

মাহে রমজানের প্রস্তুতির জন্য যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে সেগুলো নিচে দেওয়া হলঃ

১। তাওবা ও ইস্তেগফার করা

২। রমজান পাবার নিয়ত করা

৩। রমজানের সব উপকারিতা স্মরণ করা

৪। খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা

৫। মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া

৬। কাজা রোজা গুলো আদায় করা

৭। ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করা

৮। ফরজ রোজার নিয়ম-কানুন গুলো জানা।

৯। বিগত রমজানের অসমাপ্ত কাজগুলো চিহ্নিত করা।

১০। রমজানের বিভিন্ন রকম বিষয়গুলো আবার দেখে নেওয়া।

১১। রমজানের 24 ঘন্টার রুটিন তৈরি করা।

১২। বেশি বেশি দান করার চেষ্টা করা

১৩। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা

১৪। রমজানের চাঁদ পর্যবেক্ষণ করা।

মাহে রমজানের আমল

মাহে রমজান শুরু হওয়ার আগে আমাদেরকে মাহে রমজানের আমলগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা যদি মাহে রমজানের আমলগুলো সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে খুব সহজেই এবাদত বন্দেগী করতে পারব। মাহে রমজানের আমল জানার জন্য আমাদেরকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। আর কিছুদিন পর শুরু হতে চলেছে মুসলিমদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মাস মাহে রমজান। আপনাদের সুবিধার্থে মাহে রমজানের আমল মুখে উল্লেখ করা হলো।

কোরআন তেলাওয়াত করা - আমরা জানি যে কোরআন নাজিলের মাস হলো মাহে রমজান। তাই এই মাসে কোরআন পাঠ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি মাহে রমজান মাসের কোরআন পাঠ করি তাহলে অন্যান্য মাসে কোরআন পাঠ করলে যে নেকি পাওয়া যায় তার থেকে বেশি নেকি পাওয়া যাবে।

আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের রাত্রি জাগরণ  - যেহেতু রমজান মাস হল ইবাদতের মাস সেহেতু এই মাসে আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করতে হবে। দুপুরবেলা ঘুমিয়ে রাতের বেলা যেন আমরা জাগতে পারি সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ রাত্রেবেলা ইবাদত আল্লাহতালার কাছে সবথেকে বেশি গ্রহণযোগ্য।

বেশি বেশি দান করা - রমজান মাসে বেশি বেশি দান করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের আশেপাশে কোন ব্যক্তি যদি অসহায় গরীব থাকে তাহলে তাকে রমজানের সকল সামগ্রী দেওয়া। তার ইফতারের ব্যবস্থা করা। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ ছিলেন সব থেকে বড় দানবীর। তাই আমাদেরকে দান করতে শিখতে হবে এবং রমজান মাসে বেশি বেশি দান করতে হবে।

রোজাদারকে ইফতার করানো - রমজান মাসে রোজাদারকে ইফতার করানোর মধ্যে অনেক সওয়াব রয়েছে। হযরত সালমান রাঃ বর্ণনা করেন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, " যে রমজান মাসে কোন রোজাদার ব্যক্তির ইফতারের ব্যবস্থা করবে তবে তার পাপ মোচন ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হবে এবং রোজাদারের মূল প্রতিদানের কোন অংশ কমানো ব্যতিরেকে সে রোজাদারের সমান প্রতিদান পাবে।"

মাহে রমজানের বিশেষ ফজিলত

রমজান মাস যেহেতু আল্লাহ তাআলার কাছে অনেক প্রিয় মাস তাই রমজান মাসের ফজিলত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা অনেকেই রমজান মাসের বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে জানি। যেহেতু আজকের এই আর্টিকেলে মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল নিয়ে আলোচনা করছি তাই নিচে রমজান মাসের বিশেষ ফজিলত গুলো উল্লেখ করা হলো।

১। রমজান মাসে রোজাদারের রোজা থাকার কারণে মুখের গন্ধ আল্লাহতালার কাছে অনেক প্রিয়।

২। রমজান মাসে ফেরেশতারা রোজাদারদের জন্য ইফতার করা পর্যন্ত ইস্তেগফার ও গুনাহ মাফ চাইতে থাকে।

৩। রমজানের প্রতিদিন আল্লাহ তায়ালা জান্নাতকে সুসজ্জিত করে বলেন, " আমার রোজাদার বান্দারা অচিরেই তাদের পরিশ্রম ও কষ্ট দূরে সরিয়ে তোমার কাছে পৌঁছে যাবে।"

৪। রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদর রয়েছে। যে রাত হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। এ রাতের কল্যাণ থেকে যে বঞ্চিত হয় সে সকল ধরনের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়।

৫। রমজান মাসের শেষ রাত্রে রোজাদারদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। রমজান মাসের নফল ইবাদত ফরজের সমতুল্য। এবং একটি ফরজ ইবাদত ৭০ টি ফরজের সমতুল্য।

শেষ কথাঃ মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল

প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে, মাহে রমজানের প্রস্তুতি ও আমল, মাহে রমজানের বিশেষ ফজিলত, মাহে রমজানের আমল, মাহে রমজানের প্রস্তুতি, মাহে রমজানের আগের আমল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)