থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস

থার্টি ফার্স্ট নাইট কি - থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস - থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে - পরপর ২ বার স্টোক করা পঞ্চাশোর্ধ মন্জুরুল ইসলাম তৃতীয় বারের ম‌তো ব্রেন স্টোক ক‌রে হাসপাতালের আইসিউ বে‌ডে ভর্তি হয়ে মৃ- ত্যুর সাথে পান্জা লড়ছে। তার প্রিয় আত্বীয় স্বজন সবাই তার বেচে থাকার জন্য দোয়া দূরদ পড়ছে। এর মধ্যেই হঠাৎ জমকালো অন্ধকার আকাশে বিকট এক শব্দে সাদা লে‌লিয়ান শিখায় প্রজ্বলিত হয়ে উঠলো। 

হঠাৎ নিকটবর্তী এই বিকট শব্দে মন্জুরুল ইসলামের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেলে। ডাক্তারসহ সকলের তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় মাত্রা বেড়ে গেল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সেই যাত্রায় বেঁচে যায়। পরে সন্ধান করে জানা যায় হঠাৎ সেই বিকট শব্দটি ছিল থার্টি ফার্স্ট নাইটের উদযাপন উপলক্ষে ফোটানো আতস বাজির শব্দ। 

প্রিয় পাঠক, এরকম আরো অহরহ অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে যা থার্টিফার্স্ট নাইটের রাতেই প্রতিলক্ষণ করা যায়। মানুষকে এভাবে কষ্ট দিয়ে আনন্দ করে উৎসব পালন করাটা কখনোই তা ভদ্র সমাজের মধ্যে পড়ে না। বরং তা সমাজে আরো বিশৃঙ্খলা বয়ে আনে। আজকেরে আর্টিকেলে আমরা থার্টিফার্স্ট নাইট কি? কিভাবে এলো ও থার্টি ফার্স্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কি বলে তা জানবো।

থার্টি ফার্স্ট নাইট কি

থার্টি ফার্স্ট নাইট কী

ইংরেজিতে সাধারণত ১২ মাস নিয়েই এক বছর ধরা হয়। তার মধ্যে সর্বশেষ মাসের নাম হচ্ছে ডিসেম্বর। ডিসেম্বর মাস সাধারণত 31 দিনের হয়। 31 শে ডিসেম্বর রাতকে সাধারণত বলা হয়ে থাকে থার্টি ফার্স্ট নাইট। 

থার্টি ফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস

আমরা সাধারণত না জেনেই থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে বিভিন্নভাবে আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে এমন কি নাচ-গানেরও আয়োজন করে থাকি। আসুন জেনে নেই কিভাবে এই থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উৎপত্তি হয়। অ‌‌নেক পূর্বে রোমান মুশরিকরা তাদের ভাষায় জানুস নামক এক দেবতার পূজা করতো যাকে তারা “God of Beggings” বা শুরুর স্রষ্টা হিসেবে মানতো। 

মূলত তারা তাদের বানানো বিভিন্ন স্রষ্টার উপাসনা করত। তারমধ্যে জানুস একজন। তারা মনে করত Janus তাদের অতীত ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানে। এর জন্য তারা জানুস এর মূর্তির দুটি মাথা বানিয়েছিল। তার নামের সাথে নাম রেখেই জানুয়ারি মাসের নামকরণ করা হয়। এই মাস চলে আসলে তারা এই মাসের শুরুর রাত্রিকে সেলিব্রেট করে তাদের বানানো দেবতা জানুসকে খুশি করার জন্য। যাতে তাদের ভবিষ্যৎ মঙ্গলবার হয়। 

এরপর থেকে উৎপত্তি হয় থার্টি ফার্স্ট নাইট এর উদযাপন আয়োজন। বর্তমানে প্রায় প্রতি বছর একে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের আতশবাজি ফোটানো হয়। এমন কি কোন কোন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের গান বাজনার আয়োজন করা হয়। মানুষ না জেনেই নিজের অজান্তেই এসকল গর্হিত নোংরা‌মি কাজগুলিতে লিপ্ত হচ্ছে। এটি কখনোই একটি ভদ্র ও আদর্শ সমাজের বৈশিষ্ট্য হতে পারেনা।

আরো পড়ুনঃ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি

থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে ইসলাম কি বলে?

ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি। এই মহান ধর্মের মধ্যেই কেবল ইহকালে ও পরকালে শান্তি পাওয়া সম্ভব।ইসলাম সর্বদাই মানুষকে কল্যাণের পথে, হেদায়েতের পথে নেয়। পবিত্র ধর্ম ইসলাম সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম”। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআন মাজিদে আরও বলেন, 

“আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে (ইসলাম) পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের ওপর আমার নিয়ামতকে সম্পন্ন করে দিলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম”। হাদীস শরীফে আসছে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক রাখে সে তাদের দলভুক্ত হয়ে যায় এবং তার হাশর-নাশর তাদের সাথে হবে”। 

ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করা শুধু কেবল হারামই নয় বরং শিরক এর পর্যায়ে পড়ে। আর যে ব্যক্তি শিরক করে সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। ইসলামে কখনোই কুকালচার বিজাতীয় কৃষ্টি কিংবা অপসংস্কৃতির কোন অনুমোদন নেই। বাংলাদেশের প্রায় 95 ভাগ মানুষের ধর্ম ইসলাম। এদেশে বিধর্মীদের কোন চিহ্ন বা সংস্কৃতি এখানে উদযাপন হতে দেওয়া যাবে না।

যদি কোন ব্যক্তি বিধর্মীদের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করে সেক্ষেত্রে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লামের হাদিস অনুযায়ী মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর তাই মুসলিম হিসেবে সবাইকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন এর মত গর্হিত কাজ থেকে সবাইকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। কোন ধরনের আতশবাজি গান-বাজনা কিছুই যাতে এসব কাজ আয়োজন করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

পরিশেষে বলা যায় শুধু যে, ইসলাম কেবল থার্টি ফার্স্ট নাইটকে নিষিদ্ধ বলে তা নয় বরং একজন সচেতন বাঙালি হিসেবে কখনোই একজন ব্যক্তি থার্টি ফার্স্ট নাইটকে বাঙালি সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনা। কারণ 30 লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতার এদেশে বাংলা ভাষার মত স্বীকৃত ভাষাকে বাদ দিয়ে বিদেশী ভাষা কিংবা সংস্কৃতি কখনোই প্রাধান্য পেতে পারে না। আর তাই সর্বদাই থার্টি ফার্স্ট নাইটকে অনতিবিলম্বে বর্জন করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ

পোষ্ট ক্যাটাগরি: