ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১ | নতুন পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১ | নতুন পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১— মূলত ফরাসি ল্যাংগুয়েজ থেকে আসা পাসপোর্ট এই শব্দটি বর্তমানে সারা পৃথিবীতে আজ বহুল ব্যাবহারিত ও সুপরিচিত। আর পাসপোর্ট সারাবিশ্বে সুপরিচিত হবেই না বা কেন? বর্তমান সময়ে পৃথিবীর নিয়ম-কানুন অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষের দেশ-বিদেশে ভ্রমন করার জন্য পাসপোর্ট থাকা অত্যাবশ্যক। হোক সেটা রেল পথ, আকাশ পথ কিংবা নদীপথে যদি আপনি পাসপোর্ট এবং ভিসা ব্যতীত কোনোভাবে একটি দেশ থেকে অন্য আরেকটি দেশে প্রবেশ করেন তাহলে সেটা সেই দেশে অনুপ্রবেশ বলে চিহ্নিত করা হবে। আর এই অবৈধ বা অনুপ্রবেশ করার জন্য আপনাকে ভোগ করতে হতে পারে নানান শাস্তি।

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

তাই সকল সুনাগরিকেরই উচিত তার নিজের জন্য পাসপোর্ট বানিয়ে রাখা। কেননা এটি অর্থাৎ পাসপোর্ট শুধুমাত্র প্রয়োজন নয় বরং দেশের সকল নাগরিক অধিকারও বটে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম বা অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ২০২১ এবং এই বিষয়ক বিভিন্ন তথ্যাবলী নিয়ে। আমি আশা করি আপনি ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১ বা অনলাইনে নতুন নিয়মে পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এখানে পেয়ে যাবেন। তার আগে চলুন জেনে নেই যারা নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদন করেন তাদের সকলের ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে কয়েকটি কথা।

ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে কমন প্রশ্ন

১। পাসপোর্টে ব্যবহার করা তথ্যাবলী কি সত্যায়িত করার দরকার আছে?

২। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে কি পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করা সম্ভব?

৩। অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেয়ার পরে কি পুনরায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া সম্ভব।

৪। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময়ে কোনো সমস্যার পড়লে সে সময়ে করনীয় কি?

৫। ইউটিলিটি বিল কিংবা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড পাসপোর্ট করার সময় প্রয়োজন আছে কি?

৬। অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করার পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি, এখন আমার কি করণীয়?

৭। ই-পাসপোর্টের জন্যে কি পূর্বের MRP পাসপোর্টের প্রিন্ট আউট করা ফ্রম ব্যাবহার করা যাবে?

৮। অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য ছবির আকার এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কোন ধরনের হতে হবে?

৯। নিয়মিত ই-পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করার পরে সেটা কি জরুরী আবেদনের জন্য পরিবর্তন করা যাবে?

১০। আমার তো ই-মেইল অ্যাড্রেস নাই, আমি কি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবো?

১১। অনলাইনে আবেদন করার পরে যেকোনো তথ্য অফিসে না গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে কি চেঞ্জ করা সম্ভব?

১২। পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করছি কিন্তু বর্তমানে সেই পাসপোর্টটি বাতিল করতে চাই। সেক্ষেত্রে আমার করণীয় কি কি?

১৩। পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করে আবেদন করার ক্ষেত্রে কি অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাবে?

১৪। আমার কাছে একটি এমআরপি পাসপোর্ট রয়েছে। আমি কি এখন স্বাভাবিকভাবেই অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবো?

১৫। অনলাইন থেকে ই-পাসপোর্টের পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে সেটা হাতে টাইপ করে পূরণ করে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যাবে কি?

১৬। পাসপোর্টের আবেদন করার পরে পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় কি পুলিশ আমার বাসায় চলে আসবে নাকি আমাকে থানায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে?

১৭। আমার এসএসসি/এইচএইচসি সমমানের সার্টিফিকেটে নামের বানান ও জন্ম নিবন্ধনে নামের বানান ঠিক নাই অর্থাৎ অমিল, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?

১৮। ই-পাসপোর্টের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রবেশ করালেও অ্যাকাউন্ট কনফারমেশনসহ ই-মেইল পাইনি, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?

১৯। জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখ করা আমার নাম/পিতার নাম/মাতার নাম ভুলত্রুটি রয়েছে। উক্ত তথ্য ঠিকঠাক না করেও পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা উচিত হবে কি? তো পাসপোর্ট তৈরি করার পূর্বে আগে জেনে পাসপোর্ট মূলত কয়প্রকার।

পাসপোর্টের প্রকারভেদ

যুগ যুগ ধরে পাসপোর্টের ধরন বিভিন্ন রকমের হয়েছে। তবে কিন্তু আসল জিনিসটা একই রকম আছে। পাসপোর্ট হচ্ছে মূলত একটি ছোটা আকারের বই যেখানে আপনার এবং আপনার দেশের যাবতীয় ইনফরমেশন এবং একইসঙ্গে আপনার বিদেশ ভ্রমণের অনুমতির বিভিন্ন তথ্যগুলো উল্লেখ করা হয়ে থাকে। পাসপোর্ট মূলত ৩ প্রকারঃ

১। ই-পাসপোর্ট

২। হাতে টাইপ করা পাসপোর্ট

৩। এমআরপি অর্থাৎ মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট।

হাতে টাইপ করা পাসপোর্ট

আমাদের দেশে হাতে টাইপ করা পাসপোর্টকে সেই প্রায় পুরনো আমলের পাসপোর্টকে বলা হয়। যদিওবা বর্তমানে কিছু কিছু দেশে এখন পর্যন্ত হাতে টাইপ করার পাসপোর্টের প্রচলন আছে। তবে হ্যাঁ বাংলাদেশ এর ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের পরে থেকেই আর কোনো হাতে টাইপ করা পাসপোর্ট ইস্যু করেনি। যার পরিবর্তে তারা নিয়ে আসছে নতুন টেকনোলজি, যার নাম হচ্ছে এমআরপি পাসপোর্ট অর্থাৎ মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট। 

এমআরপি পাসপোর্ট অর্থাৎ মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট

বাংলাদেশি এমআরপি পাসপোর্ট অর্থাৎ মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট। এমআরপি পাসপোর্ট হচ্ছে এমন এক ধরনের পাসপোর্ট, যে পাসপোর্ট মেশিন কিংবা যন্ত্রের সাহায্য দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। অর্থাৎ পূর্বের হাতে টাইপ করা পাসপোর্টের পরিবর্তে এমআরপি পাসপোর্টের মাঝে সকল তথ্যাবলী এমনভাবে দেয়া থাকে যা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট মেশিনের সাহায্য শনাক্ত করতে পারবে। আর সে জন্যই এটাকে বলা হয়ে থাকে মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট। বিগত ২০১০ সাল থেকেই বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য এমআরপি পাসপোর্ট প্রদান করা শুরু করছে। 

এই এমআরপি পাসপোর্টের পরিচিতি পৃষ্ঠার মাঝে ব্যাক্তির বিস্তারিত তথ্যাগুলো উল্লেখ থাকেনা। বরং পরিচিতি পৃষ্ঠার একটি বিশেষ অংশে অনেক গুলো সংকেত ব্যবহার করা থাকে যে সংকেত দেখে কিছুই বোঝা সম্ভবপর নয়। সেই অংশটির মধ্যে তথ্যাবলী কোডেড করা অর্থাৎ হাইড করা থাকে। যন্ত্র বা মেশিনের সাহায্যে উক্ত কোডেড আকারের তথ্যাবলী ইমিগ্রেশন অফিসারগণ দেখে ব্যাক্তির পরিচয় নিশ্চিত করে নেন। এই এমআরপি পাসপোর্টের কারণে ভুয়া সকল পাসপোর্ট জনীত অপরাধ অনেকাংশেই কমে গিয়েছে।

এমআরপি পাসপোর্ট ধারীরা ইচ্ছা করলেই স্বাভাবিকভাবে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবে। তাদের এখনি ই-পাসপোর্ট নেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে হ্যাঁ বর্তমান সময়ে নতুন করে কেউ আর এমআরপি পাসপোর্ট নিতে পারবেন না। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কিন্ত এমআরপি পাসপোর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যদি আপনার এমআরপি পাসপোর্টে উল্লেখ করা মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই ই-পাসপোর্টে রিনিউ অর্থাৎ নবায়ন করে নেয়ার প্রয়োজন হবে। তাহলে এবার চলুন জেনে নেই ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যঃ

ই-পাসপোর্ট

এমআরপি পাসপোর্ট এর আধুনিক রূপ হলো ই-পাসপোর্ট। বর্তমান পৃথিবীতে এই ই-পাসপোর্টের সর্বাধুনিক টেকনোলজি যা ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্যে চালু করা হয়েছে। ই-পাসপোর্টকে কিন্ত বায়োমেট্রিক পাসপোর্টও বলা হয়ে থাকে। এই বিশেষ পাসপোর্টের মাঝে সিম কার্ডের মতোই একটি ছোটো আকারের চিপ ব্যবহার করা থাকে। চিপটির মাঝে ব্যবহার করা হয়েছে মাইক্রো প্রসেসর ও এন্টেনা টেকনোলজি। 

পাসপোর্টের মধ্যে চিপের ভেতর পাসপোর্ট ধারীকে শনাক্ত করার জন্যে থাকবে গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্যবলী। যেমনঃ যার পাসপোর্ট উক্ত ব্যাক্তির তিন ধরনের ছবি, ১০ আঙুলের বায়োমেট্রিক ছাপ, চোখের আইরিশের স্ক্যান ইত্যাদি। ই-পাসপোর্ট এ আরো থাকছে ই-বর্ডার অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক বর্ডার টেকনোলজি যার মাধ্যমে চিপের বাইরের বায়োমেট্রিক ফিচারগুলোর তুলনামূলক যাচাই করা যাবে। 

পাসপোর্টের চিপের তথ্য যাচাই করার জন্যে আরে থাকছে পাবলিক কি ইনফ্রাষ্ট্রাকচার (PKI) টেকনোলজি। উল্লেখ্য যে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মাঝে বাংলাদেশই শুধুমাত্র এই অত্যাধুনিক পাসপোর্ট প্রথম ইস্যু করা শুরু করছে। কি ব্যাপার টা দারুন না, আমাদের দেশটা কতটা এগিয়ে গিয়েছে ভেবে দেখেছেন একবার।

ই-পাসপোর্টের সুবিধা

ই-পাসপোর্ট হচ্ছে যেহেতু সর্বাধুনিক তাই এটা পুরনো সকল পাসপোর্টের তুলনায় এটির সুবিধাগুলোও হবে অনেক বেশি। ই-পাসপোর্ট ব্যবহারকারীরা সবথেকে বেশি যে সুবিধা ভোগ করতে পারবে সেটা হচ্ছে দ্রুত ইমিগ্রেশন পাড় হওয়া। আমরা অনেকেই নিশ্চয় জেনে রাখবো, ইমিগ্রেশন পার হওয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে একটু বেশিই সময় লাগতে পারে। যেটা দীর্ঘ যাত্রার পরে অনেক ব্যাক্তির কাছে হয়ে ওঠে অসহ্যনীয়। 

আর মূলত উক্ত সমস্যা থেকে অনেকখানি মুক্তি মেলে যায় এই ই-পাসপোর্টের সাহায্যে। যেহেতু ই-পাসপোর্টে মাইক্রোচিপেই পাসপোর্টধারীর সকল ইনফরমেশন উল্লেখ করা থাকে তাই ই-পাসপোর্ট ধারীদের জন্য বিশেষ ই-গেটের মাধ্যমে খুবই সহজেই ও দ্রুততার সাথে ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করা সম্ভব। ই-গেটে পাসপোর্টটি শো করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সকল ইনফরমেশন যাচাই-বাছাই হয়ে যাবে।

অতঃপর ই-পাসপোর্ট ধারীর হাতের আঙুলের বায়োমেট্রিক স্ক্যান সম্পূর্ণ হলেই ইমিগ্রেশনের ঝামেলা থেকে মুক্তি মিলবে। যার কারণে একজন যাত্রীর অনেকটাই সময় সাশ্রয় হবে। তবে শুধুমাত্র দ্রুতগতিতে ইমিগ্রেশন পাড় করাটাই নয় বরং এই ই-পাসপোর্টের আসল লক্ষ্য হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অনেক সময় দেখা যায় একজনের পাসপোর্ট আরেকজন ব্যাবহার করছে এবং বিভিন্ন জালিয়াতি করে থাকে, যা জন্ম দেয় নানান জটিলতার। আর এই ই-পাসপোর্টে যেহেতু সকল ধরনের ইনফরমেশন মাইক্রোচিপের মাঝে থাকে তাই এসকল বে-আইনী মূলক কাজ সহজেই এড়ানো যায়।

ই-পাসপোর্টে আছে ৩৮ ধাপের সিকিউরিটি ব্যবস্থা। আর এজন্য কোনোভাবে পাসপোর্ট ধারীর সঙ্গে পাসপোর্টের তথ্যাবলী না মিলে গেলে লালবাতি জ্বলে যাবে এবং বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই এই ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অরগানাইজেশন (ICAO) দ্বারা পরিচালিত হবে। 

যার কারণে যেকোনো স্থল, নৌ কিংবা বিমান বন্দর থেকে পাসপোর্টের সমস্ত ইনফরমেশন মূল তথ্যকেন্দ্রের সঙ্গে সহজেই মিলিয়ে দেখা যাবে। প্রয়োজনে পুলিশ থেকে শুরু করে ইন্টারপোলের মতো আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও ব্যবস্থা নিতে পারবে। যার কারণে সন্ত্রাস দমনের মতো কঠিন কাজগুলো বেশ খানিকটা সহজতর হয়ে উঠবে। তো আর দেরি না করে চলুন এক্ষণ জেনে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১ | নতুন পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১ বা নতুন ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগেঃ

ই-পাসপোর্ট করার জন্যে দরকারী কাগজপত্র

১। শিক্ষাগত সনদপত্র

২। নাগরিক সনদপত্র

৩। অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রিন্ট কপি

৪। পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি

৫। জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মসনদ পত্র

৬। ই-পাসপোর্ট করার জন্য আবেদন প্রিন্ট কপি

৭। পেশাগত সনদপত্রে সত্যায়িত ফটোকপি (যদি এটা থাকে)

৮। পূর্বের যদি পাসপোর্ট থেকে থাকে তবে সেটার ডাটা পেজের ফটোকপি

ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

এছাড়াও ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করুন এখানে ক্লিক করেঃ ই-পাসপোর্ট পিডিএফ ডাউনলোড

ই-পাসপোর্ট ফরম পূরণের নির্দেশাবলী

ই-পাসপোর্ট আবেদন করার ফরম পূরণ করার সময়ে কিছু নির্দেশাবলী আপনাকে অবশ্যই অনুসরণ করে চলতে হবে। 

১। ই-পাসপোর্ট আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করতে পারবেন অথবা পিডিএফ ফাইল আকারে ডাউনলোড করে পূরণ করতে পারবেন।

২। ই-পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্র কিংবা ছবি সত্যায়িত করার দর কার হবেনা।

৩। ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সময়ে নাম, জন্ম তারিখ সহ সকল তথ্যাবলী জাতীয় ‍পরিচয়পত্র বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী পূরণ করে নিতে হবে। ১৮ বছরের কম হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী। ১৮-২০ বছর হলে ভোটার আইডি কার্ড অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র অনুযায়ী। 

২০ বছরের বেশি হলে ভোটার আইডি কার্ড থাকা আবশ্যক। যদি আপনি ভোটার আইডি কার্ড না পেয়ে থাকেন তাহলে, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপিটি ডাউনলোড করে সেখানে জমা দিলেও চলবে। এছাড়াও বিদেশ বাংলাদেশ মিশন থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র গ্রহণযোগ্য হবে।

৪। ১৮ বছরের নিচে হলে অর্থাৎ অপ্রাপ্ত বয়স্ক আবেদনকারী যার ভোটার আইডি নেই, সেই ব্যক্তিকে মাতা-পিতার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার অবশ্যই উল্লেখ করে দিতে হবে।

৫। তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নাম্বারগুলোকে অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

৬। ১৮ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের বেশি আবেদনকারীর জন্যে পাসপোর্টের মেয়াদ কালীন সময় হবে 5 বছর। চলুন এখন আমরা আপনাদের স্টেপ বাই স্টেপ দেখাবো কিভাবে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন কিভাবে করবেনঃ

ই-পাসপোর্টের আবেদন করার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সেই জন্য সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্টের আবেদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। ই-পাসপোর্ট আবেদন ওয়েবসাইটে গেলেই উপরের ডান দিকে ইংরেজি এবং বাংলা দুই রকমের ভাষা সিলেক্ট করে নিতে পারবেন। আপনি যে ভাষাতে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন উক্ত ভাষাটিকে সিলেক্ট করে নিন। 

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের করার ৫ টি স্টেপঃ

স্টেপ ১ঃ বর্তমান সময়ে আপনার বসবাসরত জেলাতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়েছে কি-না সেটা পরীক্ষা করা।

স্টেপ ২ঃ অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফ্রম পূরণ করা।

স্টেপ ৩ঃ ই-পাসপোর্ট করার জন্য ফি পরিশোধ করা।

স্টেপ ৪ঃ ছবি তোলা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করার জন্যে পাসপোর্ট অফিসে যথাসময়ে উপস্থিত হওয়া।

স্টেপ ৫ঃ পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার ই-পাসপোর্ট কালেক্ট করা।

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ কলেই Apply Online বা অনলাইনে আবেদন’ নামের একটি ট্যাব দেখতে পারবেন। সেখানে ক্লিক করলে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার প্রসেস শুরু হবে। প্রথমে আপনি যে যায়গাতে বসবাস করেন সেখানের আশেপাশের কোথায় ই-পাসপোর্ট অফিস রয়েছে সেটা খুঁজে নিকটস্থ অফিসটি সিলেক্ট করে নিন।

তারপর, অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করার জন্যে পরবর্তী উইন্ডোতে আপনি যাইতে পারবেন। সেখানে অবশ্যই আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রবেশ করতে হবে। নিজের সঠিক নাম (জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী) এবং মোবাইল নম্বর টাইপ করিয়ে একটি পাসওয়ার্ড সেটআপ করে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার পরে আপনার উল্লেখ করা ই-মেইল অ্যাড্রেস একটি কনফারমেশন ই-মেইল চলে যাবে। সেখান থেকে অ্যাকাউন্টটি কনফার্ম করতে হবে। অতঃপর ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরমের প্রয়োজনীয় সব তথ্যাবলী পূরণ করে নিতে হবে।

অতি জরুরী পাসপোর্টের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া

অনেক ক্ষেত্রে অনেকেরই খুবই জরুরী ভিত্তিতে একটি ই-পাসপোর্ট প্রয়োজন হয়। তখন মাত্র দুই কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার জন্যে অতি জরুরী কিংবা ‘Super Express’ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ অতি জরুরী এই ই-পাসপোর্ট সেবার বিষয়ে কয়েকটি তথ্য আপনাকে জানতেই হবে।

১। বাংলাদেশের যেকোনো যায়গা থেকে অতি জরুরী ই-পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করা গেলেও বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে এই অতি জরুরি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা যায়না।

২। দেশের যেকোনো যায়গা থেকে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করা গেলেও অতি জরুরী ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ঢাকা আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

৩। অতি জরুরী অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন আগে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে আপনার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকা অত্যাবশ্যক।

৪। বর্তমান সময়ে এই সেবাটি শুধুমাত্র আগের এমআরপি পাসপোর্ট ধারী ব্যক্তিদের জন্য সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ আপনি নতুন ই-পাসপোর্ট আবেদনকারী হলে অতি জরুরী ই-পাসপোর্টের জন্য বর্তমান সময়ে আবেদন করতে পাবেন না। 

পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করা

প্রত্যেক ব্যক্তিকেই ই-পাসপোর্ট বা পাসপোর্ট নেয়ার জন্যে নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা প্রদান করতে হয় অর্থাৎ পাসপোর্ট নেয়ার জন্য নিদিষ্ট পরিমাণে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হয়। পাসপোর্টের কোয়ালিটি ভেদে পাসপোর্ট ফি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। পাসপোর্ট ফি পাসপোর্টের ধরণ অনুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত হয়। চাইলে আপনি খুবই সহজে অনলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে পারবেন। আর কেউ চাইলেই স্ব-শরীরে ব্যাংকে গিয়ে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পাসপোর্টের জন্য পাসপোর্ট ফি আপনি সোনালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংকে নির্ধারিত ফি জমা দিতে পারবেন। 

অনলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধের পরে আপনার অনলাইন আবেদনের সারাংশতে পরিশোধকৃত টাকার পরিমাণ অ্যাড হয়ে যাবে। যদি সারাংশতে টাকার পরিমাণটি অ্যাড না হয়ে থাকে তবে অবশ্যই অনলাইনে চালানের কপি কিংবা যার মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করেছেন সেখান থেকে ‘পেমেন্ট স্লিপ’ আপনার কাছে কালেক্ট করে রাখবেন। ব্যাংকের মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করলে ব্যাংক থেকে স্লিপ নিজের কাছে কালেক্ট করে রাখবেন এবং বায়োমেট্রিক আবেদনের সময়ে সেটা পাসপোর্ট অফিস জমা দিবেন। 

বিভিন্ন পাসপোর্টের ফি সমূহ

ই-পাসপোর্টের ধরণ এবং দ্রুততার উপরে ভিত্তি করে পাসপোর্টের ফি নির্ধারিত করা হয়ে থাকে। নিম্নে পাসপোর্টের জন্যে নির্ধারিত ফি সমূহ দেয়া হলোঃ

৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

১। জরুরি পাসপোর্টঃ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৬,৩২৫ হাজার টাকা মাত্র।

২। নিয়মিত পাসপোর্টঃ ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৪,০২৫ হাজার টাকা মাত্র। 

৩। অতি জরুরী পাসপোর্টঃ ২ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৮,৬২৫ হাজার টাকা মাত্র।

১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

১। জরুরি পাসপোর্টঃ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৮,০৫০ হাজার টাকা মাত্র।

২। নিয়মিত পাসপোর্টঃ ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৫,৭৫০ হাজার টাকা মাত্র।

৩। অতি জরুরী পাসপোর্টঃ ২ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ১০,৩৫০ হাজার টাকা মাত্র।

৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

১। জরুরি পাসপোর্টঃ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৮,৩২৫ হাজার টাকা মাত্র।

২। নিয়মিত পাসপোর্টঃ ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৬,৩২৫ হাজার টাকা মাত্র।

৩। অতি জরুরী পাসপোর্টঃ ২ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ১২,০৭৫ হাজার টাকা মাত্র।

১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট

১। জরুরি পাসপোর্টঃ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ১০,৩৫০ হাজার টাকা মাত্র।

২। নিয়মিত পাসপোর্টঃ ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ৮,০৫০ হাজার টাকা মাত্র।

৩। অতি জরুরী পাসপোর্টঃ ২ কর্মদিবসের মধ্যে প্রদানঃ ১৩,৮০০ হাজার টাকা মাত্র।

ই-পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশন 

অনলাইন পুলিশ ভেরিফিকেশন/ছাড়পত্র পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়াতে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ। যদি আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন সনদপত্র না থাকে তবে আপনি কোনোভাবেই পাসপোর্ট কালেক্ট করতে পারবেন না। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আবেদন করার আগেই পুলিশ ভেরিফিকেশন করার প্রয়োজন হবে এবং উক্ত সনদপত্র আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন অন্যান্য সকল তথ্য ঠিকঠাক থাকা সাপেক্ষে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট হাতে পাবেন। চলুন তাহলে জেনে নেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম কানুন সম্বন্ধেঃ

১। পাসপোর্ট বিষয়ে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। 

২। এই প্রক্রিয়ায় দেশে কিংবা বিদেশে থাকা বাংলাদেশি ও একইসঙ্গে একবার বাংলাদেশে থেকে যাওয়া বিদেশিও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

৩। কেউ যদি বিদেশ থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্যে আবেদন করে তবে তার বর্তমান অ্যাড্রেস হবে তিনি দেশে থাকা অবস্থায় যে ঠিকানায় বসবাস করতেন সেই ঠিকানা।

৪। উল্লেখ্য এই যে, অভ্যন্তরীণ নানা কাজেও অনেক সময় পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে জেলা অথবা শহরের স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। 

৫। বিদেশ থেকে কোনো বাংলাদেশি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করলে তার আবেদনপত্র অবশ্যই সেই দেশে নিয়োজিত বাংলাদেশি হাইকমিশনার দ্বারা সত্যায়িত করার প্রয়োজন হবে।

৬। আবেদনপত্রে আবেদনকারীর বর্তমান অ্যাড্রেস যে মেট্রোপলিটন/জেলা পুলিশের অধীনে রয়েছে সেই মেট্রোপলিটন/জেলাতে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফ্রম পূরণ করে আবেদন করার প্রয়োজন হবে। 

অনলাইন আবেদনপত্রে যদি বর্তমান অ্যাড্রেস এবং স্থায়ী অ্যাড্রেস ভিন্ন দেয়া থাকে, তাহলে দুই স্থানের ভেরিফিকেশন হবে। যদি অ্যাড্রেস একি দিয়ে থাকেন, তবে শুধুমাত্র একস্থানের ভেরিফিকেশন করলেই হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন মূলত আবেদনে যেসকল তথ্য দিয়েছেন সেটা সঠিক ভাবে দিয়েছে কি-না সেটা যাচাই বাছাই করার প্রক্রিয়া। তাই পুলিশ ভেরিফিকেশনের আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে কালেক্ট করে রাখা ভালো।

নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক আবেদনের জন্য উপস্থিত হওয়া

আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে বায়োমেট্রিক আবেদনের জন্যে উপস্থিত পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের পরবর্তী ধাপে এবার বায়োমেট্রিক আবেদন করার প্রক্রিয়া। এই ক্ষেত্রে নিয়মিত নিজের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া হচ্ছে কি-না তা দেখে নিন। অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া হলে নির্ধারিত দিন তারিখ এবং সময় অনুযায়ী আপনাকে নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে। এই সময় যেসব কাগজপত্র আপনার সঙ্গে রাখার প্রয়োজন হবেঃ

১। পেমেন্ট স্লিপ। 

২। আবেদন পত্রের প্রিন্ট কপি (ঐচ্ছিক)।

৩। পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের প্রিন্ট কপি (যদি থাকে) 

৪। আবেদন পত্রের সারংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহকারে)।

৫। শনাক্তকরণ ডকুমেন্টের প্রিন্ট কপি (জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন পত্র)।

৬। তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যদি আপনার কাছে থাকে)।

ই-পাসপোর্টে বায়োমেট্রিক সম্পূর্ণ করার জন্য এই সকল কাগজপত্রই সঠিক ভাবে নিতে হবে। কোনো রকম কমতি রাখলে হবেনা। পাসপোর্ট অফিসে দিয়ে যথাক্রমে আপনার (নিজের) কয়েক রকমে ছবি তোলা হবে, আপনার চোখের আইরিশের ছবি নেয়া হবে। আপনার দুই হাতের দশটি আঙ্গুলের ছাপ কিংবা বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়া হবে। যদি আপনি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন ও স্মার্টকার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করে থাকেন তবে এই প্রক্রিয়ার অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যে আপনার নিশ্চয় থাকার কথা। অভিজ্ঞতা না থাকলেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। যেকোনো মানুষ সম্পূর্ণ করতে পারবেন এমন প্রক্রিয়াতেই সকল কিছু করা হয়ে থাকে ই-পাসপোর্ট নেয়ার জন্য। 

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আপনার ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন শেষ হলে আপনাকে ডেলিভারি স্লিপ নামের একটি স্লিপ প্রদান করা হবে। এটির তথ্যগুলো ভালোভাবে দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন ও সাবধানে আপনার কাছে রেখে দিন। কেননা এটি ব্যতীত আপনি কোনো ভাবেই আপনার ই-পাসপোর্ট কালেক্ট করতে পারবেন না। 

পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২১

আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক। পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক কিংবা পাসপোর্টের অবস্থা নির্ধারণ করাটা বেশ স্বস্তিদায়ক একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতির সাহায্যে আপনি আপনার পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়ার সম্পন্ন অবস্থা সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবেন। পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করার জন্য পুনরায় ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন। সেখানে মেনুবারের ডান দিকে আপনি লক্ষ্য করলেই STATUS CHECK নামের একটি অপশন দেখতে পারবেন। 

ই-পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশন আইডি কিংবা বায়োমেট্রিক আবেদনের সময়ে স্লিপে উল্লেখ করা অ্যাপ্লিকেশন আইডির দরকার হবে। পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে সেটা আপনি ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজেই দেখতে পারবেন। তাছাড়াও আপনার মোবাইল দেয়া নাম্বারে এই সংক্রান্ত একটি বার্তা বা ম্যাসেজ চলে আসবে।

পাসপোর্ট সংগ্রহ

সবশেষে এখন পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পালা। পাসপোর্ট সংগ্রহ করার জন্যে আবারো সেই পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। (মনে রাখবেন, অতি জরুরী পাসপোর্ট শুধুমাত্র ঢাকা আগারগাঁও অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন) অবশ্যই সঙ্গে করে ডেলিভারি স্লিপ টিকে নিয়ে নিবেন। অতঃপর ডেলিভেরি স্লিপ শো করে আপনার আরাধ্য ই-পাসপোর্টটি হাতে নিয়ে নিন। জেনে রাখা ভালো, পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার জন্য স্ব-শরীরে অফিসে যাওয়াটাই হবে উত্তম কাজ। যদি খুবই অসুবিধা হয় আপনার যেতে হবে আপনার হয়ে একজন সত্যায়িত প্রতিনিধি সেখানে পাঠিতে দিতে পারেন। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ভালোভাবে দেখে নিন পাসপোর্টের সকল তথ্য ঠিকঠাক উল্লেখ করা রয়েছে কি-না।

পাসপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে তার প্রতিকার

নাম বা অন্য তথ্য ভুল হলে করনীয়

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সময়ে খুবই সাবধানতার সাথে আবেদন করা প্রয়োজন। তবুও মানুষ মাত্রই কিন্ত ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই ক্ষেত্রে আপনার অনলাইন পাসপোর্টের আবেদনের সারাংশ নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে দ্রুততার সাথে যোগাযোগ করুন। পাসপোর্ট অফিসে এনরোলমেন্ট অফিসারের সাহায্য ভুল সংশোধন করে নেয়ার সুযোগ কিন্ত আছে। এমনকি নিজের নাম ভুল করলেও সেটা ঠিকঠাক করে নেয়া সম্ভব। 

তবে নাম কিংবা অন্যান্য তথ্যের শুদ্ধতা প্রমাণের জন্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করার প্রয়োজন হবে। যেমনঃ জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র। উল্লেখ্য যে, পাসপোর্টের ফি পরিশোধের পরেও কিন্ত ভুল সংশোধন করার সুযোগ দেয়া থাকে। তবে পাসপোর্টে নাম ভুল করলে ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে যার জন্যে অতিরিক্ত সময়ের অপেক্ষা করার দরকার হবে।

অ্যাপয়েন্টমেন্টে উপস্থিত না থাকতে পারলে করণীয়

অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদনের পরে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় দেয়া হবে। যদি কোনো কারণে সেই সময়ে উপস্থিত না থাকতে পারেন তাহলে নিজের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন। সেখানে অনলাইন নিবন্ধনের Re-schedule/Cancel বাটনটিতে ক্লিক করুন। আর আপনি চাইলে আপনার অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময়টিকে পরিবর্তন করে নিতে পারবেন কিংবা কোনো কারণে যদি পরিবর্তন না করেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করেন তাহলেও পরে আবার নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্যে আপনি আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আমি পরামর্শ দিবো একবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলে সেটা কোনো ভাবেই না হারানোর।

আবেদন করেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেলে করণীয়

সত্যি বলতে এই মুহূর্তে এটার কোনো প্রতিকার নাই। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার একটাই উপায় রয়েছে সেটা হচ্ছে অনলাইনে আবেদন করে ওয়েট করা। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেলেন কি-না সেটা জানতে বার বার আপনার অ্যাকাউন্ট চেক করতে পারেন। মূলত আঞ্চলিক অফিসগুলোতে এই সমস্যাটি একটু বেশি হয়ে থাকে। অফিসের সক্ষমতা না বৃদ্ধি হলেও এই সমস্যা সমাধানের আর কোনো পদ্ধতি নেই। তাই এই সমস্যা এড়ানোর জন্য অফ সিজন গুলোতে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করুন। কেননা বিদেশ যাওয়ার মৌসুমে অফিসে অনেক বেশি পরিমাণে অফিসে চাপ থাকে।

পূর্বের পাসপোর্টের সাপেক্ষে বর্তমানে কোনো তথ্য পরিবর্তন হলে করণীয়

অনেক সময় আগের পাসপোর্টের সাপেক্ষে আপনার যদি বর্তমান তথ্যাবলী কিন্ত নাও মিলে যেতে পারে। যেমনঃ বর্তমান অ্যাড্রেস, পেশা কি, বৈবাহিক অবস্থা। এসকল তথ্য পরিবর্তনশীল। অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদনের সময়ে বর্তমান তথ্যাবলী সহকারে আবেদন সম্পূর্ণ করুন। তবে পাসপোর্ট অফিসে আবেদনের সময়ে পেশা পরিবর্তনের প্রমাণ কিন্ত দেখাতে হবে। 

যেমনঃ বর্তমান পেশার প্রশংসা পত্র। শিক্ষার্থী হলে প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দেখানোর প্রয়োজন হবে। বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন হলে অবশ্যই বিয়ের সনদপত্র দাখিল করার প্রয়োজন হবে। এছাড়াও বর্তমান অ্যাড্রেস পরিবর্তন হলে নতুন ঠিকানায় আবার নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে। সেটা নাহলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে এবং পরিশোধিত ফি আর আপনাকে ফেরত দেওয়া হবেনা।

অনলাইন আবেদনে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার বা ই-মেইল পরিবর্তন করতে চাইলে করণীয়

অনলাইন পাসপোর্ট আবেদনের পরে কোনো কারণে এই দুটি তথ্যের পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দিলে শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে সফল হবেন। অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে অ্যাকাউন্ট ডাটা নির্বাচন করুন। সেখান থেকে এসএমএস নটিফিকেশন ডি অ্যাক্টিভেট করে নতুন নম্বর প্রবেশ করুন যেখানে নতুন এসএমএস গুলো যাবে। 

উল্লেখ্য যে, একটি মোবাইল নম্বর শুধুমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারবেন। ই-মেইল অ্যাড্রেস পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে এমন কোনো সু্যোগ নেই। নতুন ই-মেইল ব্যবহার করতে চাইলে উক্ত অ্যাকাউন্টটি বাতিল করে নতুন করে ই-মেইল খুলে নতুন করে অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে। উল্লেখ্য যে, অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে শুধুমাত্র ই-মেইল অ্যাড্রেসের সাহায্যেই পাসওয়ার্ড নতুন করে পাওয়া সম্ভব।

পরিশেষে

সবশেষ ই-পাসপোর্ট হচ্ছে দেশের বিদেশ ভ্রমণকারীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত চালু করে দিয়েছে। ছবি সত্যায়নের দরকার না থাকায় ঝামেলা হ্রাস পেয়েছে অনেকখানি। তৈরি হয়েছে দ্রুততার সঙ্গে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সুবিধা। জালিয়াতি হয়ে উঠেছে প্রায় ১০০% অসম্ভব। তাছাড়াও বেশিরভাগ কাজগুলো অনলাইনের মাধ্যমে করার সুযোগ থাকায় পূর্বের থেকে দূর্ভোগও কমছে অনেক। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সকল নাগরিকের ই-পাসপোর্ট নিশ্চিত করাটা এখন হচ্ছে সময়ের দাবী।

ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে সাধারন জিজ্ঞাসা

১। আমার ই-মেইল অ্যাড্রেস নেই, আমার পক্ষে কি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করা সম্ভব?

প্রশ্নের জবাবঃ এই প্রশ্নের জবাব হবে না। অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য অবশ্যই অবশ্যই ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রয়োজন। ই-মেইল অ্যাড্রেস ছাড়া আপনি কোনো ভাবেই অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে পাবেন না। তাই অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস ওপেন করুন। এক্ষেত্রে আপনি গুগল এর জিমেইল নামের ইমেইল সেবাটি ব্যবহার করতে পারেন।

২। অনলাইন ই-পাসপোর্ট আবেদন করার পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়েছি, এখন আমার কি করণীয়?

প্রশ্নের জবাবঃ এজন্য আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেসটি আপনার একমাত্র ভরসা। অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করার জন্য অ্যাকাউন্ট লগ ইন করার স্থানে যান। Forgot Password লেখা অপশনে ক্লিক করুন। তারবার অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত ই-মেইল অ্যাকাউন্টে লগইন করুন। একটি ই-মেইল চলে আসছে। সেখানে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করার জন্য নতুন একটি পাসওয়ার্ড আপনি পেয়ে যাবেন।

৩। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ই-মেইল অ্যাড্রেস প্রবেশ করালেও অ্যাকাউন্ট কনফারমেশন সহ ই-মেইল পাইনি, এক্ষেত্রে করণীয় কি?

প্রশ্নের জবাবঃ সর্বপ্রথম আপনার ই-মেইলটি অ্যাড্রেস সঠিকভাবে বসাছেন না-কি কোনো বানান ভূল হয়েছে সেটা নিশ্চিত হোন। বানান সম্বন্ধে নিশ্চিত থাকলে ই-মেইল অ্যাকাউন্ট লগইন করে ইনবক্সে স্পাম নামের ফোল্ডারে প্রবেশ করুন। অনেক ক্ষেত্রে অজানা ই-মেইলকে গুগল অথবা অন্যান্য ই-মেইল সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠানগুলো অপ্রয়োজনীয় হিসাবে চিহ্নিত করে স্প্যাম নামের ফোল্ডারে জমা করে।

৪। অনলাইন থেকে পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে তা হাতে টাইপ করে পূরণ করলে আবেদন করা যাবে কি?

প্রশ্নের জবাবঃ এই প্রশ্নের জবার হবে না। অনলাইন থেকে পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে সেটা আবার পিডিএফ ডাউনলোড এডিট করে সকল তথ্যগুলো বসাতে হবে। পিডিএফ ফাইল এডিট করার জন্যে Adobe Acrobat Reader DC সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে পিডিএফ ফাইলের প্রিন্ট কপিরতে হাতে টাইপ করে আবেদন করলে সেটা গ্রহণযোগ্য বলে গণ্য হবেনা। ই-পাসপোর্টের আবেদন করার সময় সবকিছু ডিজিটালি করার প্রয়োজন হবে, এখানে হাতে টাইপ করার কোনো স্থান নেই।

৫। পিডিএফ ডাউনলোড করে প্রিন্ট আকারে আবেদনের ক্ষেত্রে কি অনলাইনে এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাবে?

প্রশ্নের জবাবঃ না। অনলাইনে এপয়েন্টমেন্ট শুধুমাত্র অনলাইনে আবেদন কারীদেরই দেয়া হয়ে থাকে। প্রিন্ট কপির মাধ্যমে আবেদন করবার চাইলে আপনাকে নিজে পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার পর এপয়েন্টমেন্টের জন্যে আবেদন করার প্রয়োজন হবে।

৬। আমার SSC/HSC এর সার্টিফিকেটে নামের বানান ও জন্ম নিবন্ধনের নামের বানান অমিল, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?

প্রশ্নের জবাবঃ সেক্ষেত্রে আপনার জন্ম নিবন্ধনের বানান অনুসারে সকল তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে। কেননা পাসপোর্ট জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী হয়ে থাকে।

৭। জন্ম নিবন্ধনে আমার নাম/ মাতার নাম/পিতার নাম ভুল রয়েছে। ঠিক না করেও আবেদন করা উচিত হবে কি?

প্রশ্নের জবাবঃ অবশ্যই নয়। যদি এই অবস্থাতে আবেদন করেন তবে এই নামই সারা জীবন বয়ে যাইতে হবে। বর্তমান সময়ে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনপত্র সংশোধন করার পদ্ধতি চালু রয়েছে। তাই অতি দ্রুততার সাথে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিন।

৮। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে কি পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করতে পারবো?

প্রশ্নের জবাবঃ ২০ বছরের কম হলে করা যাবে। কিন্তু বয়স সার্টিফিকেটের অনুযায়ী ২০ বছর এর বেশি হয়ে গেলে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার হবে।

৯। নিয়মিত ই-পাসপোর্টে এর জন্য আবেদন করার পরে সেটা কি জরুরী আবেদনে চেঞ্জ করা যাবে?

প্রশ্নের জবাবঃ হ্যাঁ করা যাবে। আপনার আবেদন চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়ে যাওয়ার আগ অবধি পারবেন। সেই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি অনলাইনে কিংবা ব্যাংকে গিয়ে আবার পুনরায় পরিশোধ করার প্রয়োজন হবে এবং স্লিপ সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

১০। পাসপোর্টের তথ্যগুলো কি সত্যায়িত করার প্রয়োজন রয়েছে?

প্রশ্নের জবাবঃ হবে না। এমআরপি পাসপোর্টে সত্যায়িত করার জন্য ই পাসপোর্টে সত্যায়িত করার দরকার নাই।

১১। ইউটিলিটি বিল কিংবা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড কি দরকার হবে?

প্রশ্নের জবাবঃ অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে এটার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ পুলিশ ভেরিফিকেশন করার সময় অনেক ক্ষেত্রে এটার প্রয়োজন চায়। তাই এটাকে সঙ্গে রাখা ভালো।

১২। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময়ে কি পুলিশ আমার বাসাতে আসবে নাকি আমাকে থানায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে?

প্রশ্নের জবাবঃ যেকোনো এক যায়গাতে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। হয়তোবা আপনার বাসায় চলে আসবে অথবা আপনাকে থানায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে। দুটোর জন্যই প্রস্তুত থাকা হবে উত্তম।

১৩। ই-পাসপোর্টের জন্য কি পূর্বের এমআরপি পাসপোর্টের প্রিন্ট করা ফ্রম ব্যবহার করা যাবে?

প্রশ্নের জবাবঃ অবশ্যই নয়। আলাদা করে ই-পাসপোর্টের জন্যে ফ্রম ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করতে হবে।

১৪। আমার আগের একটি এমআরপি পাসপোর্ট রয়েছে। আমি কি এখন স্বাভাবিক ভাবেই ই-পাসপোর্টের আবেদন করবো?

প্রশ্নের জবাবঃ জ্বী, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সময়ে পূর্বের পাসপোর্টের কোনো তথ্যই এখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাড হবেনা। নিজে থেকে তথ্যগুলো দেয়ার প্রয়োজন হবে। তবে তথ্যগুলো আগের পাসপোর্টের সঙ্গে মিলে গেলে নতুন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হবেনা।

১৫। অনলাইনে আবেদন করার পরে কোনো তথ্যগুলো কি অফিসে না গিয়েই অনলাইনের মাধ্যমে চেঞ্জ করা যাবে?

প্রশ্নের জবাবঃ না। অনলাইনে ই-পাসপোর্টের জন্য ১ বার আবেদন জমা করলে সেটা কিন্ত অপরিবর্তনীয়। আপনি আপনার ই-পাসপোর্টের তথ্যগুলো সংশোধন করতে চাইলে যথাউপযুক্ত কাগজপত্র প্রমান সহকারে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনাকে যোগাযোগ করতে হবে।

১৬। আমি পাসপোর্টের জন্যে আবেদন করছি কিন্তু বর্তমানে সেটা ডিলিট করতে চাই। সেজন্য আমার কি করণীয়?

প্রশ্নের জবাবঃ এক্ষেত্রে আপনি আপনার ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন এবং অ্যাকাউন্টটিকে ডিলিট করে ফেলতে পারেন। আপনি যদি ফি পরিশোধ না করে থাকেন তাহলে তিন সপ্তাহ পর আপনার অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদনের মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ও জন্মসনদের নাম্বার ব্যবহার করে আবার আবেদন করতে পারবেন। আপনি যদি পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করে থাকেন তবে প্রমাণ সহকারে আপনার কাছের কোনো পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করুন।

১৭। অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে ফেলার পরেও কি আমি আবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া সম্ভব?

প্রশ্নের জবাবঃ আপনার যদি ইতোমধ্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে থাকে তাহলে আপনি অনলাইন নিবন্ধকরণ আইডি সহকারে অ্যাপয়েন্টমেন্টে উপস্থিত হয়ে আপনার আবেদন পুনরুদ্ধার করতে পারেন। যদি না থেকে থেকে থাকে তাহলে আর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাবেন না।

১৮। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দালালের চক্রের উৎপাতে পড়লে আমার করনীয় কি?

প্রশ্নের জবাবঃ পাসপোর্ট অফিসে দালাল সমস্যা কেমন হবে সেটা এলাকার উপরে নির্ভর করে। সকল পাসপোর্ট অফিসের পরিস্থিতি কিন্ত এক রকম না। তবে সাধারণত দালালগণ ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১২০০-১৫০০ টাকা মধ্যে চেয়ে থাকে। আপনার যদি কাগজপত্র ১০০% নিখুঁত থাকে তবে দালাল চক্র আপনাকে কোনোভাবেই বিপদে ফেলে দিতে পারবে না।

১৯। পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময়ে সমস্যার পড়লে কি করা প্রয়োজন?

প্রশ্নের জবাবঃ এক্ষেত্রেও আপনার সকল কাগজপত্র নিখুঁতভাবে থাকা আবশ্যক। তারপরেও যদি কোনো সমস্যা হলে সরাসরি স্পেশাল ব্রাঞ্চ এর পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে পারেন

২০। ছবির আকার এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কি রকম হবে?

প্রশ্নের জবাবঃ প্রাপ্তবয়ষ্ক আবেদনকারীদের জন্যে কোনো ছবি নেয়ার প্রয়োজন হবে না। ৬ বছরের ছোট বাচ্চা হলে ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ড সহকারে বাচ্চার ছবি জমা দেয়ার প্রয়োজন হবে। যে সকল আবেদনকারীর বয়স ১৫ বছর এর কম তাদের সবার মা-বাবার বা অভিভাবকের ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবি জমা দেয়ার প্রয়োজন হবে। সকল ছবির আকার পাসপোর্ট সাইজ অর্থাৎ 3R আকারের হতেই হবে।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)