বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

প্রিয় বন্ধুগণ আমরা পূর্বের বিভিন্ন পোস্টে নতুন বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু অনেক ইউজার আছেন যারা একটি সমস্যাই পড়েন এবং আমার কাছে জানতে চায় কিভাবে তারা তাদের পুরাতন বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করবে। তাই আপনাদের সুবিধার জন্য আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো পুরাতন  বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার উপায় কিংবা বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করার উপায় বা বিকাশ একাউন্ট বাতিল করার নিয়ম এবং বিকাশ একাউন্টের নাম পরিবর্তন বা বিকাশ একাউন্টের মালিকনা পরিবর্তন করার জন্য কি কি করণীয়।

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম

বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেট মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনের জন্যে বিকাশ সেবাই বেশি ব্যবহার করেন। কিন্তু কিছু কিছু বিকাশ ব্যবহারকারী আছে যারা খুবই সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন, আর তা হচ্ছে পুরাতন বিকাশ একাউন্ট বাতিল করার করার নিয়ম সম্পর্কে। একজন বিকাশ ব্যবহারকারী বিভিন্ন কারণে বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করতে চান অথবা বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করতে চান। যেমন মনে করুন আপনার সিম কার্ডটি হারিয়ে গিয়েছে এবং আপনি সেই সিম কার্ডটি নতুন করে এক্টিভ না করে আপনার সেই বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান। 

অথবা আপনি বিকাশ একাউন্টটি অন্যজনের ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেয়া আছে তাই আপনি সেই একাউন্টটি বন্ধ করে নুতুন একটি বিকাশ একাউন্ট ওপেন করতে চান। এছাড়াও অনেকেই তাদের পুরাতন বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করে নুতুন একটি বিকাশ একাউন্ট তৈরি করতে চান। আবার বিকাশ একাউন্ট ব্যবহার না করে রকেট কিংবা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করতে চান। আরো নানা রকম কারণে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান। 

আর আপনি চিন্তা করছেন যে বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করা কিভাবে সম্ভব। আপনার আর চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। এ সকল সমস্যার কি সমাধান রয়েছে সেটার বিস্তারিত সমাধান আমি নিচে আলোচনা করবো। যাহোক চলুন তাহলে জেনে নেই বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার উপায় বা বিকাশ একাউন্ট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কেঃ

যদি আপনি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চান কিংবা বিকাশ একাউন্ট বাতিল করতে চান তাহলে প্রথমত সেটা কাস্টমার কেয়ারে কল করে অথবা স্মার্টফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করা সম্ভব না। বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করার জন্য আপনাকে ফিজিক্যালি বিকাশ একাউন্টের মালিককে বিকাশ অফিসে গিয়ে সেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার প্রয়োজন হবে। মনে বিকাশ অফিসে গিয়ে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য আপনার কিছু করণীয় রয়েছে। সেগুলো আমরা এখানে বিস্তারিত বলবো। 

আপনি যে কারণেই আপনার বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করতে চান, সেটার জন্যে বিকাশ একাউন্টের মালিক অর্থাৎ যার NID বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেয়া রয়েছে তাকে সঙ্গে করে বিকাশ অফিসে নিয়ে যেতে হবে। তাই আপনার নিকটবর্তী বিকাশ অফিসে ভিজিট করুন। মনে রাখবেন এখানে আপনার নিজের একাউন্ট হলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের হয় মানে একাউন্টটি যার ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে ওপেন করা হয়েছে আপনাকে সেই NID কার্ডের মালিককে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। 

বিকাশ অফিসে ভিজিট করে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার অফিসারকে আপনার সমস্যাটির কথা খুলে বলুন। বিকাশ আপনার সমস্যাটির সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করবে। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য কি কি প্রয়োজন হবে তা নিচে থেকে জেনে নিনঃ

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ  করতে কি প্রয়োজন

বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য ২টি জিনিসের প্রয়োজন হয়। চলুন সেই দুইটি জিনিস সম্পর্কে জেনে নেইঃ

১। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য এনআইডি কার্ডের প্রয়োজন তা মি উপরোক্ত আলোচনা করেছি। যে এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে সেই বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়েছে সেই এনআইডি কার্ডের মালিককে সঙ্গে করে বিকাশ অফিসে ভিজিট করতে হবে। আর যদি আপনার এনআইডি কার্ডের মালিক আপনার পরিবারে সদস্য হয় যেমন- মা-বাবা, ভাই-বোনের এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তবে তাকে সাথে করে বিকাশ নিকটস্থ অফিসে নিয়ে যেতে হবে। 

২। বিকাশ একাউন্ট ডিলিট বা বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার করার পূর্বে উক্ত বিকাশ একাউন্টে টাকার পরিমাণ ০ টাকা করে নিতে হবে।

বিকাশ একাউন্ট ডিলিট করার জন্য আপনাকে এ দুটি কাজ করার দরকার হবে। এনআইডি কার্ড এবং বিকাশ একাউন্ট ০ টাকা করার পরে বিকাশ অফিসে ভিজিট করুন। তাহলে আপনার পুরাতন বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করার কাজ সম্পূর্ণ কার্যকর হবে। (উপরোক্ত আলােচনা করা তথ্যগুলো বিকাশ কাস্টমার কেয়ার থেকে সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে আমি আপনাদেরকে বলছি)।

বিকাশ একাউন্টের মালিকনা পরিবর্তন করতে কি করণীয়

বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার সমস্যাটি নিয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে কল করলে সেখানে জানানো হয় বিকাশ একাউন্টের নাম পরিবর্তন বা বিকাশ একাউন্টের মালিকানা পরিবর্তন করার পূর্বে উক্ত বিকাশ একাউন্টটি ডি-এক্টিভ করার প্রয়োজন হবে। সেটার জন্যে উপরোক্ত  আলোচনা করা একই প্রসেস অনুসরণ করুন।  যেমন– বিকাশের নিকটস্থ অফিসে গিয়ে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখিয়ে সর্বপ্রথম বিকাশ একাউন্টটি ডি-এক্টিভ করুন এবং উক্ত বিকাশ একাউন্টে টাকার পরিমাণ ০ করে দিন। 

এরপর আপনি সেই বিকাশ একাউন্টটি নতুন করে যার নাম দিয়ে ওপেন করবেন তার পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং এনআইডি কার্ডের প্রয়োজন হবে। তাই আপনি বিকাশ অফিসে যাওয়ার পূর্বে যার একাউন্ট তাকে সঙ্গে করে এবং যার নামে বিকাশ একাউন্ট পরিবর্তন হবে সেই দুজনকে  NID কার্ড সাথে করে নিয়ে বিকাশ অফিসে ভিজিট করতে হবে। আর হ্যা, মনে রাখবেন যার নামে বিকাশ একাউন্টটি পরিবর্তন হবে তার পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। 

এছাড়াও যদি আপনার কোনো আরও অন্যান্য সমস্যা থাকে। যেমন মনে করুন যার বিকাশ একাউন্ট তিনি দেশের বাইরে আছেন বা আপনি যে বিকাশ একাউন্টটি ব্যবহার করছেন সেখানে কার নাম NID কার্ড দেয়া আছে এগুলো কিছুই জানেন না তবে আপনি বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বার 16247 এ কল করে অথবা বিকাশ অফিসে ভিজিট করে জেনে নিতে পারেন। 

শেষ কথা

আশা করি আপনি বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম কিংবা পুরাতন বিকাশ একাউন্ট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পারছেন। একটা কথা মনে রাখবেন বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্যে কোন ধরনের ডুপ্লিচিটি অর্থাৎ ছলনা করার চেষ্টা করবেন না। এছাড়াও যদি আপনি বিকাশ একাউন্টের অন্য কোনো সমস্যা সম্মুখীন হয়ে থাকেন কিংবা বিকাশ সম্পর্কে আরও অন্যান্য  তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনি বিকাশ হেল্প লাইন নম্বর 16247 এখানে কল করে বিকাশ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।