রোজায় শরীরের ক্লান্তি দূর করার সহজ উপায় | রোজায় সহজে ক্লান্তি দূর করার উপায়

রমজানে শরীর সুস্থ রাখাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। তার উপরে আবার বর্তমানে করোনাভাইরাসের ভয়াবহ আবহ। সব মিলিয়ে বর্তমান সময়ে শরীর সুস্থ্য রাখা নির্ভর করবে আপনার উপর। রমজান মাস মানেই গুনাহ মাফের মাস, নেকি অর্জনের মাস, সংযমের মাস। রমজান মাসে বেশি বেশি খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।

অনেকেই আছেন যারা রোজা রাখার নিয়তে সেহরি খান। আর সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে ইফতার থেকে শুরু করে সাহরির শেষ সময় পর্যন্ত নানান রকম খাবার গ্রহণ করে থাকেন। যদি আপনি এমন পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে আপনি খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। তাই রমজান মাসে জেনে বুঝে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। কেননা খাবার গ্রহণ করার উপরই নির্ভর করবে আপনার দেহের সুস্থতা। চলুন তাহলে জেনে নেই রোজায় শরীরের ক্লান্তি দূর করার সহজ উপায় এবং রমজানে সুস্থ থাকার ৩টি পদ্ধতি; 

বেশি বেশি পানি পান করার বিকল্প নেই | রোজায় ক্লান্তি দূর করতে যা খাবেন

সারাদিন রোজা থাকার ফলে আমাদের সকলকে পানি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হয়। আর এই কারনে শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য ইফতার থেকে শুরু করে সাহরির পর্যন্ত বেশি বেশি পানি গ্রহণ করুন। তবে হ্যাঁ কখনোই একসাথে বেশি বেশি পানি গ্রহণ করবেন না এমনটি করা উচিত নয়। ইফতার থেকে সেহরির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ৭-৮ গ্লাস পানি গ্রহণ করার চেষ্টা করুন এতে করে শরীর সুস্থ্য থাকবে।

বেশি বেশি পানি পান করার পাশাপাশি তাজা ফলের রস অথবা দুধ পান করে নিতে পারেন। সেইসাথে খাবার খাওয়ার সময় ঝোলজাতীয় তরকারি, স্যুপ রেখে দিন খাবারের নিয়মিত তালিকায়। তরমুজ অথবা মাল্টার মতো আরও যেগুলো রসালো ফল-মূল রয়েছে সেগুলো গ্রহণ করতে হবে। বেশি বেশি করে শাক-সবজি যেমন- লাউশাক, শসা, লাউ, পালং শাক, পেঁপে ইত্যাদি খেতে হবে।

আরও পড়ুনঃ রমজান মাসের আমল | রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ আমল

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করার প্রয়োজন হয়। আমাদের শরীরে পানির পরিমাণ ওঠানামা করে। প্রস্রাব ও ঘামের মাধ্যমে শরীরের পানি বাহির হতে থাকে। রোজা থাকার কারণে সারাদিন যেহেতু কোন পানি পান করা যায় না তাই শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীরের ওজন কমে যায় বা যেতে পারে।

রমজান মাসে চা, কফি এবং কোমলপানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা এই সকল চা, কফি ও কোমলপানিয় পান করলে শরীরে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায়। যার ফলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে যায়। যা শরীরের জন্য বিপদ। এই কারণে রমজান মাসে রোজা রেখে ইফতার এবং সাহরিতে কফি-চা এবং কোমলপানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করুন | রমজানে ক্লান্তি দূর করার উপায়

রোজায় সারাদিন খাবার না গ্রহণ করার ফলে আমাদের সকলের মিষ্টি এবং ফ্যাটজাতীয় খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। তাই ইফতারের সময় অস্বাস্থ্যকর সকল ভাজা-পোড়া এবং ভারি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে আমাদের। এসকল খাবার গ্রহণ করার ফলে আমাদের শরীর বেশি বেশি পিপাসার্ত হয়।

বিস্কুট বা ভাজা-পোড়া, চিপ্স ইত্যাদি শুকনো খাবার খাওয়ার পরিবর্তে বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। যদি ছোলা গ্রহণ করতে হয় তাহলে সেটি তেল ও মশলা ছাড়া খেতে হবে। আর তা নাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। পাস্তা বা চিনিযুক্ত খাবার, সাদা রুটির পরিবর্তে কার্বোহাইড্রেটস মৃদ্ধ বাদামি চাল অথবা রুটি খাবার গ্রহণ করতে হবে।

ইফতারের সময় একসাথে বেশি বেশি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে না। প্রয়োজনে অল্প অল্প করে কয়েকবার খাবার খান। রমজানে মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।

আরও পড়ুনঃ রমজানের ক্যালেন্ডার ২০২১ | রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২১

সাহরি বা ইফতারে পুষ্টিকর সকল খাবার না গ্রহণ করে আপনি যদি অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে পেট ভরিয়ে রাখেন। তার ফলে রমজানেও আপনার ওজন ও মেদ ভুড়ি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আর আপনি যদি আপনার শরীরে ওজন কম রাখতে চান। তাহলে অবশ্যই রমজান মাসে সামান্য সচেতন থেকে পুষ্টিকর সকল খাবার খেয়ে আপনার লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন।

বিশ্রাম ও শরীরচর্চা করা | রোজায় ক্লান্তি ভাব দূর করতে যা করবেন

রোজা রাখার পর আবার আগামীকালের জন্য আপনার শরীর প্রস্তুত রাখার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম ও শরীরচর্চা করা। আর এইজন্য শরীরকে পর্যাপ্ত পুষ্টি দিতে হবে। যার মাধ্যমে শরীর আপনাকে দিবে পর্যাপ্ত শক্তি। তাই ভারসাম্যযুক্ত খাবারের কোন বিকল্প নেই।

রোজায় ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করার কোন বিকল্প নেই। এই সময় যদি আপনি কম শর্করা ও বেশি ফ্যাটজাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে অনেক শক্তি পেয়ে যাবেন। যার ফলে শরীরে কখনো ক্লান্তি ভাব আসবে না। শরীরকে সুস্থ্য সচল রাখার জন্য রমজানে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস করুন।

প্রত্যেকদিন অন্তত ২০-৩০ মিনিট করে হাটুন এবং ব্যায়াম করুন। শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না এর পাশাপাশি বিশ্রামও নিতে হবে। আর তাই বলে সারাদিন ঘরে সুয়ে-বসে থাকবেন না এটা করা উচিত না। রমজান মাসে রোজা রেখে প্রতিদিন দুপুরের পর একটু ঘুমিয়ে নিন।

আরও পড়ুনঃ রাগ কমানোর সহজ উপায় | রাগ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল

মাছ-মাংস, ফল, শাক-সবজি এবং হাঁস-মুরগির ডিম, দুধ, দই বা পনির এবং স্বাস্থ্যকর চর্বিজাতীয় খাবার গুলো বেশি বেশি করে গ্রহণ করুন। খাবার খাওয়ার সময় ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করে নিবে। তাহলে খাবারগুলো তাড়াতাড়ি হজম হবে।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)