রমজান মাসের ফজিলত ও আমল

রমজান মাসের ফজিলত ও আমল: অনেক বেশি ফজিলত লাভের মাস হচ্ছে রমজানের মাস। রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার বিশেষ একটি নেয়ামত। রমজান মাসকে নেকি অর্জনের বসন্ত মৌসুম বলা হয়। পরকালের জান্নাত লাভের সুবর্ণ সুযোগ। যারা নানা রকম অশ্লীল অবিচার, পাপাচার কাজকর্ম করে থাকে তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত মুহূর্ত।

পাপী-তাপীদের সকলের পাপ মুক্তির সঠিক সময় এই রমজান মাস। রমজানের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের সকলের প্রিয় নবী রাসুল (সা.) বলেছেন ‘রমজান মাস হচ্ছে বরকতময় মাস যা আমাদের দুয়ারে হাজির হয়েছে।

রমজান মাসের ফজিলত ও আমল

রমজান মাসে রোযা রাখা সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান নারী-পুরুষ সকলের উপর আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন। রমজান মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয় বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের সকল দরজাগুলো। শয়তানকে বেঁধে রাখা হয় এই মাসে।

রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক একটি রাত্রি প্রদত্ত হয়েছে যা হাজার হাজার মাস থেকে উত্তম। আর যে ব্যক্তি এই কল্যাণকর দিন থেকে বঞ্চিত হলো সে যেন বঞ্চিত হলো মহা কল্যাণ থেকে। রহমত, বরকত আর মাগফিরাতে ভরপুর এ মাসের গুরুত্বপূর্ণ অনেক রকম আমল ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম কিছু ফজিলত ও আমল সমূহ হলোঃ

(toc) #title=(এক নজরে সম্পূর্ণ লেখা পড়ুন)

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাস হিজরি ক্যালেন্ডারের নবম মাস এবং ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভগুলির মধ্যে একটি। এই মাসে মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখে, যার মধ্যে তারা পানীয়, খাদ্য এবং শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে। রমজান মাসের অনেক ফজিলত রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে তুলে ধরবো। রমজান মাসের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  • ফরজ রোজা পালন
  • কুরআন নাজিল
  • জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়ার মাস
  • জাহান্নামের দরজা বন্ধ
  • শয়তানকে শৃঙ্খাবদ্ধ করা
  • লাইলাতুল কদর পাওয়া
  • দোয়া কবুল হওয়া
  • জাহান্নাম থেকে মুক্তি
  • ক্ষমা পাওয়া
  • সৎ কাজের প্রতিদান বহুগুণে বেড়ে যাওয়া
  • হজের সাওয়াব পাওয়া
  • রোজাদারের বিশেষ সম্মান

রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস: রমজান মাসকে "রহমতের মাস", "মাগফিরাতের মাস" এবং "জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস" বলা হয়। এই মাসে আল্লাহ তা'আলা অধিক রহমত বর্ষণ করেন, গুনাহ মাফ করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন।

লাইলাতুল কদরের মাস: রমজান মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে একটি রাত রয়েছে যা "লাইলাতুল কদর" নামে পরিচিত। এই রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এই রাতে আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতাদের সাথে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং ভাগ্যলিপি লিখে থাকেন।

রোজার ফজিলত: রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলিমরা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভ করে এবং অজস্র পুণ্য অর্জন করে। রোজা রাখার মাধ্যমে পাপ-পঙ্কিলতা ধুয়ে যায় এবং ঈমানের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

কুরআন মাজীদ নাজিলের মাস: রমজান মাসে কুরআন মাজীদ নাজিল হয়েছিল। এই মাসে কুরআন তিলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

দান-খয়রাতের মাস: রমজান মাস দান-খয়রাতের জন্য একটি বিশেষ মাস। এই মাসে দান-খয়রাত করার মাধ্যমে অধিক পুণ্য অর্জন করা যায়।

জান্নাতের দরজা খোলা থাকে: রমজান মাসে জান্নাতের দরজা খোলা থাকে এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ থাকে।

শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়: রমজান মাসে শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। ফলে এই মাসে মানুষ পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে আত্মসংযম লাভ: রমজান মাসে নিয়মানুবর্তিতার মাধ্যমে মুসলিমরা আত্মসংযম লাভ করে।

সামাজিক বন্ধন দৃঢ়ীকরণ: রমজান মাসে মুসলিমরা একসাথে রোজা রাখে, ইফতার করে এবং তারাবিহ পড়ে। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ়ীকরণ হয়।

রমজান মাস হলো একটি আত্মিক পরিশোধনের মাস। এই মাসে মুসলিমরা তাদের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে এবং নিজেদেরকে উন্নত করার চেষ্টা করে। আশা করি আমরা সকলেই রমজান মাসের ফজিলত লাভ করতে পারবো। রমজান মুবারক!

রমজান মাসের আমল

  • রোজা রাখা
  • জামায়াত বদ্ধ হয়ে নামাজ আদায় করা
  • সাহরি খাওয়া
  • ইফতার নিজে করা এবং অন্যকে করানো
  • তারাবির নামাজ পড়া
  • ইতিকাফ করা
  • বেশি বেশি দান-সদকাহ করা
  • লাইলাতুল কদর তালাশ

১. রোজা রাখা

ইসলামের সম্ভ হচ্ছে ৫টি। আর এই ৫টি রুকনের মধ্যে একটি রুকন হলো রোজা। আর রমজান মাসে রোজা রাখা ইসলামে ফরজ করা হয়েছে। সেজন্য রমজান মাসের সুন্নাহ মোতাবেক প্রধান আমল রোজা পালন করা। রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে আমাদের নবী করীম রাসুল সা. বলেছেন,

'যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমজান মাসে রোজা পালন করবে। সেই ব্যক্তির অতীতের করা সকল গুনাহ বা পাপাচার কাজ গুলো আল্লাহ তায়ালা এই রমজান মাসে মাফ করে দিবেন।'

আরেকটি হাদিসে আছে ‘যে কেউ আল্লার রাস্তায় শুধুমাত্র আল্লাাহ তায়ালাকে খুশী করার জন্য একদিন রোজা পালন করবে, তা দ্বারা আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে ৭০ বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরে স্থানে রাখবেন।

আরো পড়ুন: রমজান ২০২৪ কত তারিখে: রমজান মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪

২. জামায়াত বদ্ধ হয়ে নামাজ আদায় করা

রমজান মাস সহ অন্য মাসে ফরজ নামাজ জামায়াতের সঙ্গে আদায় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমল।অনেকে আবার ফরজ সালাত আদায়ে উদাসীন হয়ে থাকে যা গ্রহণ যোগ্য নয়। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে ‘নিশ্চয় নামাজ মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। অন্য আরও আয়াতে বলা আছে ‘সেই সকল সালাত আদায় কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের সালাত আদায়ে অমনোযোগী।

৩. সাহরি খাওয়া

রমজান মাসে রোজা পালনে সাহরি খাওয়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাহরি খাওয়ার মধ্যে রয়েছে বরকত। অনেকে সাহরি খান না অনেকেই আগে রাতে খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েন এটা সম্পূর্ণ সুন্নাহ পরিপন্থী। কারণ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সাহরি খেয়ে থাকে না। হাদিসে আছে আমাদের নবী করীম রাসুল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

‘আমাদের ও আহলে কিতাবিদের রোজার মাঝে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। অন্য হাদিসে আছে, সাহরির খাবার হলো বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরি খাওয়া বাদ দিয়ো না। যদি সম্ভবহয় এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরি খেয়ে নাও। কেননা সাহরির খাবার যে গ্রহণ করে তাকে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশগণ স্মরণ করে থাকেন।

৪. ইফতার নিজে করা এবং অন্যকে করানো

সিয়ামের পরিপূর্ণ সওয়াব পেতে হলে অনেক দ্রুত ইফতার খেয়ে নিতে হবে। ইফতার এর সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করার রয়েছে বিরাট ফজিলত। হাদিসে মধ্যে এসেছে ‘যে ব্যক্তি সিয়াম বা রোজা রাখবে, সেই যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে আর যদি খেজুর না পেয়ে থাকে তবে সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি হলো অধিক বেশি পবিত্র।

অপরকে ইফতার করানো ও একটা অনেক বেশি নেকির কাজ। আমাদের সকলকে উচিত কমপক্ষে প্রতিদিন একজনকে ইফতার করানো। হাদিসে আছে যে ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে কোনো রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করাবে সে তার সমান পরিমাণ নেকি লাভ করে থাকবে। তাদের দুজনের নেকি বা সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র নেকি হ্রাস করা হবে না।’

৫. তারাবির নামাজ পড়া

তারাবির সালাত আদায় রমজান মাসের অন্যতম আমল। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকি পাওয়ার আশায় রমজান মাসে কিয়ামুল লাইল বা সালাতুত তারাবিহ পড়বে, তার করা অতীতের সকল গুনাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন।’ তারাবির সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীর স্থীরভাবে আদায় করতে হবে। তারাবির সালাত জামায়াতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নাহ। হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রস্থান করা অবধি সালাত তারাবির নামাজ আদায় করবে, তাকে সম্পূর্ণ রাত্রি কিয়ামুল লাইলের নেকি আল্লাহ তায়ালা দান করবেন।

৬. ইতিকাফ করা

ইতিকাফ যার মানে হলো অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষ বা জনসমাগম থেকে আলাদা হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত, দোয়া, ইসতিগফার বা তওবা এবং অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে একা একা কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমজানে রাসুলুল্লাহ সা. নিজে রমজান মাসের শেষের ১০ দিন এবং তাঁর সাহাবীগণকে নিয়ে ইতিকাফ করতেন।

৭. বেশি বেশি দান-সদকাহ করা

সওয়াব অর্জন ও গুনাহ মাফের মাস রমজান মাস। রোজা, সালাত ইত্যাদি করার পাশাপাশি দান সদকার মাধ্যমে ও ফজিলত অর্জন করা যায়। রমজান মাসে আমাদের সকলকে বেশি বেশি দান-সাদাকাহ করতে হবে। সকলকে এতিম, বিধবা ও গরীব-মিসকীনদের প্রতি সহানু ভূতিশীল দেখাতে হবে। যাদের উপর জাকাত ফরজ তাদেরকে যাকাত প্রদান করতে হবে।

৮. লাইলাতুল কদর তালাশ

রমজান মাসে লাইলাতুল কদর হচ্ছে এমন একটি রাত্রি যে রাত্রি হচ্ছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। রাসুল সা. আমাদের শেষ ১০ দিন লাইলাতুল কদর তালাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষের ১০ দিনের মধ্যে বেজোড় রাত গুলোতে কদরের রাত খোঁজো। অথচ আমরা সেই দশ দিন ঈদের কেনাকাটা সহ নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকি যা রমজানের আদবের বিপরিত। লাইলাতুল কদরের তালাস ইবাদাতে নারী-পুরুষ সবাই একই শ্রেণিভুক্ত।

রমজানের প্রত্যেক রাত্রির বিশেষ মুস্তাহাব নামাজের নিয়ম

আল্লামা বাকের মাজলিসি (রহ.) রমজান মাসের আমল ও ফযিলত সম্পর্কে “যাদুল মাআদ” নামে একটি গ্রন্থে প্রত্যেক দিনের নাম উল্লেখ করেছেন। নিচে বর্ণিত প্রত্যেকটি নামাজ দুই রাকাত করে পড়তে হবে। নামাজগুলো নিন্মরূপ:

১ম রমজান

১ম রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাতটি পড়ার পদ্ধতি হলো: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১৫ বার সুরা ইখলাস পড়তে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটি ও আগের মতো করে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২য় রমজান

২য় রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করে নিতে হবে। নামাজ টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করে নেয়ার পরে ২০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত সালাত একই নিয়মে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত নিয়মে পড়ে নিতে হবে।

৩য় রমজান

৩য় রমজানের রাত্রিতে ১০ রাকাত সালাত পড়ে নিতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পাঠ করার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টি ও একই পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত একই ভাবে পড়তে হবে।

৪র্থ রমজান

৪র্থ রমজানের রাত্রিতে ৮ রাকাত সালাত আদায় করে নিতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ২০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করে নিতে হবে। পরে ২য় রাকাত সালাত টিও একইভাবে পাঠ করতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো গুলো উল্লেখিত একই নিয়মে পরে নিতে হবে।

৫ ই রমজান

৫ম রমজানের রাত্রিতে ২ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। নামাজ টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত নামাজ একই নিয়মে পড়তে হবে।

৬ ই রমজান

৬ই রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত পড়ে নিতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১ বার সুরা মুলক পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত সালাত ঠিক একই ভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে।

৭ ই রমজান

৭ই রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করে নিতে হবে। সালাত পড়ার নিয়মটি হলো: ১ম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১৩ বার সুরা ক্বদর পড়ে নিতে হবে। ২য় রাকাত সালাত ঠিক অনুরূপভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে।

৮ ই রমজান

৮ই রমজানের রাত্রিতে ২ রাকাত নামাজ পড়ে নিতে হবে। নামাজ টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে। নামা জান্তে ১০০০ বার সুবহান আল্লাহ তায়ালা পাঠ করে নিতে হবে।

৯ ই রমজান

৯ই রমজানের রাত্রিতে ৬ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাতটি পড়ার নিয়ম হলো, সালাতটি মাগরিব ও এশার নামাজের মধ্যবর্তি সময়ে আদায় করে নিতে হবে। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পরে ৭ বার আয়াতুল কুরসি পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতটি ও একই পদ্ধতিতে পড়তে হবে। আর অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১০ ই রমজান

১০ই রমজানের রাত্রিতে ২০ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাতটি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পরে ৩০ বার সুরা ইখলাস পড়তে হবে। ২য় রাকাত সালাত ঠিক একইভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত নিয়মেই পড়তে হবে।

১১ ই রমজান

১১ই রমজানের রাত্রিতে ২ রাকাত সালাত পড়ে নিতে হবে। সালাত পড়ার নিয়ম হলো: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ২০ বার সুরা কাউসার পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টিও একই নিয়মে পড়তে হবে।

১২ ই রমজান

১২ই রমজানের রাত্রিতে ৮ রাকাত সালাত পড়তে হবে। সালাত পড়ার নিয়ম, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ৩০ বার সুরা ক্বদর পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই পদ্ধতিতে পড়তে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত নিয়মে পড়ে নিতে হবে।

১৩ ই রমজান

১৩ই রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পাঠ করার পরে ২৫ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত একই পদ্ধতিতে আদায় করতে হবে।

১৪ ই রমজান

১৪ই রমজানের রাত্রিতে ৬ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হবে, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ৩০ বার সুরা যিলযাল পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টিও একই পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে।

১৫ ই রমজান

১৫ই রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত নামাজ পড়ে নিতে হবে। নামাজ টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম দুই রাকাতের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত সালাত টিও একই পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ৫০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটিও একই পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৬ ই রমজান

১৬ই রমজানের রাত্রিতে ১২ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১২ বার সুরা তাকাসুর পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টি ও একইভাবে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত একই পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

১৭ ই রমজান

১৭ই রমজানের রাত্রিতে ২ রাকাত সালাত পড়তে হবে। সালাত পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পাঠ করার পরে যে কোন সুরা একবার পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতে সুরা ফাতিহার পাঠ করার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে।

১৮ ই রমজান

১৮ই রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ২৫ বার সুরা কাউসার পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টি ও একইভাবে পড়তে হবে।

১৯ শে রমজান

১৯শে রমজানের রাত্রিতে ৫০ রাকাত সালাত পড়তে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১ বার সুরা যিলযাল পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টিও একই ভাবে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে।

২০-২৪ শে রমজান

২০-২৪শে রমজানের রাত্রিতে ৮ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পাঠ করার পরে যে কোন সুরা একবার পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত নিয়মে পড়ে নিতে হবে।

২৫ শে রমজান

২৫শে রমজানের রাত্রিতে ৮ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পর ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পড়ে নিতে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত একই পদ্ধতিতে পড়তে হবে।

২৬ শে রমজান

২৬শে রমজানের রাত্রিতে ৮ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টিও একই ভাবে একই পদ্ধতিতে পড়ে নিতে হবে।

২৭ শে রমজান

২৭শে রমজানের রাত্রিতে ৪ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ১ বার সুরা মুলক পাঠ করে নিতে হবে। অথবা সম্ভব না হলে সুরা মুলকের পরিবর্তে ২৫ বার সুরা ইখলাস করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পরে নিতে হবে। অবশিষ্ট দুই রাকাত সালাত উল্লেখিত একই ভাবে পরে নিতে হবে।

২৮ শে রমজান

২৮শে রমজানের রাত্রিতে ৬ রাকাত সালাত আদায় করে নিতে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস এবং সুরা কাউসার প্রত্যেকটি ১০০ বার করে পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পরে নিতে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পরে নিতে হবে। নামাজান্তে ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করে নিতে হবে।

২৯ শে রমজান

২৯শে রমজানের রাত্রিতে ২ রাকাত সালাত পড়তে হবে। সালাত টি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পরে ২০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করে নিতে হবে। ২য় রাকাত টি ও একই ভাবে পড়ে নিতে হবে।

৩০শে রমজান

৩০শে রমজানের রাত্রিতে ১২ রাকাত সালাত আদায় করতে হবে। সালাতটি পড়ার নিয়ম হলো, প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পরে ২০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। এবং ২য় রাকাতটি ও একই ভাবে পড়তে হবে। অবশিষ্ট সালাত গুলো উল্লেখিত পদ্ধতিতে পড়তে হবে। নামাজে অত্যন্ত ১০০ বার দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে।

পরিশেষে:

রমজান মাস আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ রহমত, ক্ষমা ও বরকতের মাস। এই মাসের ফজিলত অনেক বেশি। এই মাসে নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ এবং জান্নাত লাভের সুযোগ অনেক বেশি।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: