প্রসেসর কি | প্রসেসর কি কোনটা দরকার | প্রসেসর এর গঠন ও কাজ | প্রসেসরের কয়টি অংশ

ল্যাপটপ অথবা মোবাইল ফোন বা ডেক্সটপ কেনার সময় আমরা যে বিষয়টি প্রথমে লক্ষ্য করিনি সেটা হচ্ছে প্রসেসর। কোন একটি ডিভাইস এর প্রসেসর যদি ভালো না হয় তাহলে নিঃসন্দেহে ওই ডিভাইসটির বেটার পারফর্মেন্স আশা করা যায় না। অন্যদিকে কম্পিউটারের ক্ষেত্রে প্রধান যে হার্ডওয়্যারটি সেটি হচ্ছে প্রসেসর। প্রসেসর কে আমরা অনেক এই মাইক্রোপ্রসেসর বলে থাকি। 

প্রসেসর কি | প্রসেসর কি কোনটা দরকার | প্রসেসর এর গঠন ও কাজ | প্রসেসরের কয়টি অংশ | কোর আই ৭ এর দাম

অনেকে প্রসেসর কে সিপিইউ CPU বলে থাকেন। সিপিইউ CPU মূলত হচ্ছে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (Central Processing Unit)। এটি মূলত হচ্ছে কোন একটি ডিভাইস এর যাবতীয় কাজ প্রসেস করে থাকে। তো প্রসেসর কি, প্রসেসর কত টুকু বা কি প্যারামিটার এর উপর ভিত্তি করে আপনি প্রসেসর কিনবেন এবং প্রসেসর কিভাবে কাজ করে। 

প্রসেসর এর ইন্টার্নাল স্ট্রাকচার কি। সবকিছু বুঝিয়ে বলবো আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে। তো প্রসেসর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন;

প্রসেসর কি

প্রসেসর এর মানে হচ্ছে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। এটি একটি প্রোগ্রামেবল গাণিতিক ইঞ্জিন। গাড়ি যেমন ইঞ্জিন ছাড়া চলতে পারে না তেমনি কোন কম্পিউটার প্রসেসর ছাড়া চলতে পারে না। প্রসেসর এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য ট্রানজিস্টর। তবে এই ট্রানজিস্টর গুলো হচ্ছে ন্যানো রেঞ্জের অত্যন্ত ক্ষুদ্র খুদ্র ট্রানজিস্টর।

প্রসেসর এর ওই ক্ষুদ্র ছোট জায়গার মধ্যে রয়েছে কোটি কোটি ট্রানজিস্টর থেকে থাকে। এবং সেই ট্রানজিস্টর হতে থাকে প্রতিনিয়ত অন অফ বা চালু বা বন্ধ হতে থাকে। প্রতিনিয়ত অন অফ হওয়ার কারণে বাইনারি নানা রকম ক্যালকুলেশন চলতে থাকে প্রসেসর এর ভিতরে। এবং সে বাইনারি ক্যালকুলেশন গুলো ক্যালকুলেট করে অপারেটিং সিস্টেম নানারকম কাজ করে থাকে। 

মূলত এভাবে একটি প্রসেসর যাবতীয় কাজ প্রসেস করে থাকে। প্রসেসর মূলত কোন একটি ডিভাইসের কোন কাজ যেমন, কোন একটি ভিডিও বা কোন একটি অডিও আপনি যদি কোন একটি গেমতে খেলতে যান। তো ওই গেম, ভিডিও বা অডিও রিলেটেড যাবতীয় ফাইল প্রসেস করে থাকে প্রসেসর। বর্তমানে প্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গুলো দুইটি ২টি জনপ্রিয় একটি হচ্ছে ইন্টেল InTel আরেকটি হচ্ছে এএমড AMD নামে পরিচিত। AMD হচ্ছে Advanced Micro Device নামে পরিচিত। 

এছাড়াও অ্যাপেল Apple, IBM আইবিএম, এগুলো প্রসেসর তৈরি করে থাকে। তবে সেই প্রসেসর গুলো শুধু নিজস্ব ডিভাইসের মধ্যে তৈরি করে। এখন আসা যাক প্রসেসর কিনার জন্য আপনি কোন কোন বিষয় গুলো লক্ষ্য করবেন। প্রথমে যে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন সেটা হচ্ছে ;

  • Clock Speed
  • Number Of Cores
  • Cache Memory
  • Generation
  • FSB

আর যদি আপনি অ্যাডভান্সড লেভেল এর প্রসেসর যদি আপনি কিনতে চান। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয় গুলো জানতে হবে। তা হচ্ছে প্রসেসর এর ইন্টারনাল গ্রাফিক্স কতটুকু GPU পাশাপাশি অ্যাডভান্সড প্রসেসর এর Hyperthreading কত টুকু বা কি রকম এছাড়াও Over Clocking Enable কিনা সেটা দেখতে হবে।

Clock Speed Processor | প্রসেসর এর কাজ কি

প্রথমে আসা যাক প্রসেসরের ক্লক স্পীড। ক্লক স্পিড দারা বুঝায় মূলত প্রসেসরের স্পিডকে বুঝায়। একটি প্রসেসর কত দ্রুত কাজ করবে সেটার পরিমাপের একক কি হচ্ছে ক্লক স্পিড। ক্লক স্পিড যত বেশি হবে প্রসেসর কত দ্রুত বেশি কাজ করতে পারবে। আবার প্রসেসরের ক্লক স্পিড যত কম হবে প্রসেসর তত কম স্লো কাজ করবে।

প্রসেসরের ক্লক স্পিড দ্বারা বুঝায় একটি প্রসেসর একটি ক্লকে কতগুলো কাজ একসাথে সম্পূর্ণ করতে পারবে। সাধারণত প্রসেসরের ক্লক স্পিড পরিমাপ করা হয় গিগাহার্জ GHZ দারা। বর্তমানে বাজারে আপনি 2 গিগাহার্জ, 3 গিগাহার্জ, 4 গিগাহার্জ প্রসেসর পাবেন। পরবর্তী যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয় তা হচ্ছে প্রসেসর এর নাম্বার অব কোর। 

Number Of Core Processor | প্রসেসর কত প্রকার কি কি

প্রসেসর এর কোরকে আপনি হাতের সাথে তুলনা করতে পারেন। একজন মানুষ এক হাতে যে পরিমাণ কাজ করতে পারে। সেই কাজটি যদি দুই হাতে করে তাহলে কাজটি দিগুন বা অর্ধেক সময়ে কাজটি করতে পারবে। তেমনি যদি চারটি হাত হয় একজন মানুষের ক্ষেত্রে তাহলে সেই কাজটি আরও কম সময় এর মধ্যে করতে পারবে। তেমনি হচ্ছে নাম্বার অব কোর Number Of Core।

নাম্বার অব কোর Number Of Core দারা বোঝানো হয় একটি প্রসেসর এর ভিতরে আরও কতগুলো প্রসেসর রয়েছে। বাজারে আপনি Dual Core Processor, Quad Core Processor, Hexa Core Processor, Octa Core Processor, Deca Core Processor পেয়ে যাবেন।

Dual Core Processor এর ক্ষেত্রে দুইটি ২টি ইন্টারনাল প্রসেসর রয়েছে। Quad Core Processor এর ক্ষেত্রে চারটি ৪টি ইন্টারনাল প্রসেসর রয়েছে। এভাবে Hexa Core Processor এর ক্ষেত্রে ছয়টি ৬টি ইন্টারনাল প্রসেসর রয়েছে এবং Octa Core Processor এর ক্ষেত্রে আটটি ৮ টি ইন্টারনাল প্রসেসর এবং Deca Core Processor এর ক্ষেত্রে দশটি ১০ টি ইন্টারনাল প্রসেসর রয়েছে। প্রসেসর কিনার জন্য পরবর্তীতে যে বিষয়টি বিবেচনা করবেন। 

CACHE Memory

তা হচ্ছে CACHE Memory। CACHE Memory হচ্ছে প্রসেসর এর সাথে সংযুক্ত করা একটি মেমোরি। যেটা অত্যধিক দ্রুতগতিসম্পন্ন। প্রসেসর কি কোন কিছু প্রসেস করার জন্য তাৎক্ষনিক ডাটার প্রয়োজন পড়ে এবং সেই ডাটা খুব তারাতারি লেনদেন করতে হয়। আর সেক্ষেত্রে আমরা অন্যান্য যেসকল মেমোরি ব্যবহার করে থাকি হার্ডডিস্ক Hard Disk, এসএসডি কার্ড SSD card, মেমোরি কার্ড Memory Card বা আপনার র‍্যামটি যদি হিসাব করে থাকেন। 

র‍্যাম এর থেকে খুব অত্যধিক দ্রুতগতিসম্পন্ন মেমোরি হচ্ছে ক্যাচ মেমোরি CACHE Memory। ক্যাচ মেমোরি যত বেশি হবে ততো বেশি পরিমাণ প্রসেসর ফাস্ট হবে। এবং ক্যাচ মেমোরি যত কম হবে তত বেশি প্রসেসর স্লো হবে। সাধারণত একটি প্রসেসরে 2mb ক্যাচ থাকে ও 4 mb CACHE Memory থেকে থাকে এবং 6 mb CACHE Memory থেকে থাকে অথবা 8mb পর্যন্ত CACHE Memory থেকে থাকে।

ক্যাচ মেমোরি CACHE Memory কে আবার ভিতরে তিনভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হচ্ছে L1, L2, L3। 

L1 CACHE Memory | প্রসেসরের দাম ২০২১

L1 CACHE Memory হচ্ছে অতি দ্রুত গতি সম্পন্ন মেমোরি। তবে এটি খুব কম পরিমাণে থাকে। 

L2 CACHE Memory

L2 CACHE Memory হচ্ছে L1 এর তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম দ্রুতগতিসম্পন্ন CACHE মেমোরি। তবে L2 ক্যাশ মেমোরি সেক্ষেত্রে একটু বেশি থাকে। 

L3 CACHE Memory

L3 CACHE Memory হচ্ছে L2 এর তুলনায় আরও অপেক্ষাকৃত কম দ্রুতগতিসম্পন্ন CACHE মেমোরি। তবে L3 ক্যাশ মেমোরি সেক্ষেত্রে মেমোরি এর পরিমান বেশি অত্ত্যাধিক থাকে।

Processor Generation | প্রসেসর জেনারেশন

এরপর যে বিষয়টি প্রসেসর কিনার জন্য যে বেশ লক্ষ্যনীয় সেটি হচ্ছে প্রসেসর এর জেনারেশন Generation। ১ম জেনারেশন থেকে ২য় জেনারেশন এর প্রসেসর ভালো হবে, ২য় জেনারেশন এর থেকে এরপর আবার ৩য় জেনারেশন ভালো হবে। এইভাবে জেনারেশন যত বেশি বাড়তে থাকবে তত বেশি আপনার প্রসেসর ভালো হবে। বাজারে বর্তমানে ১০ জেনারেশন এর প্রসেসর পাওয়া যায়।

জেনারেশন মূলত প্রসেসর এর আর্কিটেকচার এর ইম্প্রুভমেন্ট হয়ে থাকে। জেনারেশন যত বেশি হয় তত আপনার প্রসেসর এর গতি তত বেশি হয়ে থাকে। পাশাপাশি প্রসেসর এর ইন্টারনাল যে ট্রান্সজিস্টর থাকে সেগুলোর সাইজ ও ছোট হতে থাকে। পাশাপাশি প্রসেসর এর জেনারেশন যত বেশি হয় আপনার প্রসেসর এর পাওয়ার কনজিউমার ও তত কমে যায়। 

FSB | প্রসেসর কি কাজ করে

FSB এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Front Side Bus। Front Side Bus বলতে বোঝায় হচ্ছে প্রসেসর সাথে অন্যান্য কম্পিউটারের সাথে মাদারবোর্ডের বা কম্পিউটারের সাথে হচ্ছে র‍্যামের যে যোগাযোগ কমিউনিকেশনের যে স্পিড সেটি হচ্ছে FSB। FSB যত বেটার হয় বেশি হয় তত বেশি হচ্ছে প্রসেসর দ্রুত কাজ করতে পারবে। আর আপনার সিস্টেম ও তত দ্রুত রান হবে। 

আর অ্যাডভান্সড প্রসেসর এর ক্ষেত্রে আরও তিনটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে। সেটি হচ্ছে প্রসেসর এর ভিতরে GPU কি রকম। GPU এর পারফরমেন্স কি রকম। আর এডভান্স প্রসেসরে Hyperthreading নামে আর একটা জিনিস থেকে থাকে সেটা হচ্ছে লজিক্যাল কোর। উহদারনস্বরূপ ইন্টেল Intel Core i7 প্রসেসর এর ক্ষেত্রে 4টি কোর রয়েছে ৪টি প্রসেসর রয়েছে ভিতরে। আর শেষ যে বিষয়টি অ্যাডভান্সড প্রসেসর এর ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে OverClock। 

সাধারনত Intel i7 Processor এর ক্ষেত্রে বা অ্যাডভান্সড লেভেল এর প্রসেসর এর ক্ষেত্রে Overclocking System টা থাকে। 

অর্থাৎ কোন একটি প্রসেসরের Clock Speed 4 গিগাহার্জ হয়ে থাকে। সেটা যদি ওভারক্লকিং মুডে চলতে থাকে তখন সেটাকে আপনি চাইলে সেটাকে আপনি 4.5 গিগাহার্জ পর্যন্ত নিতে পারেন। অথবা 4.7 অথবা 4.8 গিগাহার্জ speed এ নিতে পারবেন সিস্টেমের প্রয়োজন অনুসারে। 

তো এটাই প্রসেসর সম্পর্কিত যাবতীয় সকল ইনফরমেশন।আমার লেখা আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার এই আর্টিকেল অবশ্যই কমেন্ট করুন এবং আমার এই কনেটন্ট গুলো শেয়ার করুন। 

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)