নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি - নামাজ না পড়ার শাস্তি

মুসলমানদের জন্য নামাজ সুনির্দিষ্ট ভাবে ফরজ। নামাজ নির্দিষ্ট ফরজ ইবাদত ও ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। ঈমান আনার পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে নামাজ। মুসলমানদের উপরে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ।

নামাজ না পড়ার শাস্তি

যে যেই অবস্থানে আছেন সেই অবস্থায় থেকে নামাজ পড়া ফরজ, দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, ইশারায় যেকোনো ভাবেই আপনি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন, নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা প্রত্যেক মুমিনদের জন্য অবশ্যই কর্তব্য। (সূরা নিসা: আয়াত ১০৩)

যে ব্যক্তি নিয়মিত নামাজ আদায় করে না তার ঈমান খুবই দুর্বল হয়। মহানবী (সা:) নামাজ না পড়াকে কুফরি কাজ ও অবিশ্বাসীদের স্বভাব বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন নামাজ না পড়ার ১৫টি শাস্তি - নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কিত সব তথ্য পেতে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পুরো পোস্টটি পড়ুন। তো চলুন দেরি না করে জেনে আসি, নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি গুলো সম্পর্কে-

(toc) #title=(সুচিপত্র)

নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি

নির্ধারিত সময় নামাজ আদায় করা অবশ্যই মুমিনদের জন্য ফরজ। যারা নামাজ আদায় করেন না হাদীসে তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, "কিয়ামতের দিন বেনামাজীদেরকে জাহান্নামের গভীর গর্তে নিক্ষেপ করা হবে"।

যারা নামাজের ব্যাপারে গুরুত্বহীন, তাদের জন্য শাস্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহতালা এই ব্যাপারে বলেছেন,"দুর্ভোগ সেসকল নামাজির জন্য নিজেদের নামাজের ব্যাপারে যারা থাকে গাফেল"।

যে ব্যক্তি নামাজের ব্যাপারে অলসতা করবে তার জন্য রয়েছে ১৫ ধরনের শাস্তি। নামাজ না পড়ার জন্য দুনিয়াতে দেওয়া হবে ৫ ধরনের শাস্তি, মৃত্যুর সময় দেওয়া হবে ৩ ধরনের শাস্তি, ৩ ধরনের শাস্তি কবরে এবং ৪ ধরনের শাস্তি কবর থেকে উঠানোর পরে। এভাবে মোট ১৫ টি শাস্তি নির্ধারিত হয়েছে নামাজ না পড়ার শাস্তি হিসেবে।

Check out all of our গর্ভাবস্থায় স্বপ্নে মেয়ে সন্তান দেখলে কি হয়

দুনিয়াতে দেওয়া ৫ ধরনের শাস্তি

  • বেনামাজিদের জীবন থেকে বরকত ছিনিয়ে নেওয়া হবে। 
  • বেনামাজিদের দোয়া কবুল হবে না। 
  • বেনামাজিদের চেহারা থেকে নেককারের নূর দূর করে দেওয়া হবে। 
  • নেক কাজের কোন বদলা দেওয়া হবে না বেনামাজিদের। 
  • নেক বান্দাদের দোয়ার মধ্যে বেনামাজির কোন ধরনের কোনো হক থাকবে না।

মৃত্যুর সময়ের ৩ টি শাস্তি

  • ক্ষুধার্ত অবস্থায় বেনামাজি মৃত্যুবরণ করবে। 
  • বেনামাজির মৃত্যু জিল্লতি এবং অপমানের সহিত হবে। 
  • অনেক তৃষ্ণার্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। (যেন সমুদ্রের সমপরিমাণ পানি পান করলেও তার পিপাসা মিটবে না)।

কবরের মধ্যে যে ৩ টি শাস্তি

  • বেনামাজির কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। 
  • বেনামাজির কবর খুব সংকীর্ণ হয়ে যাবে। এমন ভাবে সংকীর্ণ হবে যে, এক পাশের বুকের হাড় অন্য পাশে ঢুকে যাবে। 
  • বেনামাজির কবরের মধ্যে একটি সাপ নিযুক্ত করা হবে। সাপের চোখ গুলো থাকবে আগুনের এবং নখগুলো হবে লোহার। সাপের আওয়াজ হবে বর্জের আওয়াজের মতো বিকট। সাপ ওই বেনামাজিকে বলতে থাকবে, "আমাকে আমার রব তোমার জন্য নিযুক্ত করেছেন, যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত তোমাকে দংশন করতে থাকি"।

কবর থেকে উঠানোর পরের ৪ টি শাস্তি

  • বেনামাজিদের হিসাব গুলো খুব কঠিন ভাবে নেওয়া হবে। 
  • বেনামাজিকে জাহান্নাম দেওয়া হবে। 
  • মহান আল্লাহ তা'আলা বেনামাজিদের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে থাকবেন। 
  • বেনামাজিদের চেহারার মধ্যে তিনটি লাইন লেখা থাকবে, (আল্লাহর হক নষ্টকারী, আল্লাহর গোস্তায় পতিত ব্যক্তি, তুমি দুনিয়াতে যেমন আল্লাহর হক নষ্ট করেছিলে, তেমনি আজ আল্লাহর রহমত থেকে তুমি নিরাশ)।

মৃত্যুর পর নামাজ না পড়ার শাস্তি

পরকালে জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হচ্ছে নামাজ না পড়া। নামাজ না পড়ার শাস্তি স্বরূপ পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে তোমাদের কোন জিনিস সাকারে (জাহান্নাম) নিক্ষেপ করেছে"? তারা বলবে, "আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না" (সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৪২-৪৩)।

ইব্রাহিম, নূহ, ইসরাঈল (আ:) এদের ব্যাপারে বর্ননার পরে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, "তাদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীরা, তারা নিয়মিত সালাত আদায় করল না, সালাত নষ্ট করল ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করল"।

সুতরাং তারা খুব অচিরেই "গাইয়া" প্রত্যক্ষ করবে (সূরা মরিয়ম, আয়াত:৫৯)। জাহান্নামের একটি নদীর তলদেশকে বলা হয় গাইয়া। যার গভীরতা অনেক, সেখানে রয়েছে রক্ত ও পুজেঁর নিকৃষ্টত আস্বাদ। নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি, নামাজ না পড়ার শাস্তি খুবই ভয়াবহ, কঠিন।

Check out all of our টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যায় কেন

ফজরের নামাজ না পড়ার শাস্তি

ফরজ নামাজ আদায় না করা খুবই বড় অপরাধমূলক কাজ। এর পরিণতি হচ্ছে জাহান্নাম। মহান আল্লাহতালা বলেন, "নবী ও হিদায়াতপ্রাপ্তদের পরে এলো এমন এক অপদার্থ বংশধর, যারা নামাজ বিনষ্ট করে এবং প্রভৃতির পূজারী করে "।

সুতরাং তারা 'গাই' নামক জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। তবে যারা ভুল করে তওবা করে নিয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই তো একমাত্র জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের উপর কোন ধরনের জুলুম করা হবে না, (সূরা-মরিয়াম,আয়াত-৫৯-৬০)।

আরো একটি হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমাদের এবং কাফেরদের মধ্যে শুধু একটাই ব্যবধান তা হচ্ছে নামাজেরই। যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করল সে ব্যক্তি কাফির হয়ে গেল। ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ ছেড়ে দিলে মহান আল্লাহতালা ওই ব্যক্তির উপর থেকে তার রক্ষণাবেক্ষণ তুলে নেন।

মুআজ (রা:) বলেছিলেন " রাসূল (সা:) আমাকে ১০টি নসিহত করেন, তার মধ্যে বিশেষ একটি নসিহত ছিলো যে তুমি ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ ত্যাগ করো না"। কারণ যে ব্যক্তি ইচ্ছা কৃতভাবে ফরজ নামাজ ত্যাগ করলো তার উপর আল্লাহতালার কোন জিম্মাদারী থাকলো না (মুসনাদ আহমাদ:৫/২৩৮)।

Check out all of our প্রতিদিন ১০০০ টাকা ইনকাম করার সেরা ২০টি উপায়

১ ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার শাস্তি

আমরা অনেকেই এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে জানিনা। তাই কারণে অকারণে অনেক সময় অবহেলা করে এক ওয়াক্ত নামাজ আমরা এমনি পড়ি না। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এক ওয়াক্ত নামাজ ছেড়ে দেয়, এই নামাজ না পড়ার জন্য তাদের শাস্তি হবে ২ কোটি ৬৮ লক্ষ বছর জাহান্নামের শাস্তি।

আমাদের প্রিয় নবী (সা:) বলেছেন, যদি কোন ব্যক্তি এক ওয়াক্ত নামাজ ছেড়ে দেয়, আর ইতি মধ্যেই ওর সালাতের ওয়াক্ত পার হয়ে যায় এবং তখন সালাত আদায় করে নেয়,তবুও থাকে এক হোকবা জাহান্নামের শাস্তি দেওয়া হবে। এক হোকবা বা হল হচ্ছে ৮০ বছর, প্রত্যেক বছর ৩৬০ দিন। আর প্রত্যেক দিন এক হাজার বছরের সমান।

লেখকের শেষকথা

নামাজ হচ্ছে ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। বেনামাজিদের উপর আল্লাহ পাক সহ আল্লাহ পাকের সমস্ত ফেরেশতা তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে। তাহার দোয়া আল্লাহ পাকের নিকট কখনো কবুল হবে না। ইসলামের মূল্যবান নেয়ামত সমূহ হইতে বঞ্চিত করা হবে থাকে। তাই অবশ্যই আমরা পরিপূর্ণ মুমিন হিসেবে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রতিদিন আদায় করে নিব।

আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারলেন, নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি - নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। নামাজ না পড়ার শাস্তি বা নামাজ সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন, আমরা সর্বক্ষণ আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত।

নামাজ না পড়ার পর ১৫ টি শাস্তি এই পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। নিয়মিত নামাজ আদায় করুন, সৎ পথে চলুন। আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত না হয়ে বরকতময় জীবনযাপন করুন। আল্লাহ হাফেজ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: