ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় - ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায় - আমরা সবাই ধনী হতে চাই। কেউ অসৎ পথে ধনী হয় আবার কেউ সৎ পথে ধনী হয়। ধনী হতে হলে অনেক কষ্ট করতে হয়। প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়।

পৃথিবীতে কিছু মানুষ অনেক ধনী হতে পেরেছে আর বাকি সব মানুষ গরিব। ধনী মানুষ কি এমন কাজ করছে যার জন্য তারা আজ এতো ধনী। আপনি যদি একজন মুসলিম ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং আপনি যদি অনেক অভাবের মধ্যে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল পড়তে পারেন। 

এই আর্টিকেলে আমি ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। আপনি আমাদের দেওয়া উপায় গুলো ফলো করলে আপনি অনেক কম সময়ে ধনী হতে পারবেন। ইসলামে ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে হবে তাহলে আপনি সৎ পথে ধনী হতে পারবেন। 

অনেক সাহাবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর কথা আমল করে ধনী হয়েছে। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় বা ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায় গুলো কি কিঃ

(toc) #title=(সুচিপত্র)

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

১। বেশি বেশি আল্লাহর জিকির - ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হচ্ছে বেশি বেশি জিকির করা। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের দাঁড়ানো অবস্থায়, বসা অবস্থায়, শুয়ে থাকা অবস্থায় জিকির করতে বলেছেন। জিকির করা আল্লাহ তায়ালার একটি ইবাদত। জিকির কারীকে আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন ভালোবাসেন। 

হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর খেদমতে একজন সাহাবী আসলেন এবং তিনি মহানবী (সাঃ) কে বললেন আমি খুব অভাবে আছি আমি কাজ করতে পারছিনা। এই কষ্ট থেকে পরিত্রাণের উপায় আছে কি? মহানবী (সাঃ) বললেন এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় রয়েছে। 

রাসূল (সাঃ) বললেন তুমি কোথায় আছো? তুমি কি ইহলোকে চলে গেছ নাকি পরলোকে। সালাতে মালায়েকা মানে ফেরেশতাগণের দু'আ এবং তাসবীহে খালায়েক যার বদৌলতে বা যে জন্যে ফেরেশতাগণকে রিজিক প্রদান করা হয়। এটা তোমার কাছ থেকে কোথায় চলে গেছে?

যে জিকির বা দু'আ এর কারণে বরকতে ফেরেশতা গণ এবং মানব জাতি নিজেদের জীবিকা প্রাপ্ত হয়ে থাকে সে সম্পর্কে কি তুমি জানোনা? সে ব্যাক্তি মহানবী (সাঃ) কে বললেন সেই দু'আ কি? হুযুর (সাঃ) বললেন, “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম আস্তাগফিরুল্লাহ ”।

অর্থ: আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসা গীতির সাথে তাকে স্মরণ করছি, মহান আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং তার প্রশংসা বর্ণনার সাথে আল্লাহ্ তাআ’লার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

এই দোয়াটি ফরজ নামাজ পড়ে বসা অবস্থায় মনযোগ দিয়ে ১০০ বার পড়তে হবে এবং মাগরিবের নামাজ পড়ে একই ভাবে ১০০ বার পড়তে হবে। পড়ার সময় দুনিয়ার চিন্তা মাথায় আনা যাবে না। মনযোগ দিয়ে উপরের দোয়াটি পড়তে হবে।

তাহলে আপনার সব আশা পূরণ হবে দুনিয়া আপনা আপনি আপনার দিকে ফিরবে। অর্থাৎ দুনিয়া আপনার কাছে হেয় ও লাঞ্ছিত অবস্থায় ধরা দেবে। আপনার রিজিক আল্লাহ তায়ালা ব্যবস্থা করে দিবে। 

আপনার টাকা পয়সা আসতে থাকবে এবং আল্লাহ তায়ালা এই দোয়াটি পড়ার জন্য এক একটি শব্দ হতে এক একজন ফেরেশতা সৃষ্টি করে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত তাসবীহ পাঠে নিযুক্ত করে দেবেন। ফেরেস্তারা পড়লে আপনি সেই পরিমাণ সওয়াব পাবেন।

তারপর সেই সাহাবী চলে গেল অনেক দিন আর আসলেন না হঠাৎ একদিন আসলেন এবং মহানবী (সাঃ) কে বললেন। ইয়া রাসূল (সাঃ) আমার এমন ধন সম্পদ আল্লাহ তায়ালা দিয়েছে যা আমি হিসেবে রাখতে রাখছিনা।

আরো পড়ুনঃ আকিকার নিয়ম কানুন

২। বিবাহ - ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হচ্ছে বিবাহ। বিবাহ করলে আল্লাহ তায়ালা সংসারে বরকতময় করেন। আল্লাহ তায়ালা ওয়াদা করেছেন যে বিবাহ করল তাকে নিজ অনুগ্রহে ধনী করে দিবেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা বিবাহ করেনি বা নেককার দাসদাসী রয়েছে। তারা যদি অভাবে থাকে তাহলে বিবাহ দিয়ে দাও। আল্লাহ তায়ালা নিজে তাদের ধনী করে দিবেন। আর আল্লাহ্ তায়ালা প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সুরা নূরঃ ৩২)

আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে তিনটি ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ তায়ালা দায়িত্ব হয়েছে যায় তারা হলো (১) আল্লাহ রাস্তায় জিহাদকারী (২)চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায়। 

(৩) ওই বিবাহিত ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়। (তিরমীজি-১৬৫৫, নাসায়ী-৩২১৮, ৩১২০, সহীহ ইবনে হিব্বান-৪০৩০, বায়হাকীঃ সুনানুল কুবরা-১৩৪৫৬, ২১৬১২; হাদিসটি হাসান)

আরো পড়ুনঃ খতমে খাজেগান পড়ার নিয়ম

৩। বেশি বেশি দান করা - ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হচ্ছে দান করা। আল্লাহ তায়ালা দানশীল ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। যে ব্যক্তি বেশি বেশি দান করবে আল্লাহ তায়ালা তার ধন সম্পদ বৃদ্ধি করে দিবে। গোপনে দান করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার উপর রাগ করে থাকলে তা কমে যায়। আপনি যদি ধনী হতে চান তাহলে বেশি বেশি দান করেন।

আল্লাহর নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহ রাস্তায় ১ টাকা দান করবে আল্লাহ তায়ালা সেই ১ টাকা বৃদ্ধি করে তাকে ১০ টাকা দিবেন। 

এক সাহাবী একজন ভিখারিকে ১টা রুটি দান করে তারপর সেই সাহাবীর একজন আত্নীয় সন্ধ্যা সময় তার জন্য ১০টা রুটি পাঠায়। যে রুটি নিয়ে আসে সে ১০টা রুটির জায়গায় ৮টা রুটি দেয়। সেই সাহাবী রুটি গণনা করে বলে এখানে ১০টা রুটি থাকার কথা ৮টা কেন?

তারপর যে রুটি নিয়ে আসে সে বলে আপনার আত্নীয় ৮টা রুটি পাঠিয়েছে। সাহাবী বলে এটা হতে পারে না এখানে ১০টা রুটি থাকবে ২টা রুটি কোথায় রেখেছেন বলেন।

যে লোক রুটি নিয়ে এসেছে সে লোক সাহাবীকে বলে আপনি এতো বিশ্বাসের সাথে কিভাবে বলছেন যে এখানে ১০টা রুটি ছিল। তখন সাহাবী বলে আমি সকালে এক ভিখারিকে ১টা রুটি দান করেছি।

আমার নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে ১টাকা দান করবে সে আল্লাহ পক্ষ থেকে ১০ টাকা পাবে। তাহলে নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর কথা মতো আমি ১টা রুটি দান করেছি তাই আল্লাহ তায়ালা আমাকে ১০টা রুটির ব্যবস্থা করে দিবে। তখন যে রুটি নিয়ে আসছিল সে আরো ২টা রুটি বের করে দিল। 

আল্লাহ তায়ালা কখনো তার কথা ভঙ্গ করেন না। আপনি যদি বেশি বেশি দান করেন আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আরো বেশি করে ধনী করে দিবে। তাই বেশি বেশি আল্লাহ রাস্তায় দান করেন।

আরো পড়ুনঃ কিভাবে জীবনে সুখী হওয়া যায়

৪। সব সময় ওজু অবস্থায় থাকা

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হচ্ছে সব সময় ওজু অবস্থায় থাকা। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাকে পবিত্র অবস্থায় থাকবে পছন্দ করেন। আমরা সবাই জানি পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। সব সময় পবিত্র অবস্থায় থাকবেন। যে ব্যক্তি সব সময় পবিত্র অবস্থায় থাকবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ধনী করে দিবেন। আপনি যে জায়গায় থাকেন যত ব্যস্ত থাকেন সব সময় পবিত্র থাকবেন। ওজু নষ্ট হয়ে গেলে সাথে সাথে ওজু করে নিবেন। 

৫। হজ্জ - ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় হচ্ছে হজ্জ করা। হজ্জ করা অনেক বড় একটি ইবাদত। হজ্জ করার মাধ্যমে আপনি আল্লাহর কাছে থেকে ক্ষমা পাবেন। আল্লাহ তায়ালা হজ্জকারীকে ভালোবাসেন এবং তার সম্পদ বৃদ্ধি করে দেয়। আপনার কাছে হজ্জ করার টাকা থাকলে আপনি হজ্জ করেন।

শেষ কথা - ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়

আমি এই আর্টিকেলে ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। ইসলামে ধনী হওয়ার ৫টি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলো আপনি আমল করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ধনী করবেন ইনশাআল্লাহ। 

সব সময় পবিত্র থাকবেন এবং উপরে দেওয়া জিকির বা দোয়া পাঠ করবেন। আল্লাহ রাস্তায় বেশি বেশি দান করবেন। শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা আপনার অভাব দূর করে দিবেন।

পোষ্ট ক্যাটাগরি:

এখানে আপনার মতামত দিন

0মন্তব্যসমূহ

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)