কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি - কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন — কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন প্রদানের মাধ্যমে দেশের অধিক বেকার যুবককে আত্বনির্ভশিল করতে সক্ষম। বাংলাদেশ সরকার বেকার সমস্যা দূরীকরণ এর লক্ষ্যে ৩০ জুন ১৯৯৮ সালে এই কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত করেন। মেধাবী, শিক্ষিতদের এই লোনের আওতাভুক্ত করা হয়। এ পর্যন্ত অসংখ্য মেধাবী বেকার নারী ও যুবক কর্মসংস্থান লোন এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি

বাংলাদেশে প্রতি বছর অসংখ্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ভালো রেজাল্ট নিয়ে বের হলেও চাকরির স্থান গুলোতে অতিরিক্ত দক্ষতা তাদের হতাশ করে। বিশ্বের মধ্যে শিক্ষিত বেকার এর দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ২০২২ সালে প্রকাশিত তথ্যমতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে পুরুষ বেকার রয়েছে ৩.৩ শতাংশ ও নারীর বেকার সংখ্যা ১২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই প্রতিবেদনে ফুটে উঠে বাংলাদেশে প্রতি পরিবারে গড়ে একজন বেকার রয়েছেন। বেকারদের সকলের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সংকট অনেক বড় একটি বাধা হিসেবে কাজ করে। এ সকল সমস্যা নিরসনের জন্য বেশ ভালোভাবে কাজ করে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন।

আমাদের আজকের আর্টিকেলে জানবো কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে। অনেকেই আছেন যারা কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি জানতে অনেক আগ্রহী কিন্তু ভালো কোনো স্থান পাচ্ছেন না এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য। পদ্ধতি জানার পাশাপাশি আপনাদের দেখাবো যে, আপনিও কিভাবে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নিই কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতঃ

আরো পড়ুনঃ দ্রুত চাকরি পাওয়ার উপায়

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাদের সবার আগে বুঝতে হবে কর্মসংস্থান পদ্ধতি মূলত কি। কর্মসংস্থান ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্টায়ত্ত ব্যাংক সেবার আওতাধীন। বেকারদেরকে লোনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে তোলা কর্মসংস্থান ব্যাংক এর মূল লক্ষ্য। অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বেকারদের সহায়তা প্রদান করে থাকে কর্মসংস্থান ব্যাংক।

কোন কোন খাতে লোন নিতে পারবেন কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে

কর্মসংস্থান ব্যাংক বেস কিছু খাতের উপরে লোন প্রদান করে। এখানে উল্লেখ্য যে, আপনি শুধু সে কাজের উপরেই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টসের ও প্রয়োজন হবে। নিম্নোক্ত খাতে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন প্রদান করেঃ 

১। মাছ চাষঃ আপনি মাছ চাষে যদি আগ্রহী হোন কিন্তু আপনার কাছে কোনো প্রকার টাকা নেই তাহলে মাছ চাষের উপরে আর্থিক লোন গ্রহন করতে পারবেন। পুকুরে মাছ চাষের ক্ষেত্রে অধিক লোন গ্রহন করতে পারবেন। এজন্য আপনার চাষ যোগ্য স্থানের পরিধি অনুযায়ী লোন গৃহীত হবে।

২। কৃষি কাজঃ আপনার নিজ উদ্যোগে যদি কৃষি কাজ শুরু করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন গ্রহণ কর‍তে পারবেন। মাশরুম, সবজি, ফলের গাছ ইত্যাদি বিষয় গুলোর উপরে লোন প্রদান করে থাকে।

৩। সেবা খাতঃ দোকান, স্টুডিও, ফার্মেসি বা যেকোনো ধরনের জনসাধারণের সেবা মূলক কাজ গুলোর উপরে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে আর্থিক লোন গ্রহন করা যাবে।

৪। ব্যাবসা খাতঃ হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিক্রয় ইত্যাদি ব্যাবসার উপত আর্থিক লোন প্রদান করা হয়।

৫। কুটির শিল্পঃ বাংলাদেশে কুটির শিল্প অতি প্রাচীন। কুটির শিল্পের কাজ করা অধিক মানুষ অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগেন। কামারদের নির্ভরশীল করে তুলতে এক্ষেত্রেও লোন প্রদান করা হয়।

৬। শিল্প-কারখানাঃ আটা, ময়দা, সুজি প্রস্তুতকরণ, বেকারি ইত্যাদি ক্ষুদ্র শিল্প ও কারখানায় লোন প্রদান করে কর্মসংস্থান ব্যাংক।

৭। খামারঃ গরু, ছাগল ইত্যাদি দুগ্ধ জাত পশুর খামারের উপরে আর্থিক লোন নিতে পারবেন।

৮। পোল্টি ফার্মঃ যাদের পোল্টি ফার্ম করার ইচ্ছা আছে। তারা ও চাইলে লোন নিতে পারবেন কর্মস্থান ব্যাংক থেকে।

আরো পড়ুনঃ বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া

কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোনের জন্য সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা জানেন না কিভাবে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তারা এই বিষয়টি ভালো করে দেখলেই পারবেন।

অনলাইনে আবেদন এর পরে আপনি যদি লোন নেয়ার উপযুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সুনির্দিষ্ট ভাবে সঠিক তথ্য প্রদান করে ফর্মটি পূরণ করতে হবে। কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন এর জন্য এই লিংকে চলে যান। লিংকে প্রবেশ করার পর নিচের ছবির মত একটি ফর্ম দেখতে পাবেন। 

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি

ফর্মে চাওয়া প্রতিটি তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করে সাবমিট করে দিন। আপনি যদি লোনের জন্য সম্পুর্ন যোগ্য হোন কয়েক কার্যদিবস এর মধ্যেই আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে। এ ছাড়াও আপনি চাইলে অফলাইনেও ফর্ম নিয়ে আবেদন করতে পারবেন। 

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোনের শর্তসমূহ

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন আবেদন এর জন্য আপনার যোগ্যতা থাকতে হবে লোন পাওয়ার জন্য। কর্মসংস্থান ব্যাংক এর নিয়ম অনুযায়ী নিচের দেয়া শর্তসমূহ অবশ্যই পালন করতে হবে।

১। আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে ২। আপনাকে এলাকার নিয়মিত বাসিন্দা হতে হবে। আপনি যদি স্থায়ী বাসিন্দা না হোন তবে স্থায়ী কোনো বাসিন্দাকে লোনের প্যারেন্টার হিসেবে নিতে হবে ৩। বেকার বা অর্ধ বেকার থাকতে হবে ৪। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে থাকতে হবে ৫। যে কাজের জন্য লোন নিবেন সেটার উপর দক্ষতা থাকতে হবে ৬। লোন পরিশোধের ক্ষমতা ও এলাকায় সুনাম থাকতে হবে ৭। অন্য কোনো এনজিও, ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান থেকে লোন গ্রহন করলে নিতে পারবেন না।

শেষ কথা

কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি এবং কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পেরেছি। এ সকল পদ্ধতি সম্পর্কে ভালো করে তথ্য সংগ্রহ করেই কেবল লোনের আবেদন করুন। কিভাবে কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন করবেন এ সম্পর্কে ও বিস্তারিত লেখা রয়েছে। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: