প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা - প্রিয় পাঠকগণ প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া করে কিন্তু প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে না জানার কারণে এটি থেকে মুক্তি পেতে পারিনা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ভূমিকাঃ প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার অন্যতম একটি কারণ হলো প্রসাবে ইনফেকশন হওয়া। যদি প্রসাবে ইনফেকশন বেড়ে যায় তাহলে আমাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। জীবনধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় অঙ্গ হলো কিডনি। মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্র যেমন মানুষের জন্য জরুরী ঠিক তেমন দুই টিকিট নিয়ে আমাদের শরীরে তেমন গুরুত্বপূর্ণ।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার কারণ, প্রসাবে ইনফেকশনের লক্ষণ, প্রসাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আরো পড়ুনঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ

প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার কারণ

বিভিন্ন কারণে প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই সমস্যাটি হতে পারে। সবার কারণ এক হয় না যেহেতু আজকের এই আর্টিকেলে আমরা প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব তাই আমাদেরকে প্রথমে প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার কারণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

১। প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা। পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যা বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের দেহকে রক্ষা করে। অপর্যাপ্ত পানি দেহের নানান রকম রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

২। মেয়েদের খেতে পায়ুপথের মাধ্যমে অনেক ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস মূত্রনালীতে প্রবেশ করে যার ফলে প্রসবের জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হতে পারে। নারীদের জন্য এই উপসর্গটি খুবই কষ্টকর। সাধারণত মেয়েদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার মূল কারণ এটি।

৩। মেয়েদের মাসিক হওয়ার ফলে প্রসাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার সমস্যার দেখা যায়। আমরা জানি যে মেয়েদের প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময় মাসিক অর্থাৎ পিরিয়ড হয়ে থাকে। অনেক মেয়েরা এই সময় ন্যাপকিন অথবা কাপড় ব্যবহার করে থাকে যার ফলে জীবাণু মন্ত্রনালীতে প্রবেশ করে তাই জ্বালাপোড়া হয়।

প্রসাবের ইনফেকশনের লক্ষণ

প্রসাবে ইনফেকশন হলে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যার ফলে আমরা বুঝে থাকবো যে প্রসাবে ইনফেকশন হয়েছে। সাধারণত এর মূল কারণ হলো জীবাণু। আমরা যদি খুব সহজে প্রসাবে ইনফেকশনের লক্ষণগুলো জেনে নিতে পারি তাহলে এই রোগ নির্ণয় করতে সহজ হবে। তাই প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা জানার আগে প্রথমে আমাদের প্রসাবে ইনফেকশনের লক্ষণগুলো জানতে হবে।

১। প্রসাবে প্রচন্ড পরিমাণে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে।

২। প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার ফলে বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে।

৩। প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার ফলে প্রসবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যেতে পারে।

৪। তলপেটে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৫। কিছুক্ষণ পর পরে প্রসাব লাগা কিন্তু প্রসাব ঠিকমতো বের না হওয়া।

৬। প্রসাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভব করা।

আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের কারণ ও প্রতিকার

প্রসাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের উপায়

প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার পরে ঘরোয়া চিকিৎসা না করে প্রথম থেকে আমাদেরকে এটি প্রতিরোধ করতে হবে। প্রসাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের উপায় রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করে আমরা খুব সহজেই প্রসাবে ইনফেকশন হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারি। নিচে আপনাদের সুবিধার্থে প্রসাবে ইনফেকশন এর প্রতিরোধের উপায় গুলো উল্লেখ করা হলো।

অনেকক্ষণ প্রসাব আটকে না রাখা - অনেক সময় আমরা বাড়ির বাইরে গেলে অনেকক্ষণ সময় পর্যন্ত প্রসাব আটকে রাখি যার ফলে আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা যায়। কিন্তু একসময় এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এটা কখনোই করা যাবে না। প্রসাব লাগলে অবশ্যই আমাদেরকে তাড়াতাড়ি তা ত্যাগ করতে হবে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা - আমরা জানি যে যে কোন রোগের ওষুধ হিসেবে পানি খুবই উপকারী। আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য পানি ছাড়া কোন বিকল্প নেই। আপনি যদি দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করেন তাহলে আপনার শরীর অসুস্থ হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে - অনেক সময় এই কারণটি ভিটামিন সি এর অভাবে হয়ে থাকে। তাই শরীরে যেন ভিটামিন সি এর পরিমাণ ঠিক থাকে সেদিকে লক্ষ্য করে আমাদের খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি সমমৃত খাবার খেতে হবে।

গরম পানিতে গোসল করতে হবে - প্রসাবে ইনফেকশন হলে যদি ব্যথা অনুভব হয় তাহলে হালকা গরম পানি করে সেটা দিয়ে গোসল করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করার ফলে প্রসাবে ইনফেকশন এর ব্যথা অনেকটা কমে যায়।

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

এখন আমরা আমাদের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের প্রসাবে যদি জ্বালাপোড়া করে তাহলে আমরা ঘরোয়া চিকিৎসা এর মাধ্যমে এটি কমাতে পারবো। ইতিমধ্যেই অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে জেনেছি নিচে আপনাদের সুবিধার্থে প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা উল্লেখ করা হলো।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা - প্রসাবে জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে পর্যাপ্ত পানি পান করার কোন বিকল্প নেই। এছাড়া অনেক সময় আমাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া করে শূন্যতার কারণে হয়ে থাকে। তাই প্রতিদিন আপনি প্রাপ্তবয়স্ক হলে ৭-৮ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

সবুজ শাকসবজি খাওয়া - প্রসাবে জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে। এটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সবুজ শাকসবজির মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা দেহের প্রয়োজনীয় পানির অভাব পূরণ করে। তাই খাদ্য তালিকায় আমাদের সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে।

সোডা পান করতে পারেন - তো সবাই জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য আপনি বেকিং সোডা পান করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে সপ্তাহে কয়েকদিন সকালবেলা পান করে দেখুন প্রসাবে জ্বালাপোড়া এবং ইনফেকশন কমে যাবে।

শসা খেতে পারেন - শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি। প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে শসা খেলে আপনার শরীরে পানি শূন্যতা হবে না তাই প্রসাবে জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য শসা খেতে পারেন।

আরামদায়ক পোশাক পড়তে হবে - আমাদেরকে সবসময় ভালো পরিবেশে বসবাস করতে হবে এবং ঢিলেঢালা জামা পড়তে হবে যেন আমাদের গোপনীয় অঙ্গগুলো ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে না আসে।

আরো পড়ুনঃ জরায়ু ইনফেকশনের লক্ষণ

শেষ কথাঃ প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা

প্রসাবে জ্বালাপোড়া ঘরোয়া চিকিৎসা, প্রসাবে ইনফেকশনের প্রতিরোধের উপায়, প্রসাবের ইনফেকশনের লক্ষণ, প্রসাবে জ্বালাপোড়া করার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উত্তর বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়টি জানাতে পেরে আমার আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

পোষ্ট ক্যাটাগরি: